উত্তাল

উত্তাল

আমি কলেজ থেকে বাসায় আসছি। এমন সময় দেখলাম সুস্মিতা বাসার ছাদে উঠেছে। কলেজের পাশেই সুস্মিতার বাসা। সুস্মিতা প্রতিদিন ছাদে উঠে কিনা জানি না। তবে আমি যখন দেখতে যাই তখন সুস্মিতা কে ছাদে দেখতে পাই। সুস্মিতা হাত টা নাচিয়ে নাচিয়ে হাটঁতে লাগল। আমি অপলক দৃষ্টিতে থাকিয়ে আছি। সুস্মিতা আমাকে দেখতে পায় নি। আমি গাছের আড়ালে ছিলাম। সুস্মিতা কে আমার খুব ভালো লাগে। সুস্মিতা কে আমি ভালোবাসার চোখে দেখি। সুস্মিতা মেয়েটা একটু রাগি। সুস্মিতা অনেক প্রপোজ পাইছে কিন্তু কারো কথায় রাজি হয় নি। সুস্মিতা একদিন একটা ছেলে কে ঠাস করে চড় মারে। আমি সেইদিন কলেজে যাইতে ছিলাম। তারপর থেকে সুস্মিতা কে আমার অনেক ভয় লাগে। এতো টা ভয় পাই না। একটু একটু। তবে সুস্মিতার মুখের দিকে তাকালে আমি সব ভুলে যাই। কি মায়াবী মুখ। ইশ! যদি চাঁদনি রাতে সুস্মিতার মুখ টা দেখতে পেতাম।

কলেজ থেকে বাসায় আসছি। এমন সময় দেখলাম সুস্মিতা। মনে হচ্ছে কোথাও যাবে। আমিও না হেটে দাঁড়িয়ে থাকলাম। সুস্মিতা আমাকে একবার দেখেছে । খুব ভালো করে চেয়ে নিল। আমার মনে হচ্ছে খুব অবহেলা করল আমাকে। আমিও মন খারাপ না করে দাঁড়িয়ে থাকলাম। সুস্মিতা একটা রিক্সা ডেকে উঠে পড়ল। আমি আর দাঁড়িয়ে না থেকে হাটঁতে লাগলাম। আচ্ছা সুস্মিতা আমাকে এভাবে দেখল কেন? আমি কি ওর থেকে ছোট। তাতো না। বরং সমান সমান হব দুই জন। আচ্ছা আমি চশমা পড়ি দেখে এমন করল। তাতো হবে না। এই টা তো খুব স্বাভাবিক। থাক এসব না ভেবে আমি হেডফোন লাগিয়ে গান শুনতে লাগলাম।

আমার একটা বন্ধু খুব ভালো ক্রিকেট খেলে। আমিও খেলি তবে এতো টা পারি না। একটু একটু। তার সাথে এক জায়গায় খেলতে যাব। আমি তার সাথে রিক্সায় উঠলাম। সামনে কিছু জায়গায় যেতেই সুস্মিতা কে দেখতে পেলাম। সুস্মিতা মনে হচ্ছে কোনো বিপদে পড়ে গেল। ও তাইতো। একটা ছেলে সুস্মিতার ব্যাগ টা টান দিয়ে আমাদের দিকে আসতে লাগল। আমিও রিক্সা চলতি অবস্থায় একটা লাফ দিলাম। তাও আবার ছেলেটির উপরে পড়ে গেলাম। ছেলেটি কে নিয়ে মাটিতে পড়ে যাই। আমি কিছু টা আঘাত পাই তবে এতো টা না। একটু। সুস্মিতা আমার কাছে দৌড় দিয়ে আসলো। আমি লাজুক চোখে তার দিকে তাকালাম। সুস্মিতা বুঝতে পারছে আমি লজ্জা পাচ্ছি। সুস্মিতা কে ব্যাগ টা দিলাম। সুস্মিতা একটা মুচকি হাসি দিল। তারপর সে চলে গেল।

কলেজে যাচ্ছি সুস্মিতা কে দেখতে পেলাম রাস্তা দিয়ে আসছে। আমিও গাছের আড়ালে চলে আসলাম। আমি যে জায়গায় প্রতিদিন বসি ওই জায়গায় সুস্মিতা গিয়ে বসলো। আমি খুব অবাক হলাম। এখানে বসার কি আছে। আমি ১০ মিনিট অপেক্ষা করলাম। সুস্মিতা চারদিকে তাকাচ্ছে। আমার মনে হচ্ছে কারো জন্য অপেক্ষা করছে। আমি একবার ভাবলাম আমার জন্য। ধ্যাত ও কেন আমার জন্য অপেক্ষা করবে। নিজে একটা থাপ্পড় দিলাম। আমি এখানে দাঁড়িয়ে

না থেকে গাছের আড়াল থেকে চলে আসতে যাব। এমন সময় সুস্মিতা আমাকে দেখে ফেলল। সুস্মিতা আমাকে হাত দিয়ে ডাক দিল। আমি তো ভয়ে নাই। সুস্মিতা যদি আমাকে বলে সেখানে আমি কি করছিলাম তখন আমি কি বলব। না আমি ভয় পেলে চলবে না। সুস্মিতার কাছে যেতেই সুস্মিতা আমাকে বলে ” চুর আর কত দিন আমাকে এভাবে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখবে? কাছে আসতে পার না। আমি গলা দিয়ে হালকা ছেপ ঢুকাইলাম য়হ্য। তারপর সাহস আনলাম। আমি একটা হাসি দিলাম। তারপর বললাম ” কই নাতো। ” সুস্মিতা বুঝতে পারছে আমি ভয় পাইছি। সুস্মিতা আমাকে বলে ” এভাবে ওই আমাকে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখবে। একদম অন্য কোনো মেয়ের দিকে নজর দিবে না। মাঝে মাঝে আমার সামনে আসবে। ” আমি তো পুরাই খুশি। যাক অবশেষে সুস্মিতা আমাকে বুঝতে পারল।

সুস্মিতা আমাকে অনেক খুঁজেছে। কিন্তু কোথাও পায় নি। আসলে আমি তো কলেজে ওই যায় নি সে আমাকে পাবে কি করে। আমার এক বন্ধুর কাছ থেকে আমার নাম্বার টা নিল। সুস্মিতা আমাকে একটা ফোন দিল। প্রথম বার দিতেই আমি ধরে ফেলি। সুস্মিতার নাম্বার আমি চিনি। তাই ধরেই আমি সুস্মিতা বলে একটা ডাক দিলাম। সুস্মিতা খুশি হয়ে বলে আমার নাম্বারও তোমার কাছে আছে। আমি একটু হাসলাম তারপর বললাম ” হ্যা।

সুস্মিতা আমাকে রাস্তায় আসতে বলে। আমি ১০ মিনিট পর সেখানে যাই। সুস্মিতা কে আমি কোথাও দেখতে পাই নি। সুস্মিতা আমাকে অবাক করে পিছন থেকে আসে। এসে আমাকে নিয়ে যায় একটা গাছের ছায়ায়। সেখানে নিয়ে যাওয়ার পর ব্যাগ থেকে খাবার বের করে আমাকে খাইতে বলে। হিহিহি। কি পাগল মেয়ে। আমি কি বলছি আমার জন্য খাবার করে নিয়ে আসতে। তারপর আমি খেতে লাগলাম। খুব ভালো হয়েছিল। খেতেও মজা। সুস্মিতা হাসছে আর আমাকে দেখছে।

আমি কাল আমার মোবাইল টা বন্ধ রেখেছিলাম। সুস্মিতা আমাকে ফোন দিয়েছিল কিন্তু কোথাও খুঁজে পায় নি।
আমি রাস্তা দিয়ে হেঁটে হেঁটে কলেজে যাচ্ছি। এমন সময় দেখি সুস্মিতা আমাকে পিছন থেকে ডাকছে। এসেই আমাকে বলে ” তোমার মোবাইল কই? তোমাকে কত পাগলের মত করে খুঁজেছি তোমার কোনো ধারণা আছে।” আমি আমতা আমতা করে বললাম ” কেন? ”

সুস্মিতা এবার রাগ করে বলে ” তোমার মাথার চুল কিন্তু একটাও রাখব না। সব কিছু ছিঁড়ে ফেলব। আমাকে তো চিন না। আমাকে টেনশনে রাখলে তোমার টেনশনের কারণ কিন্তু আমি হয়ে দাঁড়াব। ” আমি ভয় পেয়ে বললাম ” আর এমন হবে না। এবার আমাকে মাফ করে দেও। আমার ভুল হয়েছে। আসলে আমার মোবাইলের ব্যাটারি নাই। ব্যাটারি কিনার টাকাও নাই। মাসের শেষের তারিখ তো তাই টাকা নাই। সুস্মিতা হাসি দিয়ে ব্যাগ থেকে ৫০০ টাকা বার করল। আমি অনেক না করলাম তবুও আমাকে দিল। আমি লজ্জাবোধ করলাম। তারপর বললাম ” ৪ তারিখ দিয়ে দিব। ” সুস্মিতা রাগি মুখ দেখিয়ে বলে দিতে হবে না। এখন থেকে প্রতিমাসে তোমাকে আমি ৫০০ টাকা দিব। আমি তো মনে মনে হাসলাম মেয়েটা এতো ভালো কেন। হিহিহিহি।

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত