বৃদ্ধ দাদু এবং তার সাত বছর বয়সী নাতি বাড়ির বারান্দার একটা নিরালা কোণে বসে কথা বলছিল। কথা— তাদের কষ্ট, দুঃখের গোপন কথা।
নাতি বলল, খেতে বসলে প্রায়ই আমার হাত ফসকে চামচটা পড়ে যায়, ভাত পড়ে যায়, কাপড়ে সুরুয়া পড়ে যায়… সবাই চোখ গরম করে আমার দিকে তাকায়, বকা দেয়— আমি কিচ্ছু টেবিল ম্যানার জানিনে। দাদু বললেন, আমারও তাই হয়।
নাতি ফিসফিস কণ্ঠে বলল, কখনো আমি হিসু করে ফেলি প্যান্টেই। দাদু সহাস্যে বললেন, আমিও। হাসতে হাসতে নাতি বিষণ্ন হয়ে গেল। ছল ছল চোখে বলল, আমি প্রায়ই একা একা কাঁদি।
দাদু ঈষত্ মাথা দুলিয়ে বললেন, হ্যাঁ আমিও। নাতির কণ্ঠে এবার আক্ষেপ— অথচ বড়োদের বিন্দুমাত্র মনোযোগ নেই আমার দিকে। আমার দুঃখ, আমার কান্নাকে ওরা একটুও পাত্তা দেয় না।
এটাই হলো আমার ভীষণ কষ্ট। বৃদ্ধ দাদু তার জরাগ্রস্ত হাতটি নাতির হাতের ওপর রাখলেন। পরম উষ্ণতা আর মমতার কণ্ঠে বললেন, দাদু আমার, দুঃখ কোরো না। ঐ বড়োরাও একদিন বুড়ো হবে। সেদিন তোমার শিশু-সন্তানের সঙ্গে ওরা এইসব কথাই বলবে যা এই বারান্দার নিরালা কোণে আমরা দুজনে এখন বলছি।