আদর্শ দাম্পত্য জীবনের রূপরেখা

আদর্শ দাম্পত্য জীবনের রূপরেখা

– বুঝলি রে আফিয়া! সবার রাজকুমার আসে ঘোড়ায় চড়ে, আমারটা নির্ঘাত আসতেছে কচ্ছপে চড়ে! নাইলে এত দেরি লাগে নাকি কারো আসতে??
কথাটা বলেই হুসনা হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়লো।

আড়চোখে তাকালো আফিয়া- ‘মেয়ের মাথা কি পুরাই গেল নাকি’! হাসিমুখে সেও বললো,

– আহারে! এত অধৈর্য্য হলে কিভাবে হবে বন্ধু!! ইন শা আল্লাহ্‌ চলে আসবে সময়মতন ! আল্লাহ্‌ যখন লিখে রেখেছেন মিলন না হয়ে যাবে কোথায়?

– হুম্‌! এই একটা জিনিস মনে হলেই তো আশার এই নিভু নিভু প্রদীপ আবার দপ্‌ করে জ্বলে উঠে!

– হুসনা! বিয়ে বিয়ে করে যে মুখে ফেনা তুলে ফেলছিস, তুই কি আসলেই বিয়ের জন্যে রেডী?

– ইন শা আল্লাহ্‌! ইশ্‌! তোর মতন আমার আব্বু-আম্মু কেন যে বুঝে না! পড়াশোনা শেষ করো, ডিগ্রি নাও, এই করো- সেই করো, তারপর গিয়ে বিয়ে! এতদিনে আমি যে ফিতনার অথই সাগরে হাবু-ডুবু খেয়ে খেয়ে নিজের নফ্‌সকে আদৌ বাঁচিয়ে চলতে পারবো কি না আছে কোন গ্যারান্টি? বিয়ে টা দিয়ে দিত! অর্ধেক দ্বীন টা পূর্ণ হয়ে যেত! সব ঝামেলা চুকে যেত! তাই না বল আফিয়া?

এবারে আফিয়া বই থেকে মুখ তুললো, মোটা চশমা টা নাড়িয়ে হুসনার দিকে তাকালো,

-হুসনা! বিয়ে বিয়ে করে যে মুখে ফেনা তুলে ফেলছিস, তুই কি আসলেই বিয়ের জন্যে রেডী?
– দেখতেই আছিস আমি দুই পায়ে খাঁড়া- আবার জিজ্ঞেস করে বিয়ের জন্যে রেডী কি না!!

– আরে আমার বান্ধবী! সেই রেডি না!! আমি বলছি, মানসিক প্রস্তুতির কথা! তাছাড়া, ইসলামের আলোকে একটা আদর্শ দাম্পত্য জীবন কিভাবে মেইনটেইন করবি তুই? স্ত্রী হিসেবে তোর দায়িত্ব কি? তোর স্বামীর হক কি? বাচ্চা-কাচ্চার প্রতি দায়িত্ব কেমন হবে? –এগুলা নিয়ে ভেবে দেখেছিস কখনো?

বেচারী হুসনা এবার মাথা চুলকানো শুরু করলো,

– “ … ইয়ে মানে! এত বেশি তো কিছু ভাবি নাই! আল্লাহ্‌ আল্লাহ্‌ করে একটা দ্বীন-দার জীবন-সঙ্গী যদি পাই তাহলে আমরা একসাথে কুরআন পড়বো, আমি তার মুখে পানি ছিটায়ে ফজর সালাতের জন্যে ঘুম ভাঙ্গিয়ে দিব, সে আমাকে আল্লাহ্‌-র জন্যে ভালোবাসবে, আমিও তাকে আল্লাহ্‌র জন্যে ভালোবাসবো … এই তো … আর… আর… “

– হয়সে ম্যাডাম থামেন! বুঝছি! সবার আগে এখন আমাকেই আপনার মুখে পানি ছিটায়া এই রূপকথা ছুটাইতে হবে!

– আফিয়া!! আমার স্বপ্ন নিয়ে কিছু বলবি না বলে দিলাম !
– নো ম্যাডাম! স্বপ্ন দেখাতে তো কোন দোষ নেই! কিন্তু স্বপ্নের পাশাপাশি কিছু বাস্তবতাকেও জায়গা দিতে হবে তো!! হ্যাঁ আলহামদুলিল্লাহ্‌ তুই যা যা বলেছিস সব ঠিক আছে! আল্লাহ্‌-র রহমতে একজন দ্বীনদার জীবন-সঙ্গী পেলে এর সবই পাওয়াও সম্ভব! কিন্তু, তোর মাথায় শুধু এগুলি রাখলেই হবে না … সাথে সাথে আরো কিছু মনে রাখতে হবে …

– যেমন … … ?

– যেমন ধর, সবার আগে বুঝার চেষ্টা কর, বিয়ে টা কি ?? বিয়ে মানে কি ? বিয়ে মানে যে বললি অর্ধেক দ্বীন পূর্ণ! – এর মর্মটা বুঝিস তো? দেখ না আমি বুঝি, বিয়ে মানেই আমাদের চোখে ভাসে শুধু মুভিতে দেখে আসা, বহু বাধা-বিপত্তির পরে ‘নায়ক-নায়িকার মহা-মিলন’ … অতঃপর ‘সুখে-শান্তিতে বসবাস’ … কিন্তু কেউ আমাদের চোখে আঙ্গুল তুলে দেখায় না যে, বিয়ে একটা দায়িত্ব! একটা কমিটমেন্ট! সারাজীবনের ওয়াদা! আল্লাহ্‌ কে সাক্ষী রেখে দুইটি মানুষের একটি হালাল সম্পর্কের যাত্রা শুরু করা! এটা একটা সিরিয়াস কমিটমেন্ট বন্ধু! এখানে পিঙ্কি-পঙ্কি করার কোন অবকাশ নেই! তোর সারাটাজীবন একটা মানুষের সাথে শেয়ার করার কথা এখানে! হুট করে সিদ্ধান্ত নিলে চলবেনা! হ্যাঁ, অবশ্যই ভালোবাসা থাকবে! সেই সাথে অপ্রত্যাশিত অনেক কিছুও থাকবে। প্রতিকূলতার সাথে মানিয়ে নিতে হবে এবং হিক্‌মাহ্‌ অবলম্বন করা তোকে জানতে হবে !
– ভেঙ্গে বল তো দেখি! – ভ্রূ কুঁচকে হুসনার প্রশ্ন !

– ধর কতগুলা বিষয় বলি আমি তোকে… তুই মনে মনে নিজেকে যাচাই কর যে, এই বিষয়গুলোতে তুই কেমন দক্ষ?

# তোর বাচনভঙ্গী, শব্দচয়ন = মোটকথা কমিউনিকেশন স্কিল!
# বাজেট করা এবং টাকাপয়সার হিসেব করা
# রাগকে সংযত করতে পারা
# আর্থিক ,পারিবারিক সমস্যা হলে কীভাবে তা সামলানো, বিশেষ করে অর্থ-কষ্ট হলে!
# বাচ্চা-কাচ্চা লালন-পালন
# সম্পর্কের টানাপোড়েন হলে সমাধান ও কম্প্রোমাইজ করার ব্যাপারে তোর প্রস্তুতি

– ও আল্লাহ্‌! থাম থাম!! ব্রেইন হ্যাং হয়ে গেল আমার! !!

– ইয়েস ম্যাম! আদর্শ দাম্পত্য জীবনের কথা সামনে রেখে নিজেকে ইসলামের আলোকে ‘এতকিছুর’ জন্যেই যে প্রস্তুত করতে হবে!!

– আমার বিয়ের ভূতকে তুই দেখি ঝেঁটিয়ে বিদায় করেই ছাড়বি !

– আরেহ বোকা! আমি তোকে বিয়ে নিয়ে ভয় দেখাতেও চাইনি, নিরুৎসাহিত করতেও চাইনি! আমি তো তোকে জাস্ট সচেতন করতে চেয়েছি, কারণ আজ হোক, কাল হোক, বাস্তবতা তো তোকে ফেইস করতেই হবে!

আচ্ছা দাঁড়া! আমি তোকে সূরা রুমের ২১ নং আয়াতটি নিয়ে কিছু কথা বলি, ইন শা আল্লাহ্‌ দেখবি মন ভালো হয়ে গেছে!

– “আচ্ছা বল …” মুখ গোমড়া করেই মাথা নাড়ে হুসনা !

– হুসনা! তুই কি জানিস যে, বিয়ের অপর নাম হচ্ছে প্রশান্তি, উচ্ছ্বাস আর দয়া ? শব্দ ৩ টা খুব ভালোমতন মনে রাখ… আমি ভেঙ্গে বুঝাচ্ছি তোকে, …
প্রথমে আয়াতটা বলি, আল্লাহ বলছেনঃ

“আর এক নিদর্শন এই যে, তিনি তোমাদের জন্যে তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের সংগিনীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তিতে থাক এবং তিনি তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক সম্প্রীতি ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল লোকদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে”।
[সূরা আর-রুমঃ ২১]

এই একটা আয়াতেই আল্লাহ্ তা’আলা স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের একটি চমৎকার সংক্ষিপ্ত কিন্তু সম্পূর্ণভাবে ব্যখ্যা করে দিয়েছেন! খেয়াল কর, আল্লাহ্‌ বলছেন,
“..যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তিতে থাক…”

এখানে, আরবি শব্দটি হচ্ছে – তাসকুনু। এই ‘তাসকুনু’ শব্দটির মূল হচ্ছে সুকুন । সুকুন মানে, প্রশান্তি।

এই সুকুন স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের প্রথম ধাপ! নববিবাহিত দম্পতিকে দেখবি, ভালবাসার মানুষের সাথে থাকার সময় প্রশান্তির এই অনুভূতি তীব্রভাবে অনুভব করে!

এই অনুভূতি স্বামী বা স্ত্রীর প্রতি ভালবাসাকে পরবর্তীতে আরো তীব্র ও গাঢ় করে তোলে। আর এই সুকুন এগিয়ে নিয়ে যায় সম্পর্কের দ্বিতীয় ধাপের দিকে।

আল্লাহ্‌ তা’আলা সম্পর্কের সুকুনের পর দ্বিতীয় পর্যায়টি বর্ণনা করেন এইভাবে:

“… তিনি তোমাদের মধ্যে সৃষ্টি করেছেন পারস্পরিক সম্প্রীতি

আরবি শব্দ মাওয়াদ্দাহ মানে, ‘গভীর আবেগের উচ্ছ্বাস মিশ্রিত ভালবাসা’ ,কারো জন্য বা কোন কিছুর প্রতি তীব্র আকর্ষণ।

অর্থাৎ, স্বামী বা স্ত্রী একে অপরের সান্নিধ্যে অপরজনের সাথে থাকার সময় প্রশান্তিঅনুভব করে এবং সেই প্রশান্তি থেকে তার প্রতি আবেগের উচ্ছ্বাস অনুভব করে …

কিন্তু, খেয়াল কর যে, এভাবে স্বামী স্ত্রীর এই যাত্রা যতই এগিয়ে যেতে থাকে আবেগের উচ্ছ্বাস ক্রমশ কমতে থাকে। আস্তে আস্তে ‘টাওয়াল এখানে কেন? তরকারিতে লবণ কম কেন??’ ইত্যাসি ছোট-খাট বিষয়গুলিও দুজনের কাছেই অসহ্য লাগে এবং তাদের কল্পনার স্বপ্নগুলো ফিকে হতে শুরু করে। এই পথচলায় অনিবার্যভাবেই কিছু বাধা-বিপত্তি আসে। প্রথম দিকে উভয়েই আবেগে অন্ধ থাকলেও ধীরে ধীরে একে অপরের দোষ-ত্রুটিগুলো খুঁজে পেতে শুরু করে … ব্যস! এই থেকে আমরা চলে যাই আয়াতে বর্ণিত তিন নম্বর ধাপে,

“… এবং তিনি তোমাদের মধ্যে সৃষ্টি করেছেন দয়া (রাহমা)…”

আরবি শব্দ ‘রাহমা’ মানে, দয়া/ মমতা/ কোমল স্নেহময় ভালবাসা।

এখন সময়ের সাথে সাথে আবেগের উচ্ছ্বাসে ভাটা পড়তে শুরু করেছে এটা-সেটা নিয়ে খুনসুটি আর ঝগড়ার কারণে আগের সেই অখন্ড প্রশান্তি টা ফিকে পরে গেছে। তাই আল্লাহ্ বললেন যে তিনি এবারে গিয়ে উভয়ের হৃদয়ে সৃষ্টি করে দিয়েছেন একে অপরের জন্য ‘রাহমা’, দয়া! যাতে করে মান-অভিমানে জড়িয়ে পড়লেও তারা যেন একে অপরকে গভীর মমতায় ক্ষমা করে দিতে পারে। এখন সেই প্রথম বিয়ে আবেগও নেই, উচ্ছ্বাসের জোয়ার-ও নেই! কিন্তু আছে রাহমা-দয়া! আর এই ‘রাহমা’-ই এবার সম্পর্কে এগিয়ে নিয়ে যায়!! কারণ যত কিছুই হোক না কেন বুকের গভীরে ঈমানদার বান্দা কখনোই চাবেন না যে, তার হালাল ভালবাসার মানুষটা হারিয়ে যাক! সুবহানআল্লাহ্‌!
এখন শুন আয়াতটির শেষে আল্লাহতা’আলা কি বলেছেন,

“… নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল লোকদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে”

সুবহানাল্লাহ !! চিন্তা করতে পারিস?? এই যে, একটা স্বামী-স্ত্রীর হালাল সম্পর্কের ৩ টা ধাপ- প্রশান্তি, উচ্ছ্বাস ও দয়া- এগুলি চিন্তাশীল লোকদের জন্যে নিদর্শন-স্বরূপ! যারা বিশ্বাসী, আল্লাহ্‌-র নিদর্শন নিয়ে তারা চিন্তা করতে থাকলে আদর্শ দাম্পত্য জীবনের চাবিকাঠি তাদের হাতের মুঠোয়! এভাবে, যখন প্রশ্ন উঠে, আচ্ছা বিয়ে হালাল সম্পর্ক, প্রেম হারাম! তাহলে, কেন এত ডিভোর্স? উত্তরঃআপনি আপনার মহান রবের নিদর্শন নিয়ে চিন্তা করেননি!!চিন্তা করলে বুঝতেন, যেখানে আবেগে ভাটা পড়ে, উচ্ছ্বাস কমে, সেখানে আল্লাহ্‌ তা’আলা অন্তরে ‘দয়া’ পয়দা করে দেন, যারা চিন্তাশীল না, তারা তার সঙ্গীর প্রতি দয়া-পরবশ হতে পারে না !!! তাই তখন সম্পর্কে নেমে আসে কালো ছায়া!

– সুবহান আল্লাহ্‌! দোস্তি! মন টা ভালো করে দিলি!

– যাক আলহামদুলিল্লাহ্‌! মন আরো ভালো করতে আমার “ইসলাম ও বিয়ে” বিষয়ের উপর কিছু নোট্‌স নিয়ে যা। ভালোমতন স্টাডী করিস।

– ইন শা আল্লাহ্‌ বন্ধু করবো! আল্লাহ্‌ তোকে এত্ত এত্ত পুরস্কার দিক, উত্তম প্রতিদান দিক! আমীন …

… বিদায় নিয়ে চলে আসলো হুসনা। বাসায় এসে আফিয়ার নোট খাতা টা উল্টালো –

গোটা গোটা অক্ষরে সবার উপরে একটা দুয়া লিখা-

“– রব্বানা হাবলানা মিন আযওয়াযিনা ওয়া যুররিয়্যাতিনা ক্কুররাতা আ’ইয়ুনিন ওয়া জা’আলনা লিল মুত্তাক্কিনা ইমামা”

অর্থঃ “হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের স্ত্রীদের পক্ষ থেকে এবং আমাদের সন্তানের পক্ষ থেকে আমাদের জন্যে চোখের শীতলতা দান কর এবং আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্যে আদর্শস্বরূপ কর।” [সূরা ফুরক্কানঃ ৭৪]

কি সুন্দর দুয়া রে আল্লাহ্‌! আল্লাহ্‌-র কাছে এমন জীবন-সঙ্গী চাওয়া, এমন নেক সন্তান চাওয়া যাদের দেখা মাত্র প্রশান্তিতে চোখ দুটা শীতল হয়ে যাবে! সুবহান আল্লাহ্‌! এত সুন্দর করেও আল্লাহ্‌-র কাছে চাওয়া যায়!!

সুবহান আল্লাহ্‌! হুসনা পড়ছে তো পড়েই যাচ্ছে ! আর মনে মনে ভাবছে, “রাজপুত্র!!! তুমি কচ্ছপে চড়ে ধীরে-সুস্থে আসো! আমি দুয়াটা মুখস্থ করে বেশি বেশি মুনাজাতে পড়ে নেই আগে!”

পাতা উল্টাতে উল্টাতে কিছু কুরআনের আয়াত লিখা পেল-

“তারা তোমাদের পরিচ্ছদ এবং তোমরা তাদের পরিচ্ছদ।“ (সূরা বাকারাহ্‌)

অর্থাৎ স্ত্রী-স্বামী একে অপরের পরিচ্ছদের মতন হয়ে থাকবে। কাপড় যেমন আমাদের লজ্জা সংরক্ষণ করে, আমাদের শরীরের লুকানো দোষ-ত্রুটি ঢেকে রাখে, তেমনি স্বামী-স্ত্রী একজন আরেকজনের লজ্জা/হায়া সংরক্ষণ করবে, একজন আরেকজনের দোষ-ত্রুটি ঢেকে রাখবে… পরস্পরের প্রতি সহনীয় হবে! স্ত্রী সাহায্য করবে তার স্বামীর দৃষ্টিকে নত রাখতে, স্বামীও তার স্ত্রীর চাহিদা এমনভাবে পূরণ করে দিবে যেন তার স্ত্রী-ও একমাত্র তার জন্যেই তাবত সৌন্দর্য্য সংরক্ষণ করে রাখতে পারে, তার হিজাবকে মেইন-টেইন করতে পারে! সুবহান আল্লাহ্‌!

সে মুগ্ধ হয়ে পাতা উল্টাতে লাগলো –

কিছু হাদীস লিখা ছিল-

* মু’আবিয়াহ্‌ আল কুশাইরী(রা সূত্রে বর্ণিত।
তিনি বলেন, একদা আমি রসূল(সাঃ) এর নিকট এসে বললাম, “আমাদের স্ত্রীদের(হক) সম্পর্কে আপনি কি বলেন? তিনি বললেন,
“তোমরা যা খাবে, তাদেরকেও তাই খাওয়াবে, তোমরা যা পরবে, তাদেরকেও তাই পরাবে। তাদেরকে প্রহার করবে না এবং গাল-মন্দ করবে না। (আবু দাউদ ২১৪৪)

ক্বায়িস ইবনু সায়িদ(রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি কুফার (আল-হীরা) শহরে গিয়ে দেখি যে, সেখানের লোকেরা তাদের নেতাদের সাজদাহ্‌ করছে। আমি ভাবলাম, তাহলে তো নবী(সাঃ) ই অধিক সাজদাহ্‌-র হকদার। অতঃপর আমি রসূল(সাঃ) এর খেদমতে এসে বলি যে, আমি আল-হীরা শহরে গিয়ে দেকেহ এসছি যে, সেখানকার লোকেরা তাদের নেতাকে সাজদাহ্‌ করে। অতএব, হে আল্লাহ্‌-র রসূল(সাঃ) আপনি তো এর অধিক হকদার যে, আমরা আপনাকে সাজদাহ্‌ করি। উত্তরে রসূল(সাঃ) বললেন যে, যদি (মৃত্যুর পর) তুমি আমার কবরের পাশ দিয়ে যাও, তবে তুমি কি আমাকে সাজদাহ্‌ করবে ? আমি বললাম, না। তিনি বললেন, সাবধান! তোমরা এরূপ করবে না! আমি যদি কোন মানুষকে সাজদাহ্‌ করার অনুমতি দিতাম, তবে স্ত্রীদেরকে নির্দেশ দিতাম তাদের স্বামীদের সাজদাহ্‌ করতে। কারণ, আল্লাহ্‌ স্ত্রীদের উপর স্বামীদের অধিকার দিয়েছে।

সহীহ, তবে কবর সম্পর্কিত বাক্যটি বাদে।

*দারিমী, বায়হাকী, হাকিম। ইমাম হাকিম ও যাহাবী বলেন, সনদ সহীহ।

আবু হুরায়রা(রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। নবী(সাঃ) বলেছেন, কোন স্বামী যদি তার স্ত্রীকে তার সাথে বিছানায় শোয়ার জন্যে আহবান করে আর ঐ স্ত্রী যদি তাতে সাড়া না দেয়, তাহলে সকাল পর্যন্ত ফিরিস্তারা ঐ স্ত্রীর প্রতি অভিসম্পাত করতে থাকে। সহীহ। (বুখারী, মুসলিম)

আমাদের হুসনা কিন্তু ইসলামের মাঝে আদর্শ দাম্পত্য জীবনের রূপরেখা পেয়ে গেছে! আর আপনি??

গল্পের বিষয়:
ইসলামিক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত