চিরকুট ভালোবাসা

চিরকুট ভালোবাসা

–কি রে মামা,আর কতো খুজবি(নিরব)
–যতো দিন না,ওই মেয়েটিকে না খুজে পাবো।(নীল)
–তুই কি পাগল হইয়া গেছোস?
–হুম,ওই অচেনা মেয়েটির প্রেমে।
–ধ্যাত,আচ্ছা তুই কিভাবে বুঝলি যে ওই মেয়ে আবার এখানে আসবে?
–আমার কেনো জানি মনে হচ্ছে আসবে।
–ধ্যাত,
–আরে সালা ধ্যাত ধ্যাত করিস না ওই দেখ।বলছিলাম না,আসবে।
–ওটা কি মামা,মেয়ে নাকি পরী।
–সালা,খারাপ নজরে দেখিস না কিন্তু,তোর ভাবি।
–হুম,মামা দেখতে এতো সুন্দর।আগে বলবি না।তাহলে কি আর এতো কিছু বলতাম তোকে।
–ওই সালা,তোর ভাবি কিন্তু।
–হুম,
–হুম,হুম,না করে চল।চলে যাচ্ছে তো।আবার হারাতে চাই না।আজকে সব খোজ নিতে হবে, ওই মেয়ে কোথায় থাকে সবকিছু।
–হুম,চল।
তারপর সব খোজ জেনে নিলাম। ওই মেয়ের নাম নীলা।খুব মিল আছে আমার নামের সাথে। এখন তো প্রতিদিন নীলাকে ফলো করা একপ্রকার অভ্যাস হয়ে গেছে।নীলাও হয়তো বুঝে গেছে কেনো আমি ওকে ফলো করি।আর নিরব যতোটা পারে আমাকে সাহায্য করে।ওর মতো ফ্রেন্ড খুব কম মানুষইই পায়।নিরব আমার হয়ে সব কিছু বলে দিয়েছে নীলাকে।আর নীলা ওকে একটা ছোটো চিরকুট ধরিয়ে দিয়ে চলে গেলো।
–কিরে মামা,কি লেখা আছে ওটাতে?(আমি)
–আমি পড়েছি নাকি?(নিরব)
–তো পড়।
–হুম।
–শুরু কর তারাতারি।
–যা লেখা ছিলো চিরকুটে(আমি জানি না,কেন আপনারা আমাকে ফলো করেন।কিন্তু প্লিজ আমাকে আর ফলো করবেন না।আর আমাকে ফলো করে কোনো লাভ নেই।কারন আমার সম্পর্ক-এ জানলে কখনোই আপনারা আমাকে ফলো করতেন না।আমি জন্ম থেকেই বোবা।কথা বলতে পারি না।আর কিছু লেখার প্রয়োজন নেই।শুধু এইটুকুই বললাম।)কি মামা এখন কি করবি?মেয়ে কিন্তু বোবা।কথা বলতে পারেন।
–কি করবো,তুই বল।
–আমি কি বলবো।তোর যা ইচ্ছা কর।তবে একটা কথাই শুধু বলবো।ওকে বোবা তো সৃষ্টিকর্তাই করেছেন।এতে তো ওর কোনো দোষ নেই।আর ভালোবাসায় এটাতো কোনো সমস্যাই না।এখন তুই ডিসিশন নে কি করবি।
–তুই ঠিকই বলছিস,ভালোবাসায় এটা কোনো সমস্যাই না।আর আমিতো ওর বিষয়ে কিছু না জেনেই ভালোবেসেছি।তো ভালোবেসে যাবো।
–হুম,গুড ডিসিশন নিছোস তুই।
(তারপর ৩দিন অনেক চেষ্টা করেও ওর সাথে একটু দেখা করার সুযোগ পেলাম না।তাই নিরব ওর এক ফ্রেন্ড কে বলে আজ দেখা করার সুযোগ করে দিছে।সত্যিই নিরবের মতো দোস্ত পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। ওই তো নীলা চলে এসেছে)
–হাই,কেমন আছো?(আমি)
–ভালো,আপনি?(ছোটো একটুকরো কাগজে কথা গুলো লিখে –ভালো,আপনি?(ছোটো একটুকরো কাগজে কথা গুলো লিখে দিলো নীলা)
–ভালো।
–ও,তো কি বলবেন?আর আপনি এখনো আমার পিছনে পড়ে আছেন কেন?(কাগজে লিখে দিলো)
–ভালোবাসি তাই পরে আছি।
–মানে,আপনি পাগল নাকি।(কাগজে লিখে দিলো)
–হুম,বলতে পারো তোমার প্রেমে পাগল।
–আপনি কি জানেন আমি কথা বলতে পারি না। (কাগজে লিখে দিলো)
–হুম,জানি তারপরও কেনো পরে আছেন (কাগজে লিখে দিলো)
–কারন,আমি তোমার সম্পর্ক-এ কিছু না জেনেই তোমাকে ভালোবাসে ছিলাম।আর আমিতো তোমার দেহ কে ভালোবাসিনি।আর আমার এই ভালোবাসায় তোমার এই কথা না বলতে পাড়াটা কোনো সমস্যা না।
–ওওও,এটা তো ২দিনের জন্য।কিছু দিন পর যখন মোহর কেটে যাবে তখন তো আপনার ভালবাসাও কেটে যাবে। (কাগজে লিখে দিলো)
–এটা তোমার ভুল বুঝতেছো।আসলে আমি ওরকম না।আমি সত্যিই তোমাকে খুব ভালোবাসি।ওকে,একটা সুযোগ তো আমাকে দেয়া যায়? আমরা তো একবার ট্রাই করে দেখতে পারি?
–ভেবে দেখবো। (কাগজে লিখে দিলো)
তারপর আর কি ফলো করে যাচ্ছি আগের মতো।কিছুদিন ফলো করার পর।
–কি,এখনো ফলো করেন? (কাগজে লিখে দিলো)
–হুম,সারাজিবন করবো।আর কি দেখলেন ভেবে।(আমি)
–সম্ভব না। (কাগজে লিখে দিলো)
–ওওও,ভালো থেকো(বলেই চলে আসবো ঠিক তখনিই নীলা পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলো)
–আরে তোমাকে ছাড়া বেচে থাকা সম্ভব না।(কেউ কথা গুলো বললো)
–ওমা আআআ গোওওও,,,,,,(চিৎকার দিয়ে বললাম)
–এই চিৎকার করো কেনো?
–মা মা মানে,তুত তুমি না কথা বলতে পারো না?
–পারতাম না,এখন পারি।
–মানে?
–মানে,তোমার ভালবাসার পরীক্ষা নিলাম।যে কতোটা ভালোবাসো আমাকে।আর তাই এই ছোটো অভিনয় টুকু করলাম।আসলে,কি আজকালকার ভালোবাসার মধ্যে অনেক ফরমালিন তো।তাই একটু যাচাই করে দেখলাম।
–তা কি দেখলেন ম্যাডাম ?
–দেখলাম,ফরমালিন আছে।
–ওও,তাই।
–হুম,কিন্তু মেয়াদ উত্তীর্ন ফরমালিন।
–ওও,তা এখন কি একটা সুযোগ দেয়া যায় আমাকে?
–হুম,যায়।
–হাতটা একটু ধরি?
–নিষেধ করছে কে?
–কেউ করেনি।
–তো???আচ্ছা এভাবে হাত কতোদিন ধরে রাখবে?
–যতদিন বাঁচবো।
–কোনোদিন ছেড়ে যাবা না তো?
–না,কোনোদিনও না।
–আরেকটু শক্ত করে ধরবা হাতটা?
–হুম।
(এভাবেই শুরু হয় একটা নতুন জীবনের পথ চলা।ভালোবাসতে একটা সুন্দর মন ছাড়া আর কিছু লাগে বলে আমার মনে হয় না।আরো কিছু লাগলে তাহলে আপনি)

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত