মানব জীবনে চরিত্রের গুরুত্ব অপরিসীম। মানুষের বাহ্যিক আচার-আচরণ তার মনে প্রোথিত মূল্যবোধ ও গুণাবলির আলোকেই সম্পাদিত হয়। জগৎখ্যাত দার্শনিক ইমাম গাজ্জালী (রহ.)-এর মতে যেমন গুণাবলি মানব মনে জাগরুক থাকে তারই প্রতিফলন তার বাহ্যিক কাজ-কর্মে প্রকাশিত হয়। এর আলোকে বলা যায় মানুষের কোনো কাজই তার মূল চিন্তা-চেতনা বহির্ভূত নয়। এ জন্যই যুগে-যুগে সংস্কারকরা মানুষের সংশোধন ও পবিত্র জীবন যাপনের পন্থা হিসেবে তাদের আত্মার পরিশুদ্ধি ও মূল্যবোধের জ্ঞান প্রথমেই শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব দিতেন। ইসলামের দৃষ্টিতে মানুষের উন্নতি-অবনতি, উত্থান-পতন, মান-সম্মান ইত্যাদি সব কিছুই তাদের মানসিক বিকাশ ও মূল্যবোধ জাগ্রত করার ওপরই নির্ভর করে। পবিত্র কুরআনে এ সম্পর্কে ইরশাদ হচ্ছে- “আল্লাহ কোন জাতির অবস্থার পরিবর্তন করেন না যে পর্যন্ত না তারা নিজেদের অবস্থার পরিবর্তনে এগিয়ে আসে।” (সুরা আর-রা’দ; ১১)
চারিত্রিক উন্নতি বিকাশকে ইসলাম অত্যধিক গুরুত্বারোপ করে থাকে। এমনকি তা ইসলামী শিক্ষার অন্যতম একটি কোর্স হিসেবে পরিগণিত করা হয়। পবিত্র কুরআন ও সুন্নাহ হতে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ তথা সমগ্র মানব সমাজের চারিত্রিক উন্নয়নে প্রচুর নির্দেশনা বিদ্যমান। মূলত মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর মধ্যে মৌলিক পার্থক্য এ চরিত্রের আলোকেই হয়ে থাকে। আখলাকের মাধ্যমেই মানুষ মনুষ্যত্বের চূড়ান্ত মানে উন্নীত হতে পারে। ইসলাম একটি পরিপূর্ণ জীবন-বিধান। এ বিধানের পরিপূর্ণতার জন্য তাতে উন্নত চরিত্রের বিধান থাকা আবশ্যক। তাই ইসলামে ‘আখলাকুল হাসানাহ’ তথা উন্নত চরিত্রের স্থান অনেক ঊর্ধ্বে।
বিশ্ববাসী আজ একবিংশ শতাব্দির প্রথম সোপানে। পেরিয়ে আসছে মানব সভ্যতার অনেক ধাপ। অতিক্রম করছে জ্ঞান-বিজ্ঞানের নতুন-নতুন অধ্যায়। কিন্তু অত্যান্ত পরিতাপের বিষয়, আজকে দুনিয়ার মানুষ তাদের মূলকে ম্লান করে পিছনে ফেলে নকলকে বিকশিত করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তাতে প্রতিটি ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ, দেশ ও জাতি আজ বাতিল প্রতিষ্ঠায় ব্যস্ত, মহা ব্যস্ত ও প্রাণ ওষ্ঠাগত। আমরা জানি আমাদের মূল হলো “আল্লাহ তা’আলার পবিত্র কুরআন ও রাসূল (সা.)-এর সুন্নত”-এর আদর্শ ও মতবাদ প্রতিষ্ঠা করা; তা না করে আমরা তাগুত, শয়তান ও মানব রচিত মতবাদ তথা অন্যান্য অপক্ত রচিত মতবাদ প্রতিষ্ঠায় পঞ্চমুখ। যার ফলে আমাদের চরিত্র, তাহযীব, তামাদ্দুন, আদর্শ, সংস্কৃতি সব হারিয়ে নৈতিক অবক্ষয়ের মহামারিতে আক্রান্ত হয়ে অশ্লীলতা ও বেহায়াপণার অতল গহ্বরে তলিয়ে যাচ্ছি। তাই আমরা সেই জাহেলিয়াতের অন্ধকার যুগের আদর্শ নামের অনাদর্শের ভুষণ বেছে নিয়েছি। একজন সুস্থ, বিবেক সম্পন্ন, সুশিক্ষিত, মু’মেন বান্দা যদি তার সুস্থ চিন্তাধারার নিরিখে “জাহেলী যুগ, আলোর যুগ, আর বর্তমান যুগ” এ তিন যুগের বাস্তবচিত্র তুলনামূলক পর্যলোচনা করেন, তাহলে আমাদের বর্তমান অবস্থানের চিত্র সত্যই বিকশিত হয়ে উঠবে।
আমাদের বিপরীতমুখী পদচারণার অভাবনীয় ক্ষতিকর ছোঁবল থেকে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ তথা জাতিকে বাঁচাতে মূল চাবি-কাঠি হাতে নিতে হবে, আর তা হলো আমাদের কচি-কাঁচা “শিশু-কিশোর।” প্রবাদ আছে- “কাঁচায় না নোয়ালে বাঁশ, পাকলে করে ট্যাস ট্যাস।” আমাদের শিশু-কিশোররাই কাঙ্খিত সমাজ গঠনের মূল ক্ষেত্র। যদি আমরা শিশুদের আদর্শ-চরিত্র গঠনের প্রশিক্ষণ দিতে চাই, তাহলে মহানবী (সা.)-এর আদর্শ অনুসরণ করা ব্যতীত কোন উপায় নেই। স্বয়ং আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন- নিঃসন্দেহে আপনি নৈতিকতার অতি উচ্চ মর্যাদায় সমাসীন। (সূরা কলম; ৪) অন্যত্র আল্লাহ তা’আলা বলেন- আসলে তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ। (সূরা আহযাব; ২১) তাই আসুন শিশু-কিশোরদের প্রতি মহানবীর আদর্শ কেমন ছিল তা আমরা পর্যালোচনা করি।
মানুষের মহৎ ও উন্নত জীবন গড়ে ওঠে তার শৈশব ও কৈশোর জীবনের ওপর ভিত্তি করে। একটি আদর্শ সমাজের ভিত্তি নির্ভর করে আদর্শ “মা” তার সন্তানকে পবিত্র ও নৈতিক শিক্ষাদান ও সুষ্ঠ, সুন্দর পরিবেশে লালন-পালনের ওপর। কেননা পরিবেশ হলো শিশু-কিশোরদের জন্য সবচেয়ে বড় শিক্ষাঙ্গন। অনেক সময় শিশুরা শিশুসুলভ চপলতার কারণে বাবা-মা, ভাই-বোন পরিবারস্থ বড়দের ডাকে সাড়া দেয়না বিধায়, বড়রা তাদেরকে কাছে নিয়ে যাবার জন্য কিছু দেবার লোভ দেখালে তাতে ওরা সাড়া দেয়। বড়রা যদি তাদের ওয়াদা পূরণ করেন তাতে শিশুরা অত্যন্ত খুশি হয়। কিন্তু দেবার বাহানা করে কিছু না দিলে কচি মনে প্রতারণার দাগ তৈরি হয়। তামাশাচ্ছলে এ ধরনের ব্যবহার বা ওয়াদা মিথ্যা বলে বিবেচিত। এমন ব্যবহারে শিশু-কিশোররা অতি শৈশবেই মিথ্যা ও প্রতারণার অনুশীলন করার সবক পেয়ে ভবিষ্যত জীবনেও তারা মিথ্যা ও প্রতারণার অনুশীলন করার সুযোগ পায়। অতএব, যারা শিশুদের সাথে তামাশাচ্ছলে মিথ্যা বলাকে খারাপ মনে করে না তাদের সতর্ক হওয়া উচিত। কেননা এতে বড়দের আমলনামায় মিথ্যা পাপ লেখা হয়, আর ছোটদের মনে মিথ্যা ও অন্যায় বোধ স্বাভাবিক বলে স্থান পায়। এতে বাবা-মা যেমন পাপী হয়, তেমনি শিশুদের ভবিষ্যত ক্রমে অকল্যাণকর হয়ে উঠে। তাই বলে, হাসি-কৌতুক নিষিদ্ধ নয়। রাসূল (সা.) ও হাসি-কৌতুক করতেন; কিন্তু আনন্দ ফূর্তির জন্য তিনি মিথ্যা কোন কিছু বলতেন না। একবার হযরত আবু হুরায়রা (রা.)-এর এক প্রশ্নের জবাবে রাসূল (সা.) বললেন- অসত্য বা প্রকৃত ঘটনার বিপরীত কিছু বল না।
শিশু যখন একটু বড় হয়, তখন তার হাতে বই-খাতা দিয়ে স্কুলে মক্তবে পাঠিয়ে দেয়া হয়, তাতে মা-বাবার সাথে শিক্ষকেরও দায়িত্ব চলে আসে শিশুর আদর্শ জীবন, উন্নত চরিত্র ও নৈতিক মূল্যবোধের যথাযথ ধারণা ও প্রশিক্ষণ দেয়ার। বইপত্রে যেসব কিচ্ছা-কাহিনী থাকে, তার ভাল-মন্দ উভয় দিকের স্পষ্ট ধারণা প্রদান করা শিক্ষক ও মা-বাবার এমনই একটি দায়িত্ব, যাতে শিশুর সত্যের প্রতি আগ্রহ এবং মিথ্যার প্রতি ঘৃণা জন্মা স্বাভাবিক হয়ে উঠে। প্রখ্যাত ঐতিহাসিক দার্শনিক ইবনে খালদুন বলেন, শৈশবকালীন শিক্ষা অধিকতর দৃঢ় হয় এবং তার পরবর্তী শিক্ষার ভিত্তি হিসেবে কাজ করে। কেননা অন্তরে প্রথম অনুপ্রবিষ্ট বিষয়ই যোগ্য দক্ষতার ভিত্তি স্বরূপ। এ ভিত্তির দৃঢ়তা ও উহার প্রক্রিয়া অনুসারেই ছোটদের অবস্থা বিকশিত হয়ে থাকে। (আল মুকাদ্দিমা)
রাসূলে কারীম (সা.) ইরশাদ করেন “লোকদের নিজস্ব পরিবার সম্পর্কে বিশেষভাবে প্রশ্ন করা হবে।” (মুসনাদে আহমদ) এ হাদীসের আলোকে পরিবারের প্রধানের দায়িত্ব তার অভিভাবকত্বের অধীনে যারা থাকে তাদেরকে দ্বীনী শিক্ষা ও জ্ঞান প্রদান এবং সচ্চরিত্র আল্লাহভীরু মানুষ তৈরী করা।
আমরা যদি বিশ্বের শ্রেষ্ঠ মনিষীদের জীবনের প্রতি তাকাই তাহলে দেখতে পাবো, তারা কিভাবে তাদের সন্তানদেরকে আল্লাহভীরু ও খাঁটি মু’মেন হিসেবে গড়ে তুলতে কত তৎপর ছিলেন। পবিত্র কুরআনে হযরত লোকমান (আ.) তার ছেলেকে উপদেশ দিচ্ছেন- “হে বৎস! নামায কায়েম করো, সৎ কাজে আদেশ করো, এবং খারাপ কাজে নিষেধ করো, এবং যে কোন বিপদই আসুক না কেন, সে জন্য ধৈর্য ধারণ করো। নিশ্চয় এ কথাগুলো গুরুত্বপূর্ণ কাজের অন্যতম। (সূরা লোকমান; ১৭) হযরত লোকমান (আ.) তার মৃত্যুকালীন সময়ে তার সন্তানদেরকে যে উপদেশ দিয়ে ছিলেন, তা শিশু-কিশোরদের তারবিয়্যাতের জন্য কতইনা সুন্দর উদাহরণ। আল-কুরআনে ইরশাদ হচ্ছে- যখন ইয়াকুবের মৃত্যু উপস্থিত হয় তখন কি তোমরা উপস্থিত ছিলে? তখন সে নিজ পুত্রগণকে বলেছিলেন, আমার পরে তোমরা কোন জিনিসের ইবাদত করবে? তারা বলেছিল আমরা তোমার পিতৃপুরুষ ইব্রাহীম, ইসমাঈল ও ইসহাকের উপাস্য- সে অদ্বিতীয় উপাস্যের ইবাদত করবো, এবং আমরা তারই অনুগত থাকবো। (সূরা বাকারা; ১৩৩)
নিজ পরিবারের সবাইকে ঈমানী চেতনায় উদ্বুদ্ধ করার শিক্ষা রয়েছে এ আয়াতে। এ আয়াত আমাদেরকে শিক্ষা দিচ্ছে যেন আমরা আমাদের পরিবার-পরিজন ও ছেলে-মেয়েদেরকে দ্বীন সম্পর্কিত জ্ঞান, ঈমান ও চরিত্র উত্তম করে গড়ে তুলতে পারি। ইসলাম দুনিয়াবী শিক্ষার বিরুদ্ধে নয়। পার্থিব জীবনে লাভবান হবার উদ্দেশ্যে সন্তান-সন্ততিদের শিক্ষিত করার পাশাপাশি দ্বীনী ও ঈমানী শিক্ষা থেকে যে দূরে না থাকে এদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন। এখানে খেয়াল করা অত্যন্ত প্রয়োজন যে, ঈমান-আকীদা বিশ্বাসের মূল তত্ব জীবনযাত্রা প্রণালী, নৈতিকতা মূল্যবোধ, কুরআন-হাদীসের জ্ঞানার্জন ও তার ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ, ইতিহাস দর্শন, সামাজিক রীতি-নীতি, সরকার গঠনের উপায়-পন্থা, রাজনীতির মৌলিক সূত্র ইত্যাদির উপযুক্ত শিক্ষা দ্বীনদার, ঈমানদার, আল্লাহভীরু যোগ্য শিক্ষক থেকে গ্রহণ করা একান্ত প্রয়োজন। আমরা সন্তান-সন্ততিকে শিক্ষা দিতে গিয়ে অনেক সময় ভূল করে বসি। তাই আমাদের প্রচেষ্টার ফল দাঁড়ায় হিতের বিপরীত। আরও খেয়াল রাখতে হবে যে, নেতিবাচক দিক মানুষকে দুর্বল করে। তাই শিশুদেরকে ভাল কাজের প্রতি উৎসাহ এবং মন্দ কাজের প্রতি ঘৃণা জন্মানোর চেষ্টা করতে হবে। তারা কোন ভুল করলে তাদেরকে তিরস্কার না করে ওসব খারাপ দিক থেকে ক্রমশ ভালোর দিকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে যতœবান হতে হবে। এ ব্যাপারে আল্লাহর নির্দেশ “তোমাদের কোন কোন স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি তোমাদের দুশমন। অতএব, তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাক। যদি মার্জনা কর, উপেক্ষা কর, এবং ক্ষমা কর, তবে আল্লাহ ক্ষমাশীল ও করুণাময়। (সূরা তাগাবুন; ১৪) অর্থাৎ ক্ষমাশীল দৃষ্টি ও স্নেহ ভালবাসার মাধ্যমে তাদেরকে সংশোধন করতে হবে, উত্তম হিসেবে গড়ে তোলার প্রচেষ্টা চালাতে হবে।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের সন্তান-সন্ততির প্রতি ভালবাসার দোয়া শিখাতে ইরশাদ করেন- “রাব্বানা হাবলানা মিন আযওয়াজিনা ওয়াযুররিয়্যাতিনা কুররাতা আ’ইউনিওঁ ওয়াজআ’লনা লিল মুত্তাকীনা ইমামা।” অর্থাৎ “হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদের স্ত্রীদের পক্ষ থেকে এবং আমাদের সন্তানের পক্ষ থেকে আমাদের জন্যে চোখের শীতলতা দান কর এবং আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্যে আদর্শস্বরূপ কর।” (সূরা ফুরকান; ৭৪) একটি পরিবারের শান্তি ও শ্রীবৃদ্ধির মূলে রয়েছে কোমলতা ও পরস্পরে ভালবাসা। এ ব্যাপারটি বোঝাতে রাসূল (সা.) হযরত আয়েশাকে নির্দেশ দেন, হে আয়েশা! কোমলতাকে নিজের জন্য অনিবার্য করে নাও এবং কঠোরতা ও লজ্জাহীনতা থেকে নিজেকে রক্ষা করো; কেননা যার মধ্যে ন¤্রতা ও কোমলতা আছে সে ন¤্রতাই তার শ্রীবৃদ্ধির কারণ হয়। আর যার থেকে ন¤্রতা ও কোমলতা উধাও হয়ে যায় তা ত্রুটিপূর্ণ হয়ে যায়। (মেশকাত)
আমাদের মনে রাখতে হবে, সন্তান-সন্ততির প্রতি সীমাহীন ভালবাসার অনুসঙ্গ প্রয়োজনীয় শাসন। কারণ প্রত্যেক সঠিক অনুশাসন বেদনা ও শাস্তিক্রুদ্ধ প্রতিহিংসার ফল নয়; বরং যৌক্তিক প্রেমেরই বিকাশ। সমাজে নষ্ট সন্তান এরাই, যাদের শাস্তি দেয়া হয় না; কারণ তাদের পিতা-মাতার স্নেহ হলো অন্ধ এবং তাদের স্নেহের বস্তুর পরিপন্থি। রাসূল (সা.)-এর আদর্শে সন্তান-সন্ততির প্রতি সদাচরণের মাধ্যমে যে পরিবার গড়ে ওঠে তার সীমা পৃথিবীতেই শেষ হয়ে যায় না; বরং আখেরাতের অসীমকাল পর্যন্ত তা বিস্তৃত। এ ব্যাপারে আল্লাহর ওয়াদা “যারা ঈমান গ্রহণ করেছে এবং তাদের সন্তানরা স্বঈমানে তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করেছে আমি তাদের সে সব সন্তানকে তাদের সাথে (জান্নাতে) একত্রিত করে দেব। আর তাদের আমলে কোন প্রকার ঘাটতি ঘটাবো না। প্রত্যেক ব্যক্তি তার কৃতকর্মের জন্য দায়ী। (সূরা তূর; ২১)
আজকের শিশু আগামী দিনের নাগরিক ও ভবিষ্যত। আমরা যদি আমাদের শিশুদেরকে রাসূল (সা.)-এর আদর্শ অনুসরণে সৎচরিত্রবান করে গড়ে তুলি, তাহলে পরবর্তী প্রজন্মকে তারা তাদের মতই করে গড়ে তোলার প্রয়াস পাবে। এ ধারাবাহিকতায় গড়ে উঠতে শুরু করবে সুন্দর, শান্তিময় পরিবার আর ক্রমান্বয়ে সমাজ, জাতি ও দেশ। যার ফলে আমরা আবার ফিরে পাবো আমাদের হারানো নৈতিক মূল্যবোধ, আদর্শ, তাহযীব, তামাদ্দুন, সংস্কৃতি, আদর্শ ব্যক্তি তথা সব কিছু। মুক্তি পাবো পাপ-পঙ্কিলতা, অশান্তি, দাঙ্গা-হাঙ্গামা, লুণ্ঠন, ধর্ষণ, চুরি-ডাকাতি, হানাহানি-কাটাকাটি, মারামারি ইত্যাদি জাহিলিয়াতের অন্ধকার যুগের ঘৃণ্যরীতি-নীতির বিষধর ছোঁবল থেকে। আল্লাহ আমাদের চরিত্র গঠনের পবিত্র সাধনায় ব্রত থাকার তাওফীক দান করুন। আল্লাহুম্মা আমীন!