রিহান খুব ক্লান্ত। সারাদিন’ই দৌড়াদৌড়ির উপরে ছিলো। ফ্রেশ হয়ে খাটে শুয়ে পরেছে। ক্লান্ত থাকার কারণে ঘুম চোখে আসতে দেরি করলোনা। ঠিক তখনি ফোন আসলো। ইচ্ছে হচ্ছেনা ফোনটা ধরতে তবুও কারো দরকারিও হতে পারে। এভেবে ফোনটা ধরলো। মেয়েলী কণ্ঠ, তার উপর অচেনা।
. আপনাকে তো চিনতে পারলাম না?
. জ্বী চেনার কথাও নয়।
. অযথা কথা বলা পছন্দ করিনা। কে আপনি? আর কিসের জন্য ফোন দিয়েছেন?
. আমি বৃষ্টি।
. দুঃখীত, চিনতে পারলাম না। অনেক ঘুম পেয়েছে ঘুমাবো। শুধু শুধু প্যাঁচাল পাড়ার সময় নেই। খোদা হাফেজ।
বলেই ফোন কেটে দিলো রিহান। ফোন সাইলেণ্ট করে। কাল অফিস নেই। তাই হাত পা ছেড়ে দিয়ে ঘুমিয়েছে। সকালে রিহানের মা রিহানকে ডেকে বলে,
. কিরে তোকে কাল বৃষ্টি ফোন দিয়েছিলো?
মায়ের কথাটা শুনে চোখ বড় করে তাঁকিয়ে,
. হ্যা? কেন? আর কে ঐ মেয়ে? আর তুমিইবা কেন জিজ্ঞেস করছো? তুমি কি চেনো?
. উফ এক সাথে হাজার প্রশ্ন করার অভ্যাসটা তুর এখনো যায়নি। আর যেহেতু জিজ্ঞেস করছি সেহেতু চিনি’ও নিশ্চয়।
. কে মেয়েটা?
. বৃষ্টি।
. হ্যা নাম বলেছিলো। কিন্তু তুমি কিভাবে চেনো?
.ওর সাথেই তো তুর বিয়ের কথা চলছে।
কথাটা শুনে রিহান আকাশ থেকে পড়লো।
. কিহ? আমার বিয়ে? আর আমি জানিনা? তুমি জানোনা আমি বিয়ে করবোনা? তারপরেও কেন এসব করছো?
. তুর কাছে একটা আবদার করবো দিবি?
. কি বলো? আবদার? আবার আমার কাছে? আমার কি সে ক্ষমতা আছে মা?
. হ্যা, তুই ছাড়া তো আর আমার আরেকটা ছেলে নাই যে তাঁর কাছে করবো।
. জানটা প্রস্তত মা। কিন্তু বিয়ে করার কথা বলোনা। এভাবে আছি ভালো আছি। বিয়ে যে কি প্যারা তা তুমি জানোনা?
. নাহ রে কিছু না। আমি যাচ্ছি আমার রুমে। তুই রীহানাকে (ছোট বোন) নিয়ে খেয়ে নে।
মায়ের কথায় যে কষ্টের পাহাড় মাঁখা। তা বুঝতে অসুবিধে হলোনা রিহানের। মায়ের একটা আবদারই যদি না রাখতে পারে তাহলে সে কিরকম সন্তান। হোক বিয়ে প্যাঁরাময় । মায়ের জন্য মরতেও রাজি আছি। ভেবে সে মা’কে বলে দেয় যে বিয়ে করবে আপত্তি নেই। এর পরে রিহান মেয়েও দেখেনি। কথাও বলেনি ফোনে। বিয়ে হয় স্বাভাবিক ভাবেই। রিহান বাসর রাতে বলে দেয় যে মা’র আবদার ছিলো বলেই বিয়ে করেছে। তবে যতটুকু পারবে স্ত্রীর মর্যাদা দিবে। বিয়েতে তাঁর এলার্জি আছে। সে মানে বিয়ে মানেই প্যাঁরাময়। বৃষ্টি মনে মনে ভাবে, স্বামীর মনটা আগে চুরি করতে হবে। তারপর স্ত্রীর মর্যাদা না দিয়ে যাবে কোথাই। তাঁরপর থেকেই সে উঠেপড়ে লেগে পড়ে স্বামীর সেবায়। রিহানের সব কাজ প্রায় বৃষ্টিই করে দেয়। তাঁর যে একটা বউ আছে তাও বুঝতে দেয়না। মানে কোনরকম প্যাঁরায় তাঁকে রাখেনা।
. আচ্ছা তুমি আমার সব কাজ করো কেন?
. তো কার সব কাজ করবো?
. জানিনা, তবে আমার কাজগুলো না করলে খুশি হবো। আমি অলস হয়ে যাচ্ছি নিজের কাজ নিজে না করতে পেরে।
. অলসতার কি আছে? আপনিও তো সারাদিন অফিস করেন।
. হুম তবুও।
কিন্তু রিহানের সেবা করা সে অভ্যাহৃতই রাখলো। কোন কিছু বলতে হয়না। বলার আগেই করে দেয়। কোন শার্টের সাথে কোন ঘড়ি পড়বে, কোন টাই পড়বে, সময় মতো চা বানিয়ে দেয়া, সব কিছু।
. এই মেয়ে তোমাকে এতো কাজ করতে কে বলে?
. কেউ না তো।
. তাহলে করো কেন?
. ভালো লাগে তাই। তাছারা সারাদিন বসে থাকতে আমারও ভালো লাগেনা।
. আজিব মেয়ে তুমি।
. কিছুটা।
রীহানা আর বৃষ্টির মধ্যে ভালই পিরিত চলতে থাকে। ভাবী,ননদের যা হয় আরকি মিলে গেলে। একদিন রীহানা রিহানের কাছ থেকে টাকা চাইলো,
. ভাইয়া কিছু টাকা দাওতো।
. ড্রয়ারে কিছু চকলেট আছে খেয়ে চলে যা টাকা নেই।
. আজব, আমি চকলেট খাওয়ার জন্য টাকা চেয়েছি নাকি?
. তাহলে মেডাম কিসের জন্য?
. ঘুরতে যাবো কাল ভাবীকে নিয়ে।
. কিহ? কেন রে তুর বান্ধবীদের কি অভাব পড়েছে?
. হ্যা পড়েছে,, নিজের বউটাকে তো একটুও সময় দাওনা। কাল শপিং এ যাবো আমরা।
. কতো লাগবে?
. যাবার সময় দিয়ে দিয়ো এখন যাই সোনা ভাই আমার।
. অতো পাম না দিলেও টাকা দেই।
. তাই? আমি কি সবসময় পাম দেই?
. ওরে বাবা, এখন কাঁদবার অভিনয় করবেন নাকি? যাহ তো টাকা পেয়ে যাবি।
. লাগবেনা তোমার টাকা যাও।
হিহি পাগলী ভালো করেই জানে তাঁর ভাই ঠিকই টাকা দিবে। একটু ইয়ে করলো আরকি। সকালে টাকা নিয়ে দুজন বাহিরে বেরোয়। দুশ্চিন্তায় পড়ে যায় রিহান। তাই ফোন করে দাঁড়াতে বলে রিহান নিজেও ওদের সাথে যায়।
. কি ব্যাপার ভাইয়ু? আমি বেরোলে তো তুমি কখনোই আমার সাথে আসোনা। সেই ছোটবেলা থেকে। আজ নিজের বউ আছে না? হুউ হুউ?
. দেবো এক থাপ্পড় অতো বেশি বুঝিস কেন? আমারও কিছু কেনার দরকার তাই ভাবলাম তোদের সাথেই করি।
. হুম ভালই হয়েছে আজকে যা বলবো সব কিনে দিতে হবে না করলে খবর আছে।
. অতো টাকা তো বইন সাথে নাই।
. হা হা ক্রেডিট কার্ড আছেনা?
রিহানেরও কিছু কিনে দেয়া হয়নি রীহানাকে সবসময় টাকাই দেয়। বৃষ্টির খুব ভালো লাগে রীহানার তাঁকে নিয়ে পাগলামো, ভাবী এটা করবো চলো, ওটা করবো চলো, আইস্ক্রিম খাবো, ফুচকা খাবো, ইশ দেবর থাকলে মনে হয় আরো বেশি ভালো হতো। মনে করে নেয়, রীহানাই ননদ, রীহানাই দেবোর। পাগলীটার বিয়ে হয়ে গেলে কি হবে? এসব ভাবতে ভাবতে বৃষ্টি ভাবনার জগতে হারিয়ে গিয়েছে প্রায়।
. ঐ ভাবী? কোথায় হারিয়ে গেলে?
. কই? কোথাও না।
. দেখোতো এই শাড়িটা সুন্দর না?
. হুম খুব সুন্দর, তোমায় খুব মানাবে।
. আরেহ আমি শাড়ি দিয়ে কি করবো? তোমার জন্য।
. অনেক দামী তো।
. কেন আমার জন্য হলে বুঝি দামী হতোনা? পর করো কেন আমাদের?
. আরেহ না কি বলো?
. তাহলে? তাছারা জীবনে আরেকবার ভাইয়া তোমাকে নিয়ে বেরোয় কিনা সন্দেহ যা কিনার কিনে ফেলো।
. আমার এতো কিছু লাগবেনা। তুমি কেনো আমি সব পছন্দ করে দিচ্ছি।
রিহানের খুব ভালোই লাগছে তাঁদের কথাবার্তা শুনে। অনেক কেনাকাটা করলো সবাই। মানে রীহানা কিনলো তাঁর ভাবীর জন্য। আর ভাবী কিনলো তাঁর ননদের জন্য। মাঝখানে রিহান একা তাঁদের বিল পে করেই চলেছে।
. ভাইয়া তুমি কিছু কিনলেনা যে?
. আরেকদিন কিনে নিবো আজ বাসায় চল।
. আরে তোমার সব টাকা আমি দিবো জাষ্ট তোমার মানিব্যাগ আর ক্রেডিট কার্ড আমার দায়িত্বে দিয়ে দাও।
. নারে কিছু কিনবোনা। চল যাই।
. ভাইয়া।
. আবার কি?
. বেশি কিনে ফেললাম নাকি আমরা?
. ওরে পাগলী আমার আর কে আছে রে যে কিনবে? তুই’ই তো কিনবি। আর তুর ভাবিই তো এরকম করে বলেনা। চল বাসায় যাবো।
. উহু আমি যাবোনা।
.মানে কেন?
. আগে তুমি কিছু কেনো।
রিহান আর পারলোনা। তাঁকে দুটো পাঞ্জাবি পছন্দ করে দিলো দুজন। বাসায় এসে হটাৎ রিহান অসুস্থ হয়ে পড়লো। অনেক জ্বর উঠে। ডাক্তার বাসায় এসে দেখে যায়। কিছু ঐষধ লিখে দিয়ে যায়। সেগুলো খেতে থাকে। কিন্তু জ্বর তো কিছুতেই কমছেনা। বৃষ্টির চোখে ঘুম নেই। সারারাত জেগে রিহানের কপালে পানি ঢালে। রিহানের পায়ের কাছে কোথাও বসে থাকে সারারাত। ঘুমুয়নি একদিন দুদিন করে এক সাপ্তাহ। রিহান লক্ষ করলো বিষয়টা। রাত মনে হয় বারোটার উপরে। রিহানের হটাৎ ঘুম ভাঙ্গে যায়। দেখে বৃষ্টি নামাজ পড়ছে। দোয়া করছে তাঁর জন্য আল্লাহর কাছে। আর কান্না করছে। বৃষ্টির নামাজ শেষ হলে যখন দেখলো রিহান জেগে গিয়েছে,
. আরে আপনি সজাগ কেন? কখন ঘুম ভাঙ্গলো?
. মাত্রই, তুমি ঘুমুওনি কেন?
. এমনিই, আপনার জ্বর, রাতে কখন কি প্রয়োজন হয় ভেবে অন্য রুমে যায়নি।
. আমার পাশেও তো শুতে পারতে?
. ভাবলাম আপনার ঘুমের অসুবিধে হবে। এমনিতেই আপনি অসুস্থ।
. তাই বলে ঘুমাবেনা?
. একদিন না ঘুমালে কিছু হয়না।
. মিথ্যে বলো কে? ৮দিন ধরেই তুমি জেগে থাকো। দিনেও তো ঘুমাওনা। তুমি তো অসুস্থ হয়ে যাবে।
. আরেহ কিছু হবেনা। আপনি ঘুমান।
. আমি কিন্তু মা’কে ডাক দিবো এখন যদি পাশে এসে না ঘুমাও।
. আরেহ এতো রাতে মা’কে ডাকলে তো দুশ্চিন্তা করবে। মনে করবে আপনার, কিজানি…
. হুম, কি করবে এখন?
. আচ্ছা বাবা, আমি ঘুমুচ্ছি। মা’কে ডাকতে হবেনা।
বৃষ্টি গিয়ে রিহানের পাশে শুয়ে ঘুমিয়ে পড়লো। রিহান ভাবে, বিয়ে মানে কি শুধুই প্যাঁরা? কই বৃষ্টি তো কোনদিন প্যাঁরা দেয়নি। তাহলে কেন বৃষ্টিকে দূরে দূরে রাখি? এসব ভেবে বৃষ্টির দিকে তাঁকালো রিহান। ভাবে, মেয়েটা আমার স্ত্রী। কিন্তু কখনো এই মেয়ে ছাড়া ডাকই দেয়নি। রুমের লাইটের আলোতে বৃষ্টির মুখটা সত্যিই অন্যরকম লাগছে। সারারাত দেখতেই ইচ্ছে করছে। সকালে উঠে বৃষ্টি দেখতে পায় রিহান তাঁর হাত ধরে ঘুমিয়ে আছে। ইচ্ছে হচ্ছেনা হাতটা ছাড়িয়ে আনতে। তবুও ছাড়িয়ে আনে। হয়তো ঘুমের মধ্যে ভুলে ধরে ফেলেছে। জ্বর কমতে থাকে। কিছুদন পর একেবারেই আর জ্বর থাকেনা। কিন্তু বৃষ্টির প্রতি জ্বরটা রিহানের বেড়েই চলেছে। নানা অজুহাতে বৃষ্টির কাছে যাওয়ার বাহানা। বৃষ্টিরও অনেক ভালো লাগে ব্যাপারটা। মনে হচ্ছে জামাই’টা আমার পিছনে পড়েছে। পড়বেই না কেন? আমার পিছনেই তো পড়বে।
. আচ্ছা তোমার নাম বৃষ্টি হলো কেন?
. বাবা বলেছে, আমি যেদিন জন্মগ্রহণ করেছিলাম। সেদিন সারারাত, সারাদিন বৃষ্টি হয়েছিলো। সেখান থেকে সবাই বৃষ্টি বৃষ্টি করতে করতে নাম বৃষ্টি হয়ে গেলো।
. হিহি অনেক মজার কাহিনি তো।
. হুম, আপনার নাম রিহান হলো কিভাবে?
. আমারটা অদ্ভুত প্রায়, দাদার নাম ছিলো রিয়াজ, বাবার নাম, হারিস আর মা’র নাম নবিতা। সব নামের ফার্স্ট লেটার দিয়ে রিহান হয়ে গিয়েছে।
. হিহি আসলেই অদ্ভুত।
আস্তে আস্তে তাঁদের সম্পর্ক গভীর হতে থাকে। তবে ফিজিক্যালি বা শারীরিক ভাবে নয়।
(২)
সকালে ঘুমের চোখ খুলতেই দেখে বৃষ্টি যে রিহান তাঁকে জড়িয়ে ধরে আছে। বৃষ্টির আবার উঠে রিহানের জন্য চা বানাতে হবে। কিন্তু আজ চা বানাতে ইচ্ছে করছেনা। রিহানের বুকের মাঝেই হারাতে চায় সে। কিন্তু উঠে যদি দেখে চা নেই তাহলে তো রাগ করবে। এভেবে সরে আসতে চাইলো বৃষ্টি। কিন্তু রিহান আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।
. এইযে মিষ্টার শুনছেন?
. হুউউউম।
. ছাড়েন না কেন আমাকে? চা বানাতে হবেনা?
. আজ চা খাবোনা। চুপ করে শুয়ে থাকো তো।
. আপনি ঘুমান। আমাকে ছাড়েন।
. এখনি না উঠলে কি হয়না?
. না হয়না। ছাড়েন তো।
. আচ্ছা আমি ছাড়বোনা দেখি তুমি কি করতে পারো।
.কি করতে পারি দেখবেন?
. হুম।
রিহানের কপালে বৃষ্টির ঠোঁটের ছোঁয়া।
. এবার ছাড়া যায়না জনাব?
. না আবারো দেখতে চাই তুমি কি করতে পারো আমি ছাড়বোনা।
. ইশশ, হয়েছে এবার ছাড়েন।
. আমার যে ইচ্ছে করছেনা।
. প্রতিদিনিই ইচ্ছে করবেনা। ছাড়েন তো।
. আরেকটা, তাহলে ছেড়ে দিবো ফাইনাল একেবারে বিদাই।
. ঐ কি বললেন আপনি? একেবারে বিদাই মানে?
. মানে আজকের জন্য।
. পারবোনা।
. আমিও ছাড়বোনা।
. ছাড়া লাগবেনা।
. তাহলে চুপ করে শুয়ে থাকো আর কোন কথা বলবেনা।
বৃষ্টি মনে মনে বলে, আমার কি ইচ্ছে হচ্ছে নাকি উঠতে হু। সারাদিন ধরে রাখলেও না। কোন মেয়েই চায় স্বামীর সোহাগ ছেড়ে উঠতে। আর আমরা দেরি করে ঘুম থেকে উঠলে মা আরো খুশিই হবেন। উনি তাহলে নাতীনের মুখ শীগ্রই দেখতে পাবেন। এসব ভেবেই নিজেই নিজের কাছে লজ্জা পেলো বৃষ্টি। ইশ কি শরমের কথা। তাই অজান্তেই রিহানের বুকে মাথা লুকালো আবার।
. কি হলো? মুখ লুকাচ্ছো কেন?
. কিছুনা।
. বলো।
. বলবোনা। আমার শরম করে।
. তাহলে মুখ লুকিয়েই থাকো।
. থাকবোনা।
. তাহলে যাও চা বানিয়ে নিয়ে আসো।
.
চা বানিয়ে আনার পর
. চা এতো মিষ্টি হলো কিভাবে?
. মনে হয় একটু বেশিই চিনি পড়ে গিয়েছে।
. নাহ, ঐটা তোমার হাতের গুণ।
. ব্যাপার কি জনাব আজ অতো তেল কেন?
. সত্যি কথা বললেই তেল দেয়া হয়। যাও আর কিছু বলবোনা।
. বাহ, ভালই রাগতে পারেন তো।
. তো তোমার কি মনে হয়? আমার রাগ নেই?
. নাহ তা মনে হয়না।
. ওহ আচ্ছা ভালো।
অতঃপর রিহেনের সত্যিই রাগ উঠে। যতটুকু সম্ভব বৃষ্টির থেকে দূরে থাকে। প্রয়োজন পড়লেও কথা বলেনা নিজ থেকে দূরে থাক। বৃষ্টি বিভিন্ন কথা লম্বা করতে চাইলেও রিহান কথা ছোট করে বলে। বাইরে থেকে খেয়ে আসে এখন। বৃষ্টির রান্না খাওয়া থেকে বিরত থাকে নানা অজুহাতে। অফিস থেকে লেইট করে বাসায় ফিরে। বৃষ্টি ফোন দিলে “আমি একটু ব্যাস্ত আছি পরে ফোন দিচ্ছি” বলে কেটে দেয়। সবকিছু স্বাভাবিক থেকেও যেন কিরকম অস্বাভাবিক শুন্যতা দেখা দেয়। বৃষ্টিকে একদমিই বিরক্ত করেনা। এমনকি এখন আলাদা কক্ষে থাকে রিহান। বৃষ্টি এনিয়ে কিছু বলতে পারেনা। রিহানের এভাবে বৃষ্টিকে এড়িয়ে চলাতে বৃষ্টির অনেক কষ্ট হয়। আসলে আপন মানুষদের কষ্ট দেয়ার সবচেয়ে বড় উপায় হলো এড়িয়ে চলা। এর চেয়ে ভালো আর উপায় হতে পারেনা। এর জন্য রিহানও কষ্ট পাচ্ছে। কিন্তু মন থেকে না করলেও জেদ থেকে করছে। যাকে বলে নীরব কষ্ট। কিছু না করেই অনেক কিছু করা যায় এই উপায়ে। বৃষ্টি আসলেই আর সহ্য করতে পারছেনা আর। বুক ফেটে কান্না পাচ্ছে। ভাবে কি দরকার ছিলো ঐ কথাটা বলার। দোষ তো আমরই। যখন রিহান বসে টিভি দেখে তখন বৃষ্টি সেখানে যাওয়ার পর। বৃষ্টির পছন্দের চ্যানেল দিয়ে রিহান সেখান থেকে চলে আসে আস্তে করে। আগের মতো হয়না আর রিমোট নিয়ে খুনসুটি। এখন তো রিহান চা খাওয়াটাও বন্ধ করে দিয়েছে। চা করে দিয়ে গেলেও বলে রেখে যাও পরে খেয়ে (পান করা) নিবো। কিন্তু আর খায়না এভাবেই থাকে। রাত করে বাসায় ফিরে বিদায় এসেই শুয়ে পড়ে অন্য কক্ষে। বৃষ্টি জেগে থাকলেও কখন রিহান কখন এসে শুয়ে পড়ে টের পায়না। ফ্রেশ হতেও খুব অল্প সময় নেয়। নিজের খেয়াল নিজে খুব ভালো করেই নিতে পারে রিহান। রিহানের কাপড়-চোপড়ও আর ধুয়ে দিতে হয়না। রিহান নিজেই ধুয়ে নেয়। আজ সে রিহানের কক্ষের সামনে বসে আছে। অনেক রাত হলো রিহান আসেনা। ফোন’টাও বন্ধ। একসাথে টেনশন,কষ্ট সব হচ্ছে। রিহান আসার পর যখন নিজের কক্ষে প্রবেশ করতে যায় তখন দেখতে পায় বৃষ্টি বসে আছে। রিহানকে দেখেই বৃষ্টি কান্না শুরু করে দেয়।
. আরে কান্না করছো কেন?
. আমি সরি তো প্লীজ।
. আরে বাবা সরি কিসের জন্য? তুমি তো কিছু করোনি।
এবার বৃষ্টি পায়ে পড়তে দেরি করলোনা। কিন্তু রিহান আটকালো।
. আরে বাবা পায়ে পড়ার কি হলো? এতো রাত হয়েছে এখনো ঘুমুওনি কেন?
. প্লীজ আমি আপনার পায়ে পড়ি তবুও আর এভাবে থাকবেন না।
. আমি আবার কি করলাম? তোমাকে কিছু বলেছি নাকি? আচ্ছা বাবা বলে থাকলে সরি এইযে কান ধরছি। এখন যাও ঘুমাও রাত হয়েছে।
. আমি আর পারছিনা। অনেজ কষ্ট হয় আমার প্লীজ।
. কেউ কিছু বলেছি নাকি তোমাকে?
. কেনো সব বুঝেও না বুঝার অভিনয় করছেন?
বৃষ্টির চোখে এভাবে কান্না দেখে রিহানের চোখেও মুহুর্তের মধ্যে পানি চলে আসলো। আর রাগ, অভিমান, জেদ কিছুই ধরে রাখতে পারলোনা। নিজের হাতে বৃষ্টির চোখে পানি মুছে দিলো।
. আর এভাবে কাঁদবেনা। আমার সহ্য হয়না। যাও গিয়ে শুয়ে পড়ো।
. আমার সাথে কথা বলেন না কেন? এইটুকুতেই এতো কষ্ট দিবেন?
. কখন কথা বলিনি? সব সময়ই তো বলি।
. সারাদিনে ১০টা কথাও হয়না। আমার খুব কষ্ট হয়।
. হুম আর করবোনা।
. রাত করে বাসায় ফিরেন কেন? সবাই কতো টেনশন করেনা?
. আসলে বাসায় থাকলেই ইচ্ছে হবে তোমার সাথে কথা বলতে, দুষ্টুমি করতে, তাই কিছুটা সময় বাইরে থাকি আরকি।
. কেউ মানা করেছে করতে? বাইরের খাবার খেয়ে চ্যাহারার কি অবস্থা করেছেন খেয়াল করেছেন।
. ব্যাপার নাহ এসব।
. এখনো রাগ আমার উপর?
. নাহ কোন রাগ নেই।
. খাবার রেডি আছে চলেন খাবেন।
. নাহ আমি খেয়ে এসেছি ।
. তবুও খাবেন, আমি অপেক্ষা করছি আপনি ফ্রেশ হয়ে আসেন।
.
বৃষ্টি খাবারের টেবিলের পাশে বসে অপেক্ষা করছে। রিহান কিছুক্ষন পর ফ্রেশ হয়ে আসলো। বৃষ্টি খাবার বেরে দিলো। বৃষ্টিও যে খায়নি তা বুঝতে অসুবিধে হলোনা রিহানের।
চোখের কোণে এখনও কিরকম কান্নার আওয়াজ। রিহান উঠে বৃষ্টির চোখের পানি আবারও মুছে দিলো। বৃষ্টি রিহানের চোখে তাঁকিয়ে আছে। সত্যিই রিহান বৃষ্টির চোখের পানি সহ্য করতে পারেনা। কিরকম কষ্টের সূরে রিহান বলে, “দেখো তোমার চোখে বৃষ্টি আমি সহ্য করতে পারিনা বলেছি না? উত্তরে বৃষ্টি কিছুই বলতে পারলোনা।
. তুমি খাচ্ছোনা কেন? আমার খিদে নেই তাও খাচ্ছি আর তুমি… ?
. নাহ আমি খাবোনা আমার কিছু শর্ত না মানলে।
. এটা কিরকম কথা হলো? আচ্ছা আজ রাতে কারোরি খেতে হবেনা ঘুমাবো।
. একবার শুনবেন তো নাকি? তার আগেই রাগ করে বসে আছেন।
. আচ্ছা বলো তোমার কি কি শর্ত..?
. এক, আমাকে সবসময় বিরক্ত করতে হবে, সময়-অসময় সব সবসময়। তুমূল ঝগড়া হলেও আপনি বিরক্ত করবেন।
. আচ্ছা পরেরটা শুনি।
. রাগ অভিমান যাই হয়। কথা না বলে দূরে থাকবেন না। আর অন্য রুমে ঘুমানোর কথা চিন্তাও করতে পারবেন না।
. বেশ কঠিণ শর্ত, আচ্ছা এর পরে?
. আপনার সব দ্বায়িত্ব আমার হাতে তুলে দিতে হবে। কাপড়-চোপড়ে হাত দিতেই পারবেন না।
. একটু বেশি হয়ে যাচ্ছেনা? এর পর?
. হোক, প্রতিদিন একটা করে গোলাপ চাই। মিস হলে আমি কিন্তু খাবোনা। আপাদত এটুকুই, পরে আরো জানানো হবে।
. যদি না মানি তাহলে খাবেই না!!?
. নাহ খাবোনা।
. যদি থাপ্পড় দিয়ে খাওয়াই?
. খাবোনা।
. আদোর করে..?
. তাও না।
. তাহলে আমি মানতে পারলাম না দুঃখীত।
.
অতঃপর দুজনে না খেয়েই শুয়ে পড়লো। বৃষ্টি মনে মনে বলে,কিরকম পাষান মন রে বাপ। বলে আমার কান্না সহ্য করতে পারেনা। আর আমি সেই সুযোগে অতো কিছু বললাম কই কি। আমি তো খেলামই না উনিও খেলোনা। ইশশ খিদায় পেট চৌচির করছে। আর রিহান মনে মনে বলে, মেয়েটাকে একটু বেশিই কষ্ট দিয়ে ফেলেছি মনে হয়। একয়দিন তো কষ্ট পেলোই, আজ আবার সারাদিনে কিছুই খায়নি। শর্তগুলো তো আমি মনে মনে মেনেই নিয়েছি। রাত তো প্রায় দুটো বেজে গিয়েছে। আমার রাতে খেয়েও যা খিদে পাচ্ছে আর ওর না জানি খিদায় পেট কি করছে। ধুরু একটু বেশিই করে ফেলেছি। কি করা যায়? ভাবতেই তাঁর মাথায় বুদ্বি হলো বৃষ্টিকে নিজের হাতে খাইয়ে দিলে সব কষ্ট দূর হয়ে যাবে মুহুর্তেই। এভেবে রিহান উঠে আবার রান্নাঘর থেকে খাবার আনতে গেলো। বৃষ্টি ভাবে, খিদায় কি চুরি করে খেতে গেলো নাকি? আমার কথা একটুও ভাবলোনা? কথাগুলো মনের ভেতরে শেষ করার আগেই কে জেন খুব মিষ্টি করে বৃষ্টিকে “বউ” বলে ডাক দিলো। বৃষ্টি চমকে যায়। আর কে হবে রিহান ছাড়া। ঘুরে তাঁকাতেই দেখে লাইট অন করা আর রিহান খাবার হাতে নিয়ে বসে আছে। বৃষ্টি কিছু বলার আগেই রিহান বলে উঠলো, “সরি কমলাবতী, তোমার সব শর্ত মানতে আমি রাজি, আচ্ছা কানে পরে ধরছি, আগে খেয়ে নাও একটু এদিকে এসে বসো আমি খাইয়ে দিবো” কথাটা শুনে বৃষ্টির নিজেকেই বিশ্বাস হচ্ছেনা। চোখে সুখের উচ্ছাস এর পানি আবারো। বৃষ্টি এদিকে এয়াএ হা করলো। রিহান খাইয়ে দিচ্ছে। বৃষ্টি রিহানের দিকে অনেক বিনয়ী, শ্রদ্বাবোধ আর ভালোবাসার চোখে তাঁকিয়ে আছে। কি বলবে বুঝতে পারছেনা। রিহানের আচরনে পুরো বোবা হয়ে গিয়েছে বৃষ্টি। “আর না” বলে আটকালো রিহানকে। “আপনিও তো খান নি অনেক্ষন। আর বাইরে থেকে কি না কি খেয়ে এসেছেন। এবার আপনি হা করেন আমি খাইয়ে দিবো। অতঃপর রিহানও খেলো।
. এখনো রাগ আছে কমলাবতী?
. হিহি না, একদমিই না। এভাবে খাইয়ে দিলে কি আআর রাগ থাকে? কিন্তু কমলাবতী কেন?
. তুমি তো কমলার মতো লাল। তার উপর যখন রাগ করো।
. এহ, কমলা হলুদ হয় লাল না।
. একটা হলেই হলো।
. আচ্ছা অনেক রাত হয়েছে এবার ঘুমানো যাক?
. হুম অনেক ঘুম পেয়েছে।
অতঃপর দুজনেই রাগ, অভিমান সব ভুলে একসাথে ঘুম। অনেক রাত হয়েছে তাই ঘুমও খুব গভীর হলো। সে কারণে পরেরদিন আর অফিসে যাওয়া হয়নি রিহানের।
(৩)
. এই এদিকে একটু শুনোনা।
রিহান বারান্দায় বসে ল্যাপটপে অফিসের কিছু বাঁকি কাজগুলো করছিলো। বৃষ্টির ডাকে কোন সাড়া নেই। কারণ অফিসের কাজ আর মাত্র দুমিনিট হলেই শেষ হয়ে যাবে। তারপর বৃষ্টির সাথে দুপূরের ঝগড়ার পর্বটা সাড়বে। একটু পর বৃষ্টি এসে,
. এই তুমি শুক্রবারেও ফ্রি থাকবেনা নাকি ? কতোক্ষন ধরে ডাকছি কানে যাচ্ছেনা? সাদ (তাঁদের একমাত্র কলিজার টুকরা ছেলে) যে গোসল করবে শুনোনাই?
. গোসল করবে তো আমি কি করবো আজব? ও নিজে নিজে গোসল করতে পারেনা?
. এতোটুকু বাচ্চা ছেলে কিভাবে একা একা গোসল করবে আজব।
. তোমার কাছে এখনোও বাচ্চা’ই রয়ে গেলো? সারাদিনিই যখন কম্পিউটারে গেম নিয়ে পড়ে থাকে তখন বাচ্চা থাকেনা?
. হয়েছে তুমি আর বকোনা। বাবা হয়েছো একটু ছেলের খেয়াল অতো রাখোনা। আমার কথা বাদ’ই দিলাম।
. আল্লাহ, এখন তোমার খেয়ালও আমার রাখতে হবে? বুড়ি হয়ে গিয়েছো এখনও?
. কিহ? আমি বুড়ি হয়ে গিয়েছি? তুমি মনে হয় এখনো যুবক রয়ে গেছো, বুড়া একটা।
. হ্যা বাবা বুঝতেই তো পারছো আমি বুড়া মানুষ যাও তোমার খোকাকে তুমিই গোসল করাও।
. তারমানে তুমি যাবেনা গোসল করাতে?
. নাহ, তুমি যাওনা।
. তাহলে আমিও আজ গোসল করা বোনা।
. এর মানে কি?
অতঃপর দুজনের কেউই গোসল করালোনা। কিছুক্ষন পর সাদ এসে তাঁর আব্বুর কাছে,
. আব্বু, আব্বু শোননা।
. হ্যাঁ আব্বু বলো।
. আজকে কি বার?
. আজকে শুক্রবার, হলিডে।
. আজকে কি তোমার কাজ আছে?
. নাহ, একদমই নেই। কেন বাবা?
. তাহলে আমাকে গোসল করার টাইম নেই মনে হয় (অভিমানী কণ্ঠে)?
. হ্যা বাবা আছে, এভাবে বলেনা।
. তাহলে আম্মু বলে গেলো শুনলেনা কেন?
. এমনিই তোমার আম্মুকে রাগা’ই আরকি।
. আম্মুকে রাগিয়ে কি মজা পাও? আম্মুকে আর রাগাবে না।
. আচ্ছা বাবা আর রাগাবোনা। তবে একটা শর্ত আছে।
. তোমার আম্মুকে আজ, “কমলাম্মু” বলে ডাক দিবে শুধু একবার, পারবেনা?
. তাহলে আর কোনদিন রাগাবে না তো?
. এইযে কানে ধরলাম আর রাগাবোনা। এবার চলো তুমি গোসল করবে।
অতঃপর রাতে রিহান টেবিলে বসে কি যেন করছিলো। আর বৃষ্টি সাদকে ঘুম পাড়ানোর চেষ্টা করছে। কোনভাবেই কাজ হচ্ছেনা। ছেলে তো ঘুমায়’ই না। রাগ করে একটু মিথ্যে বললো,”তুমি এখন না ঘুমালে কিন্তু আমি অন্য রুমে চলে যাবো নাহয় তোমার ফুপ্পির কাছে পাঠিয়ে দিবো” বলে খাট থেকে নামার একটু অভিনয় করলো। সেই সময় সাদ বলে উঠে, “না কমলাম্মু আমি ঘুমুচ্ছি তুমি অন্য রুমে যেয়োনা” কথাটা শুনে বৃষ্টির চোখ কপালে উঠলো। আর রিহানের সেই হাসি পেলো। বৃষ্টি খুব ভালো করেই বুঝতে পেরেছে কাহিনি কি। সাদকে ঘুম পাড়িয়ে রিহানের কাছে এসে সেই ত্যারে তাঁকিয়ে আছে,
. কি হলো কমলাবতী? তোমার চোখ রক্তে লাল কেন? আমি কিন্তু ভয় পাচ্ছি।
. ঐ খবরদার আমাকে আর কমলাবতী ডাকবেনা। তুমি পেয়েছো কি শুনি হুম? নিজে তো বলো বলোই আবার বাবুকে কেন শিখিয়েছো?
. ঐযে এই কারণেই তো। শর্ত ছিলো তোমাকে আর রাগাবোনা।
. কিহহ? রাগাবেনা মানে?
. রাগাবোনা মানে রাগাবোনা।
. কেন তোমার আরেকটা বউ আছে নাকি?
. বউ’র কথা বলতে পারবোনা কিন্তু আমার আরেকটা কমলাবতী নেই।
. এই কি বলো এসব? আমার কিন্তু কান্না পাচ্ছে।
বলে সত্যই কান্না আরম্ব করলো।
. কান্না করলে সাদ ঘুম থেকে উঠে যাবে সাবধানে।
এবার কান্নার আওয়াজ হবে মনে হয় তখন রিহান বৃষ্টিকে বুকে না টেনে উপায় পেলোনা।
. আরে পাগলী কান্না করছো কেন?
. কান্না করবো না তো কি করবো? তুমি এসব কি বলো অন্য বউ, রাগাবেনা। জানোনা বাঙ্গালী মেয়েরা সব কিছু দিতে পারলেও নিজের স্বামীর ভাগটা কাউকে দিতে পারেনা?
. আরেহ আমি কি সিরিয়াসলি বলেছি নাকি? আর হ্যা তোমাকে রাগালে তো তুমি আমাকে অনেক বকা দাও।
. তাই বলে… তুমি একশবার রাগাবে হাজারবার রাগাবে। তুমি’ই তো নাকি? আর কে রাগাবে? আমিও যতবার মন চাবে ততবার বকবো। বলো বকবোনা?
. আল্লাহ তুমি একটুতেই সিরিয়াস হয়ে যাও। রাত হয়েছে ঘুমাবো।
. নাহ আজ আমরা চাঁদ দেখবো।
. ঘুম পাচ্ছে অনেক।
. আমি তোমার কমলাবতী না?
. হ্যা তুমিই তো।
. আমার এই কথাটা শুনবেনা? নাহলে কিন্তু আবার কান্না করবো।
. আচ্ছা বাবা চলো এখন কাঁদলে সাদ জেগে যাবে।
.
অতঃপর তাঁরা চাঁদ দেখায় বিভোর। রিহানের কাঁধে কমলাবতীর মাথা। বেঁচে থাকুক ভালবাসার হাজারো এরুপ চিত্র।
………………………………………………….(সমাপ্ত)………………………………………………….