মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের সময় যানবাহনের খুবই অসুবিধা ছিল। স্থলপথ ছাড়া জলপথ দিয়েও লোক যাতায়াত করত। জলপথে বজরাই তখনকার দিনে যাতায়াতের একমাত্র উপায়।
এক মহিলাকে প্রায়ই দেখা যেত করে বজরায় উঠতে এবং এদিক ওদিক ঘোরাফেরা করত একটি কাপড়ে জড়িয়ে শিশু কোলে করে। শিশুটিকে সর্দ্দি কাশির ভয়ে সব সময় কাপড় জামা দিয়ে জড়িয়ে ঢেকে রাখতেন। কেউ দেখলে মনে করত এক বছরের মতো বয়স শিশুর সর্দ্দি-কাশির ভয়ে এমনিভাবে জড়ান।
গোপাল মাঝে মাঝে পথে বেড়াতে গিয়ে এই ভদ্র মহিলাকে দেখত এবং মনে মনে শিশুটির কথা ভাবত।
একদিন কথা প্রসঙ্গে গোপাল মহারাজকে এই মেয়েটির কোলের শিশুটির ব্যাপারে তার সন্দেহের কথা খুলে বলল। তখনকার দিনে দেশে প্রচুর চুরি-ডাকাতি হত। চুরি করা মালপত্র সেইসব জলপথে পাচার হয়ে যেত অন্য জায়গায়।
একদিন হঠাৎ যেই মেয়েটির সঙ্গে বজরায় দেখা, অমনি গোপাল ও ওর সঙ্গীরা মেয়েটিকে কোলের শিশু দেখাতে বলে। মেয়েটি কোন মতে শিশু দেখাতে রাজি হয় না। তখন গোপালরা জোর করে মেয়েটিকে কোলের ছেলেটিকে কোল থেকে নামাতে দেখা গেল। ছেলে নয়, জড়ানো ছেলের মধ্যে যত রাজ্যের সোনা-দানা চোরাই মাল।
বুদ্ধি ও সাহসের বলে চোর ধরার জন্য ও দেশের অনেক-উপকার করার জন্য মহারাজ গোপালকে অনেক পুরস্কার দিলেন।