আমাদের পূর্ববর্তী বুযুর্গগণ সুন্নতের অনুস্বরণে বড় যত্নবান ছিলেন। হযরত ওসমান হারুনী (রঃ) এক ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি বলেছেন, তিনি অজুতে যেভাবে খেলাল করে নামায পড়েছেন তা সুন্নত মোতাবেক ছিল না তাই অজুতে সুন্নত মোতাবেক খেলাল করে বিশ বছরের সব নামাজ পুনরায় আদায় করেন।
হযরত শায়খ আব্দুল হক রাদোলবী (রঃ) আল্লাহ্ পাকের এশকে এমন এক রূহানী হালতের শিকার হয়েছিলেন যাকে তাছাওউফের পরিভাষায় এস্তেগরাক বলা হয়অর্থাৎ দুনিয়াবী সকল বিষয় থেকে অন্য এক জগতে এমনভাবে তলিয়ে গিয়েছিলেন যে ত্রিশ বছর পর্যন্ত দিল্লী জামে মসজিদে খাদেমের সাহায্যে নিয়মিত নামায পড়তে যেতেন ও ফিরে আসতেন। তারপরও তিনি একা মসজিদের রাস্তা চিনতে পারতেন না। এত কিছু ভুল হওয়া সত্ত্বেও তিনি সুন্নতের উপর দৃঢ়পদ ছিলেন, সুন্নত ভুলতেন না। এমন কি তিনি একথাও বলতেন-
منصور بچه بود كه ازيك قطره بفرياد آمد اين جا مر دانند كه دريا ها فرد برند و آروغ نه زنند ٠
“এশকের পথে মনছুর (বিন হাল্লাজ) শিশুটি মাত্র ছিল তাই এক ফোটা (এশক সুধা) পান করেই ফরিয়াদ করতে লাগল।
আর এখানে একজন পুরুষ আছে যে দরিয়ার পর দরিয়া এশক পান করে ঢেকুর পর্যন্ত তোলে না”।
দেখুন এতটা গভীর এস্তেগরাকের মধ্যে থেকেও তিনি সুন্নতের পাবন্দ রয়েছেন এবং মনছুরেরও সমালোচনা করেছেন।
এইরূপ আরেক এস্তেগরাকে নিমজ্জিত ব্যক্তির ঘটনা শুনুন। তাকে তার ভাই মাদ্রাসার পাঠ্য পুস্তক পড়াতে চাইলেন। নাহুর কেতাব শুরু করলেন প্রথমে। সেই কিতাবে একটি উদাহরণ আসল- ضرب زيد عمرا٠
অর্থ- যায়েদ আমরকে মারিয়াছে।
যেভাবে আমরা কাউকে ইংরেজি ব্যাকরণ শিখাতে গিয়ে উদাহরণস্বরূপ বলি, Rahim is a bad boy. রহিম একটি খারাপ ছেলে।
তখন ঐ ছাত্র জিজ্ঞেস করলেন, কেন যায়িদকে মারিয়াছে? উস্তাদ বললেন, মারে টারেনি, এমনি একটি উদাহরণ আর কি? ছাত্র বললেন, “যদি না মেরে থাকে তবে মিথ্যা কথা লিখেছে। আর যদি বিনা কারণে মেরে থাকে তবে জুলুম করেছে। আমি এমন কেতাব পড়ব না যা মিথ্যা অথবা জুলুম শিক্ষা দেয়।
আল এফাযাতুল ইয়াউমিয়্যাহ্; খন্ড ৩, পৃষ্ঠা ২২০