উমর (রা.) ছিলেন ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা এবং প্রধান সাহাবীদের অন্যতম। আবু বকরের মৃত্যুর পর তিনি দ্বিতীয় খলিফা হিসেবে দায়িত্ব নেন। উমর ইসলামি আইনের একজন অভিজ্ঞ আইনজ্ঞ ছিলেন। ন্যায়ের পক্ষাবলম্বন করার কারণে তাকে আল ফারুক (সত্য মিথ্যার পার্থক্যকারী) উপাধি দেয়া হয়। আমিরুল মুমিনিন উপাধিটি সর্বপ্রথম তার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়েছে। ইতিহাসে তাকে প্রথম উমর হিসেবেও উল্লেখ করা হয়। তার শাসনামলে একটি মোমবাতি নিভিয়ে আজো তিনি আদর্শের প্রতিক হয়ে আছেন।
হযরত উমর (রা.) এর মোমবাতি নেভানোর সেই ঐতিহাসিক কাহিনীটি নিম্নরূপ:
একদিন মোমের আলোয় কাজ করছিলেন খলিফা উমর (রা.)। এমন সময় সেখানে আসলেন তার দুই আত্মীয়। খলিফা তাড়াতাড়ি ফুঁ দিয়ে মোমবাতিটি নিভিয়ে দিলেন।
অন্য আরেকটি মোমবাতি ধরিয়ে অতিথিদের বসতে দিয়ে তাদের খোজখবর নিলেন।কৌতুহল চাপতে না পেরে একজন জানতে চাইলেন, আমাদের দেখে কেন আপনি আগের মোমবাতি নেভালেন আর নতুন একটি জ্বালালেন?
খলিফা জবাব দিলেন:
আগের মোমবাতি ছিল রাষ্ট্রের সম্পত্তি থেকে কেনা। তোমরা যেহেতু আমার আত্মীয়, তাই তোমাদের সাথে আমার ব্যক্তিগত অনেক আলাপ হবে। আমার নিজের কাজে জনগণের আমানত থেকে আমি কিছু খরচ করতে পারি না। তাহলে আল্লাহর দরবারে আমাকে জবাবদিহি করতে হবে। তাই নিজের টাকায় কেনা মোমবাতিটি তোমাদের দেখে জ্বালালাম।এই জবাবে আত্মীয়রা হতভম্ব হলেন। তারা এসেছিলেন আত্মীয়তার খাতিরে বিশেষ কোন সুবিধা পাওয়া যায় কি না, সেই অনুরোধ করতে। কিন্ত্ত সামান্য মোমবাতি নিয়ে খলিফার এত বিবেচনা ও সতর্কতা দেখে নিজেদের প্রস্তাব জানাতে তারা আর সাহসই করলেন না।
আরেকবার খলিফার কাছে এক লোক অবৈধ সুবিধা চায় । খলিফার সামনে রাখা কিছু কাঠে তখন আগুন জ্বলছিল। খলিফা বললেন, ঠিক আছে। তুমি এই আগুনের ভিতর তোমার হাত কিছু সময়ের জন্য রাখো; তারপর তোমার অনুরোধ আমি বিবেচনা করবো। লোকটি ভয় পেয়ে বললো, হে খলিফা; এই আগুনে হাত ঢুকালে আমার হাত তো জ্বলে যাবে । খলিফা বললেন, তুমি দুনিয়ার এই সামান্য আগুনকে ভয় পাচ্ছ অথচ আমাকে তুমি দোযখের অনন্ত আগুনের ভিতরে নিয়ে যেতে চাও? তদবিরকারী নিজের ভুল বুঝতে পেরে ফিরে যায়।