ভালবাসার উপন্যাস

ভালবাসার উপন্যাস

আজ সোমবার।অফিস মাত্র ছুটি হইছে।কিছুদিন ধরে আফিসের কাজ এত্ত বেশিযে অফিসের সবাই একযোটে কাজ করছে তারপরও কাজ শেষ হবার নাম নেই।আজকে অফিস থেকে বের হয়ে দেখলাম পূর্ব আকাশটা ক্রমশ কালো হচ্ছে ধীরে ধীরে ।বৃষ্টির পুর্ভাবাস।দেখলাম কিছুটা অন্ধকার করে ফেলছে।হঠাৎ প্রকৃতির অলিখিত বৃষ্টি।কয়েক মুহূর্তের ভেতরেই আকাশ তার কান্নার জলে আমাকে ভিজিয়ে দিল।আকাশমনির যে এত কান্না কোত্তেকে আসে কে যানে।মনে হয় আকাশমনির ভালবাসার মানুষটি তাকে কষ্ট দিয়েছে।তাইতো সেই একসপ্তাহ যাবত সে একটানা কেঁদে চলেছে।আর তার কান্নার সাক্ষী হচ্ছি আমি।কি আর করার ভিজে গেলাম।এখন এই অবস্থায় বাসায় ফেরা যাবেনা।আর যদি এখানে এই বৃষ্টিতে ভিজি তাহলে নিশ্চিত জ্বর মামা কোন ধরনের আগাম বার্তা ছাড়াই আমার কাছে চলে আসবে।নাহ ঐ মামাকে আসতে দেওয়া চলবেনা তাই কোন একটা বাঁচার জায়গা খুঁজতে হবে।দেখলাম একটু দুরে একটা বাস স্টেন্ড।দৌড়ে গেলাম সেখানে।একটা কোনায় গিয়ে দাড়ালাম।ঐ দিকে বৃষ্টি তার আপন মনে ঝড়ে যাচ্ছে।
.
আরে পকপক করেই যাচ্ছি।আমার পরিচয়টাও দেয়া দরকার।আমি খালিদ।একটা বড় মাল্টিন্যাশনাল অফিসে চাকরি করি।বেকারত্বের এই যুগে পড়ালেখায় ভাল ছিলাম বলে চাকরিটা পেয়েছি।আর না হলে আমার সময়টাও ঐ শহরের ব্যস্ততম রাস্তায় ইন্টারভিউ দিতে দিতে পার হয়ে যেত।
.
কি আর করার ।তারপরেও ভিজে যাচ্ছি ।হঠাৎ মোবাইলটা বেজে উঠল।এই বৃষ্টির ভেতর কে ফোন দিল আবার।মনে মনে তার গুষ্টি উদ্ধার করতিছি আর শেষমেষ ফোনটা ধরছি।দেখলাম unknown নাম্বার।ঐ পাশ থেকে একজন বল্ল..
.
-দোস্ত আমি ফয়সাল।
-হ্যাঁ বল।আর ফোন করার সময় পেলিনা।এখনি করতে হল তোর?
-আচ্ছা ভাই আমি একটা বিপদে পরছি।আর মোবাইলের বেলেন্সউ নাই।আমাকে কিছু টাকা রিচার্জ করে দে ।বাই
.
.
রেখে দিছে ।কি করার এখন এই বৃষ্টি শেষ হবার নয়।তাই ভাবলাম আমি রিচার্জ টা করে দেই।ফোনটা পকেটে ডুকিয়ে হাঁটা দিলাম রিচার্জ এর দেকানের দিকে।হঠাৎ একটা মেয়েকে দেখে আমার চোখ আটকে গেল।কি একটা যেন ঐ মেয়েটার দিকে আমাকে আকর্ষণ করতে লাগল।দেখলাম জড়সড় হয়ে রিচার্জের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে আছে।মেয়েটা হিজাব পরা।খুব সুন্দর করে হিজাবটা পরেছে।দুর থেকে আমি ওর একপাশটা দেখতে পারছিলাম।এগিয়ে গেলাম।আমি ওর ঠিক 2 হাত দুরে।মেয়েটার ইতস্তথ বোধ করছিল।বোঝলাম বৃষ্টির কারনে।বৃষ্টির কারনে বোধহয় কোন বিপদে পরেছে ।তাই কোথাও যেতে পারছেনা ।দেখলাম কাধে ব্যাগ ঝোলানো।কি মনে করে হঠাৎ মেয়েটা আমার দিকে তাকাল।কি দেখতিছি আমি এটা ?আদৌ কি যা দেখতিছি তা সত্যি? নাকি কোন স্বপ্নের আগমন ঘটছে এই বৃষ্টিস্নাত দিনের এই ঠান্ডা আবহাওয়ায়।মানুষ এত সুন্দর হতে পারে আমি জানতামনা।কি চোখ…যেন সব মায়া এই চোখদুটির মাঝে ।চোখজোড়া যেন সারা পৃথিবীকে ধারন করে আছে।কি গাল।যেন আজীবন গালগুলো ধরে আদর করলে সময় কখনো ফুরিয়ে যাবেনা।কি ঠোট…গোলাপের পাপড়ির মতো ঠোট।যেন বলছে পৃথিবীর সর্ব সুখ যেন এই ঠোটগুলির মধ্যে রয়েছে ।আমি শুধু তাকিয়ে ছিলাম মন্রমুক্ধ দৃষ্টিতে ।দেখলাম মেয়েটা আমার তাকানোতে কিছুটা লজ্জা পেল।আর চোখগুলি নামিয়ে ফেলল।দেখলাম সেও রিচার্জ করে চলে গেল।আমি শুধু তার চলে যাওয়া দেখছিলাম যতক্ষণ না পর্যন্ত আমার চোখগুলি তাকে হারিয়ে ফেলে।চলে গেল।আমি রিচার্জ করালাম।হঠাৎ বৃষ্টির পানি পরাতে ফোনটা বন্ধ হয়ে গেল কি করার এখন উকে জিজ্ঞাসা করতে পারবনা যে টাকাটা গেছে কিনা।এখন আমি নাম্বারটা হারাতে চাইনা আবার নতুন নাম্বার টাওয়াও আমার মনে নেই কি করার ।এখন দোকানদারের কাছ থেকে নাম্বারটা নিয়ে বাসায় চলে আসলাম।বাসায় এসে মোবাইল টা অন করলাম।ফ্রেশ হয়ে আমি কিছু খেলাম তারপর ঐ লেখা কাগজটা বের করে নাম্বারটা টাইপ করে আমি ফোন দিলাম।ব্যাপার কি নাম্বার বন্ধ কেন?কিছু হলনাত আবার।কি আর করার বসে আছি আর নাম্বারটা সেভ করে নিলাম।হঠাৎ ফোনটা বেজে উঠল।দেখলাম ফয়সাল ফোন করছে।টাকাটা তাহলে গেছে।কিন্তু ঐটা কার নাম্বার ছিল তাহলে।কি জানি কার না কার নাম্বার দোকানদার ভুল করে আমাকে দিয়ে দিছে।কি মনে করে আর ডিলেট করলামনা।থাক।এভাবেই চলছিল।কিছুদিন কেটে গেল।একদিন অফিসে বসে আছি ।কিছুটা কাজ এর চাপ কম আজকে।তাই ফেসবুকে একটু লগইন করলাম।ফেসবুক আমাকে একটা মেসেজ পাঠাইছে যে আমার কন্টাক এর সবাই ফেসবুকে অপেক্ষা করছে।ক্লিক করলাম।দেখলাম অনেকগুলো আইডি আসল।সবগুলোই আমার পরিচিত মানুষদের।হঠাৎ একটা আইডির উপর চোখ পরল।কিছু বোঝলামনা।দেখলাম একটা মেয়ের আইডি।কিন্তু আমার কন্টাক্সে কোন মেয়ের নাম্বার সেভ নেই।তাহলে ?আর মেয়েটার আইডিতেও কোন ছবি নেই।কি মনে করে friend rqst পাঠাই দিছি।
.
কয়েকদিন পর ফেসবুকে দেখলাম ঐ মেয়েটা রিকুয়েস্ট এক্সেপ্ট করছে।আচ্ছা মেয়েটাকেতো চিনলামনা।একটা মেসেজ করা যায় দেখি উত্তর আসে কিনা।
.
.
-hi (আমি)
-hlw
-ভাল আছেন?
-আজকে নেই তবে কালকে ভাল থাকতে পারি যদি আল্লাহ চায়।
-তা ঠিক।কিন্তু আমি আপনাকে ঠিক চিনিনি।
-আজিবতো না চিনেই এভাবে মেসেজ দিলেন?
-তো মানুষতো মানুষকে চিনারা জন্যই মেসেজ দেয় তাইনা।
-উমা তাই।তা আপনি কোন কারনে আমাকে চিনতে চাচ্ছেন?
-কারন আপনার আইডিটা আমার কন্টাক্স এ আসছে কিন্তু চিনিনা তাই।
-ওমা ।আমার আইডি আপনার কন্টাক্স এ গেলো কিভাবে ?
-সেটাতো আমি বলতে পারবনা।আপনি বলতে পারবেন।
-ধুত আমি কিভাবে বলব।আমার নাম্বার আপনার কাছে সেভ ছিল তাই আসছে।আর আমার নাম্বার আপনার কাছে গেল কিভাবে ?
-সেটাতো বলতে পারবোনা।
-ও বুঝছি আপনার ধান্দাই এইগুলা করা।
-দেখুন আপনি কিন্তু …..
-আরে আপনি এত রাগ করছেন কেন।আমিতো এমনি বললাম।আর হ্যাঁ কি জানতে চাইছিলেন?
-আপাদত আপনার নামটা বলেন।যদি দেখি চিনি তাহলে আর কিছু বলার দরকার নেই।
-হিমমমম….
-নামটা জিগ্যেস করছি ।
-ওফফ আমার নাম স্বর্না।
-আগে পিছনে কিছু নাই ??
-আছেতো।নামকি একটাই হয় নাকি?
-তো বলতে কষ্টটা কোথায় শুনি?

-আপাদত আপনার নামটা বলেন।যদি দেখি চিনি তাহলে আর কিছু বলার দরকার নেই।
-হিমমমম….
-নামটা জিগ্যেস করছি ।
-ওফফ আমার নাম স্বর্না।
-আগে পিছনে কিছু নাই ??
-আছেতো।নামকি একটাই হয় নাকি?
-তো বলতে কষ্টটা কোথায় শুনি?
-আমি কি বলেছি নাম বলতে সমস্যা?
-না তা বলেন নি।
-তাহলে আরকি।কেন বললেন কেন কষ্ট হয় নাকি
-আল্লাহ ।আচ্ছা আপনি এমন কেন ।সবার সাথেই কি এমন করেন?
-আমি আবার কি করলাম?
-আচ্ছা কিছু করতে হবেনাহ ।আপনার নামটা বলেন।
-জান্নাতুল ফেরদৌস স্বর্না।
-হিমম ভাল নাম।কিন্তু আসল বিষয় টা হচ্ছে এই নামে আমি তো কাওকে চিনিনা
-ওমা তাই ।তাহলে এক কাজ করেন।আপনি বসে বসে বের করেন আপনি চিনেন নাকি আর কিভাবে আইডিটা গেল ।আমি এখন যাই ।টাটা
-আচ্ছা ।ভাল থাকবেন
.
.
চলে গেছে।আরে অনলাইন থেকে অফলাইন করেছে।আচ্ছা মেয়েটার নামটা কিন্তু ভীষন সুন্দর ।এই নামটাকে কেমন যেন খুব আপন মনে হচ্ছে।মনে হচ্ছে যেন এই নামের মানুষটি আমার খুব কাছের ।আরে ধুররর ।কি যে হচ্ছে আর কি যে করতিছি আমি নিজেও বুঝতিছিনা ।একবার এক স্বপ্নকন্যাকে দেখে আপন মনে হয়।আবার এক অপরিচিত এক আইডির ভার্চুআল জগতে বিপরীও পাশে বসা কোন এক নাড়ীর নামটা আমার কাছে আপন মনে হয়।কি আর করব।যা হচ্ছে আমার সাথে শেষ পর্যন্ত না আমাকে কোন ডক্টর দেখাতে হয়।সেদিন আর কোন কথা হয়নি ।রাতে ঘুম আসছিলনা।যদিও খুব চেষ্টা চালাচ্ছি তবুও ঘুম বাবাজি আমার সাথে রাগ করে বসে আছে।আচ্ছা ঘুম আসছেনা কেন।কারন যখনি আমি দু চোখের পাতা এক করি তখনি আমি আমার চোখের সামনে এক সপ্নকন্যার আগমন দেখতে পাচ্ছি।ভীষণ সুন্দর দেখতে একজন স্বপ্নকন্যা।আরে ওটাতো সকালের দেখা সেই মেয়েটা যাকে আমি বাস স্টেন্ডে দেখেছিলাম।আচ্ছা মেয়েটার কাঁধে ব্যাগ দেখেছিলাম।তার মানে নিশ্চয়ই মেয়েটি আশেপাশের কোন কলেজে পরে।কিন্তু ঐখানেতো একটা কলেজিয়েট আছে।তার মানে নিশ্চয়ই ঐখানে পড়ে।আচ্ছা কালকে কি থাকবে মেয়েটা ?কি জানি থাকতেও পারে ।আচ্ছা কালকে একবার অপেক্ষা করলে কেমন হয় মেয়েটার জন্য?ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে গেছি।সকালে উঠে রেডি হয়ে অফিসে গেলাম।তারপর কিছুটা আগেই অফিস থেকে বের হয়ে বাস স্টেন্ডে গেলাম।অনেক্ষন ধরে দাঁড়িয়ে আছি।দেখলাম স্বপ্নকন্যাকে ।আসছে কলেজ ড্রেসে।এসে দাঁড়ালো আমার ঠিক কিছুটা দূরে।আমি চেয়েছিলাম এক দৃষ্টিতে।এই স্বপ্নকন্যার এক অদ্ভুত গুন রয়েছে আমাকে মুগ্ধ করার।