১-৬ বছর একটা মেয়ের সাথে একটা ছেলের বন্ধুত্ব।শুধুই বন্ধুত্ব…।২জন জনকে খুব ভালো বুজতো।অনেক বেশি কেয়ারিং ছিল দুইজনই।
শুধু কেন জানি তাদের মধ্যে ভালোবাসা নামক সম্পর্ক গড়ে উঠেনি।হয়তোবা গড়ে উঠেছিল কিন্ত কেও বুজতে পারেনি।
ছেলেটার নাম আবির। আর মেয়েটার নাম অর্পা।
আবির সবসময় অর্পাকে বলতো তোমাকে যে ছেলে বিয়ে করবে সে অনেক ভাগ্যবান হবে।
অর্পাঃআমার মত একটা মানুষের সাথে কেও তো বেশি সংসারই করতে পারবে না,আবার ভাগ্যবান হবে কি করে?
আবিরঃহুম হবে।আমি তো একটা ছেলে.. আমি জব করি আর এ জন্য আমি অনেক জায়গায় গেছি।অনেক মানুষের সাথে মিশেছি। তাই আমি জানি তুমি কতটা ভালো।
তোমার মত পজিটিভ মাইন্ডের একটা মানুষ,যে মানুষকে এত টা বুজে,যার টাকা পয়সা,দামি ড্রেস,গহনার প্রতি কোন লোভ নেই সে মেয়েকে বিয়ে করে যে ছেলে সুখি হবে না সে ছেলে কখনো সুখি হবে না।
আর আমি কখনো তোমার মত এত ভালো একটা বন্ধুকে হারাতে পারবো না।
হঠাৎ পারিবারিক চাপাচাপিতে আবির বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিল।
অর্পাঃতুমিতো বিয়ের পর আমাকে ভুলেই যাবে।আর কথাই বলবেনা।
আবিরঃনা আমি এমনটা করবোনা।আমার বৌ এর সাথে তোমাকে কথা বলিয়ে দিব।আমি চাই আমার বৌ আর তোমার মধ্যেও একটা ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠোক।
আবিরের বিয়ে ঠিক হওয়ার পর পরই অর্পা বুজতে পারে যে কি যেন একটা হারিয়ে যাচ্ছে।
এ মানুষটাকে তার জীবনে খুব বেশি দরকার। এ মানুষটাকে কোন ভাবে হারানো যাবে না।
তাই বাধ্য হয়ে এক পর্যায় অর্পা আবিরকে বলেই দিল যে সে তাকে ভালোবাসে এবং বিয়ে করতে চায়।
আবিরঃআমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে।আর ৯ দিন পর বিয়ে।এখন কি বলছো এসব? এখন তো বিয়েটা ভেঙ্গে দেওয়া সম্ভব না।
অর্পা ও জানে এখন বিয়েটা ভেঙ্গে দেওয়া সম্ভব না।তাও কেন যে ছেলেটাকে এ কথাটা বলতে গেল…!
ছেলেঃদেখো আমাদের বন্ধুত্বের একটা পর্যায় আমি ও তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছিলাম।কিন্তু তুমি সবসময়ই বলতে কখনো বিয়ে করবেনা। এমন কি কারো সাথে সর্ম্পকেও জড়াতে চাইতে না তাই আমি ভয়ে তোমাকে প্রোপোজ করিনি।যদি তুমি আমাদের বন্ধুত্বটা নষ্ট করে দাও।
আমি কোন কিছুর বিনিময়ে ও তোমাকে হারাতে চাইনা।
অর্পার কথা শুনে আবির হয়তো অবাক হয়েছিল।কি করবে বুজতে পারছিল না।
বিয়ের পর অর্পা আবিরকে কল করে।
আবিরঃকেমন আছ?
অর্পাঃভালো।তুমি কেমন আছ?
আবিরঃভালো।
অর্পা তুমি কি সত্যিই ভালো আছ?
অর্পা আবিরের প্রশ্নটা শুনে হেসে দিল।
অর্পাঃহুম ভালো আছি।আবির তোমার বিয়ের আগে আমি তোমাকে কি বলেছি তা ভুলে যাও।আমি চাই আমাদের বন্ধুত্বটা আগের মত চলুক।
আবিরঃঅর্পা তুমি আগে নরমাল হও।তারপর..
আমার মনে হয় তুমি ভালো নেই।
অর্পাঃতুমি তো বলেছিলে তোমার বৌ এর সাথে কথা বলিয়ে দিবে।কবে দিবে?
