ইসলামিক গল্প । ব্যবসায়ীর মাগফিরাত লাভ

ইসলামিক গল্প । ব্যবসায়ীর মাগফিরাত লাভ

মহান আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দাদেরকে অনেক ভালোবাসেন। তিনি বিচার দিবসে গুনাহগার ও পাপী বান্দাদেরকে ক্ষমা করে দেওয়ার জন্য ফিরিশতাদেরকে ঐ বান্দার নেক আমল তালাশ করার নির্দেশ দিবেন। ছোট থেকে ছোট কারনেও আল্লাহ তায়ালা বহু পাপী বান্দাদের ক্ষমা করে দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। সেই রকম দুটি শিক্ষণীয় ইসলামিক গল্প আজকে আপনাদের সম্মুখে তুলে ধরলাম।

হাদীস শরীফে আছে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,

কিয়ামতের দিন এক লােককে আল্লাহর সামনে উপস্থিত করা হবে, আল্লাহ তায়ালা ফেরেশতাদেরকে বললেন, খুঁজে দেখ তার আমল নামায় কী আছে? কী নেক আমল সে করেছে।

তার আমলনামা খুঁজে প্রায় খালি অবস্থা মনে হবে ফেরেশতাদের কাছে। না আছে সেখানে নামাযের আমল, না আছে রােযা। উল্লেখযােগ্য কোন নেক আমল বা ইবাদত-বন্দেগী নজরে পড়ার মত নেই। শুধু ব্যবসা-বাণিজ্যে সারাটি দিন কাটিয়ে দিত।

আল্লাহ তা’আলা সব বান্দাদের সম্পর্কেই ভালভাবে জানেন। কিন্তু অন্যদের সামনে প্রকাশ করার জন্য ফেরেশতাদের হুকুম করেন একটু তন্ন তন্ন করে খুঁজে দেখ, অন্য কোন নেক আমল আছে কি না?

তখন ফেরেশতারা বলবে, হ্যা তার এক নেক আমল দেখা যায়। যদিও বিশেষ কোন নেক আমল করেনি, ব্যবসা ছিল তার পেশা। ব্যবসার কাজে নিয়ােজিত গােলামরা মালামাল বিক্রি করে টাকা পয়সা এনে দিত তাকে।

লােকটি খুব গুরুত্বের সাথে গােলাম কর্মচারীদেরকে নির্দেশ দিয়েছিল, যখন কারাে কাছে কোন কিছু বিক্রি কর যদি ক্রেতা অভাবী বা গরীব হয় তবে তার সাথে নরমভাবে লেন-দেন করবে। যদি বাকীতে দাও তবে মূল্য উসূলে কড়াকড়ি করবে না; বরং মাঝে মধ্যে মাফ করে দিবে।

সুতরাং এ অভ্যাস বহাল রেখেছে তার ব্যবসার সবক্ষেত্রে সর্বক্ষণ। কারবারের ক্ষেত্রে তার নিয়মই ছিল, টাকা-পয়সার টানাটানি গরীব লােকের জন্য হয়ত বা ছাড় দেয়া নতুবা সুযােগ মতাে মাফ করে দেয়া। এ ব্যাপারে কোন কঠোরতা নয়।

আলাহ তা’আলা ঘােষণা দিবেন, সত্যি কি এ লােক আমার বান্দাকে মাফ করে দিত? যদি তাই হয় তবে এ বিষয়ে আমি বেশী উপযুক্ত যে!
তাকেও আমি ক্ষমা করে দেই।

তাই ফেরেশতাদের নির্দেশ দেয়া হবে তাকে মাফ করে দিয়ে জান্নাতে নিয়ে যাও। মােটকথা বান্দার সাথে মুআমালা করার সময় ক্ষমা করে দেয়া আল্লাহ পাকের খুবই পছন্দনীয়।

ঘটনা দুই

যে দয়া করে সে দয়া পায়
হাদীসে বর্ণিত আছে যে, রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন,

তােমাদের পূর্ববর্তী উম্মতের এক ব্যক্তি ব্যবসা-বাণিজ্য করত। ক্রয়-ক্রিয়ের সময় লােকদের সাথে সে কোমল আচরণ করত। ক্রেতাদের সাথে পণ্য মূল্য নিয়ে বেশী দর কষাকষি করত না। অল্প লাভেই বিক্রি করে দিত।

আবার, ক্রয় করার সময় ও বেশী দর কষাকষি করত না। মূল্য পরিশােধ করে ক্রয় করে নিত। তেমনিভাবে সে নিজের পাওনা হক আদায় করার সময়ও সদয়ভাব দেখাতাে, পাওনা আদায়ে সময় দিত।

পরকালে যখন ঐ লােক আল্লাহর সামনে উপস্থিত হবে তখন আল্লাহ তাআলা বলবেন, সে যেহেতু আমার বান্দাদের সাথে সদয়ভাব ও নম্র আচরণ করেছে, আজ আমিও তার সাথে সদয়ভাব দেখাবাে।

অতঃপর তাকে আল্লাহ ক্ষমা ও মাগফিরাত দান করবেন।

মােটকথা আল্লাহর বান্দার সাথে সদাচরণ করা এবং মুখাপেক্ষী লােকের সাথে সহজভাবে মুআমালা করা রাম্বুল আলামীন খুব বেশী পছন্দ করেন।

জাস্টিজ মাওলানা তাকি উসমানী সাহেব (দাঃ) এর হৃদয় ছোঁয়া গল্প বই থেকে গল্পগুলো সংগৃহীত

গল্পের বিষয়:
ইসলামিক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত