এক মহিলা তার পরিবারের জন্য প্রতিদিন রুটি বানাত এবং একটা অতিরিক্ত রুটি এক কুঁজো বৃদ্ধার জন্য বানিয়ে জানালায় রেখে দিত। কুঁজো প্রতিদিন রুটিটা নিয়ে যেত। সে কৃতজ্ঞতা জানানোর বদলে বিড়বিড় করে বলত – “খারাপ কাজ নিজের কাছে রয়ে যায়, কিন্তু ভাল কাজ উপহার হয়ে ফিরে আসে।” মহিলা তার উপর বিরক্ত হত কারন সে কোনো দিন কৃতজ্ঞতা জানাত না। কিন্তু তারপরও মহিলাটি কুঁজোর জন্য রুটি রাখত।
আর কুঁজোও সব সময় বিড়বিড় করে একই কথা বলত। এভাবে চলতে চলতে মহিলাটি একসময় কুঁজোর উপর বিরক্ত হয়ে একদিন রুটির সাথে বিষ মিশিয়ে জানালায় রেখে দিল। কিন্তু তার মনে বারবার অনুশোচনা হতে থাকল। তাই সে বিষ মিশানো রুটিটা ফেলে দিয়ে আবার নতুন একটা রুটি রাখল জানালায়। বৃদ্ধা এসে রুটি নিয়ে চলে গেল।
যাওয়ার সময় বিড়বিড় করে বলল – “খারাপ কাজ নিজের কাছে থেকে যায় কিন্তু ভাল কাজ উপহার হয়ে ফিরে আসে।”
ওদিকে মহিলার ছেলে অন্য শহরে গিয়েছিল কাজের খোঁজে।
৪-৫ মাস ধরে তার কোনো খোঁজ নেই। ছেলের জন্য মহিলাটি প্রতিদিন দোয়া করত। ওইদিন হঠাৎ মহিলা তার দরজায় নক শুনতে পেল। দরজা খুলে দেখল তার ছেলে দরজায় দাঁড়িয়ে আছে। তার ছেলের অবস্থা ছিল খুব করুন। সে ছিল খুব ক্ষুধার্ত আর রোগা। তার পরনের কাপড় ছিল ছেঁড়া। সে তার মাকে জড়িয়ে ধরে কেদে উঠল এবং বলতে লাগল –
“আমি হয়তো আজ ফিরতে পারতাম না। আমার শরীরে এক বিন্দু শক্তি ছিল না। এক কুঁজো বৃদ্ধাকে অনুরোধ করায় সে আমাকে একটু রুটি দিয়ে বলল – প্রতিদিন এই একটা রুটি খেয়ে আমার দিন কাটে। কিন্তু আজকে তোমার বেশি দরকার। এইটা তুমি নাও।” সেই রুটি খেয়ে আজ আমি বাড়ি ফিরলাম।”
মহিলাটির বুঝতে বাকি রইল না যে রুটিটা তার হাতের বানানো এবং ঐ রুটিটাই তার ছেলে কুঁজো বৃদ্ধার থেকে পেয়েছে। তখন মহিলার মনে পড়ল বিষ মিশানো রুটির কথা।
যদি সে সেটা ফেলে না দিত এবং বৃদ্ধা সেটা নিয়ে যেতো তাহলে তার ছেলে আজ মারা যেত।
মোরাল: খারাপ কাজ নিজের কাছে থেকে যায়, কিন্তু ভাল কাজ উপহার হয়ে ফিরে আসে।