গল্প শুরু: সমুদ্রের মাঝখানে এক জাহাজ প্রচন্ড ঝড়ের মধ্যে পরে লন্ডভন্ড হয়ে গেল। সেই জাহাজের বেঁচে যাওয়া এক যাত্রী ভাসতে ভাসতে নির্জন এক দ্বীপে এসে পৌছালো। জ্ঞান ফেরার পর প্রথমেই সে আল্লাহর কাছে প্রাণখুলে ধন্যবাদ জানালো তার জীবন বাঁচানোর জন্যে। তারপর বাড়ীতে ফিরে যেতে চেষ্টা শুরু করল। প্রতিদিন সে দ্বীপের তীরে এসে বসে থাকতো যদি কোনো জাহাজ সেদিকে আসে এই আশায়। কিন্তু প্রতিদিনই তাকে হতাশ হয়ে ফিরে আসতে হতো।
এরই মধ্যে সে সমুদ্রতীরে থাকার জন্য ছোট একটা ঘর তৈরি করল। সমুদ্রের মাছ শিকার করে এবং বন থেকে ফলমূল খেয়ে সে বেঁচে থাকলো। একদিন সে খাবারের খোঁজে বনের গভীরে প্রবেশ করল। বন থেকে ফিরে সে দেখলো যে, তার রান্না করার চুলা থেকে আগুন লেগে পুরো ঘরটিই ছাই হয়ে গিয়েছে এবং কালো ধোঁয়ায় আকাশ ভরে গিয়েছে। লোকটি চিৎকার করে উঠলো, ‘হায় আল্লাহ, তুমি আমার এত কষ্টের ঘরটি শেষমেশ পুড়িয়েই দিলে!’ এই বলে সে মাতম করতে লাগল আর নিয়তির উপর তিরষ্কার করতে করতে ঘুমিয়ে গেল।
পরদিন সকালে এক জাহাজের আওয়াজে তার ঘুম ভাঙলো। জাহাজটি সেই দ্বীপের দিকে তাকে উদ্ধার করার জন্যই আসছিলো। সে অবাক হয়ে বললো, ‘তোমরা কিভাবে জানলে যে আমি এখানে আটকা পরে আছি!’ জাহাজের ক্যাপ্টেন জানালো, ‘তোমার জ্বালানো ধোঁয়ার সংকেত দেখেইতো আমরা তোমাকে উদ্ধার করতে এসেছি।’ লোকটি তখন বুঝতে পারল যে, ঘরে আগুন না লাগলে আমি কখনো বাড়ীতে ফিরতে পারতাম না। আল্লাহ যা করেন তা মানুষের কল্যাণের জন্যই করেন। আমরা তা বুঝতে পারি না আর অহেতুক আহাজারি করি।