“যার পরিবারের একটা বড়বোন আছে তার পরিবারে দুই’টা মা আছে।
আর যার পরিবারে একটা ছোটবোন আছে সে পরিবারে হাজারটা খুশির আলোর প্রদীপ আছে।
আমার গল্পটা একজন ভাই তার বোনের সম্মান ও ভালোবাসা নিয়ে।
.
“মধ্যবিত্ত পরিবারের বড়ছেলে নাম হিমেল তার ছোটবোন হামিদা।
তাদের বাবা ছোট একটা কোম্পানিতে চাকরী করে মা,টা ও অসুস্থ থাকে প্রায় সময়।তাই পরিবারের কাজ করতে হয় হামিদাকে।
তার বোন পড়া লেখা করে তবে সে একটু বোকা পরীক্ষা প্রতিবার ফেল করে।ফেল করার কারণ হলো?
সে পরিবারে কাজ করে তার উপরে তেমন মেধাবী না হামিদা।
হিমেল এবার পরীক্ষা দিবে সে যদি পাশ করে খুব ভালো চাকরী হবে।এদিকে হামিদার ও পরীক্ষা শুরু হবে কিছুদিন পর।
হামিদা এখন অষ্টম শ্রেণিতে এবার সহ ২বার পরীক্ষা দিবে।
.
“হামিদা মনে করে তার ভাই তাকে ভালোবাসে না,দূরে দূরে থাকতে চায় তার বড়ভাই হিমেল।
পাড়ার অন্য ভাই বোনরা কত ঝগড়া করে মারামারি করে আবার আদর করে।
এসব কিছুই হিমেল করে না, এগুলো দেখে হামিদা সবসময় মন খারাপ করে।
তার ভাইটা কখন ও রাগ করে কথাও বলে না, তারসাথে ঝগড়াও করেনা।
সবসময় সাধারণ ভাবে কথা বলে হিমেল।
“কিছুদিন পরে শুরু হলো হিমেল-হামিদার পরীক্ষা। পরীক্ষা সময় তার মা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে।
তাই পরিবারের সব কাজ হামিদাকে করতে হয়,হামিদা রাতে যা একটু পড়ে তাও বেশি পড়তে পারে না।
কারণ সে পরিবারের কাজ করতে হয়।অনেক কষ্টে পরীক্ষা দিয়েছে হামিদা। এখন তাদের শুধু অপেক্ষা রেজাল্ট এর জন্য।
কিছুদিন পরে রেজাল্ট দেয়, হিমেল খুব ভালো রেজাল্ট সে ভালো পয়েন্ট পায়, সে চাকরী পাবে এবার। কিন্তু হামিদা আবার ও ফেল করে।
তার বড়ভাই মা বলে-
আবার পরীক্ষা দিস, তখন পাশ করবি চিন্তা করিস না।
.
‘পরীক্ষার কিছুদিন পরে পরিবারের সবকাজ করে বিকেল বেলায় পাড়ার সব মহিলা হামিদার বয়সী সব মেয়েরা কানামাছি খেলতেছে।
হামিদাও কানামাছি খেলতে গেছে খেলার নিয়মে সে চোর হয় তবে হামিদা এতো চালাক না খুব সহজসরল তাই সে কেউ কে ধরতে পারতেছে না।
সবাই হামিদাকে নিয়ে হাসতেছে আর বলতেছে-
__ হামিদা বোকা সে কখনো জিততে পারবে না।এগুলো শুনে সবাই হাসতেছে, হামিদা মন খারাপ করে ঘরে চলে আসে আর নিরবে কান্না করতেছে।
হিমেল মা,কে জিজ্ঞেস করে-
___মা ও মা হামিদা কোথায় গেছে?
__রুমে শুয়ে আছে।
হিমেল মনে মনে ভাবলো কিছু একটা হইছে,না হলে এসময়ে শুয়ে থাকার কারণ কি।
সে গেলো হামিদার রুম এ, দেখতেছে হামিদা কান্না করতেছে। পৃথিবীতে কোনো ভাই তার ছোট ভাই বোন এর কান্না করলে তা সহ্য করতে পারে না।
হিমেল বলে হামিদা বলে-
__হামিদা কি হইছে রে?
__কিছু না ভাইয়া।
__ সত্য করে বল কিসের জন্য কান্না করতেছোত?
হামিদা সব খুলে বলে এরপর হিমেল ছোটবোনের হাত ধরে নিয়ে গেলো পাড়ার সব মহিলার সামনে।
সেখানে সবাই কানামাছি খেলতেছে,হিমেল উচ্চস্বরে বলে যারা আমার বোনকে অপমান করছেন আর মন খুলে হাসতেছেন তারা সবাই শুনেন।
এবার হিমেল কান্না করে করে বলতেছে-
→আমার বোন বোকা তাই ফজরবেলায় আমার জন্য গরম ভাত রান্না করে সে ভাত খেয়ে আমি পরীক্ষা দিতে গেছি।
→আমার বোন বোকা তাই রাত দুইটা বাজে আমার জন্য চা বানায় যাতে করে আমি না ঘুমায় আমি ভালো করে পড়তে পারি।
→আমার বোন বোকা তাই আমার কাপড় এ ময়লা দেখলে সাথে সাথে ধুয়ে দেয়।
→আমার বোন বোকা তাই আমি যখন রাতভর পড়ালিখা করে ঘুমাইয়,
সকাল হলে আমার বোনটা ১০বার আমার রুমে আসে তারপরেও ভয় এ আমাকে ডাক দেয় না।
→আমার বোন বোকা তাই আমার মা অসুস্থ থাকলে স্কুলে না যাই না পড়া লিখা না করে গাধার মতো পরিবারে কাজ করে।
আমার বোন বোকা এটা সবাই জানে তারপরেও আমার বোনকে আর কখনো অপমান করবেন না, কারণ তার কান্না আমার সহ্য হয় না।
.
“হামিদা ভাইয়ের কথা শুনে বুঝতে পারলো তার বড়ভাই তাকে খুব ভালোবাসে।
এবার হামিদা দৌড় দিয়ে ভাইকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে লাগলো।
আর হিমেল হামিদাকে বলে- __ছোটবোন তোর যখন কানামাছি খেলার শখ হয় তোর বড়ভাইকে বলবি আমি হিমেল তোর জন্য চোর হবো।
তুই হামিদা যেখানে থাকবি না কেন আমি হিমেল চোখ বন্ধ করে খুঁজে নিবো।
চল বোন চল আর কান্না করিস না আমি হিমেল বেঁচে থাকতে তোকে কেউ অপমান করতে পারবে না।
চল বোন চল আমরা কানামাছি খেলবো আর আমি চোর হবো তুই হবি রাজরাণী।