এই ফোন দিলে কেন?
– প্রেম করতে।কেন আবার কি।
– তুমি জানো না আমাদের ব্রেকআপটাইম চলছে।এই সময়ে আমরা ফোনেকথা বলি না।এটাই রুলস এন্ড রিগুলেশন।
– শুনো আমি এত রুলস মানতে পারবোনা।
– মানতে হবে।
– আমরা এখন ব্রেকআপে আছি।
– আচ্ছা সানজিদা বলো তো, এসবে তুমি কি শান্তি পাও?তোমার কিমনে আছে আমাদের কয়বার ব্রেকআপ হলো?
– মনে আছে। আমাদের রিলেশন তিনবছর।তার মধ্যে দশবার ব্রেকআপ হলো আজকের টা সহ।
– আমি তো এটা চাই না।
– আমি চাই।ব্রেকআপে অনেককিছু বের হয়ে আসে।
– তুমি কি আমার ভালোবাসার পরীক্ষা নাও সানজিদা?
– তা নয়।তবে আমার ব্রেকআপ করতে বেশ ভালো লাগে।তুমি আমার জন্য অস্থির হয়ে যাও।আমার সাথে কথা বলার জন্য পাগল থাকো।আমি তখন তোমার ভালোবাসাটা অনুভব করতে পারি।
– কেন? এমনিতে তুমি জানো না আমি তোমাকে কতটা ভালোবাসি।
– জানি জানি।আর কিছু বলতে হবেনা।আমার সবসময় রিলেশনে ভালো ভালো থাকাটা ভালো লাগে না।
জীবনটাকে আমি সহজ কঠিন সব বিষয়ে মানিয়ে নিতে চাই। তোমাকে ছাড়া আমার জীবন কেমন হবে সেটাই বুঝতে চাই।জীবনের পথটা সহজ হলে জীবন সম্পর্কে ধারণা অন্যরকম হতো।আমি জীবনের
স্বাদ টা বুঝতে চাই।
– তারজন্য বারবার ব্রেকআপ করবে?
– তুমি বেশী কথা বলে ফেলছো
আবির।আমরা ব্রেকআপে আছি।তুমি ফোনটা রাখো।
– আচ্ছা রাখবো।খেয়েছো কিনাসেটা বলো?
– না না। তুমি এখন কিছুই জানবে না। রাখছি।
পাগল মেয়েটা। ওকে নিয়ে সারাজীবন কি করে কাটাবো?তবে যাই হোক ওর পাগলামো আমার বেশ
লাগে।ব্রেকআপে ও কি মজা পায় আমি জানি না।তবে আমার ওকে ছাড়া অসম্পূর্ণ লাগে।বুকের মাঝে
শূন্যতা কাজ করে। শূন্যতা আমাকে ঘিরে ধরে।ওর ভালো থাকাটা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। মাঝেমধ্যে
মনে হয় ওর এই পাগলামো আমাদেরকে সারাজীবনের জন্য কি আলাদা করে দিবে?ভেবেই পাচ্ছি
না পাগলা মেয়েটাকে নিয়ে কি করবো।
ব্রেকআপের দশদিন হতে চললো।
– আদনান তুমি এখানে কি করছো? তোমার না আমাকে বাসা থেকে পিক করার কথা ছিলো।রাতেই তো
তোমাকে ম্যাসেজ দিলাম।
– আমাদের ব্রেকআপ টাইম কি শেষ?
– জ্বি জনাব।এখন আমরা ভালোবাসার টাইমে আছি।
– উফ্ বাঁচলাম।কখন ব্রেকআপ কখন ভালোবাসা আমি ইদানীং বুঝে উঠতে পারি না সানজিদা।
– হা হা হা হা হা।
– এভাবে হেসো না।খুব রাগ হয়।
– তুমি রাগ করতে জানো?এটা আমারজানা ছিলো না।
– আমার রাগ আছে।তবে তোমাকে দেখাই না এই আর কি।
– এবার কিন্তু আমার আরও হাসিপাচ্ছে।
– ধূর…….পাগলি
– আচ্ছা। আর হাসবো না।
– এবার বলো আমাকে মিস করেছো এই দশদিন?
– করেছি।তবে এবার শূন্যতা বেশী অনুভব করেছি।মনে হলো তোমাকে ছাড়া জীবনটা অসম্পূর্ণ। তোমার
জীবনটাকে আরও তেজপাতা বানানোর জন্য আমাকে খুব দরকার তোমার।এবার ভেবে দেখো আমাকে
তোমার জীবনে রাখবে কিনা?
– আমি জেনে শুনে তোমাকে আমার জীবনে জড়িয়ে নিয়েছি। আর এটা সারাজীবনের জন্য।
– আদনান কি করে সহ্য করো আমাকে?
– এই এমন করে।এই নাও।
– কি এটা?
– খুলে দেখো।
– আংটি…….!
– হুম…..তোমার জন্য এটা।কাল তোমার বাসায় যাবো।তোমাকে সারাজীবনের জন্য চাইবো।
– সত্যি?
– একদম সত্যি।এভাবে প্রেম আর ভালো লাগে না।তোমায় নিয়ে ঘর বাঁধবো।এই পাগলিকে সারাজীবন
পাগলামো করবো।চলবে?
– চলবে মানে অনেক চলবে।
আমাদের বিয়ের তিনবছর হতে চললো।এই তিনবছরে আমাদের অনেকবার ব্রেকআপ হয়েছে।রাগ করে
বাপের বাড়ী চলে যেতো।আমি আবার নিয়ে আসতাম।ওকে ছাড়া আমি অসম্পূর্ণ। আমি শূন্য। ও আমার
শূন্যতা পূরণ করেছে।তাই বারবার আমি ওরই প্রেমে পড়ি। সানজিদা ও আমাকে পাগলের মত ভালোবাসে।
আমি জানি ও মন থেকে কখনো ব্রেকআপ করে না।আমায় ভালোবাসে বলেই আমার ভালোবাসা পেতে চায়।আমার এখন অভ্যাস হয়ে গেছে।ও ব্রেকআপ না করলে কেমন খালি খালি লাগে।মনে হয় কি যেন একটা নাই।জীবন টা আসলেই বিচিত্র। কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি। কখনো সুখের সাগরের ভেসে যাই।আবার মাঝেমাঝে ব্রেকআপের পাল্লায় পড়তে হয়।
গল্পের বিষয়:
ভালবাসা