আবিরঃ দিব। পরে একদিন।আমি তো বাসায় না।বাজারে আসছি।তোমাকে পরে কল দিব।আমিই কল দিব
অর্পা “আমিই কল দিব” এ কথাটার মানে বুজতে পারে।
তার মানে আবির কল না দিলে অর্পা যেন আর কল না দেয়।
আজ ১ বছরের বেশি সময় পার হয়ে গেছে।কিন্তু আবির আর অর্পাকে কল দেয়নি।
(যে মানুষটা একদিন বলেছিল যে কোন কিছুর বিনিময়েও অর্পাকে হারাতে চায় না সে মানুষটা এখন আর অর্পার খবর নেয় না।)
২… অর্পার একটা ফ্রেন্ড অর্পাকে বলেছিল যে অর্পা তুমি কি জানো ফ্রেন্ডশিপ ডে তে তোমার দেওয়া বন্ধুত্বের প্রতীকী গোলাপটা আজ ও আমার মানিব্যাগে আছে।গোলাপটা শুকানোর পর যাতে ঝড়ে না যায় তাই আমি লেমেনেটিং করে রেখে দিছি।
আর সে গোলাপটা আমার সাথে করে নিয়েই ঘুরি।অর্পা তুমি আমার জীবনে সব থেকে ভালো একটা বন্ধু।
অর্পা তুমি বিয়ের পর তোমার হাজবেন্ডের সাথে আমাকে পরিচয় করিয়ে দিবে।আমার সাথে কথা বলিয়ে দিবে।আমি চাই তোমার বিয়ের পরও তোমার সাথে বন্ধুত্বটা চালিয়ে যেতে।
অর্পাঃআচ্ছা আমি যদি তোমাকে বিয়ে করি তাহলে তুমি কি বিয়ের পর আমাকে
আমার ছেলে ফ্রেন্ডের সাথে কথা বলতে দিবে?
উত্তরে অর্পার বন্ধুটি বলেছিল যে “জানি না”
তার মানে সে দিবে না।
যাই হোক ঐ কথাগুলা বলা অর্পার সে ফ্রেন্ড বিয়ে করেছে।
তবে বিয়েতে অর্পাকে দাওয়াত করেনি।
দাওয়াত না করা নিয়ে অর্পা কিছু মনে করে নি।কারণ অর্পাতো পজিটিভ মাইন্ডের মেয়ে তাই ভেবে নিয়েছে যে বন্ধুর বিয়েটা হয়তো বড় করে হয়নি তাই সব ফ্রেন্ডের দাওয়াত করতে পারেনি।
এ সব ব্যাপার না।
তবে একটা কথা….
দাওয়াত করাতো দূরের কথা অর্পাকে তার ফ্রেন্ড একবার জানায়ওনি যে সে বিয়ে করেছে।
(যে ফ্রেন্ড অর্পার বিয়ের পর অর্পার হাজবেন্ডের সাথে কথা বলিয়ে দিতে বলেছে।সে ফ্রেন্ড নিজের বিয়ের কথাটা অর্পাকে জানায়নি।)
৩…অনেকদিন আগের কথা।একটা ছেলে অর্পাকে ভালোবাসি বলতে বলতে প্রায় পাগল হয়ে গেছিল।অর্পা ও ছেলেটার পাগলামির জন্য বাধ্য হয়ে বলেছিল ছেলেটাকে পড়ালেখা শেষ করে একটা জব নিয়ে অর্পার পরিবারের সামনে এসে দাঁড়াতে।সব কিছু ঠিক থাকলে এবং আল্লাহ আর দুই পরিবার রাজি থাকলে ২০১৬ তে বিয়ে করবে।
কোন একটা কারণে অর্পা ছেলেটাকে না বলে দিয়েছিল।
অর্পা সবসময়ই ভাবতো একজন কে সে বলেছিল তাকে ২০১৬ তে বিয়ে করবে।
এখন যদি অর্পা অন্য কাওকে বিয়ে করে নেয় আর ছেলেটা যদি কষ্ট পায় তাহলে সে কখনো সুখি হতে পারবে না।ছেলেটাকে বিয়ে না করলেও ছেলেটার আগে অর্পা কখনো অন্য একজনকে বিয়ে করতে পারবে না।
তবে পাগল প্রায় ছেলেটা ঠিকই ২০১৬ তে বিয়ে করেছে।তবে যার জন্য প্রায় পাগল ছিল তাকে না।অন্য একজনকে।
এতে অর্পা ছেলেটাকে কোন দোষ দেয়নি।দেওয়ার কথাও না।কারণ অর্পাই ছেলেটাকে না বলে দিয়েছিল।তবে অর্পা মনে মনে অনেক খুশি হয়েছিল।অর্পার মাথা থেকে একটা দায়ভার নেমে গিয়েছিল।
আমাদের সমাজে সব সময় মেয়েদেরই দোষ দেখে।আজ যদি ঐ কাজ গুলা অর্পার সাথে না হয়ে কোন ছেলের সাথে হতো।তাহলে ঠিকই মেয়েরা খারাপ হয়ে যেত।
মেয়েরা টাকা চিনে আর কিছু চিনে না।মেয়েরা সম্পর্কের দাম দিতে জানে না এসব কথা শুনতো।