অভূতপূর্ব

অভূতপূর্ব

গ্রামের মোঠো পথ পাড়ি দিয়ে নিজের যাত্রাপথের দিকে পা দিলাম অনেকটা দিন পর গ্রামে এসেছি।বললেই চলে আমি গ্রামের অ ক কিছুই বুঝি না আকা বাকা পথটাকে ভালই লাগছে,হ্যাঁ

বলে রাখা ভাল গল্পের চিরচারিত চরিত্রে মূখ্য বিবেচনায় আমার কৃতিত্ব স্পষ্টিত হতে যাচ্ছে ।হাটতে হাটতে পা দুটো জিরিয়ে নেওয়া দরকার একটা বটগাছের ছায়াতলে নিজেকে বিলিয়ে

দিলাম,কখন যে ঘুমিয়ে গেছি বুঝতে পারি নি।হঠ্যৎ বাঁশির সুরে নিজেকে আবিষ্কার করতে পারলাম কাছে আসতেই দেখি এটা রাখাল না রাখালিনী।ইউটিউবে দেখেছি গ্রামে গরুর পালের

সাথে সর্বদা একজন ছেলে থাকে রোজ সে গরু চরায় আর বাঁশি বাজায়।ভাবতে বিষ্মিত হচ্ছি আমি মেয়েটাকে কাছে আসতে বললাম?

মেয়েটা কাছে আসলো_আমি তাকে বললাম রসুলপুর কোন দিকে?সে আমাকে পথ প্রতিক্ষণ করলো সে মতেই চললাম আমি রসুলপুর এসে গেছি।
.
রসুলপুর আমার দাদু বাড়ি বাবা মা আমার জন্মের আগে থেকেই ঢাকায় থাকতো কখনো গ্রামে আসা হয়নি,মানে দাদু বাড়িও নয় দাদু,দাদী আমাকে দেখে খুশিতে হতভম্ব হয়ে আমাকে

বললো যা চলে যা আসছিস কেনো।অনেক রাগী কন্ঠে প্রতিফলন করলো আমার উপর।আমি বুঝে উঠার আগেই দাদীকে,দাদী সরি সোনা তোমাকে ছেড়ে কোথাও যাবো না এই যে আসলাম

আর যাবো না।ক্লান্তি শরীরটা নিয়ে গেলাম নদীতে গোসল করতে প্রায় সন্ধ্যা সন্ধ্যা ভাব,এর আগে কখনো নদীতে গোসল করি নি সাতার জানি তবে সাতারু নই।গোসল করছি তখনই ত্বরাই

ভাবে কিছু গরু ঝাপিয়ে পড়লো নদীতে আমি আদৌ উপড়ে উঠতে পারলাম না।ভয়ে বিষ্মিত হলাম ভয়টা কিছু রেস হলো যখন সেই বাঁশি ওয়ালীকে দেখতে পেলাম,কি ব্যপার তুমি এভাবে

কেউ গরু নদীতে নামাই?
.
মেয়েটা কিছু না বলে গরু গুলোকে নদী থেকে গোসল করিয়ে নিয়ে চলে গেল।রাতের খাবার খাচ্ছি তখন দাদীকে জিঞ্জাসা করলাম,দাদী নদীতে গোসল করার সময় একটা মেয়েকে দেখলাম

গরুকে গোসল করালো মেয়েটা কে?

দাদী হাফ ছেড়ে বললো-মেয়েটা এক অভাগী রে,৩/৪ বছর ধরে ওর মা মারা গেছে দুর্ভাগা রে দাদু ভাই তারপর ওর বাবা একটা বিয়ে করে ওর সৎ মা আসে ওরে দেখতে পারে না তাই গরু

গুলারে নিয়া রোজ মাঠে নিয়ে যেতে দেয় তাছাড়া পেটে ভাত পড়ে না।কথা গুলা শুনে নিজের অজান্তে গাল বেয়ে পানি পড়লো।আচ্ছা দাদী মেয়েটা এত সুন্দর বাঁশি বাজায় কি করে?জানি

নারে দাদু ভাই,কথা গুলো বলে চলে গেল দাদী,আমি যথারীতি রোজ ১২/১টা নাগাদ ঘুমায় এখন মাত্র ১০ টা বাজে তবুও মনে হচ্ছে অনেক রাত।ক্লান্তি অবসন্ন কাটাতে ঘুমানোর জন্য পা

বাড়ালাম হঠ্যৎ চিৎকার একটি মেয়ের পাশের বাড়ি থেকে।কিছুটা অবাগ হয়ে বাড়িটার আঙিনায় উঁকি দিলাম দেখি মেয়েটাকে ওর মা মারধোর করছে।রাতে নাকি ভাত রান্না করতে গিয়ে

ভাত পুড়িয়ে ফেলছে মেয়েটার চুলের মুঠি ধরে গরুর গোয়াল ঘরে ফেলে দিয়ে চলে গেল।
.
আমি দোটানায় পড়ে গেলাম কি করবো ভেবে পাচ্ছি না।অনেকটা ঘোড়ের মাঝে থেকে গেলাম মেয়েটার কাছে গেলাম,ভীত হয়ে আছে মেয়েটা আখি যুগল ঝলঝল করে আমার দিকে চেয়ে

আছে।

কিছুই বলছে না মেয়েটা,কি তোমার নাম?

রাবেয়া বুশরাত জান্নাত-বাহ্ সুন্দর নামতো।মেয়েটার সাথে অনেকক্ষণ কাটালাম হঠাৎ উপলব্ধি করতে পারলাম মেয়েটা ঘুমিয়ে গেছে।কি অবাগ করা দৃশ্য পট মনে হচ্ছে যেন আমি কোনও

কষ্টের ফিল্ম দেখছি।ওখান থেকে চলে আসলাম আর ঘুমিয়ে গেলাম সকালে ঘুম ভাংতেই দেখি দাদী দাদু এসে হাজির।
কি ব্যপার সোনা দাদী দাদু তোমরা এত সকালে?

কি বলিস এখনো সকাল আছে?বৈশাখীর মেলা হচ্ছে আমাদের হাটখোলায় যা ঘুরে আয়?দাদু তুমি যাবা না-নারে শরীরটা ভাল না তুই যা?
.
সকালের খাবার খেয়ে প্রায় ২টার দিকে মেলায় গেলাম ভাবছেন সকালের খাবার কেন,আরে উঠেছি ১২:৩০ এ,মেয়েটার বাড়িতে উঁকি দিলাম,না মেয়েটা নেই হয়ত মেলায় গেছে।হাটতে

হাটতে আবার এলাম বটগাছটার নিচে অদূরে দেখা মিললো মেয়েটার সাথে।

কি মেলায় যাওনি?না যাবো না-কেন?এমনি মায়ের বারণ আছে-আমার সাথে চলো মা জানবে না।অবাগ করে মেয়েটা আমার সাথে চলে আসলো,মেলায় আচমকা মেয়েটা আমার হাত

ধরলো চুড়ি কিনবো লাল চুড়ি,দু হাত ভর্তি মেয়েটা চুড়ি নিলো সত্যি অভূতপূর্ব/অপূর্ব লাগছে ওকে?

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত