কিছু কথা

কিছু কথা

আমি অনেক মেয়ের কাছেই শুনেছি অনেকে হয়ত প্রশ্নও করেছেন আমরা পুরুষরা আসলে কি । আমরা ছেলেরা খারাপ কেন। রাস্তাই মেয়ে দেখলেই অনেকে বিরক্ত করে খারাপ কথা বলে বিভিন্ন কটুক্তি করে। আরও নানান কথা বলে ইত্যাদি ইত্যাদি। আজ আমি তাদের প্রশ্নের উত্তর নিয়ে আসছি। হয়ত এইটা অনেকেই জানেন তারপরেও বলছি।
,
আসলে একটা কথা কি জানেন পুরুষ মানুষ হচ্ছে সৃষ্টির সবচাইতে রহস্যময় প্রাণি আবার দুর্ভাগাও বটে। বুঝতে পারলেন না তো??? আচ্ছা আসুন বুঝিয়ে বলছি মন দিয়ে শুনুন
,
মানুষ সৃষ্টি করার আগে আল্লাহ গাধা, কুকুর ও বানর সৃষ্টি করেছিলেন। তো আল্লাহ প্রথমে গাধাকে সৃষ্টি করলেন আর তাকে সৃষ্টি করার পর তাকে বলা হল সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তাকে ক্লান্তিহীন পরিশ্রম করতে হবে। সারাজীবন তাকে ভারি বোঝা বয়তে হবে খেতে পাবে শুধু ঘাস । আর তার মাথায় কোন বুদ্ধি থাকবে না। তার আয়ু হবে ৫০ বছর। এই শুনে গাধা আল্লাহকে বলল আমি এত বছর বাচতে চায় না আমাকে ২০ বছর আয়ু দেওয়া হোক আল্লাহ সেটাই মঞ্জুর করলেন।
,
গাধাকে সৃষ্টির পর আল্লাহ তাআলা কুকুরকে সৃষ্টি করলেন আর তিনি কুকুরকে সৃষ্টি করার পর তাকে বললেন সে হবে মানুষের পরম্ বন্ধু । কিন্তু সে খাবে মানুষের উচ্ছিষ্ট এবং তার আয়ু হবে ৩০ বছর। কুকুর তখন আল্লাহকে করজোড়ে বলল আমি এত বছর বাচতে চায় না আমাকে ১৫ বছর আয়ু দেন। আল্লাহ তখন সেটাই মঞ্জুর করলেন ।
,
এরপর মহান আল্লাহ তায়ালা বানরকে সৃষ্টি করলেন আর তিনি তাকে বললেন তুমি শুধু গাছের এ ডাল থেকে ওডালে লাফিয়ে বেড়াবে এবং নানান রকম ফন্দি ফিকির করে মানুষ্কে আনন্দ দিবে। আর তোমার আয়ু হবে ২০ বছর। বানর বলল আমি ২০ বছর বাঁচতে চায় না আমাকে আমাকে ১০ বছর আয়ু দেওয়া হোক। আল্লাহ সেটাই মঞ্জুর করলেন।
,
এবার এল পুরুষ মানুষের পালা তিনি এবার পুরুষ মানুষ্কে সৃষ্টি করলেন। তারপর তিনি পুরুষ মানুষ্কে বললেন যে তুমি হলে প্রাণিকুলের মধ্যে সবচেয়ে বিচক্ষণ আর বুদ্ধিমান। সেই জন্যে তোমাকে প্রাণীদের শিরোমণি করা হল এবং তোমার আয়ু হবে ২০ বছর । তখন পুরুষ মানুষ বলল এবং করজোড়ে বলল আল্লাহকে যে ২০ বছর আয়ু অত্যান্ত কম । হে সৃষ্টিকর্তা আমাকে ঐ গাধার সে যে ৩০ বছর আয়ু নেইনি সেটা আমাকে দেওয়া হোক। ঐ যে কুকুর সে তার আয়ুর ১৫বছর ফিরিয়ে দিয়েছিল সেটাও আমাকে দেওয়া হোক। আর যেই বানর তার ১০ বছর আয়ু ফিরিয়ে দিয়েছে সেটাও আমাকে দেওয়া হোক। ২০ বছর অত্যান্ত কম। এই কম সময়ে আমি পুরো পৃথিবীকে চিনতে পারব না। আমি দির্ঘদিন বাঁচতে চায়। আল্লাহ তায়ালা সেটাও মঞ্জুর করলেন।
,
আর সেই থেকেই ছেলেরা পুরুষ মানুষ হিসেবে বাচে ২০ বছর । আর তারপরের ৩০ বছর সংসারের বোঝা পিঠে করে বয়ে বেড়াই আর সেটা কার মত জানেন? সেটা হল গাধার মত। তার পরের ১৫ বছর তার ছেলে-মেয়েরা যা দেয় সেইরকম করে ঠিক কুকুরের মত কুরে উচ্ছিষ্ট খেয়ে বাচে। আর তারপরের বৃদ্ধ বয়সে বাচে ঠিক বানরের মত । বানরের মত বাচে কারন বানর যেমন গাছের এডাল থেকে ওডাল ঝুল খায় ঠিক তেমনি পুরুষ মানুষ আজ এই ছেলের বাড়ি তো কাল ঐ ছেলের বাড়ি ঘুরে বেড়াই আর নানান রকম ফন্দি ফিকির করে নাতি নাতনিদের আনন্দ দেওয়ার চেষ্টা করে ।
.
এটা গেল সারজীবনের একটা সমিকরন এবার আসুন ছেলেদের দায়িত্ব পালনের সমীকরণটা দেখে নিই……
ছেলেরা মাসে ১০০০০ টাকা বেতনের চাকরি করে । সেই টাকা হাতে পাবার তারা আগে নিজের জন্য না ভেবে পরিবারের জন্য ভাবে
তারা সেই টাকা থেকে বাবার জন্য ১০০০,
মায়ের জন্য ১০০০,
বঊয়ের জন্য ১০০০,
ছেলে মেয়ের পড়ার খরচের জন্য ১৫০০
ফ্যামিলির সারা মাসের খরচের জন্য ৩০০০ টাকা বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়ে দিব্যি তারা বাকি ২৫০০ টাকায় তার নিজের খরচ সারা মাস চালিয়ে নেয়। এরপরেও বলি ছেলেরা খারাপ। আমরা মেয়েরা যারা একটা পুরুষের জন্য গোটা পুরুষ জাতিকে গালি দিচ্ছি সেই পুরুষ জাতিই
মাসে ১০০০০ টাকা বেতনের চাকরি করে বউকে ফোন করে বলতে জানি “তোমার জন্য কি পাঠাবো ?”
সামান্য বেতন পাওয়া ছেলেটা নিজের পুরনো জুতো বদলাবে বলে ঠিক করেও সেই ছেলেটা বউয়ের জন্য আর তার সন্তানের জন্য জুতা কিনে নিজের ছেড়া জুতা মুচির কাছে দিয়ে সেলাই করে মাসের পর মাস পার করে দেই সেই ছেড়া জুতো দিয়েই। তারপরেও আমরা বলি ছেলেরা খারাপ অভদ্র।
,
সেই সামান্য বেতনের চাকরিজীবি ছেলেটাই উপোস পেটে অফিস গিয়ে মাকে ফোন করে বলতে জানে আমি মাংস দিয়ে ভাত খেয়েছি তোমরা খেয়েছো তো????
সেই আবার ১০৩০ জ্বর নিয়ে অফিস গিয়ে বাবাকে ফোন দিয়ে বলতে জানে “ আমি অনেক ভাল আছি বাবা তোমরা সবাই ভাল আছো তো???”
সেই ছেলেটাঈ নিজের পকেট ফাকা থাকা সত্বেও বউকে ফোন দিয়ে বলতে জানে “একটু ধৈর্য ধর সামনের মাসে বেতন উঠিয়ে তোমাকে একজোড়া বালা কিনে দিব।“
,
ছেলেরা এমনই হয়। তারা অনেক কিছুই জানে
তারা জানে সকাল বেলা উঠে লোকাল বাসে ঝুলে অফিসে যেতে । তারা জানে লেট করে অফিসে গিয়ে বসের ঝাড়ি খেয়ে সেগুলো হজম করতে। তারা জানে ৬টার অফিস ৯টা পর্যন্ত করতে। তাদের অফিস থেকে ফিরতে দেরি হলে বউয়ের কাছে জবাবদিহি করতে জানে । তারা সারাদিনের ক্লান্তির পরেও বউয়ের কপালে ভালবাসার চুম্বন একে তাকে বুঝিয়ে দিতে জানে তোমাকে শত কিছুর পরেও ভালবাসি, সব সময় পাশে আছি ছিলাম থাকব ।
,
আর এত কিছুর পরেও আমরা ছেলেদের একটা সামান্য ছোট ভুলের কারণে তাকে খারাপ বলতে তাদেরকে হাজারো ভাষায় গালি দিতে , ছোটলোক বলতেই জানি। আমরা তাদেরকে খারাপ ,দুশ্চরিত্র, লম্পট, প্রতারক ইত্যাদি বলতে কিঞ্চিৎ দ্বিধাবোধও করি না । আরে সব পুরষই খারাপ না। সব পুরুষই মেয়েদেরকে লালসার চোখে দেখে না। অনেকে সম্মানের চোখেও দেখতে জানে । আমাদের কারোর উচিত না একটা খারাপ দুশ্চরিত্র ছেলের জন্য পুরো ছেলে জাতিকে অপমান করা । একটা কথা আমরা সবাই জানি ভালোর মঝে যেমন খারাপ আছে তেমনি খারাপের মাঝেও ভাল আছে। আর একটা কথা খারাপ না থাকলে কিন্তু আমরা ভালোর মুল্য বুঝতেই পারতাম না আবার ভালো না থাকলে খারাপের মুল্যও বুঝতে পারতাম না।
,
এই বলে ভাব্বেন না যে আমি মেয়েদের খারাপ বলছি না, মেয়েরা সবাই ভালো তাও বলছি না । পৃথিবীতে যেমন ভাল মেয়ে আছে ঠিক তেমনই খারাপ মেয়েও আছে। আর আমাদের সবারই একটা কথা জানা যে সব কিছুরই কিছু ব্যাতিক্রম আছে । আর পুরুষ যেমন নারি ছাড়া চলতে পারে না । ঠিক তেমনই নারীও পুরুষ ছাড়া চলতে পারে না। আর তাইতো ‘নারী ও পুরুষ একে অপরের পরিপূরক’। “আর একই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ”। আসুন আমরা একে অপরকে সম্মান জানাই। আর একে অন্যের কাছ থেকে সম্মান পাই। আর এই দুইদিনের পৃথিবীতে একমাত্র “কোরআন” ছাড়া কোন কিছুই ১০০% বিশুদ্ধ নই।

গল্পের বিষয়:
অনুপ্রেরণা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত