হযরত ইউসুফ (আঃ) এর জীবনী প্রথম পর্ব

হযরত ইউসুফ (আঃ) এর জীবনী প্রথম পর্ব

প্রথম পর্ব
ইউসুফ আ. এর পরিচয়

হযরত ইয়াকূব আ. এর উপাধি ছিল ইসরাঈল। তাই সেই বারটি পরিবার সবাই ‘বনী ইসরাঈল’ নামে পরিচিত হয়। বারো ছেলের মধ্যে দশজন বড়ছেলে হযরত ইয়াকূব আ. এর প্রথমা স্ত্রী লাইয়্যা বিনতে লাইয়্যানের গর্ভে জন্ম গ্রহণ করেন। তার মৃত্যুর পর ইয়াকূব আ. লাইয়্যার বোন রাহীলকে বিবাহ করেন। রাহীলের গর্ভে দুই ছেলে ইউসুফ ও বিনয়ামীন জন্মগ্রহণ করেন।

তাই হযরত ইউসুফ আ. এর একমাত্র সহোদর ভাই ছিলেন বিনয়ামীন এবং অবশিষ্ট দশজন বৈমাত্রেয় ভাই। এরপর ইউসুফ আ. এর আম্মা রাহীলও বিনয়ামীনের জন্মের সময় মৃত্যুমুখে পতিত হন। (আল-জামি‘লিআহকামিল কুরআন লিল কুরতুবী)

ইউসুফ আ. এর স্বপ্ন ও তার ব্যাখ্যা

হযরত ইউসুফ আ. শৈশবে স্বপ্ন দেখেছিলেন যে, এগারটি নক্ষত্র এবং সূর্য ও চাঁদ তাকে সিজদা করছে। এই অভিনব স্বপ্ন দেখে পিতার নিকট ব্যক্ত করলে তিনি নবী সুলভ দূরদর্শীতা দিয়ে বুঝতে পারলেন যে, ইউসুফের ভবিষ্যতে মহা মর্যাদা অপেক্ষা করছে। এমনকি সে নবীও হতে পারে। তাই তিনি তাকে আরো অধিক স্নেহ করতে লাগলেন এবং তার এই সৌভাগ্যের সংবাদ অবহিত হয়ে অন্যান্য ভায়েরা তার প্রতি আরো ঈর্ষান্বিত হয়ে উঠতে পারে এবং তাকে কষ্ট দেয়ার পরিকল্পনা করতে পারে ভেবে তিনি ইউসুফকে সতর্ক করে দিয়ে বললেন যে, তোমার ভাইদের নিকট এই স্বপ্ন বৃত্তান্ত মোটেও বর্ণনা করো না, তাহলে তোমার বিরুদ্ধে তারা ষড়যন্ত্রে মেতে উঠবে। কেননা শয়তান তো মানুষের চিরশত্রু । সে চায়না ভাইয়ে ভাইয়ে সম্পর্ক অটুট থাকুক, শান্তিতে বসবাস করুক। কিন্তু মানুষ যেটা আশংকা করে সেটাই হয়ে থাকে।

হযরত ইউসুফ আ. এর বৈমাত্রেয় ভাইয়েরা দেখলো যে, পিতা ইয়াকূব আ. ইউসুফের প্রতি অসাধারণ মুহাব্বত রাখেন। ফলে তাদের মনে হিংসা মাথা চড়া দিয়ে ওঠে। এটাও হতে পারে যে, তারা কোনোভাবে ইউসুফ আ. এর স্বপ্নের বিষয়ও জানতে পেরেছিলো, যদ্দরূণ তারা হযরত ইউসুফ আ. এর বিরাট মাহাত্ম্যের কথা টের পেয়ে তাঁর প্রতি হিংসাপরায়ণ হয়ে উঠলো।

তখন তারা পরস্পরে বলাবলি করতে লাগলো যে, আব্বাজান দেখি আমাদের তুলনায় ইউসুফ ও তার ছোট ভাই বিনয়ামীনকে অধিক ভালোবাসেন। অথচ আমরা দশজন তাদের বড় হওয়ার কারণে ঘরের কাজ-কর্ম করতে সক্ষম। তারা উভয়েই ছোট বালক বিধায় ঘরস্থালির কাজ করার শক্তি রাখে না। আমাদের পিতার উচিৎ হলো, বিষয়টি অনুধাবন করা এবং আমাদেরকে অধিক মুহাব্বত করা। কিন্তু তিনি প্রকাশ্যে অবিচার করে যাচ্ছেন। তাই এসো, আমরা হয় ইউসুফকে হত্যা করি, না হয় তাকে এমন দূরদেশে নির্বাসিত করি, যেখান থেকে সে আর ফিরে আসতে না পারে।

গল্পের বিষয়:
ইসলামিক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত