আল্লাহর একজন নবী ছিলেন যিনার নাম, হযরত মূসা আঃ, তিনি আল্লাহর সঙ্গে কথা বলার জন্য তুর পাহাড়ের দিকেই যাচ্ছিলেন,যাওয়ার পথেই হঠাত তিনি কান্নার শব্দ শুনতে পেলেন,তিনি আশেপাশে তাকিয়ে কিছুই দেখতে পেলেন না,তারপর তিনি ভালো করে খেয়াল করলেন একটি বড় পাথর,আর সেই পাথরটি অঝোর ধারায় কান্না করছিল, তখন মুসা আঃ সেই পাথরের কাছে গিয়ে পাথরকে জিজ্ঞেস করলেন,তুমি কেন কান্না করছো?পাথর তখন বললো, আল্লাহর ভয়ে কান্না করছি,কেননা কিয়ামতের দিন আল্লাহ আমাকে না জাহান্নামে দিয়ে দেয়।বন্ধুরা এই পাথরের ভয় এই জন্য হতে পারে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তৌরাতের মধ্যে এমনকি কুরআনের মধ্যেও বলেছেনঃ জাহান্নামের জ্বালানি হবে মানুশ এবং পাথর।
পাথর আরো বললো আমি যদি সেই জাহান্নামের জ্বালানি হয়, তাহলে আমার অবস্থা খুবই খারাপ হবে। এই কথাগুলো স্বরন করেই আমি এত কান্না করছি। পাথর এটাও বললো আপনি তো আল্লাহর পায়গম্বর,আর আপনি এই রাস্তা দিয়েই মাঝে মধ্যেই তুড় পাহাড়ের দিকে যান আল্লাহর সঙ্গে কথা বলতে,দয়া করে আপনি আমার মুক্তির জন্য আল্লাহ কাছে সুপারিশ করবেন।তখন হযরত মূসা আঃ সেই পাথরকে স্বান্তনা দিয়ে বললেন আমি সেই আল্লাহর সঙ্গেই কথা বলার জন্যই যাচ্ছি,আর আমি অবশ্যই তোমার মুক্তির জন্য আল্লাহ কাছে দোয়া করবো৷ তারপর মুসা আঃ সেই তুড় পাহাড়ের দিকে রওনা দিলেন,পাহাড়ে পৌঁছে আল্লাহর সঙ্গে কথা বলা শুরু করে দিলেন,কিন্তু মুসা আঃ সেই পাথরের কথা আল্লাহকে বলতে ভুলেই গেলেন৷ কথা শেষ হবার পর হযরত মূসা আঃ যখন তুড় পাহাড় থেকে ফিরে আসতে যাবেন এমন সময় আল্লাহ বললেন “ও মূসা তুমি সেই পাথরের কথা ভুলে গেছো,যাকে তুমি সুপারিশের জন্য কথা দিয়েছেলা”। হযরত মূসা আঃ বললেন হে আমার রব আমি সত্যিই ভুলে গেছিলাম,আপনি সবই জানেন,আপনি অন্তরজামি এবং আপনার দৃষ্টি সীমানার বাইরে কেউই যেতে পারেনা। আল্লাহ তখন বললেন, যাও সেই পাথরকে বলে দিও আমি তাকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্ত দিয়ে দিলাম।
তখন হযরত মূসা আঃ ফিরে আসার পথে সেই পাথরকে বললেন আল্লাহ তোমাকে মুক্ত করে দিয়েছে, এই কথা বলে হযরত মুসা আঃ চলে গেলেন।
আবার কিছু দিন পর সেই রাস্তা দিয়েই হযরত মূসা আঃ তুর পাহাড়ে যাচ্ছিলেন, রাস্তার মধ্যে তিনি আবারো সেই পাথরের কান্না শুনতে পেলেন,মুসা আঃ তখন সেই পাথরকে বললেন, আমি তো তোমাকে কিছু দিন আগেই সুসংবাদ দিয়েছিলাম, যে আল্লাহ তোমাকে মুক্ত করে দিয়েছে,জাহান্নামের আগুনে তোমাকে জ্বালানো হবেনা৷ তাহলে আবার কেন কান্না করছো? পাথর তখন বললো হে মূসা আঃ সেই সময় আল্লাহর ভয়ে আমি কান্না করেছিলাম,আর এখন আমি আল্লাহর তায়া’লার মহব্বতে কান্না করছি,যার এত নিয়ামত আমি উপভোগ করছি, তার জন্য কি আমি আল্লাহর মহব্বতে কান্না করতে পারিনা?
বন্ধুরা আমরা সবাই এই পৃথিবীতে আল্লাহর দেওয়া কত রকম খাবার খাবার খাই, কত রকম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করি, কিন্তু একটি বারও আল্লাহর নিকট শুকরিয়া আদায় করিনা,আল্লাহর মহব্বতে চোখ দিয়ে পানিও বের হয় না,কিন্তু পশু,পাখি,গাছ-পালা সকলেই আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া আদায় করে হয়ত আমরা সেটা বুঝতে পারিনা।আমরা মানুষ হয়েও মানুষ হয়েও একটি বারও ভাবিনা যে আমাদের সকলকেই সেই মহান রবের নিকট ফিরে যেতে হবে,যদি ভাবতাম তাহলে আজ এই পৃথিবীতে মারামারি, হানাহানি হতো না,দুষ্কৃতি মানুষরা আর অন্যের সম্পদ লুন্ঠন করতো না,আমরা যদি সত্যিই এই কথা ভাবতাম তাহলে আর কেউ অন্যের হক মেরে নীজের অট্টালিকা নির্মাণ করতো না।বন্ধুরা আজ তাহলে এই পর্যন্ত, আপনারা ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফিজ।
গল্পের বিষয়:
ইসলামিক