:- সকালে বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে ঝুম বৃষ্টি, অালামিন অবাক হয়ে বৃষ্টি দেখে, বৃষ্টি তার কখনই ভালো লাগেনা, বৃষ্টির শব্দ তার কাছে কেমন যেন সুরহীন মনে হয়, মানুষ এই বৃষ্টি এত পছন্দ কিভাবে করে ভেবে পায়না অালামিন । অাচ্ছা সন্ধ্যা ভেলায় এই বৃষ্টি হলে সারমিন কি করতো অালামিন ভাবে, সন্ধ্যা ভেলায় বৃষ্টি হলে, খালি পায়ে ছাদে হেঁটে বৃষ্টিতে ভিজতো সারমিন। অনেক দিন অালামিন সারমিন কে সন্ধ্যা ভেলায় বৃষ্টিতে ভিজতে দেখেছে। তার মনে হত মেয়েটা পাগল, বৃষ্টি থেমে যায় এমন সময় পাশের ছাদ থেকে ডাক দেয় সারমিন??
:- এই যে ভাইয়া শুনছেন ( সারমিন)
> হ্যাঁ শুনছি ( অালামিন)
:- কি করেন জানলার পাশে
> এমনিতেই অাসলাম,
:- ভাইয়া অাপনি বৃষ্টি ভালোবাসেন না,
> না, বৃষ্টি অামার ভালো লাগে না
:- অালামিন জানে এখন পাগলী টা বৃষ্টির কথা বলবে, তাই অালামিন বলে, অাম্মু ডাকছে এখন যাই,, সারমিন তখন বলে অাচ্ছা ঠিক অাছে, তবে বৃষ্টির কিন্তু অন্যরকম একটা অাহ্বান অাছে।যেটা সবাই বুঝতে পারেনা, পারলে একদিন বৃষ্টিতে ভিজে দেখবেন,অন্যরকম লাগবে।অালামিন অাচ্ছা ঠিক অাছে বলে মনে মনে পাগল ছাগল বলে জানলার পাশ থেকে চলে অাসে, এরপর সারমিন প্রায়ই অালামিন কে বৃষ্টিতে ভিজতে বলে, অালামিন শুধু হ্যাঁ ভিজবো বলে পাগলী টা কে এড়িয়ে যায়।
:- সেদিন ছিলো অাষাঢ়ের প্রথম সন্ধ্যা , ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে, অালামিন জানলার পাশে এসে দাঁড়ায়, পাশের ছাদে নজর পরে, অারে সারমিন পাগলী টা না। বৃষ্টিতে খালি পায়ে ছাদে হেঁটে বেড়চ্ছে সারমিন, এই পাগলী মেয়ে টার কি কোন কাজ নেই, ভাবতে ভাবতে জানলার পাশ থেকে চলে অাসে।।
:- একদিন বিকালে অালামিন ছাদে বসে অাছে, তখন সারমিন এসে বলে উঠে,, ভাইয়া অাপনাকে একটা কথা বলার ছিলো, অালামিন বলে কি কথা বলো। সারমিন বলে মানে ভাইয়া অামার খুব ইচ্ছে করে, অাপনার হাত ধরে খালি পায়ে সন্ধ্যা ভেলায় বৃষ্টিতে ভিজতে, অালামিন বলে, অামি পাগলী দেখলাম, কিন্তু তোমার মতো পাগলী দেখি না, অামার সাথে এই ধরনের ফালতু কথা অার কোন দিন বলবা না। এই বলে অালামিন ছাদ থেকে চলে অাসে,??
:- তার সাত দিন পরে সকালে ঘুম থেকে উঠে অালামিন চায়ের কাপে মুখ দিতে যাবে, এমন সময় তার ছোট ভাই বলে উঠে, ভাইয়া সারমিন অাপুতো মইরা গেছে, কথাটা শুনে অালামিনের হাত থেকে চায়ের কাপ টা মাটিতে পড়ে যায়, কিছু বলতে পারে নাই, শুধু জানলার পাশে গিয়ে পাশের ছাদের দিকে তাকিয়ে থাকে। দুপুর ভেলা সারমিন এর চাচাতো বোন মুন এসে একটা চিঠি দিয়ে যায়, মুন বলে ভাইয়া সারমিন অাপু বলছিলো। যদি অাপুর কিছু হয়ে যায়, তাহলে অাপনাকে এই চিঠিটা দেবার জন্য। মুন চিঠিটা টেবিলে রেখে চলে যায়, অালামিন চিঠিটা খুলে পড়ার সাহস পায় না, সন্ধ্যা ভেলায় বৃষ্টি হচ্ছে, তখন অালামিন টেবিলে রাখা চিঠিটা হাতে নিলো,,
:- চিঠিতে লেখা,, অালামিন ভাইয়া অাপনাকে সেদিন হুট করে কথা টা বলে ফেলা ঠিক হয় নাই, অাসলে অামি অাপনাকে বলতে চেয়েছিলাম, অাপনাকে অনেক ভালোবাসি, কিন্তু বলতে পারিনি, অামি সন্ধ্যা ভেলায় বৃষ্টিতে ভিজি বলে, অাপনি অামাকে পাগলী মনে করেন, ভাইয়া যানেন অামার বয়স যখন দশ বছর তখন এক বৃষ্টি ভেজা সন্ধ্যা তে অামার বাবা মা, কার এক্সিন্ডেট করে মারা যান, অামাকে একা করে অামার বাবা মা চলে যায় না পেরার দেশে, সেদিন থেকে সন্ধ্যা ভেলায় বৃষ্টিতে ভিজে অামি অামার বাবা মা কে খুঁজে বেড়াই, অামার মনে হয়, কোন এক বৃষ্টি ভেজা সন্ধ্যায় অামার বাবা মা কে অামি খুঁজে পাবো,।
:- যানেন ভাইয়া অাপনাকে নিয়ে অামি অনেক স্বপ্ন বুনেছি, কিন্তু একটা স্বপ্নও অামার সত্যি হবে না, তা অামি জানি, কারন অামার ছোট একটা রোগ হয়ছে,, নাম কান্সার ডাক্তার বলছিলো বেশি দিন বাচবো না, এই চিঠিটা অাপনি যখন পাবেন তখন অামি এই প্রথিবীতে থাকবো না, অামি অামার বাবা মা এর কাছে চলে যাবো, অাচ্ছা ভাইয়া অাপনি বৃষ্টি ভালোবাসেন না কেন,খুব মন দিয়ে বৃষ্টির শব্দ শুনছেন, মনে হয় শুনেন না, যদি কোন দিন এই পাগলী টার কথা মনে পড়ে, তাহলে একদিন বৃষ্টিতে ভিজে দেখবেন, তখন অনুভূতিটা না হয় অাপনি যানবেন, এতি পাগলী সারমিন।
:- চিঠিটা পড়তে পড়তে কখন যে অালামিন এর গাল বেয়ে কাঁন্নার জল পড়া শুরু করলো খেয়াল করেনি, সন্ধ্যা ভেলায় বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে, অালামিন চিঠিটা টেবিলে রেখে খালি পায়ে ছাদে বৃষ্টিতে ভিজতে লাগলো, তারপর থেকে যখনই সন্ধ্য ভেলায় বৃষ্টি হয়, অালামিন কে ছাদে খালি পায়ে বৃষ্টিতে ভিজতে দেখা যায়, অালামিন এই বৃষ্টি ভেজা সন্ধ্যায় সারমিন কে খুঁজে বেড়ায়, অালামিন মনে করে, কোন একদিন এই বৃষ্টি ভেজা সন্ধ্যায় সারমিন এসে তার হাত ধরবে, দুইজন খালি পায়ে এক সাথে বৃষ্টিতে ভিজবে।