জীবন নামের এক অদ্ভুত যুদ্ধের ময়দানের পরাজিত সৈনিক আমি । আসলেই কি আমার জীবন এরকম..….? না এটা আমার জীবন হতে পারে না ।
প্রতিটি রাতেই এই রকম হাজারো প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে পথ হারিয়ে কল্পনার জগতে প্রবেশ করে ঘুমিয়ে যাওয়া লক্ষ কোটি মধ্যবিত্ত ছেলেদের মধ্যে আমি একজন । মধ্যবিত্ত বললেও ভুল হবে একজন নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তান ।
পরিবারের বড় ছেলে আমি । কথায় আছে বড় গাছের বড় ঝড় সহ্য করতে হয় । কথাটা সত্য । সবেমাত্র তো ক্লাশ টেনে আমি । এই বয়সেই নিজেকে অনেক পুরাতন , অনেক মলীন মনে হয় । এভাবেই আমার পছন্দের রং টাও হয়ে গেছে সাদা কালো ।
পরিচয়টা দিয়ে রাখি । আসলে পরিচয় দেওয়ার সম্বল বলতে আমার কাছে আছে একটা নাম । আমি মোজাহিদ । কোনো জলোচ্ছ্বাসে বাবা মায়ের ডুবে যাওয়ার শেষ মূহুর্তের একমাত্র আশা ভরসার ভেলা । আমার বাবা একজনন কৃষক । ছোট দুটি যমজ ভাইবোন আছে ।
বাবার পরিচয়টা মলিন হওয়ার কারণে বাবা সবসময়ই চাইতো ছেলে তার নাম উজ্জ্বল করবে । সর্বদাই আমি ও আমার বাবার ইচ্ছা পুরণ করতেই চেষ্টা করি । ছোটবেলা থেকেই আমি অনেক সখ আহ্লাদ ত্যাগ করেছি শুধুমাত্র বাবার মলিন দুটি মূখে হাসি দেখার জন্য ।
আমার বাবা আমার কাছে পৃথিবীর সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ বাবা । মাঝে মাঝে আমি যখন পড়ার টেবিলে বসে পড়তাম ঐ সময়ে আমার বাবা কাজের শেষে বাড়িতে আসতো । তখন বাবার মূখটা দেখলেই মনে হতো সন্তান হিসেবে আমি পরাজিত । আসলে আমি এই কথা গুলো লিখে বুঝাতে পারবো না যে সেসময় টাই বাবার মূখটা আমার কাছে কতটা আশা নিয়ে তাকিয়ে থাকে ।
আমি অনেক চেষ্টা করি মূখটাই হাসি ফুটিয়ে তুলতে । আলহামদুলিল্লাহ কিছুটা সফল ও হয়েছি । বাবার স্বপ্ন ছিল তার ছেলে ক্লাশ ওয়ান থেকে ক্লাশ টেন পর্যন্ত স্কুল এর ফার্স্ট বয় থাকবে । আলহামদুলিল্লাহ আমি সফল হয়েছি ।
কিন্তু সবথেকে বড় স্বপ্নটাই পূরণ করতে পারবো কিনা আমি জানিনা । কারন একটাই করোনা ভাইরাস । আল্লাহ এই গজব তুলে নাও । আমি আমার বাবার মূখে শেষ হাসিটা আমি ফুটিয়ে তুলতে চাই । আমার জন্য দোয়া করবেন যেন আমার বাবার মূখের শেষ হাসিটা আমি ফুটিয়ে তুলতে পারি ।
বিঃদ্রঃ এটা কোনো গল্প নয় আমার জীবনের একটা অংশ । বাজে কমেন্ট করে বিকৃত মানসিকতার পরিচয় দিবেন না ।