প্রথম খলীফা হযরত আবু বকর (রাঃ) ফজরের সালাত আদায় করে মরুভূমির দিকে গমন করতেন এবং সেখানে কিছুক্ষণ অবস্থান করে শহরে ফিরে আসতেন। হযরত ওমর (রাঃ) তার প্রত্যেহ এরুপ গমনের দৃশ্য দেখে আশ্চার্যান্বিত হলেন। তাই একদিন ফজরের সালাতের পর আবু বকর (রাঃ) যখন বের হলেন, তখন তিনি গোপনে তাঁকে অনুসরণ করতে লাগলেন। অতঃপর তিনি একটি ঢিলার পিছনে লুকিয়ে থাকলেন ও আবু বকর (রাঃ) কে একটি পুরাতন তাঁবুতে প্রবেশ করতে দেখলেন। তিনি (আবু বকর রাঃ) সেখানে কিছুক্ষণ অবস্থান করার পর বের হয়ে গেলেন। অতঃপর ওমর (রাঃ) ঢিলার আড়াল থেকে বের হয়ে উক্ত তাঁবুতে প্রবেশ করলেন। সেখানে তিনি এক অন্ধ দুর্বল মহিলাকে দেখতে পেলেন, যার কয়েকটি শিশু সন্তান রয়েছে। তিনি মহিলাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার নিকট কে আসে? মহিলা বলল, আমি তাকে চিনি না। তিনি একজন মুসলিম। প্রতিদিন সকালে তিনি আমাদের কাছে আসেন। অতঃপর আমাদের গৃহ পরিস্কার করে দেন, আঁটা পিষে দেন এবং গৃহপালিত পশুগুলির দুগ্ধ দোহন করে দেন, অতঃপর তিনি চলে যান। বিস্ময়াভিভুত ওমর (রাঃ) বেরিয়ে আসলেন এবং বললেনঃ হে আবু বকর! পরবর্তী খলীফাদের উপর তুমি কত কষ্টই না চাপিয়ে দিলে!!!
(তারীখু দিমাশক ৩০/৩২২)
এ ঘটনাটিতে আবু বকর (রাঃ) এর দুটি দিক বা গুন প্রকাশ পায়। তা হলঃ . ১। রাষ্ট্র প্রধান হিসেবে জনগনের উপর তার দায়িত্ব পালন, ২। তার ব্যক্তিগত গোপন আমল। আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত নিজেদের কিছু গোপন আমল জারি রাখা। ঢাকঢোল পিটিয়ে, মাইকে পোস্টারে নিজের নাম বলিয়ে ইবাদত বা আমল করাতে রিয়ার সম্ভাবনা থাকেযা শিরকের অন্তর্ভূক্ত। রাসূল (সাঃ) বলেনঃ তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি সত্ আমল সমূহ গোপন করতে পারে, সে যেন তাই করে। (সহীহুল জামে, হাদীস নং ৬০১৮)
আমাদের আমল, আমাদের ইবাদতগুলো যেন লোক দেখানো না হয় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। নতুবা শিরকের দোষে দুষ্টো হয়েসব পন্ডশ্রম হবে। আল্লাহ আমাদের সঠিক আমল করার তৌফীক দান করুন।