হজ্জ্ব ইসলামের একটি মৌলিক ইবাদত। হিজরী ক্যালেন্ডার অনুসারে প্রতিবছর জিলহজ্জ্ব মাসে সারাবিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মুসলমানরা হজ্জ্বের উদ্দেশ্যে মক্কায় সমবেত হন।
হজ্জ্ব বিশ্বমুসলিমের মহাসমাবেশ। ভ্রাতৃত্বের মতো ইবাদতের স্বাদ আর অন্য কোন ইবাদত থেকে পাওয়া সম্ভব নয়। তবুও কিছু ছোট ছোট কাজ আপনাকে হজ্জ্বের সমপরিমাণ নেকী দিতে পারে।
১. ফজর থেকে ইশরাক পর্যন্ত আল্লাহর যিকির
হযরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেছেন,
“যে ফজর নামাজ আদায়ের পর সূর্যোদয় পর্যন্ত বসে আল্লাহর যিকির করে এবং সূর্যোদয়ের পর দুই রাকাত নামাজ আদায় করে, তবে আল্লাহ তাকে একটি সম্পূর্ণ হজ্জ্ব ও উমরাহর সওয়াব দেবেন।” (তিরমিজি)
২. জ্ঞান অর্জন
আবু উমামা বাহেলী (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেছেন,
“যে শুধু উত্তম বস্তু শেখার উদ্দেশ্যে মসজিদে যায় অথবা তা শিখাতে যায়, তবে সে একটি পূর্ণ হজ্জ্বের সওয়াব পাবে।” (তাবারানী)
৩. জামায়াতে নামাজ
আবু যর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেছেন,
“আল্লাহ কি তোমাদের ইশার নামাজ দেননি যার জামায়াতে আদায় হজ্জ্বের সমান সওয়াব এবং ফজরের নামাজ যার জামায়াতে আদায় উমরার সমান?” (মুসলিম)
৪. জুময়ার নামাজ
সাঈদ ইবনে মুসয়াব (র.) এর মতে,
জুময়ার নামাজ তার কাছে নফল হজ্জ্বের থেকেও অধিক প্রিয়।
৫. ঈদের নামাজ
এক বর্ণনায় এসেছে, ঈদুল ফিতরের নামাজ উমরার সমতুল্য এবং ঈদুল আযহার নামাজ হজ্জ্বের সমতুল্য।
৬. মুসলমানের প্রয়োজন মেটানো
হাসান আল-বসরী (র.) বলেছেন,
“তোমার ভাইয়ের প্রয়োজন মেটানো তোমার বারবার হজ্জ্ব করার থেকে উত্তম।”
৭. পিতা-মাতার বাধ্যবাধকতা
রাসূল (সা.) একবার তার এক সাহাবীকে তার মায়ের প্রতি বাধ্য হওয়ার গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে বলেন,
এর ফলে পিতা-মাতার বাধ্য সন্তান যেন হজ্জ্বের সফরের জন্য বের হয়, উমরা সম্পন্ন করে এবং আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করে।
৮. যিকির
অপর একটি বর্ণনায় এসেছে, যে ব্যক্তি ফজরের পর ১০০ বার এবং মাগরিবের পর ১০০ বার সুবহানাল্লাহ পাঠ করে, তবে সে ১০০ বার হজ্জ্ব আদায়ের সওয়াব পাবে।
9. নিষিদ্ধ কাজ থেকে বিরত থাকা
পূর্ববর্তী অনেক সালফে সালেহীনের মতে, তিল পরিমাণ অন্যায় ও নিষিদ্ধ কাজ থেকে বিরত থাকা পাঁচশত বার হজ্জ্বের থেকেও উত্তম।
আল্লাহ আমাদের এই কাজগুলোর মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন ও হজ্বের সমপরিমাণ নেকী অর্জনের সুযোগ দান করুন। একইসাথে আমাদের সবাইকে হজ্জ্বে যাওয়ার সুযোগ প্রদান করুন।