আমরা সবাই ভাইয়ের ভালবাসার গল্প পড়তে চাই। এ সংক্রান্ত বহু ঘটনা বা গল্প সম্পর্কে জেনে থাকব বা শোনে থাকব। কথায় বলে ‘ভাই বড় ধন রক্তের বাধনে, যদিও পৃথক হয় নারীর কারণে’। আজ পাঠকদের জন্য রয়েছে ভাইয়ের ভালবাসার গল্প। কেননা ভাইয়ের ভালবাসার গল্প বেশি বেশি পড়লে নিজেদের মধ্যে মমতাবোধ সৃষ্টি হবে আর একে অপরের প্রতি সম্প্রতি বৃদ্ধি পাবে।
এক গ্রামে একটি কুয়া ছিল। তা ছিল ভূতুরে। গ্রামের লোকজন যখনই পানি তুলতে কুয়াতে বালতি ফেলত তখন কেউ একজন বালতি টেনে ধরত আর পানি রেখে দিত ফলে বালতি শূন্য অবস্থায় উঠে আসত। এমন অদ্ভুতকাণ্ড বারবার ঘটায় গ্রামে ছড়িয়ে পড়ল যে, কুয়াটি জ্বীনের বাসা। এখানে ভয়ংকর একটা জ্বীন বাস করে। কিন্তু এভাবে আর কয়দিন চলে? গ্রামের মানুষদের পানি সংগ্রহ করতে হবে। তারা বলল এর একটা বিহিত করা দরকার। কিন্তু কুয়াতে নামবে কে? কেউ সহজে রাজি হচ্ছে না।
এমন সময় এক যুবক কুয়াতে নামতে রাজি হলো। সে বলল, আমি কুয়াতে নামব। আমার কোমরে রশি বেঁধে নামিয়ে দিবেন। তবে শর্ত হল রশির অপর প্রান্তে অবশ্যই আপনাদের সাথে আমার ভাইকে থাকতে হবে। গ্রামের লোকজন তার শর্ত শুনে বেশ আশ্চর্য হলো। গ্রামের শক্তিশালী সুঠাম এতগুলো মানুষ থাকতে তার ভাইকে লাগবে কেন? প্রথমে তারা যুবককে বিষয়টা বোঝাতে চেষ্টা করল। তবুও তার এক কথা অবশ্যই তার ভাইকে সাথে রাখতে হবে। তার ভাইকে খুঁজে আনা হলো। সবাই মিলে যুবককে কুয়াতে নামিয়ে দিল। ভেতরে গিয়ে সে দেখল, কুয়াতে একটি বানর।এই বানরটিই বালতি উল্টিয়ে দিত। যুবক বানরটিকে ধরে কাঁধে বসিয়ে রশি টানার নির্দেশ দিল।
বানরটি ছিল যুবকের কাঁধে। এজন্য স্বাভাবিকভাবেই সর্বপ্রথম দৃষ্টিগোচর হল বানরের চেহারা। হঠাৎ করে ভূতদর্শন চেহারা দেখে সবাই মনে করল, জ্বীনটা উঠে আসছে। ওমনি রশি ফেলে সব দিল ভূদৌড়। কিন্তু একজন রশি ছাড়ল না। সে হল যুবকের ভাই। বহুকষ্টে ভাইকে টেনে তুলল উপরে। ফলে তার ভাই নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে গেল। তখন সবাই বুঝতে পারল কেন সে ভাইকে রশি ধরার শর্ত দিয়েছিল। কারণ, পৃথিবীতে সবাই বিপদের সময় দূরে সরে গেলেও ভাই সরবে না।