-কি ব্যাপার দোস্তরা,এত জরুরি তলব…(আমি)
-মামা,হেব্বি সুন্দরী একটা মেয়ে আসছে।
এবারে ১০হাজার টাকা বাজি,যদি পটাতে পারিশ।
-শালা ফইন্নি,তোরা ধরবি ১০ হাজার টাকার বাজি!
কথাটা বলার সাথে সাথেই নিরব আর তামিম ওদের স্যামসাং জে২প্রো আর নোকিয়া ৫ মোবাইল শিহাবের হাতে দিয়ে বলল,
-তুই জিতলে টাকা দিয়ে মোবাইল নিয়ে যাব,কোন কথা আছে?
-তাহলে তো কোন সমস্যাই নেই।
-সমস্যা আছে,এবার তুই কিছু একটা জমা দে।
-আমি কি জমা দেব?এক কাজ কর্,মোবাইল নিজের কাছেই রাখ্।কাজ শেষে টাকার হিসেব ঠিকমত থাকলেই হল।
-আচ্ছা,তাহলে বাজি?
-হুম,পাক্কা।এখন চল্, মেয়েটাকে দেখিয়ে দে।
নিরব বলল যে, থার্ড বেঞ্চে বসা কালো রংয়ের ড্রেসপড়া মেয়েটি।স্যার, ক্লাসে তখনো আসে নাই।
মেয়েটি আসলেই অনেক সুন্দর।তাই তো বলি,ওরা ১০হাজার টাকা বাজি ধরার সাহস কোথায় পায়!
.
১ম ক্লাস পরে,আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছি।অতঃপর যেই ক্লাসে ঢুকব তখনই মুখোমুখি ধাক্কা লাগল।৪৪০ ভোল্টের কারেন্টের শক্ যেন খেলাম।কারণ যে মেয়েটির সাথে ধাক্কা খেয়েছি, সে আর কেউ নয়।যার জন্য বাজি ধরেছি সেই মেয়েটিই।বন্ধুদের চোখের দিকে তাকিয়ে দেখলাম,ওঁদের ভিতরে আগুন দাউদাউ করে জ্বলছে।কোন সুন্দরীর সাথে ধাক্বা খেলে, বন্ধুদের একটু জ্বলেই,কিচ্ছু করার নাই।
আমি মেয়েটাকে ‘সরি’ বললাম।
বিব্রত স্বরে ” ইট’স ওকে” বলে ওয়াশরুমের দিকে গেল।
তারপর বাকি ক্লাস গুলোতে শুধু আড় চোখে তাকাতাকি। আমার মনে হয়,মেয়েটার মনের ভিতর একটু হলে ও খোঁচা লেগেছে।তা না হলে এত পজিটিভ রেসপন্স দেওয়ার কথা না।মজার ব্যাপার হচ্ছে,মেয়েটার নাম আমি এখন পযর্ন্ত জানি না।
বন্ধুদের বললাম তোরা পরশু টাকা রেডি রাখিশ,পরশু প্রোপোজ করে দিব।আর তোদের “ভাবি” বলার সার্টিফিকেট ও এনে দিব।
নিরব তৎক্ষনাৎ বলল-পরশু কেন?কালকেই প্রোপোজ কর্।
-কালকে আমি কলেজে আসতে পারব না।
-আচ্ছা,,,তাহলে পরশুই লাস্টডেট।
-ওক্কে।
পরেরদিন আমার কোন কাজ ছিল না।ইচ্ছে করেই যাইনি।কেননা এই একদিন না যাওয়াতে,যদি মেয়েটার মনে উথাল-পাতাল ঢেউ ওঠে,,,তাহলেই ওকে।
পরশু গোলাপ হাতে কৃষ্ণচূড়া গাছটার নিচে দাঁড়িয়ে আছি।হাত ২০ দূরে ফুচকার দোকানে আমার বন্ধুরা দাঁড়িয়ে আছে।আমি যেন কোন বিটলামি না করতে পারি সেজন্য ওঁরা আমার সাথে ফোনে কানেক্ট হয়ে আছে।
মেয়েটি রিকশা করে কলেজে আসল।আমি হাত তুলে দৃষ্টি আর্কষণ করলাম।মাশাল্লাহ,মেয়েটি দেখতে পেয়েছে আমাকে আর আমার দিকেই আসছে…
-হ্যালো,আমি রাজু।
-আমি শ্রেয়া।
-সকালে গোসল করেছেন?
-হোয়াট?
-না মানে সকালে গোসল করলে মাথা ঠান্ডা থাকে।আর আমি আপনাকে এখন যা বলতে চলেছি তার জন্য ঠান্ডা মাথার দরকার।
-মাথা ঠান্ডায় আছে বলেন…
-আমার মনটা চুরি হয়ে গেছে, ঠিক তখন থেকে যখন আমি তোমার সাথে সরি আপনার সাথে ধাক্বা খেয়েছিলাম।
শ্রেয়ার চোখ ক্রমশ বড় বড় হচ্ছে।আমি অনবরত বলেই চলেছি।
-আর এখন আমার মনে হয় সবার যেটা হয়, আমার ও সেটা হয়ে গেছে।
-সেটা কি?
-লাভ অ্যাট ফাস্ট সাইড।
-হোয়াট?
-I love you.
-প্রোপোজ এত দূর থেকে করে?কাছে আসেন।
কাছে গেলাম আর ফটাশ করে শব্দ হল।বুঝতে পারলাম শ্রেয়ার হাত আমার গালের উপরে পড়েছে।বন্ধুরা তো হাসিতে আটখানা।বাজি কি হেরে গেলাম!
শ্রেয়া দুই হাত দিয়ে আমার শার্টের কলার টেনে ধরল…না জানি আজকে আরো কত বেইজ্জতি হতে হবে!
কিন্তু শ্রেয়া আমার শার্টের কলার টেনে যা বলল তাতে আমার মাথায় ৪৪০ x ২=৮৮০ ভোল্টের শক্ লাগল।
-একটা প্রোপোজ করতে এত বাহানা লাগে?ফাজিল ছেলে,গতকালকে আসনি কেন?
তুমি জানো,গতকাল ক্লাসে কতটা আমার খারাপ সময় গেছে।
-মানে?
-মানেটা খুব সোজা…I love you 2.
বন্ধুদের দিকে নজর দিয়ে দেখতে পেলাম,,,গরম তেলে লবণ যেমন ফোটে,ওরা তেমন ফুটছে।
শ্রেয়াকে ক্লাসে রেখে আমি বন্ধুদের সামনে আসলাম।আসার সাথে সাথেই টাকার প্যাকেট আমার হাতে ধরাইদিল।
-কেমনে মামা,এটা কেমনে সম্ভব?আমরা বছরের পর বছর ধরে একটা মেয়েকেই পটাতে পারি না,আর তুই মাত্র দু-দিনে?
-দোস্তরা তোদের জানা উচিত “রাজু”র ডিকশনরিতে অসম্ভব বলে কিছু নাই।
ওদের হাতে ৮ হাজার টাকা দিয়ে বললাম, আমাদের ক্লাবে এটা জমা করিশ।
.
আসলে কাহিনি কি এটাই?
না,এর ভিতরে অনেকগুলা বিটলামি আছে।প্রিয় পাঠক সত্য কাহিনিটা এবার আপনাদের বলছি,তবে হ্যাঁ আপনারা আবার আমার বন্ধুদের কানে দিয়েন না।
সবকিছুই হয়েছে,আমার পরিকল্পনাতে।শ্রেয়া আমার অপরিচিত কেউ নয়।আমার দুলাভাইয়ের ছোট বোন।অসম্ভব সুন্দরী।ওকে দেখার পরেই আমার মাথায় বুদ্ধিটা এসেছিল।আমি খুব ভাল করেই জানতাম, কোন সুন্দরী মেয়ে দেখলেই বন্ধুরা বাজি ধরবে।তাই প্লান মাফিক শ্রেয়াকে আমার ক্লাসে পাঠালাম।ইচ্ছে করেই ধাক্কা লাগলাম অতঃপর শ্রেয়ার মুখে I love u শুনলাম।