আজ থেকে হাজারো বছর আগে বর্তমানে জর্ডান নামক দেশে সুরান নামক একটি সম্প্রদায়ের মানুষরা বসবাস করতো আর আল্লাহ সেই সম্প্রদায়ের মানুষের হেদায়েতের জন্য একজন নবি প্রেরণ করলেন যাকে সবাই হযরত আইয়ুব আঃ নামেই চেনে।
হযরত আইয়ুব আঃ ছিলেন খুব ধ্বনি,সুপুরুষ এবং সেই জাতির সর্দার,উনার 7 ছেলে এবং 7 মেয়ে ছিল।
উনার সম্মান এবং মর্যদা এতটাই ছিল যে রাস্তা দিয়ে যেখানেই যেতেন সবাই উনাকে দেখে দাঁড়িয়ে সালাম দিত।
বলেছিলেন আল্লাহ যাকেই বেশি ভালোবাসেন তাকে ধৈর্য দিয়ে পরিক্ষা করেন।
আল্লাহ তখন তার বান্দা হযরত আয়ুব আঃ কে পরিক্ষা করা শুরু করে দিলেন।
হযরত আয়ুব আঃ সব ছেলে মেয়ে মারা গেল সমস্ত ধন সম্পত্তি শেষ হয়ে গেল,এবং এর সাথে সাথে আয়ুব আঃ কে আল্লাহ এমন রোগে ফেলে দিলেন যার ফলে আয়ুব আঃ এর শরির থেকে মাংস খসে খসে পড়তে পাগলো।
আর তখন সেই সম্প্রদায়ের মানুষেরা যারা আয়ুব আঃ কে এত সম্মান করতো তারাও এখন উনাকে অপমান করতে লাগলো,ঘৃণা চোখে দেখতে লাগলো এবং তারা সবাই বলাবলি করতে লাগলো যে আল্লাহ এর উপর অসন্তুষ্ট আল্লাহ এখন আয়ুবকে শাস্তি দিচ্ছে,এ কোনো নবি হতে পারেনা,এ আমাদের মিথ্যা বলেছে,বরং এ একজন পাপি বান্দা,এমনকি উনার সঙ্গে কেউ ভালো করে কথাই বলতো না,তবুও সেই আল্লাহর নেক নবি আল্লাহর প্রতি সন্তষ্ট ছিল,এবং অনবরত আল্লাহর জিকির করে আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া আদায় করতো।
দিনের পর দিন আয়ুব আঃ এর রোগ বাড়তেই লাগলো তখন সেখানকার সম্প্রদায়ের লোকজনরা বলতে লাগলো আয়ুব যে ভয়ানক রোগে আক্রান্ত হয়েছে এমন যেন না হয় এর প্রভাব আমাদের সন্তানদের উপর পড়ে,উঠাও আয়ুবকে একে জঙ্গলে ফেলে দিয়ে আসো,এর কোনো অধিকার নেই আমাদের সঙ্গে থাকার।তখন সবাই আয়ুব আঃ কে বিরান জায়গায় ফেলে দিয়ে আসলো,তবুও সেই আল্লার নেক নবি এবং উনার স্ত্রী সন্তুষ্ট হয়ে আল্লার জিকির করতো আল্লার প্রতি শুকরিয়া আদায় করতো।যখন খাওয়ার জন্য কিছু কিছুই থাকতো না তখন আয়ুব আঃ এর স্ত্রী অন্যের বাড়ি গিয়ে কাজ করতো,আর যে পয়সা বেঁচে থাকতো তাদিয়ে আয়ুব আঃ এর চিকিৎসা করাতো।তবুও আয়ুব আঃ সর্বদা আল্লাহর জিকির আর শুকরিয়া আদায়ে ব্যাস্ত থাকতো।দিনের দিনের পর হযরত আয়ুব আঃ এর রোগ বাড়তেই লাগলো,একদিন উনার স্ত্রী বললেন এ আল্লাহর নবিআপনি আল্লাহর কাছে কেন দোওয়া চাইছেন না যাতে আপনি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠেন,তখন আল্লাহর নবি আয়ুব আঃ একটু হেসে বললেন আচ্ছা বলতো আমরা কত বছর ভালোভাবে জীবন যাপন করেছি তখন উনার স্ত্রী বললেন ৭০-80 বচ্ছর,তখন আল্লাহর নবি কান্না করতে করতে বলতে লাগলেন আমরা ৭০-৮০ বচ্ছর খুব ভালো ভাবে আরাম আয়েশে ছিলাম,সুখ শান্তিতে জীবিন যাপন করে ছিলাম,আর আল্লাহ এখন 1বচ্ছর থেকে আমার পরিক্ষা নিচ্ছেন তাই বলে আমি এত সহজে ধৈর্য হারিয়ে ফেলবো?যতদিন ইচ্ছা আল্লাহ আমার উপর পরীক্ষা নিতে পারে ততদিন দিনই আমি ধৈর্য ধারন করবো।এমন একটি পর্যায় আসলো তখন উনার শরীরের ক্ষত স্থানে পোকা মাকড় এসে বসতে লাগলো, যখন কোনো পোঁকা উনার শরীর থেকে খসে মাটিতে পড়ে যেত উনি তখন সেই পোঁকাটাকে তুলে আবার সেই ক্ষত স্থানে রেখে বলতেন সম্ভবত আল্লাহ তোমার রিজিক আমার এই শরীরেই রেখেছেন,তুমি খাও,যদি এটাও আল্লাহর ইচ্চা হয়।কিছু দিন পর আয়ুব আঃ এর স্ত্রীকে লোকজনেরা কাজ দিতে নারাজ,কেনরা তারা বলতে লাগলো আয়ুবের স্ত্রী আমাদের বাড়ি ঘরে আসে কাজ করতে আর এ আয়ুবের কাছে থাকে এমন যেন না হয় আয়ুবের রোগ এর স্ত্রীর মাধ্যমে আমাদের মধ্যে না ছড়িয়ে যায়।
এই মহিলাকে কেউ যেন কাজ না দেয়,তখন আয়ুব আঃ এর স্ত্রী উনার কাছে এসে: কান্না করতে করতে বলতে লাগলেন হে আল্লাহর নবি আপনি আল্লাহর কাছে দোওয়া চান তখন আয়ুব আঃ হাত তুলে বললেন ইয়া আল্লাহ তুমি অবশ্যই রাহমানির রাহিম, তোমার বান্দার উপর রহম করো,ঠিক তখনই গায়েবী আওয়াজ আসলো এ আয়ুব তুমি তোমার মাটিতে আঘাত করো,সেখান থেকে পানির ঝর্নাধারা বের হবে,সেই আপনি দিয়ে গোসল করো,তখন আয়ুব আঃ নীজের পা মাটিতে আঘাত করলো তার পর মাটি থেকে ঝর্নাধারা সৃষ্টি হলো,সেই পানি দিয়ে উনি গোসল করলেন ফলে তার অসুখ ভালো হয়ে গেল।তখন আয়ুব আঃ আগের মতো আবার সুপুরুষ হয়ে গেলো,চেহারা দিয়ে নূরের ঝলক দিতে থাকলো।তিনি আবার আগের মতো হাসি খুশি জীবন যাপন করতে লাগলেন। আল্লাহ বলেন, ‘আমরা তার পরিবার বর্গকে ফিরিয়ে দিলাম এবং তাদের সাথে সমপরিমাণ আরও দিলাম আমাদের পক্ষ হ’তে দয়া পরবশে (আম্বিয়া ৮৪; ছোয়াদ ৪৩)। এখানে পরিষ্কারভাবে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি তার বিপদে ধৈর্য ধারণের পুরস্কার দ্বিগুণভাবে পেয়েছিলেন দুনিয়াতে এবং আখেরাতে। বিপদে পড়ে যা কিছু তিনি হারিয়েছিলেন, সবকিছুই তিনি বিপুলভাবে ফেরত পেয়েছিলেন।আল্লাহর শেষ নবি হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছে তোমরা যখনি কোনো বিপদে পড়বে তখন আয়ুবের কথা মনে করো।যারা আল্লাহর কাছের বান্দা আল্লাহ তাদের পরিক্ষা করে থাকেন।আমরা এই ঘটনার দ্বারা বুঝলাম আমাদের জীবনে যখই দুক্ষ কাস্ট বিপদ আপদ আসুকনা কেন আমাদের উচিত হবে ধৈর্য ধারন করে আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া আদায় করা।।
কেননা আল্লাহতাওলা বলেছেন আমি তোমাদের প্রতিনিয়ত পরিক্ষা নিই কেননা আল্লাহ দুখের পর সুখ দেন।