আজকেও সে হিজাব পরেছে।কি মনে করে আবারো আমার দিকে তাকালো।আমার সেদিকে খেয়াল ছিলনা।আমি একদৃষ্টিতে চেয়েছিলাম।আমার দিকে তাকিয়ে দেখল আমি তাকিয়ে আছি।তখনি দেখলাম কোথা থেকে এক রাজ্যের লজ্জা এসে স্বপ্নকন্যার মায়াবি চোখগুলিকে কাবু করে নিয়েছে।লজ্জায় সে চোখগুলি নামিয়ে নিল।আর অন্যদিকে আমি সেই চোখগুলির মধ্যে কোথায় যেন হারিয়ে যাচ্ছিলাম।স্বপ্নকন্যাকে দেখলাম দ্রুত বাসে উঠে গেল।আর কিছুই দেখলামনা।ঠিক সেই মুহূর্তেই আমার খেয়াল হল।ইসস এভাবে মেয়েটাকে লজ্জা দেওয়া হয়ত আমার উচিত হয়নি।কি করার ।বাসায় চলে আসলাম।সারাটা দিন ওর কথা ভেবেই আমার সময় টা পার হয়ে গেল।নাহ আর ভাবা ঠিক হবেনাহ।আর ঐদিকে আকাশমনিও তার কান্নার জল আবার ছেড়ে দিয়েছে।আচ্ছা এখন এক কাপ কফি খেলে মন্দ হয়না।ঠিক তাই করলাম।বসে বসে কফি খাচ্ছি আর মোবাইলটা নিয়ে ফেসবুকে লগইন করলাম।দেখলাম সম্বর্ধনা মেয়েটা একটা মেসেজ পাঠিয়েছে ।
.
.
-কি মিঃ পেয়েছেন আমার পরিচয়?
-নাহ।পেলামনাতো।
-না পেলেই ভাল।
-ভাল কেন ?
-এমনিই।কিছুনা।
-আচ্ছা একটা কথা বলতে পারি ?
-আপনাকে কি আমি আটকাতে পারব ?
-হিমম পারবেন না কেন?
-কোন অধিকারে আপনাকে আমি আটকাব?
-হয়ত একজন অপরিচত বন্ধু হিসেবে ।
-নাহ।নাহ অপরিচিত বন্ধুকে আটকাবোনা।পরিচিত হলে আটকাতাম।
-তাহলে আপরিচতই থাকি কি বলেন?পরিচিত হলে যদি আটকে দেন?
-আচ্ছা কি বলবেন বলছিলেন না ?
-হ্য।বলছিলাম যে আপনার নামটা ভিষন সুন্দর ।
-হিহিহিহি
-হাসার কোন কথা কি বলছি আমি?
-নাহ তা বলেন নি।এমনি হাসলাম।
-আচ্ছা আপনি কি পড়াশোনা করেন?
-জী এইবার ইন্টার পরীক্ষা দেব।
-বাহ ভালত।
-আপনি ?
-আমি একটা মাল্টিন্যাশনাল অফিসে চাকরি করি এইতো গত বছর চাকরিটা হয়েছে।
-ও বাবা।ভাল।
.
.
সেদিন অনেক কথাই এভাবে হয়।রাতে ওকে বাই বলে ঘুমিয়ে গেলাম।পরেরদিন আগেভাগে অফিসে গেলাম।তারাতারি কাজ শেষ করে চলে আসলাম আমি আমার স্বপকন্যাকে দেখতে।আজকেও আসল।চোখাচোখি হল আমাদের থুক্কু মানে উর আর আমার।দেখলাম কিছুক্ষণ পর চলে গেল।আমিও চলে আসলাম।বাসায় এসে আবারো ফেসবুকে লগইন করলাম।দেখলাম স্বর্না মেসেজ দিছে।এভাবে কথা হত আমাদের রাতে।আর দিনের বেলা আমি আমার স্বপ্নকন্যাকে দেখতাম।অনেকদিন কেটে গেছিল এইভাবে।আর আমিযে আমার স্বপ্নকন্যার প্রেমে পরে গেছি।কয়েকদিন ধরে যাচ্ছিনা ।প্রতিদিনের মত সেদিন রাতেও স্বর্নার সাথে কথা হচ্ছিল।এই কয়েকদিনে আমরা বন্ধুর মত হয়ে গিয়েছিলাম।

এই কয়দিনে আমরা বন্ধুর মত হয়েগিয়েছিলাম।সেদিন ও কথা হচ্ছিল।
.
.
-আচ্ছা জানেন কিছুদিন ধরে আমার সাথে কি হচ্ছে? (স্বর্না)
-আপনি না বললে কিভাবে জানব?
-জানেন কিছুদিন ধরে একটা ছেলে আমার জন্য দাঁড়িয়ে থাকে।
-তাই নাকি।তারপর।?
-প্রতিদিন আমি যখন বাসার জন্য আসব তখন দেখি ছেলেটা দাঁড়িয়ে আছে।
-ও হয়ত অন্য কারনেও দাঁড়িয়ে থাকতে পারে।
-অন্য কারনে হলে আমার জন্য ঐভাবে দাঁড়িয়ে থাকবে কেন বলেনতো।
-তাও ঠিক ।তারপর কি হল?
-প্রতিদিন ঐভাবে দাঁড়িয়ে থাকত।আর এই তিন চারদিন ধরে দেখতে পারছিনা।
-তো ভালই হল।ঝামেলা হবেনা আর।
-আরে ঝামেলা তার সেটাই।আমি ঐ ছেলেটাকে ভীষনভাবে মিস করতিছি।ঐ ছেলেটা যেভাবে তাকিয়ে থাকত আমার দিকে আমার ভীষন লজ্জা করত কিন্তু এখন যখন দেখছিনা তখন অনেক মিস করতিছি আর এই মিসটার কারনটা আমি বুঝতে পারছিনা।
-আরে আপনিতো ঐ ছেলেটার প্রেমে পরেছেন।
-কি জানি।
-আমারো একটা ঘটনা আপনার সাথেই মিল রয়েছে।আসলে কিছুদিন আগে একটা মেয়েকে বাস স্টপে দেখেছিলাম।ভীষন ভাল লেগে যায় ।আর তারপর সারাটা দিন উর কথা শুধু মাথায় ঘুরত।আর এখন ভাললাগাটা ভালবাসায় পরিনত হয়ে গেছে।
-বাহ।বলে দেন।
-যদি না মানে আমাকে?
-হিমম।আপনার আমার ঘটনাতো একটি বাস স্টপে।
-আচ্ছা আমরা কি দেখা করতে পারি।মানে হয়ত আমরা একজন আরেক জনকে সাহায্য করতে পারব।
-আচ্ছা।আপনার ঐটা কোন বাস স্টপে?
-আরে ঐটা তোমার কলেজের কাছের বাস স্টপটায়।
-ও আমারটাও।আচ্ছা কালকে সকাল 11 টায়।
-আচ্ছা।
-আচ্ছা কালকে দেখা হবে বাই
.
.
রেখে দিলাম কলটা।কি অদ্ভুত মানুষের জীবন তাইনা?কত ঘটনাই ঘটে মানুষের জীবনে আবার কিছু ঘটনা একজনের সাথে আরেকজনের মিলে যায় ।তা অবশ্য খুবই কম।আর এরকম যদি কারো সাথে মিলে যায় তাহলে তাকে কি বলে আমি ঠিক যানিনা।এসব ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পরছি।সকালে উঠলাম ।ফ্রেশ হয়ে নাস্তানাবুদ খেয়ে রেডি হয়ে ফুড়ফুড়ে মেজাজ নিয়ে চলে গেলাম সেই বাস স্টপে । একি আমি কি দেখছি।আমার স্বপ্ন কন্যাকে দেখছি।দুর থেকে দেখছি আমার দিকে এগিয়ে আসছে ।কিন্তু ওকে ঠিকবুঝলামনা কেন।তারপর হঠাত আমার দিকে চোখ পরাতে থমকে দাঁড়িয়ে গেল।বুঝলাম এই সপ্নকন্যার আমাকে এখানে আশা করেনি।আর জনতনা।জানলে হয়ত আসতনা।দেখলাম কিছুটা দুরে গিয়ে দাড়াল।কাকে জেন একটা খুজছে।আমি মোবাইলটা বের করে স্বর্নাকে একটা মেসেজ করলাম।
.
-কোথায় তুমি? (আমি)
-আমি তো এসে পরেছি ।কিন্তু আপনাকেতো দেখছিনা।
-কি বল।আমিতো এখানেই দাঁড়িয়ে আছি।
-দাঁড়ান আমি খুঁজে দেখি ।
.
আমিও খুঁজতে লাগলাম।তারপর দেখলাম আমর সপ্নকন্যাও কাকে যেন খুজছে।তখন আমার খুব রাগ হচ্ছিল।আচ্ছা আমার সপ্নকন্যার কি কেও রয়েছে?উঁকি কাওকে ?নাহ তা হতে পারেনা।এই মুহূর্তে আমার এত রাগ হচ্ছিল যে ঐ ছেলেটাকে সামনে পেলে এক গুষিতে নাকটা বাঁকা করে দিতাম।কি আর করার ।আমিতো আর সেটা করতে পারছিনা এখন।তাই চুপ মেরেই নিজেকে সামলিয়ে বসে থাকতে হবে।
.
-আপনি কি কালার শার্ট পেরেছেন?
-আমার ফেভারেন ।হলুদ কালার।
.
দেখলাম স্বপ্নকন্যা আমার দিকে একবার তাকালো তারপর আবার মোবাইলটা টিপতে লাগল।
.
-আচ্ছা আপনি কি পরে আছেন? (আমি)
-একটা সাদা কালার সেলোআর আর হিজাব।
.
আমার একটা ভয় হতে শুরু করল ।দেখলাম আমার সপ্নকন্যাও একি ড্রেস পরে আছে।আচ্ছা আমার সপ্নকন্যা কি এই স্বর্না নয়ত?কি জানি ।হঠাৎ দেখলাম সে আমার দিকে এগিয়ে আসছে ।আমার হার্টবিট ধিরে ধিরে বারতে
লাগল।আমার যে কেরোকম লাগল তা আমি মুখে প্রকাশ করতে পারবনা।
.
-আপনি কি মি:খালিদ? (স্বপ্নকন্যা)
-জি জি মানে আমি মানে।
-আপনিইইইই
-আপনি কি স্বর্না?
-দেখে মনে হয়না ?
-কিন্তু আসলে আমি মানে ঠিক
-হ্য আর তোতলাতে হবেনা ।আমি সব বুঝে গেছি।শেষ এই কাজটি করতে পারলেন?ছিহ
ঠাস……..
.
.
জীবনটা অন্ধকার হয়ে গেছে।কোন কিছুই আর দেখতে পারছিনা।আশেপাশের সবকিছু যেন ঝড়ের গতিতে উড়ছে।না বাইরে নয় আমার মনের ভিতরেই তা চলছে।শেষ পর্যন্ত কিনা আমার সপ্নকন্যার আমাকেই??কিন্তু কেন ?কিছুই বুঝে উঠতে পারছিনা।
.
বাসায় চলে আসলাম। এই কাজটা কি জন্য করল বুঝে উঠতে পারছিনা।আচ্ছা তার মানে এতদিন যেই মেয়েকে স্বর্না ভেবে আমি কথা বলতাম সেই আমার সপ্নকন্যা।আর উ বলেছিল যে আমাকে নাকি ভীষন মিস করেছে ।আর আমাকে নাকি ….মনটা যেমন আনন্দ নেচে উঠতে লাগল।এই মুহূর্তে একটা ডান্স দিতে ইচ্ছে হচ্ছে ।কিন্তু দেওয়া যাবেনা।

বাসায় চলে আসলাম। এই কাজটা কি জন্য করল বুঝে উঠতে পারছিনা।আচ্ছা তার মানে এতদিন যেই মেয়েকে স্বর্না ভেবে আমি কথা বলতাম সেই আমার সপ্নকন্যা।আর উ বলেছিল যে আমাকে নাকি ভীষন মিস করেছে ।আর আমাকে নাকি ….মনটা যেমন আনন্দ নেচে উঠতে লাগল।এই মুহূর্তে একটা ডান্স দিতে ইচ্ছে হচ্ছে ।কিন্তু দেওয়া যাবেনা।ভাবা যায়? আমি আমার সপ্নকন্যার সাথেই এতদিন কথা বলছি অথছ যানলামিনা ?ইসস।কি আর করা।আচ্ছা আমার স্বপ্নকন্যার নাম স্বর্না ।আমাকে ও নাকি….ভাবতে ভাবতে আমি যেন স্বর্গে পৌছে যাচ্ছি।একটা মেসেজ দেই।আর সরি বলি।যেই বলা সেই কাজ।ফোনটা হাতে নিয়ে লগিন করলাম।কিন্তু যা দেখলাম তা হয়ত দেখার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলামনা।আর এটা দেখার সাথে সাথে আমার মনটা সাথে সাথে বিষাদগ্রস্থ হয়ে গেছে।দেখলাম আইডিটা নিল থেকে কাল হয়ে গেছে।হিমম।মনটা খারাপ হয়ে গেছে।ভেবেছিলাম ওকে সরি বলব।এখন সেটাও পারবনা।একটা ফোন করি ভাবলাম।সাহস যুগিয়ে একটা কল করলাম।কিন্তু ফোনটাও বন্ধ করে রেখেছে।হায়রে কপাল।সেদিন মনটা এত খারাপ ছিল যে আর কিছুই করতে পারলামনা।পরের দিন অফিসে তো গেছি কিন্তু ওখানে আর যাওআর ইচ্ছে হয়নি।অস্থির লাগছিল সেদিন।পরের দিন গেলাম।ভাবলাম সরি বলে দেব।কিন্তু আমার অপেক্ষা যেন শেষ হয়না।আর আমার সপ্নকন্যাও যেন আসেনা।খুব খারাপ লাগছিল।এভাবে 5 দিন কেটে গেছে ।প্রতিদিন যেতাম কিন্তু দেখতামনা।ভাবলাম স্বর্না বোধহয় আর আসবেনা।আর পরের 2 দিন আর যাইনি।কি মনে করে পরের দিন গেলাম ।হঠাৎ কে যেন আমাকে ঠাস……..
আরে এত আমার স্বপ্নকন্যা।যাক অবশেষে দেখিলাম।আমি তাহারে দেখিলাম।
.
-লজ্জা করলনা একটা মেয়েকে এইভাবে কষ্ট দিতে ?আপনি আসলেই পচা(কান্না করে)
-……..
-কি হল কথা বলছেন না কেন ?
……..
-কথা বলবেন নাকি চলে যাব?
-তুমি শুধু কষ্ট পেয়েছিলে?আমি পাইনি ?
-নাহ।আপনি পানানি।পেলে এই 2দিন আসতেন।
-আমি ভেবেছি তুমি এই পর্যন্ত আসোনি।আমার উপর রাগ করে তাই আর আসিনি
-গাধা কোথাকার।আমি প্রতিদিন আসতাম।আপনাকে দেখতাম লুকিয়ে লুকিয়ে ।
-আমাকে লুকিয়ে কেন দেখতে ?
-জানিনা।(লজ্জা পেয়ে )
-সত্যিই জাননা ?
-না কিচ্ছু জানিনা।
-তাহলে কে যেন বলেছিল যে আমাকে ভীষন মিস করছে।আমার উপরে নাকি…
-চুপ।এখানে এইসব কথা বলবেন না।লজ্জা আপনার না থাকলেউ আমার আছে
-আচ্ছা বলবনা।তাহলে ঐগুলি কেন বলেছিলে যদি তুমি কিছুই না যান ?
-বলছিলাম তার কারন আছে।
-কি কারন ?
-বলবনা।আপনি জানেন।
-নাহতো আমিতো কিছুই জানিনা(ভাব নিয়ে )
-হ্যাঁ আমিও জানিনা।কথাটা যেদিন আপনি জেনে বলবেন আমাকে সেদিন বলব আমি।বাই।
-আরে কোথায় যাচ্ছ।কথাটা শুনবেনা ?
-বলেন।
-আচ্ছা।
.
.
উর হাত ধরে রিক্সাতে উঠলাম।যদিও আমি জানি সে আমাকে ভালবাসে কিন্তু অপরিচিত একটা ছেলের সাথে রিক্সাতে উঠতে ও কোন দিধাবোধ করেনি হয়ত বিশ্বাস আছে বলেই।আমি রিক্সাকে বললাম একটা পার্কে নিয়ে যেতে।আমরা গিয়ে উখানে নামলাম।ওকে নিয়ে আমি পার্কের একটা মাঠে নিয়ে গেলাম।পুরোটা মাঠ কাশফুল দিয়ে ঘেরা।সাদা সাদা কাশফুল।মাঝে মাঝে কিছু সবুজ ঘাস রয়েছে।শরৎের শেষ সময় এটা ।আমি উকে নিয়ে চলে এলাম মাঝখানে ।আশপাশ থেকে কিছু ঘাসফুল ছিড়ে উর সামনে হাঁটু গেড়ে বসলাম।অপরান্বের শেষ বেলার পরন্তু বিকেলের সূর্যের বাঁকা লাল রশ্মি এসে পরছিল আমার স্বপ্নকন্যার মায়াবী চেহারার উপর।যা লাগছিল তা হয়ত আমি আর বর্ননা করতে চাচ্ছিনা কারন এত বর্ণনা শুনলে হয়ত আমার পাঠক ভাইরা প্রেমে পরে যেতে পারেন ওর ।তাই বলবনা।আমার সপ্নকন্যা শুধু আমার।আমি হাঁটু গেড়ে বসে বললাম…
.
বালিকা …আমি জানিনা তুমি কোন দেশের রাজার মেয়ে ।কোথায় তোমার বাড়ি ।কোথায় তোমার চলাচল।জানিনা কি আছে তোমার মধ্যে যা আমাকে বিমোহিত করছে বারবার।আমার রাতের ঘুম তুমি কেড়ে নিয়েছ ।কেড়ে নিয়েছ আমার এই দেহের মাঝের হৃদপিন্ডের অর্ধেক অংশ।যা ছাড়া আমি অচল। কেড়ে নিয়েছ আমার রাতটুকু।কেড়েছ আমার মন যা বর্তমান অবস্থান তোমার কাছে।বল বালিকা আমার হৃদয়ের অর্ধেক অংশ ফিরিয়ে দিয়ে আমার দুজনের মনকে এক করে রাতের স্বপ্নকন্যা বাস্তবে হয়ে আমার রাজ্যের রানী হয়ে আমার মনে সারাটাজীবন চলাচল করতে কি তুমি রাজি?
-…………
-বল
-……..
-কি হল।অবাক হয়ে তাকিয়ে আছ কেন ?
-আমি
.
আমি বলেই আমাকে দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরল।আমি পেয়ে গেছি আমার উত্তর ।বালিকা তার সম্পূর্ণ মায়াবী মুখ খানি আমার বুক এর গহীনে লুকিয়ে অঝোরে কেঁদে চলেছে।আর আমি তাঁহাকে খুব শক্ত করে বেঁধে ফেলেছি আমার বাহুর মধ্যখানে।আর অপর দিকে সূর্য একটু হাসি দিয়ে আমাকে চোখ টিপ দিয়ে তার আপন পথে যাত্রা করল।আর সে হয়ত এই কাজটির জন্যই এতক্ষণ অপেক্ষারত ছিল……
.
.
আমরা পার্ক থেকে বেরিয়ে আসলাম।একটা রিক্সাতে উঠলাম দুজনে।আমি আর স্বর্না পাশাপাশি বসে আছি।একটা নিরবতা কাজ করছে আমার আর উর মানে দুজনের মধ্যে ।আর এই নিরবতার মধ্যে কিছুটা কাজ ঘটছে।আমি স্বর্নার দিকে অপলক ভাবে তাকিয়ে আছি তার মায়াভরা মুখটার দিকে।একটা কি যেন রয়েছে এই মুখটিতে যা বারবার আকর্ষণ করছে আমাকে।আমি একদিকে তাকিয়ে আছি তার দিকে আর অন্যদিকে তার চোখগুলির মধ্যে বিরাজ করছে রাজ্যের লজ্জা ।যে লজ্জায় সে মাথা নিচু করে চুপচাপ ভাবে তাকিয়ে আছে।একটা অচেনা রাজ্যের রাস্তায় একটা অচেনা গন্তব্যের উদ্যশ্যে আমরা চলছি।কিছুক্ষণের পর আমরা স্বর্নার বাসার সামনে চলে আসলাম।এক লজ্জা ভরা মুখ নিয়ে সে দৌড়ে চলে গেল তার বাসায় ।আর আমি তাকে দেখে যাচ্ছিলাম ।উকে বাসায় দিয়ে আসার পর আমি রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে ঘুম দিলাম।মনটা ফ্রেশ লাগছে।একটা কথাই বারবার উচ্চারিত হচ্ছে আর মুখ দিয়ে .অবশেষে আমি পেলাম হে খোদা অবশেষে আমি তাহারে পেলাম।একটা সুখের রাজ্যে আমি বিচরন করছিলাম।ঘুমিয়ে পরছি।আর হঠাৎ দেখি ভুমিকম্প।আমার খাট কাপছে।ওও ফোনটা বাজছে।দেখি পরিচিত নাম্বার।কিন্তু ধরতে পারলামনা।ধরলাম।বুঝলাম মেয়ে একজন
.
-জিগ্যেস করব উঠছেন নাকি ঘুমাইয়া আছেন।
-আচ্ছা।
.
কি মেয়েকে পছন্দ করলাম ।ভালবাসি বলার 12 ঘন্ঠাও গেলনা এখনি এই এত কেয়ার ভবিষ্যতে কি হবে কে জানে।যাক উঠে যাই কি জানি পরে ফোন দিয়ে যদি জনতে পারে যে উঠিনাই তাহলেতো কেলেংকারি হয়ে যাবে।ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে একটু ছাদে গেলাম।আকাশটা একটু মায়াবি মনে হচ্ছে ।সন্ধ্যার আগে বৃষ্টি শেষে পুরু আকাশটা কেমন এক লাল সবুজ বর্ন ধারন করেছে ।মনে হচ্ছে এখনি ধরে ফেলি কিন্তু পারছিনা হঠাৎ ফোনটা বেজে উঠল।ধরলাম
.
-কি মিঃ আপনার ঘুম ভাংছে ?
-তুমি আছনা ঘুমকে হারাম করার জন্য
-কি ??আমি ঘুম হারাম করছি আপনার ?বেশ করেছি ।আরো করব ।আজীবন করে যাব।হিহি
-আমাকে জ্বালানোর নিল নকশা করেই মাঠে নেমেছো তাইতো ?
-নীল নকশাটা করিনি কিন্তু হ্যাঁ রুটিন টা করে ফেলছি।হিহি
-আল্লাহহহ।বাঁচাও আমাকে
-হিহিহিহিহি
-………
-কি হল চুপ যে
-তোমার হাসিটা শুনছিলাম।কি মিষ্টি ।ভাগ্যের ব্যাপার একবারো সামনে থেকে দেখিনি।
-ওমা তাই বুঝি?হ্যাঁ ।আচ্ছা একটা কথা জিগ্যেস করি ?
-করেন।সব উত্তর দিব আপনার ।
-আচ্ছা আমি একটা অচেনা ছেলে কয়েকদিন ধরে চোখাচোখি হল ।আর তারপর প্রপোস করলাম ।আর এতেই তুমি মানে না চিনে না জেনে আমাকে …..
-ও এই কথা ?অপরিচিত ব্যক্তি তো নন আমার কাছে আপনি ।আমি আপনাকে ভা……
-থামলে কেন বল।
-লজ্জা করে।
-আচ্ছা থাক।কি যেন বলছিলে ?
-বলছিলাম যে আমি আপনার সম্পর্কে সর জানি ।হিহি
-কিহহ !!!সত্যি ??কি জানো ?
-এইজে আপনি একটা বড় মাল্টি ন্যাশনাল অফিসে চাকরি করেন।আপনার বাবা মানে আংকেল হচ্ছে একজন ব্যাংক কর্মকর্তা ।আপার একটা মাত্র ভাই আছে ।আপনি 34/5 নম্বর বাসাতে থাকেন আর আপনি খুব ভদ্র একটা ছেলে ।জিবনে কোন মেয়ের সাথে লজ্জায় কথা বলেন নাই আর …
-থাম থাম।।।।।কি ডেন্জেরাস মেয়েরে বাবা।আমার সব বায়োডাটা বের করে ফেলছে।আর বলা লাগবেনা।কই থেকে এত কিছু জানলা ?
-হিহিহি। ভয় পেয়ে গেছেন নাকি হিহি।
-হ্যাঁ একটু অনেক।পরে কথা বলি ।সক খেয়েছি স্বাভাবিক হতে টাইম লাগবে।
-ওমা এত শুরুতেই শেষ।বাকি জিবন কি করবেন তাহলে হিহিহিহিহি
-আরো আছে????
-হিম আছেতো
-লাগবেনা আমার।হুহ।বাই
-আচ্ছা স্বাভাবিক হলে ফোন দিব।বাই।
.
রেখে দিরাম ফোনটা ।ভাবতে লাগলাম কি সিআইডি মেয়ের পাল্লায় পরলাম।গোরা থেকে সবকিছু বের করে আনা ভাগ্যে আরো কি কি লেখা আছে কে জানে।ততক্ষণে সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত।বাসায় চলে আসলাম।একটা কফি বানালাম ।টিভি দেখছি আর খাচ্ছি।রাত হয়ে গেছে।মেসেন্জার টা টুং করে বেজে উঠল।আমাকে মেসেজ দিছে স্বর্না।
.
-স্বাভাবিক হইছেন ?হিহি
-জি বলাতো যায় ।
-ওও ভালো ।আমি আরো ভাবলাম আমার কথা শুনে ভয় পেয়ে চুপসে গেছেন।হিহি
-নাহ।
-তা কি করছেন এখন জানতে পারি ?
-কফি খাচ্ছি।
-ঐ আমাকে না দিয়েই খেয়ে ফেলতিছেন?
-তুমি খাবে নাকি
-থাক আর লাগবেনা হুহ
টুট টুট টুট….
রেখে দিল ফোনটা।হয়ত রাগ করেই ।এই মেয়েটাযে কি আল্লাই জানে।পরের দিন সকালে নাস্তা করে অফিসে গেছি।একটা কল দিব ভেবেছিলাম কিন্তু কলেজে ভেবে আর দেইনি।অফিস শেষে চলে গেলাম বাস স্টেন্ডে।হঠাৎ দেখি আসছে।ভীষন সুন্দর লাগছিল অবশ্য ।আমি দেখলাভ রাগে মুখটা লাল হয়ে গেছে।মনে হচ্ছে 9 নম্বর বিপদ সংকেত।হঠাৎ সামনে এসেই।
.
-আপনি খুব পচা ।আপনার সাথে আমি কথা বলবনা আর।
-আমি আবার কি করলাম ?
-কি করেন নি?আমি ভেবেছিলাম আপনি আমাকে ফোন দিবেন ।দেননি।একটা জিনিস দিব ভেবেছিলাম ।হুহ আর দিবনা।
-আচ্ছা আচ্ছা।আমি মনে করছি তুমি কলেজে তাই পরাশোনা করছ তাই ফোন দেইনি।আর সরি।
-হুহ
-সরিই
-লাগবেনা।
-সরি বললামতো।আচ্ছা কান ধরছি।কি বল।এইযে ধরলাম
-কি করতিছেন।ছাড়েন।লজ্জা নাই ?লাগবেনা ধরা।মাফ করে দিছি।
-আচ্ছা।কি দিবে বলছিলা?
-ও হ্যাঁ ।গিফ্ট ।
-ওমা তাই ।দেখি।

লাল রংয়ে মোড়ানো একটা বাক্স বের করল সে ব্যাগ থেকে

দেখলাম সেই লাল কাপড়ে মোড়ানো গিফ্ট এর পেকেট টা আমাকে দিল।
-ধরেন এটা
-কি এটাতে
-আগে ধরেন তারপরতো দেখবেন
-আচ্ছা।খুলি ?
-এই নাহ।একদমনা।এখন না বাসায় গিয়ে খুলবেন।
-আচ্ছা।চল তোমাকে বাসায় পৌছে দেই
-আপনি না আসলেই একটা পচা মানুষ।
-আমি আবার কি করলাম ?
-দেখতিছেন না কতক্ষণ ধরে এখানে দাঁড়িয়ে আছি কি একটা আইসক্রিম খাওআবেন তা না আপনি আমাকে ভাগাই দিচ্ছেন ?হুহ চলে যাচ্ছি লাগবেনা আপনাকে
-উরে আল্লাহ।আমি ভাবলাম কলেজ করে তুমি টায়ার্ড।তাই
-বাই
-সরি
-যাচ্ছিগা
-সরি বললামতো।আচ্ছা কান ধরতিছি।
-লাগবেনা।
-তাইলে দাঁড়াও একটা কাজ করি।
এই বলে আমি রাস্তার মাঝখানে চলে আসলাম।আসেপাশে প্রচুর গাড়ি চলছিল।যেকোন সময় আমার এক্সিডেন্ট হতে পারে।আমি তার মধ্যেখানে দাঁড়িয়ে আছি।আমি একটু পাগলামি শুরু করে দিয়েছি।কানটা ধরলাম।চিৎকার করে বললাম সরিইইইই।
দেখলাম বালিকা দৌড়ে আসছে।এসেই যত পারে তত ঘুষির বর্ষন চালাচ্ছিল আমার উপর।দেখলাম হঠাৎ আমাকে জরিয়ে ধরল।আর বলল
-আপনি এত পাগল কেন??আপনার যদি কিছু হয়ে যেত আমার কি হত? (কেদে কেদে)
-আমি তোমাকে না পেয়ে মরতামনা।আর আগে বল মাফ করেছো আমাকে ?
-কক্ষনো না।জীবনেও না।এই কাজটার জন্য তো কখনোই না….
-আচ্ছা তাহলে আরো থাকি এখানে ?
-তাওনা ।চলেন আপনি আমার সাথে।
স্বর্না আমার হাত ধরে টানতে টানতে কাছের একটা পার্কে নিয়ে আসল।হঠাৎ জরিয়ে ধরল আমাকে।
-এই কাজটা কেন করলেন আপনি ?
-এমনি।আর না করলে তোমাকে এত কাছে পেতামনাযে
-ধ্যাত।যান আপনার সাথে আমি আর কথা বলবনা।
-সত্যিই কথা বলবেনা ?
-নাহ।বাই
চলে গেল।আমি শুধু উর চলে যাওআটা দেখছিলাম আর হাসছিলাম।আমি জানি স্বর্না অমাকে ছাড়া থাকতে পারবেনা।হঠাৎ ফোনটা বেজে উঠছে।
-ঐভাবে তাকাই থাইকেন না।আমাকে বাসায় পৌছে দিয়ে আসেন।
-হাহা আচ্ছা
.
একটা দৌড় দিলাম।আমি হাসছি।ভাবছি এত ভাল একটা মেয়ে সবার কপালে জোটেনা।আমি দৌড়ে উর কাছে গিয়ে হাতটা ধরলাম।আর রিকশায় উকে বাসায় পৌছে দিয়ে আসলাম।
.
এভাবেই চলছিল আমাদের প্রেম।হঠাৎ একদিন স্বর্না আমাকে ফোন করে বলল তারাতারি তার বাসায় যেতে ।আমি একটু ভয় পেয়েগেছি ।আচ্ছা ওর আব্বু আম্মু জেনে গেল নাত? জানিনাহ।অনেক সাহস জুগিয়ে উর বাসায় গেলাম।দেখলাম উর আব্বু বসে আছে শোফায়।আমি রিতিমত ঘামছি।ভদ্রলোক বলা শুরু করল।
-তুমিই সেই ছেলে যার কথা আমার মেয়ে বলেছিল?
ভাবলাম শেষ।জেনে গেছে আর মিথ্যে বলে লাভ নেই।যা হবে তা মাথা পেতে নেব।
-জি আঙ্কেল।
-লেখাপড়া কতটুকু করেছ ?
-আঙ্কেল আমি গত বছর ঢাকা ভার্সিটি থেকে পদার্থ তে মাস্টার্স পাশ করেছি আর এখন একটা কোম্পানিতে আছি।
-বেশ।শোন আমার মেয়েটা পড়াশোনায় মনোযোগ নাই।সামনে ওর ইন্টার পরীক্ষা ।মেয়েটার অনেক ইচ্ছে ঢাকা ভার্সিটিতে পরবে।
-জি আঙ্কেল।
-তাহলে আজকে থেকেই শুরু করে দাও।উর দায়িত্ব এখন তোমার ।
.
ওর দায়িত্ব আমার মানে ??আমি কিছুই আগামাথা বুঝতে পারছিনা হঠাৎ
-স্যার চলুন আমার রুমে ।পড়ার রুমটা দেখিয়ে দেই (স্বর্না )
-কিহ ?আচ্ছা
রুমে….
-আমি কিছুই বুঝতে পারছিনা।এগুলা কি?আমাকে একটু বুঝাই বলত।।
-আপনাকে প্রতিদিন দেখতে পারতামনা তো তাই এই কাজটা করেছি।হিহিহি
কি বলব বুঝতে পারছিনা।হাসব না কাদব।কি করার হয়ে গেলাম স্যার।তো প্রতিদিন আসতাম আর ওকে পরাতাম।এভাবে আমরা আরো কাছাকাছি চলে এলাম।কোন সময় মনে হত উকে ছাড়া এক মুহূর্ত থাকাও যেন আমার শ্বাস ছাড়া বাঁচার মত।
.
.
এভাবে দেখতে দেখতে ওর পরীক্ষা চলে আসল ।খুব ভালভাবে পরীক্ষা দিল ।রেসাল্ট ও আসল খুব ভাল আসল।আমরা দুজনেই খুবি খুশি।আঙ্কেল আমাকে অনেক ধন্যবাদ দিল।কিন্তু আমার কাজতো শেষ হয়নি।স্বর্নাকে আবার পরাতে হবে ভার্সিটি পরীক্ষার জন্য ।শুরু করে দিলাম।দেখতে দেখতে পরীক্ষাও এসে পরছে কিন্তু বিপত্তি ঘটল এক জায়গায় ।আমার অফিস থেকে মালয়েশিয়া 2 জন লোক পাঠাবে 5 মাসের জন্য।আর একজন আমাকে সিলেক্ট করেছে।আমি না করে দিয়েছিলাম কিন্তু অফিস রাজি হয়নি।আর স্বর্না এই কথা শোনার পর অনেক কান্নাকাটি করেছিল।টানা 2শপ্তাহ কথাও বলেনি আমার সাথে।কিন্তু কিছু করার নেই।ওকে বলেছিলাম দেশে এসেই বিয়ে করব ।চলে গেলাম সবাইকে ছেড়ে বিদেশ।কিছুতেই কাজে মন বসছিলনা কাজে ।হঠাৎ একদিন জানতে পারলাম স্বর্না ঢাকা ভার্সিটিতে টিকছে।ভীষন আনন্দ লাগছিল আমার।স্বর্নার সাথে মাঝে মাঝে কথা হত।প্রতিটা ফোনেই কথার চেয়ে কান্না বেশি হত।তবুও মনটা শক্ত করে কাজ করতাম।
.
5 মাস পর..
আমার কাজ শেষ।দেশে ফিরছি।কিন্তু স্বর্নাকে জানাইনি।সারপ্রাইজ দিব ভাবছি।এসে পরলাম দেশে।কিন্তু দেশে এসে একটু শক খেলাম।ভাবতে পারিনি এটা হবে আমার সাথে ।যেদিন গেলাম দেখলাম স্বর্না বধু বেশে সেজে বসে আছে ।দেখলাম তার মুখটা একেবারে মলীন হয়ে গেছে।মনে হয় অনেক কান্নাকাটি করার ফলে এটা হয়েছে।ইচ্ছের বিরুদ্ধে বিয়ে এটি।আমি চলে আসলাম।দ্রুত জামাকাপর পাল্টে আবার গেলাম আর বিয়েটা করলাম।এখন আমি বাসর রাতে ডুকব।ভাবছেন হঠাৎ বিয়েই বা কাকে করলাম আর বাসর রাতই বা কোথা থেকে এল ?
একটু পরেই জানতে পারবেন।
ঢুকলাম বাসর রাতে।লম্বা ঘোমটা দেওআ তিনি বসে আছে।হঠাৎ আমার নতুন বৌ বলা শুরু করল…
-দেখুন প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দেন।আমি একজনকে ভালবাসি ।আমাকে জোর করে বিয়ে দেওয়া হয়েছে আপনার সাথে।
-তাহলে সে কোথায়? আজকেও কেন আসলনা ?
-আসছে আমি জানি।আমার মন বলছে।উনি আমার আশেপাশেই আছে।
-হিমম।।আচ্ছা আপনি আমাকে দেখেছেন ?
-নাহ দেখার ইচ্ছে নেই।আমাকে ওনার কাছে নিয়ে চলুন।প্লিজ।
-আচ্ছা আমি নিয়ে যাব।চলুন আমার সাথে।
নতুন বৌকে নিয়ে হাঁটছি রাস্তায় ।একটিবারের জন্যও সে আমার দিকে ঘোমটা খুলে তাকায়নি।আমি একটা পার্কে আসলাম।এখানে খুব সুন্দর করে একটা কেন্ডেল লাইট ডিনারের জন্য মাঝখানে খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে।চারপাশে রয়েছে অসংখ্য মোমবাতি।আমি বললাম নেন চলে এসেছি।এবার ঘুমটাটা খুলতে পারেন।ও আস্তে আসতে খুলল ঘোমটাটা ।ভুত দেখার মত চমকে উঠল সে আমাকে দেখে।
-আপনি ??আপনি ?উনি কোথায় মানে যার সাথে আমার বিয়ে হয়েছে?
-এখনো বুঝনি? ?পাগল তোমার সাথেই আমার বিয়ে হয়েছে।তোমাকে আমি সারপ্রাইজ দিব ভাবছিলাম তাই বলিনি ।
-আপনি আপনি আপনি।।।।।(কাদছে)
-টিস্যু লাগবে ?
-লাগবেনা।কেন এত কষ্ট দিছেন আমাকে ?এত কাদালেন কেন যদি ভালবাসতেন ?
-তাহলেতো আমার এই সুন্দরি বৌটার এমন চেহারাটা দেখতে পারতামনা।
-এত বড় নাটক সাজালেন বুঝলামিনা?
-এখন বুঝবা।আজকে তারিখটা জানি কত ?
-3রা জানুয়ারি ।
-আজকে কি যেন?
-আমার জন্মদিন।এটা মনে আছে আপনার ?
বসে পারলাম হাঁটু গেড়ে মাটিতে।তারপর শেরওআনির পকেট থেকে রিংটা বের করে বললাম।তুমি কি আমার ছোট্ট তিন্নির মা হবে ?আর আমাকে তিন্নির বাবা হয়ে সব আবদার পুরন করার সুযোগ দিবে?
.
.
-দিব দিব দিব।100 বার দিব…200 বার দিব….1000 বার দিব।
-জন্মদিনের উপহার ।পছন্দ হইছে ?
দৌড়ে এসে হাতে আংটিটা পরেই জড়িয়ে ধরল আমাকে।সেকি কান্না।নাহ এটি কোন কষ্টের কান্না নয়।এটি কাওকে আজীবন বুকের মধ্যে কাছে পাউআর সুখের কান্না ।
.

যানেন সেই প্যাকেটে কি ছিল?ছিল একটি ছোট্ট মেয়ের ছবি।যাতে লেখা ছিল আমার একটি মেয়ে চাই যার নাম হবে তিন্নি।

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত