এক পশলা বৃষ্টি হয়ে গেলো। রাত বাজে প্রায় সাড়ে আটটা। সন্ধ্যা থেকে বিদ্যুৎ নেই। জীবনে প্রথম বিউটি পার্লারে এসেছে আহমেদ সবুজ। কারণ আজকে রাতে ওর বিয়ে। আকরাম খানের মেয়ে সোনিয়ার সাথে। সবাই জোর করে ধরে নিয়ে এলো পার্লারে।
ছেলে মানুষের আবার কিসের পার্লার। যত্তোসব ঝামেলা।
ওরা চার বন্ধু মিলে এসেছে দু’টা বাইক নিয়ে। পার্লার থেকে বেরিয়ে এসে সবুজ আর রনি একটা বাইকে উঠলো আর বাকী দু’জন অন্যটাতে। এখান থেকে বাসায় যাবে, তারপর সবাই একসাথে হয়ে বরযাত্রী রওনা দেয়ার কথা। বিয়ে হবে রাত ১০ টায়। দ্রুতগতিতে ছুটে চলছে সবুজের লাল রঙের পালসার বাইকটি। কাকরাইল থেকে মালিবাগ মোড় হয়ে মগবাজারের বাসায় যাবে। রাস্তায় প্রচন্ড জ্যাম। ঘড়ির কাটা দ্রুত এগিয়ে চলছে। মৌচাকের কাছে গিয়ে একটা সিএনজি অটোর সাথে জোরে ধাক্কা খেলো ওদের বাইকটা। ব্যস আর যায় কোথায়! সার্জেন্ট ধরে ফললো সবুজকে। হেলমেট নাই, গাড়ীর কোন কাগজপত্রও নাই। অনেক অনুরোধ, টাকার অফার কোনকিছুতেই মন গলে না সার্জেন্ট বাশারের। শেষে তো এক প্রকার হাতাহাতি অবস্থা। শেষে পুলিশের হাতে তুলে দিলো ওদের দু’জনকে। দশটা পার হয়ে সাড়ে দশটা। কাছে কোনো মোবাইলও নাই, বাসায় যোগাযোগ করার মতো। পুলিশ অফিসার তো নাছোর বান্দা, বড় অফিসার এলে যা হোক একটা ব্যবস্থা হবে। তো অফিসারের অপেক্ষায় রাত ১১টা বেজে গেলো।
– ভাই আপনের জন্য আমার বিয়েটা হলো না আর।
– চুপ থাক ব্যাটা! বড় স্যার আসলে তোরে দিবেনি। পুলিশে সাথে খারাপ ব্যবহার! খারাপ ব্যবহার না করলে তরে অনেক আগেই ছাইড়া দিতাম।
– আপনের বড়সাব কখন যে আসবে ঠিক নাই! ভুল হয়া গেছে ভাই। মাফ কইরা দেন!
– আইয়া পড়বো এহন। আজ তার মেয়ের বিয়া ছিলো। বিয়া পড়ানো শেষ হইলেই আইয়া পরবো।
– আপনের বসের নাম কি ভাই?
– ঐ ব্যাটা নাম দিয়া কি করবি? চুপচাপ বইয়া থাক।
– এমনে জানতে চাইলাম!
– উনি এসি আকরাম খান। সহকারী পুলিশ কমিশনার। নামটা শুনেই চমকে উঠলো সবুজ!
– কি কন ভাই! এসি আকরাম?
– ভাব দেইখা মনে হয় তোর দুলা ভাই লাগে?
– দেবেনি আপনেরে আইজ! হের মাইয়ার লগেই তো আমার বিয়ে ছিলো আজ রাত দশটায়।
– কস কি ব্যাটা!
অফিসার সবুজের কথা শুনে পুরাই টাশকি!
গল্পের বিষয়:
কৌতুক