রমজান মাসে আমাদের সকলেরই পরিকল্পনা থাকে অতিরিক্ত কিছু নফল ইবাদত আদায় করার। কিন্তু আমাদের দৈনন্দিন ব্যস্ততায় আমাদের জন্য অনেক সময় তা কঠিন হয়ে পড়ে। আবার ইবাদত পালন করতে গেলেও হয়তো দৈনন্দিন জীবনের কাজের শিডিউল ঠিক রাখা চ্যালেঞ্জের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।
এখানে আমি আপনাদের দুটি সাধারণ ও কার্যকরী বিষয়ে সুপারিশ করছি, যা আপনি সহজেই রমজানে অনুশীলন করতে পারেন। এর মাধ্যমে আপনি আল্লাহর নিকটবর্তী হওয়ার হওয়ার অসাধারণ সুযোগ লাভ করতে পারেন।
১. সাহরীর সময়
শুধু সাহরী খাওয়ার জন্যই নয়, বরং আপনার প্রভুর সামনে দাঁড়ানোর জন্য, তার সাথে কথা বলার জন্যও সাহরীর সময় ঘুম থেকে উঠুন।
রাসূল (সা.) এর হাদীসে সাহরীর বরকত বর্ণনা ও সাহরীর জন্য উৎসাহ দানের পাশাপাশি তাহাজ্জুদের অসামান্য গুরুত্ব ও বরকতের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।
সাহরী খাওয়া সুন্নত। বাস্তব দিক বিবেচনা করলে, দিনের শুরুতে শারীরিক ও আধ্যাত্মিকভাবে আমাদের পুষ্টির যোগানের জন্য সাহরীর গুরুত্ব অনস্বীকার্য।
সাহরী খাওয়ার পাশাপাশি খাওয়ার আগে বা পরে কিছু সময় আল্লাহর সামনে দাঁড়িয়ে তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় ও দোয়া করা যেতে পারে।
ইমাম আশ-শাফেয়ী বলেছেন,
“তাহাজ্জুদের দোয়া এমন এক তীরের মত যা কখনো লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়না।”
মূল্যবান এই সময়কে আল্লাহর কাছে আপনার যাবতীয় আবেদন-নিবেদনের জন্য ব্যবহার করুন। আপনার গুনাহের ক্ষমাপ্রার্থনা, আপনার যাবতীয় ইবাদত কবুল এবং দুনিয়া ও আখেরাতে আপনার কল্যাণের জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করুন।
২. ইফতারের সময়
ইফতারের কিছু সময় পূর্বে আল্লাহর কাছে তার রহমত ও মাগফেরাতের প্রত্যাশায় দোয়া করুন। ইফতারের আগের মুহূর্তটি ঐ মূল্যবান মুহূর্তগুলোর মধ্যে অন্যতম, যে সকল মুহূর্তে দোয়া কবুল করা হয়।
রাসূল (সা.) এর হাদীসে রোজাদারের ইফতারের আগমুহূর্তের দোয়া কবুল হওয়ার বিষয়ে বর্ণনা এসেছে।
সুতরাং, আপনি অফিস, বাড়ী, মসজিদ বা রাস্তা যেখানেই থাকুন, মূল্যবান এই মুহূর্তকে অবহেলা করবেন না। যখন আমরা ইফতারী নিয়ে ইফতারের জন্য অপেক্ষায় থাকি, তখন অলসভাবে বসে থাকা বা অন্যের সাথে গালগল্প করার চেয়ে আমরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা ও কল্যাণ কামনায় দোয়ার জন্য হাত উঠাতে পারি।
আমাদের দৈনন্দিন ব্যস্ততা ও দায়িত্বের কারণে আমরা হয়তো রমজানে বিশেষ কোন ইবাদত পালন করতে পারি না। কিন্তু সাহরী ও ইফতারের অল্প কিছু সময় কাজে লাগিয়ে আমরা রমজানের রহমত ও বরকতে নিজেদের শরীক করতে পারি।
সুতরাং, বরকতময় এই দুটি সময়কে কাজে লাগানোর মাধ্যমে রমজানের কল্যাণ অর্জনের জন্য আমাদের চেষ্টা করা উচিত।
আল্লাহ আমাদের রমজানের যাবতীয় কল্যাণ অর্জনের সুযোগ দান করুন।