আজ বিয়ে কিন্তু আমার না আমার ভাইয়ার খালাতো ভাই। আমি এখন আছি খালার বাসায় সবাই বরযাত্রী হয়ে যাওয়ার জন্য সবাই রেডি হচ্ছে। আমি গোসল করে ড্রেস পড়বো কোন ঘর পাচ্ছি না সব খানেই মানুষ ভর্তি বিয়ে বাড়ি বলে কথা। একটা রুম পাওয়া গেল যেখানে কেউ নেই। ঢুকে মনের আনন্দে কাপড় চেন্জ করতে লেগে গেছি কেউ যেন চিৎকার করে উঠলো
অপরিতিচা মেয়ে……আআআআআ
আমি…..আআআআআআ
মেয়ে……আপনি এখানে কেন?
আমি……আপনি কেন এখানে?
মেয়ে…..আমি না তো আপনি থাকবেন আমি ওয়াশরুমে ছিলাম গোসল করতে ছিলাম আর আপনি সব দেখে(ভ্যা ভ্যা করে কন্না করছে)
আমি……কাদছেন কেন???
মেয়ে……কাদব না লুচু কথাকার মেয়েদের সম্মান দিতে জানেন না না বলে রুমে ঢুকে পড়েছেন হু হু এখন আমার কি হবে
আমি……আপনি কেন ওয়াশ রুম থেকে টাওয়েল ছাড়া বের হলেন
মেয়েটা……আমি জানি নাকি আপনি আছেন(হু হ হু করে কাদছে)
আমি……ঠিক আছে আমি কিছু দেখি নি
মেয়েটা……যান এখান থেকে লুচু একটা
আমি…..আপনি কিছু দেখেন নি তো
মেয়ে….আমি আপনার মতো লুচু না ওকে
আমি….না দেখলে ভালো। আপনি কিন্তু সুন্দরি
মেয়ে…..জানি
আমি……আপনার সবকিছুই সুন্দর
মেয়েটা…..কি লুচু, শয়তান ছেলে কথাকার দাড়া তোকে দেখছি
আমি……এখন আপনি রুম থেকে বের হতে পারবেন না(এটা বলে দিলাম দৌড়)
মেয়েটা…..তোকে দেখে নিবো পড়ে
আমি চলে আসলাম সময় হয়ে গেছে বিয়েতে যাওযার আমি খুজছি মেয়েটা মানে অবন্তি কে
,
পরিচয় দিয়ে দিই এই ফাকে আমি রুপম এইবার এসএসসি দিলাম আর অবন্তি হচ্ছে আমার ভাইয়ের ফুফাতো বোন আমরা দুজনেই বিয়ে খেতে আসছি অবন্তিও আমার সেম ইয়ার।
,
তারপর অবন্তি আসলো কিন্তু গাড়িতে আর জায়গা নেই। আমার পাশে আছে ছোট বোন
আমি…..রুপসা লক্ষি বোন আমার
রুপসা……কি ব্যাপার ভাইয়া এতো মিষ্টি করে বলছো কেন
আমি…..তুই একটু আম্মুর কোলের ওপর গিয়ে বসবি
রুপসা…..কেন
আমি…..তোর ভাবি বসবে
রুপসা……টাকা দেও
আমি……এই নে একশ
রুপসা…..হবে না ভাইয়া
আমি……এই নে মোট পাঁচশ
রুপসা উঠে গেল অবন্তি দেখলো একটায় ছিট আছে সেটা আমার পাশে। এক রাশ বিরক্তি আর রাগ নিয়ে আমার পাশে বসতেই হলো।
গাড়ি স্টার্ট দিলো আমি অবন্তির দিকে তাকিয়ে আছি আর গান গাচ্ছি ওগো সুন্দরি
অবন্তি……এই লুচু কথাকার কি দেখিস
আমি…….সুন্দরি লুচুনি কে দেখছি
অবন্তি……আমি লুচুনি না(কান চেপে ধরছে)
আমি……ছাড়েন ছাড়েন লাগছে তো
অবন্তি…….আমি লুচুনি আর তখন কি বললি আমার সব কিছুই সুন্দর
আমি…….উহহহহহ লাগছে ভুল হয়ে গেছে আর বলবো না।
অবন্তি……. মনে যেন থাকে(সবাই হো হো করে হাসছে)
আমি……পড়ে দেখাব মজা
অবন্তি……ঐ কিছু বললি
আমি……নাতো (গুন্ডি মনে মনে বলছি)
,
তারপর গাড়ি চলে আসলো আমি গাড়ি থেকে নামার সময় অন্তিকে ল্যাং মারছি অবন্তি হুড়মুড় করে আমার গায়ের ওপর পড়ে গেছে। আমি জড়িয়ে ধরেছি
আমি……কি ছেলে দেখলেই ঢলে পড়েন না
অবন্তি…….মোটাও না
আমি……এখন লুচু কে
অবন্তি……তুই আমাকে ল্যাং মেরেছিস শয়তান ছেলে কথাকার
আমি……না তো উঠেন নাকি উঠতে মন যাচ্ছে না
অবন্তি……এইটা তুলে রাখলাম পরে ঝাল তুলবো
আমি…..তাই নাকি লুচুনি
অবন্তি…..দাড়া তুই
আমার পিছনে দৌড়াচ্ছে। হাপিয়ে গেছে শয়তান, পাজি তোকে কি আমি আর পাবো না ভেবেছিস বলছে আর শাড়ি ঠিক করছে। শাড়ি তে ওকে দারুন লাগছে একদম পরি। যাই হোক বিয়ে হয়ে গেল খাওয়ার পালা আমি আর অবন্তি এক টেবিলে সামনাসামনি বসেছি খাচ্ছি পায়ের ওপর মনে হলো পাথর পড়েছে
আমি…..ও মাআাাাআাাা
ভাইয়া…..কি হয়ছে তোর রুপম
আমি……পা
ভাইয়া……পা কি
আমি……না মানে ঝাল লেগেছে।
ভাইয়া……এই নে পানি
আমি পানি খাচ্ছি আর অবন্তি মিট মিট করে পাগল করা হাসি দিচ্ছে।
.
বিয়ে হয়ে গেল সময় হয়ে গেল ভাবি নিয়ে বাড়ি ফেরার। আমি চিন্তা করছি অবন্তির ওপর প্রতিশোধ টা কিভাবে নিব।
আমি…..ভাইয়া অবন্তি কই
ভাইয়া…..কি ব্যাপার রুপম অবন্তির পিছনে ঘুরঘুর করিস কেন
রুপম……তোমাকে শোমন্দি বানাবো তাই
ভাইয়া…..তাই পিছে দেখ
আমি……অবন্তি আপপপ আপনি
অবন্তি……হুমমম তোর বউ না আমি(কোমড়ে হাত দিয়ে আগুন ঝরা চোখে তাকিয়ে আছে আমার দিকে)
আমি……আমি তোমাকে বলি নি(তোল্লাচ্ছি ভয়ে)
অবন্তি……আমি শুনেছি কার কথা হচ্ছে এখানে
আমি…..ভুল শুনেছ তুমি(এখন থেকে ওকে তুমি করে বলব ও তো আমাকে ডিরেক্ট তুই করে বলে)
অবন্তি…….তাই না দাড়াঁ তুই তোর একদিন আমার পাচ ছয় দিন
আমি দৌড় দিছি আর অবন্তি আমার পিছে দৌড়াচ্ছে অনেক দুর চলে আসছি হঠাৎ উহহহহহহ
আমি পিছনে তাকিয়ে দেখি অবন্তি পড়ে গেছে আমি দৌড়ে গেলাম অবন্তির কাছে
আমি…..এই অবন্তি তোমার কি হয়ছে(মাথা দিয়ে রক্ত পড়ছে অবন্তির)
অবন্তি…..আমার খুব কষ্ট হচ্ছে
আমি…..তোমার কিছু হবে না
অবন্তি…..কথা বলছে না(জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে)
আমি……অবন্তি এই অবন্তি চোখ খলো প্লিজ
,
আমি ওকে ঝাকাচ্ছি তাও কথা বলছে না আমি ওকে কলে করে রাস্তায় নিয়ে গিয়ে গাড়িতে করে হাসপাতালে নিয়ে গেলাম
,
আমি……ডাক্তার আংকেল অবন্তির কি হয়ছে
ডাক্তার…..মাথায় আঘাত পেয়েছে জলদি অপারেশন করতে হবে
আমি……ওকে আংকেল আপনি তাড়াতাড়ি করুন
ডাক্তার…..হুমমম তুমি ফারমালিটি গুলো পুরন করো
,
আমি ফর্ম পুরন করে বাড়ির সবাইকে ফোন দিলাম বিয়ে বাড়ির খালার বাড়ির মানুষ এসে হাসপাতাল ভরে গেছে
ডাক্তার,……রোগীর ওপারেশনের জন্য ও নেগেটিভ ব্লাড লাগবে আমাদের হসপিটালে বর্তমানে। তাড়াতাড়ি জোগাড় করুন। ব্যাংক এ রক্ত আছে বাট ও নেগেটিভ নেই। কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না। এখানে কারো নেই। আমার রক্তের গ্রুপ জানি না।
ডাক্তার এর কাছে টেস্ট করালাম আমার ও নেগেটিভ। সকলে এবার অস্থিরতা কাটিয়ে একটু স্বস্তির নিশ্বাস ফেললো।
অপারেশন ঠিকমতো হয়ে গেছে অবন্তি এখন সুস্থ আমি এখনো যায় নি অবন্তির কাছে। কারন দোষটা আমার ই আমি ওকে দৌড় করিয়েছি। তবুও কষ্টটা আমি বেশি পেয়েছি কারন আমি ওকে ভালোবাসি।
ওকে আমি দেখেছিলাম সেদিন আমি খালার বাসায় আসছিলাম ও আসছিল আমি ওকে ১ম আয়নায় দেখেছিলাম ও ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসে সাজুগুজু করতে ছিল। কিন্তু সেদিন অবন্তি আমাকে দেখেছিল না।
,
আসি চলে আসলাম বিয়ে বাড়ি ছেড়ে আসার সময় আমি একটা চিঠি দিয়ে এসেছি অবন্তির পার্সের মধ্যে চিঠি টা
” অবন্তি তুমি জানো কিনা জানি না আমি তোমাকে ভালোবাসি। সেই ১ম তোমাকে যেদিন দেখেছিলাম সেদিন থেকে। আর ঐ রুমে আমি ইচ্ছা করে ডুকেছিলাম কিন্তু সত্যি কিছু দেখি নি। আমাকে ক্ষমা করে দিও। আমি আর তোমার বিরক্তি বা ক্ষতির কারন হবো না চলে যাচ্ছি কিন্তু এতগুলো মিথ্যা আর ভুলের মাঝে একটা কথা সঠিক এবং সত্য আমি তোমাকে ভালোবাসি। তুমি আমার সপ্নচারীনি। ভালো থেকো”
,
ইতি
রুপম
,
অবন্তি চিঠিটা পরে স্তবব্ধ হয়ে হয়ে বাক শক্তি হারিয়ে ফেলেছে ক্ষনিকের জন্য।
অবন্তির মা…..অবন্তি কি হলো তোর
অবন্তি…..নিশ্চুপ
অবন্তির মা চিঠি টা হাতে নিয়ে পড়লো তারপর অবন্তিকে বললো,,,মা তুই যা রুপমের কাছে ও তোকে খুব ভালোবাসে তোকে ঠিক সময়ে হাসপাতালে নিয়ে এসে নিজের রক্ত দিয়ে তোকে বাচিয়ে ছে।
,
অবন্তি দৌড় দিলো বাস স্ট্যান্ডের দিকে পাচঁ মিনিটের রাস্তা বাস স্যান্ড। আমি বাস এ উঠবো তখন চেনা কন্ঠে ডাক দিলো কেউ….রুপম রুপম
আমি…..পেছনে তাকিয়ে দেখি অবন্তি আসছে দৌড়ে আমার কাছে এসে থামলো
অবন্তি…..কই যাচ্ছিস
আমি……গ্রামের বাড়ি
অবন্তি….আমাকে ভালোবাসিস
আমি….সারা জিবন
অবন্তি…..ঠাসসসস (একদম গলা জড়িয়ে ধরেছে)
আমিও জড়িয়ে ধরেছি শক্ত করে ওর পা এখন শুন্যে গলা জড়িয়ে রাখছে
.
অবন্তি…..ছেড়ে যখন যাবি কেন আমাকে বাঁচালি নিজের রক্ত দিয়ে
আমি….তুমি তো আমাকে ভালোবাসতে না তাই
অবন্তি…..আমিও তোকে ভালোবেসে ফেলেছি রে তোর দুষ্টুমির প্রেমে পড়ে গেছি।
আমি…..এখন ও তুই তুই করবে
অবন্তি….নাহ তুমি তো এখন আমার বাবু সোনা আর আমি তোমার সপ্নচারীনি। কখনো কাউকে তোমার সপ্নচারিনী হতে দিব না।
আমি…..ওকে। নামবে নাহ কখন থেকে তোমাকে উচু করে রাখছি।
অবন্তি…..নাহ,,,তুমি এখন আমাকে কোলে নিয়ে শশুর বাড়ি যাবে ওকে
আমি….জি মহারানি
,
আমি অবন্তিকে কোলে করে যাচ্ছি ওর বাড়ির উদ্দেশ্যে উৎসুক জনতা চেয়ে আছে আমাদের রোমান্টিকতার দিকে। অবন্তি লজ্জায় আমার বুকে মুখ লুকিয়ে আছে। বৃষ্টি আসলো কথা থেকে আসুক আজ এত রোমান্টিক দৃশ্য দেখে ছাওনির নিচে থাকা মানুষ গুলো বিস্মৃত।
গল্পের বিষয়:
ভালবাসা