অরুনীমার দিনকাল

অরুনীমার দিনকাল

– আব্বু শুনো।

সকাল আট’টা বেজে পঁয়তাল্লিশ। রফিক সাহেব স্কুলে যাবার জন্য তৈরি হচ্ছেন। তাঁর স্ত্রী রাজিয়া বেগম রান্নাঘরে তারাহুরু করে রান্না করছেন। আজকে ঘুম থেকে উঠতে একটু দেরী হয়ে গিয়েছিলো। রফিক সাহেব এখানকার মাধ্যমিক স্কুলের একজন শিক্ষক। তাঁরা প্রেম করেই বিয়ে করে, লাভ ম্যারেজ। ছোট্ট একটি বাসা। ছোট্ট একটি রাজকন্যা তাদের। তাদের পৃথিবী। রাজকন্যার নাম অরুনীমা। বাবার মত চতুর হয়েছে আর মায়ের মতো লক্ষী। সারাদিন বই খাতা নিয়ে পরে থাকা আর রান্না। এই দুয়ের প্রতি বসবচেয়ে বেশী অরুনীমার আকর্ষণ। মেয়ের ডাক শুনে বাবা রফিক সাহেব দাঁড়িয়ে বললো।

– কি মা?
অরুনীমা নিজের মাথার চুল কুঁচকাচ্ছে। রফিক সাহেব হেসে বললো।
– কি মা? ভুলে গিয়েছো নাকি যে কি বলবে?
অরুনীমা বাবার দিকে তাকিয়ে বললো।
– না আব্বু। আমি ভাবছি তুমি কি করে শিক্ষকতা করো। তোমার সব কিছু মনে থাকে তো? এইযে তোমার ঘড়িটা তোমার হাতে নেই সেই খেয়াল আছে? প্রতিদিনিই তুমি ভুলে যাও কি করে?
রফিক সাহেব হাতের দিকে তাকিয়ে দেখলো। সত্যিই প্রতিদিনের মতো তাঁর আজকেও ঘড়িটা হাতে পরতে আর মনে নেই! হেসে অরুনীমার মাথায় হাত রেখে বললো।
– আসলে ঘড়িটার কথাই মনে থাকেনা শুধু। তাছাড়া কি অন্য কোনো কিছু আমি ভুলি?

অরুনীমা তার বাবার হাতে ঘড়িটা দিয়ে মায়ের কাছে দৌড়ে গেলো। বাড়ি থেকে স্কুলের যাতায়াত সময় দূরত্ব আধ-ঘণ্টা। সাইকেল আছে। তবে রফিক সাহেব হেঁটে হেঁটে যেতেই বেশী পছন্দ করেন। এতে অনেক উপকার হয়। শরীর সাস্থ ঠিক থাকে। সকালের সাস্থকর বাতাস গা’য়ে লাগে। মন ফুরফুরে থাকে। তবে বৃষ্টি হলে মাঝে মাঝে সাইকেল দিয়েই স্কুলে যায় রফিক সাহেব। বর্ষা আসলে রীতিমতো সাইকেল দিয়েই যায়।

সাইকেল সাইকেল করার কারণ আছে। অরুনীমা কদিন হলো সাইকেল চালানো শিখবে বলে বায়না ধরেছে। সাইকেলের যত্ন আর দেখাশোনা তাই অরুনীমাই করছে। অরুনীমার মা তো সাইকেল চালাতে পারেনা। পারে তো বাবা। কিন্তু বাবা অরুনীমাকে সাইকেল চালানো শিখতে দিচ্ছেনা। অনেক কলাকৌশলের আশ্রয় নিলেও কাজ হচ্ছেনা। অরুনীমা বসে বসে ফন্দি আঁটছে। বাবাকে যেভাবেই হোক রাজি করাতেই হবে। ঘরের সামনে ফাঁকা একটু জায়গা আছে। তা দেখে অরুনীমার মনে হলো এখানে একটি ফুলের বাগান করলে মন্দ হয়না। এই আবদারটা বাবা অবশ্যই পূরণ করবে। যাহোক আগে সাইকেলের ব্যাপারটা মিঠিয়ে নেয়া যাক। রফিক সাহেব লাজুক ছেলের মতো অরুনীমার সামনে বসে আছে।

অরুনীমা গম্ভীর ভাব করে বললো।
– আব্বু।
রফিক সাহেব মাথা নাড়িয়ে বললো।
– হ্যাঁ আম্মু বলো।
– দেখো আমি বড় হয়ে গিয়েছি না অনেক? আরও দিনদিন বড় হচ্ছি না?
– হ্যাঁ। তুমি তো আর সারাজীবন ছোট থাকবেনা বড় তো হবেই।
– কিন্তু তোমার তো চোখেই পরেনা আমাকে।
– কি বলতে চাচ্ছো আমি বুঝতে পেরেছি। কিন্তু মেয়েদের সাইকেল চালাতে হয় না।
অরুনীমা মুখ বাঁকা করে বললো।
– কেন হয়না? আমি অনেককেই দেখেছি চালাতে।
– তুমি বড় হও তারপর নাহয় শিখো কেমন?
– আব্বু তুমি খুব পঁচা। আম্মু আমাকে না করেনা তো।
– তোমার আম্মু তোমাকে বেশী ভালবাসে আর আমি কম ওটাই বলবে তো এখন?
– না।
– তাহলে?
– না কিছুনা। আমি একটু ঘুমাবো।

রফিক সাহেব বেরোলেন। অরুনীমার মন খারাপ। আরো মন খারাপ হলো পরেরদিন। কারণটা হলো বাবা সাইকেল বিক্রি করে দিবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সারাদিন কিছুই মুখে তুললোনা অরুনীমা। মায়ের কোন কথাই শুনলোনা। পরে পরে বলতে বলতে সারাদিন কেটে গেলো! রফিক সাহেব রাতে বাজার থেকে ফিরে রাজীয়া বেগমের মুখে এ ব্যাপারটা শুনে তাঁর উপর প্রচণ্ড রাগ হলেন। সারাদিনে কেন বলেনি? অরুনীমা টেবিলে বসে বই পড়ছে। যদিও ক্ষিদায় পেট চোঁচোঁ করছে।

রফিক সাহেব টেবিলের পাশে বসলেন। আবার বসা থেকে উঠে দাঁড়ালেন। তারপর কানে ধরে উঠবস করতে লাগলেন। অরুনীমা মুচকি মুচকি হাসছে বাবার কান্ড দেখে। কিন্তু ক্ষিদায় আর জোর হচ্ছেনা। অনুমতি দিলেন সাইকেল চালানো শিখার জন্য। অরুনীমার সাদানকশা কাজ করেছে।

কদিনের মধ্যে সাইকেল চালানোও শিখা শেষ। এখন পুরোপুরি সে পাক্কা। সামনে সমাপনী পরিক্ষা। পড়ালেখায় বেশ মন দিয়েছে অরুনীমা। ভাল রেজাল্ট করলে বাবা সাইকেল কিনে দিবে নতুন বলেছে…..!

রাজবাড়ি। এক নামেই চেনে সাত গ্রামের মানুষ। বাড়িটি নিয়ে অনেক কথা প্রচলিত আছে। অনেক ইতিহাস আছে। বাড়ির কর্তারা মাঝে মাঝে একটু আধটু বলে কিন্তু পুরোটা একেবারে খোলাসা করে বলেনা। বাড়িতে থাকে তিন ভাই। সবাই বিবাহিত। সবারই সন্তানাদি আছে। প্রথম জনের এক ছেলে এক মেয়ে। দ্বিতীয় জনের দুই মেয়ে এক ছেলে। তৃতীয় জনেরও প্রথম জনের মতো এক মেয়ে এক ছেলে। সবার বড় যিনি, আরিফ আহমেদ। তাঁর ছোট যিনি, সুমন আহমেদ। এবং সবার ছোট যে তাঁর নাম হলো, শামিম আহমেদ। প্রথম জনের সন্তানদের নাম, মিষ্টি, অয়ন। দ্বিতীয় জনের সন্তানদের নাম, হুমাইরা, তাসনিয়া। তারপর অনেক কাহিনী। সন্তান আরেকজন আছে। যার নাম কেউ মুখেও আনতে চায়না।

বাড়ির সবার কাছে সে নামটা এবং নামের মানুষটা মৃত। এবং সবার ছোট ছেলের সন্তানদের নাম, আনিকা ও সৈকত। বাড়ির সবচেয়ে মান্যগণ্য লোকটি মারা গেলো এইতো মাত্র কয়েকদিন আগে। তিন ছেলের মা। এ বাড়ির বিয়ে নিয়ে সব সময়ই গ্রামের মানুষদের ঝুঁক থাকে। মানে সবাই অপেক্ষা করে কবে রাজবাড়িতে বিয়ে হবে। খাওয়াদাওয়া থেকে শুরু করে বিয়ের আয়োজন পর্যন্ত এতো বড় হয় যে। এই বাড়ির বিয়ের অনুষ্টানকে বড় অনুষ্টান নাম দিয়েছে। তাই সবাই অপেক্ষা করে বড় অনুষ্টান কবে আসবে। এখন পর্যন্ত কোন প্রেম জনীত বিয়ে বা লাভ ম্যারেজ কারো হয়নি। তা যদি রাষ্ট্রপতির মেয়ে বা ছেলের সাথেও হয় তাও মানা হবেনা এবং মানা হয়ও না। যদিও বা এই ঘটনা এখন পর্যন্ত ঘটেনি। গ্রামের মূলবাড়ি বা প্রধান বাড়ি রাজবাড়িকেই ধরা হয়। সব বিচারকার্য এই বাড়িতেই করা হয়। যেকোন ব্যাপারে নালিশ দরবার এই বাড়িতেই হয়। যার কারনে বাড়ির ছেলে মেয়েরা সাবধান হয়ে যায় আগেই।

মেঝো ছেলের বড় মেয়ের বিয়ে হয়ে গেলো কদিন আগে। বড় অনুষ্টান করে। প্রায় সাত গ্রামের মানুষ সহ দূর দূরান্ত থেকে মানুষজন এসে খেয়ে গিয়েছে। সুনাম আছে এই বাড়ির শুধু একটি ঘটনা ছাড়া। খুব বেশী অসম্মানের ঘটনা নয় তবুও বংশের গায়ে কালি লাগলো একটু। কাহিনীটা পরে বলা যাবে…!

প্রতিদিন স্কুলে যাবার সময় অরুনীমা খেয়াল করে এক যুবক তাঁকে পিছু পিছু দেখে। একদিন দুদিন করে প্রতিদিন। ছেলেটা সামনে কোনদিন আসেনা। তাহলে অরুনীমা কিছু একটা তো বলতো। চায়ের দোকানে বসে থাকে ছেলেটা। পোশাকের ঠিক নেই চুলের ঠিক নেই। বাড়ি আসার পর কেন জানি ছেলেটার কথা বারবার মনে পরে। আচ্ছা ছেলেটার নাম কি? কেন আমাকে প্রতিদিন পিছুপিছু দেখে? ইত্যাদি অনেক প্রশ্ন অরুনীমার মাথায় ঘুরে।

অরুনীমা স্কুল পেরোলো। এখন আর সাইকেল চালায় না। বাড়িতে মাঝেমধ্যে ইচ্ছে হলে চালায়। কিন্তু আগের মত না।

কলেজের আশেপাশে চায়ের দোকানে চুরি করে চোখ দেয় অরুনীমা। কেন দেয় সে নিজেও জানেনা। শুধু এটুকু বুঝতে পারছে সে মনে মনে ছেলেটাকে খুঁজছে।

হঠাৎ একদিন ছেলেটাকে দেখতে পেলো। ঐ দূরে দাঁড়িয়ে আছে। অরুনীমা কি করবে বুঝতে পারছেনা। কোন কারণ ছাড়াই রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে যদি ছেলেটা কাছে আসে এই আশায়। অরুনীমা অবাক হলো। ছেলেটা সত্যিই আসলো। অরুনীমা বারবার আশেপাশে তাকাচ্ছে। কেউ নেই তো? বুকের মাঝে সাইক্লোন হচ্ছে। ছেলেটা কাছে এসে বললো, আপনার চিঠি। অরুনীমা চিঠিটা হাতে নিতেই ছেলেটা চলে যায়। অরুনীমা কিছু বলার আগেই।

অরুনীমা তাড়াহুড়ো করে বাড়িতে গেলো। বুকের মধ্যে কম্পন উঠানামা করছে। আগে কোনদিন এরকম হয়নি। রুমের দরজাটা লাগালো। জানালা খুললো যেন রুমে আলো আসে।পর্যাপ্ত পরিমাণে। ভয়ে ভয়ে চিঠিটা খুললো। চিঠি খুলে অরুনীমা অবাক। এটা চিঠি না গল্পের পাতা? এত বড় চিঠি হয়? ছেলেটা চিঠিতে সব কিছু লিখেছে। এটা ভেবে অরুনীমা আকাশ ছোঁয়া আনন্দ পাচ্ছে যে তাঁর জন্যও কেউ চিঠি লিখেছে। অরুনীমা পড়তে আরম্ভ করলো। অরুনীমা আরো অবাক হলো। চিঠির শুরুটা ছিলো এমন যে। আমি সিয়াম। তেঁতুলপাড়া গ্রামের রাজবাড়ীর মৃত সন্তান। এটুকু পড়ার পরেই অরুনীমার পুরো চিঠি পড়ার আরো গভীর আগ্রহ সৃষ্টি হয়। খুব মন দিয়ে পড়ছে সে। চিঠির অর্ধেক পড়ে বুঝতে পারলো যে ছেলেটা অসহায় সব কিছু থেকেও। অন্যের কুকর্মের ফল তাঁকে ভুগ করতে হচ্ছে। যে বাড়িতে প্রেম নিষিদ্ধ সে বাড়িতে প্রেমের আগমন করতে চেয়েছিলো। কিন্তু পুরোটাই ছেলেটার জানার বাহিরে ছিলো। এক অজ্ঞাত কারণে আজ সে বাড়ির সবার কাছে মৃত। চিঠির বাকি অংশ পড়ে অরুনীমা এটা বুঝলো যে ছেলেটা তাঁকে সত্যিই অনেক ভালবাসে। সেই স্কুলে যাবার সময় প্রথম দেখা তারপর শুরু। নতুন নতুন প্রেমে পরায় অরুনীমার দিনকাল ভালই যাচ্ছে। ভাবছে ছেলেটাকে কিছু একটা বলা দরকার। ছেলেটা প্রতিদিন কত দূর থেকে আসে একবার অরুনীমাকে দেখার জন্য! এখন তো ফোনের ভালই যুগ। দুজনেরই ফোন আছে। তাহলে কেন নাম্বার আদান প্রধান হচ্ছেনা? কিছুদিন পর সেটাও হয়ে গিয়েছে। অরুনীমা চুপ করে থেকে শুধু সিয়ামের কথা শুনে। নিজের কিছু বলতে ইচ্ছে হয়না। শুধু সিয়ামের কথা শুনতে ইচ্ছে হয়।

বেশ কয়েক বছর পরের কথা। রাজবাড়ীতে প্রতিবছর এক কুস্তি প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। প্রতিবারই এর কোন মূল উদ্দেশ্য থাকে। কোন বছর টাকা কোন বছর সোনা, রুপা। মোটকথা বড় রকমের পুরস্কার থাকে। এবারের পুরস্কার হলো। যে এই কুস্তি প্রতিযোগিতার সেরা হবে মানে চ্যাম্পিয়ন সে রাজবাড়ির অর্ধেকের মালিক হবে। জমিজমা থেকে শুরু করে টাকা পর্যন্ত। সব কিছুরই অর্ধেক পাবে। অরুনীমার বিয়ে হয়েছে আরো কয়েকবছর আগে সিয়ামের সাথে। অরুনীমা অন্তঃসত্ত্বা। সিয়াম জানে এই প্রতিযোগিতার কথা। এবারে সে সিদ্ধান্ত নিলো নিজেই লড়বে। রাজবাড়ীর অর্ধেক মালিক হতে নয়। তাঁর মা, বাবা, বোন চাচাদের মাঝে ফিরে যেতে। তাঁর ভবিষ্যৎ সন্তানের নিজ বাড়ি। যে বাড়ি থেকে অনেক বছর আগে তাঁকে বের করে দেয়া হয়েছিলো। অরুনীমাকে সব বুঝিয়ে বললে সে মানা করতে পারেনি। তবে কুস্তি যেহেতু তাই ভয় হচ্ছে। শুধু বলে, তুমি তো এসব পারোনা। তোমার কাজ এসব না। কোনদিনও কুস্তি খেলোনি। শেষে নিজের শরীরের খারাপ অবস্থা করবে। সিয়াম অরুনীমার হাতে হাত রেখে বলে, বিশ্বাস রাখ। বাকিটা আল্লাহ্‌র হাতে।

রাজবাড়ির সহ গ্রামের গণ্যমান্য লোকজন এখানে ভীড় জমিয়েছে। অনেক দর্শক। আজকে শেষ ম্যাচ। অনেক দোকানপাট বসেছে। সবাই অধীর আগ্রহে বসে আছে। কে হবে রাজবাড়ির অর্ধেক অংশের মালিক? দুজন কুস্তিগির মাঠে প্রবেশ করলো। খেলা শুরু হলো। সিয়ামের দম যায়যায় অবস্থা তবুও ম্যাচ ছাড়ছেনা। খেলা চলাকালীন সিয়াম চিন্তা করলো। আমি বেশ ভালই তো আছি। আর এই কুস্তিগির হলো রিকশাওয়ালা। শরীর সাস্থ খুব ভাল তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। চোখেমুখে ভেসে উঠছে যে তার টাকা পয়সা লাগবেই। কুস্তিগিরের পারিবারিক বর্ণনা খেলার আগেই জেনেছে সে। সুতরাং সিয়াম ভাবলো আমার থেকে বেশী তাঁর ম্যাচটা জেতা উচিৎ। সে ভেবেই সিয়াম ম্যাচটা মাঝপথে ছেড়ে দিয়ে প্রতিপক্ষ কুস্তিগিরের হাত উঁচু করে তাঁকে জয়ী হিসেবে গণ্য করে সিয়াম মাঠ ছাড়ে। কুস্তিগির সিয়ামের দিকে করুণ চোখে তাকালো। তারপর জড়িয়ে ধরলো। হাজার হাজার দর্শক প্রাণভরে সেই দৃশ্য দেখছে। সিয়াম হারার গ্লানি নিয়ে তাঁর কুঁড়েঘরের দিকে রওনা দেয়। ভাবছে অরুনীমা শুনলে বেশ কষ্ট পাবে। কিন্তু বাড়ি গিয়ে অরুনীমার কথা শুনে সিয়াম তাঁকে কুলে করে নিয়ে নাঁচতে ইচ্ছে করছে কিন্তু সেটা আর সম্ভব হলোনা কারণ অরুনীমা গর্ভবতী।

পরেরদিন সিয়ামের দরজায় তাঁর বাড়ির লোকজন! মা বাবা চাচা সবাই এসেছে। সিয়াম ঘরে ঢুকতে বলবে না কি বলবে বুঝতে পারছেনা। বাবা কাছে এসে বুকে টেনে নিলেন। পুরোনো সেই ঘটনার সত্যতা তাঁরা খুঁজে পেয়েছে। অরুনীমাকে দেখে সবাই খুশী হয়েছে। মেয়েটার চোখে মুখে লক্ষ্মীতার ছাপ। কিছুদিন পর অরুণীমা আর সিয়ামের কাঙ্ক্ষিত সন্তান পৃথিবীর মুখ দেখলো। ছোট বাবুকে নিয়ে খেলা করতে করতেই অরুনীমার সারাদিন কেটে যায়। আচ্ছা বাবুদের আদর করতে এত ভাল লাগে কেন? কোন মা তাঁর ছোট্ট বাবুটাকে আদর করছে। এর চেয়ে সুন্দর দৃশ্য আর কি হতে পারে? কোন মা তাঁর ছোট্ট বাবুটা কান্না করলে, উলে বাবালে বাবালে আমার চাঁদমণি সোনামণি কাঁদছে কেন? এরকম করছে। এর চেয়ে সুন্দর দৃশ্য আর কি হতে পারে? অরুনীমাও তাই করছে। সকাল সকাল বাবুটা কান্না আরম্ভ করে দিলো। অরুনীমা কান্না বন্ধ করার চেষ্টা করছে। সেটা দেখে সিয়াম হাসছে। অরুনীমা চোখ বাঁকা করে বললো, হাসছো কেন? সিয়াম বললো, তোমাদের মা মেয়ের কাণ্ড দেখে। অরুনীমা বাবুকে সিয়ামের কুলে দিয়ে বললো, নাও তাহলে তুমি কান্না থামাও বাবুর আর আমি হাসি কেমন ?

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত