আমি তোমাকে ভালবাসি তাহলে আমার সাথে এখন এত খারাপ ব্যবহার কর কেন? (পরী) কি বললা খারাপ ব্যবহার করি? ভাল না লাগলে ব্রেকআপ করে ফেল। (আমি) সরি কিসের সরি।সব কিছুতেই তোমার সরি।রিলেশনই রাখবনা তোমার সাথে। প্লিজ এমনটা করিওনা। চুপ থাকো।
আমি তো তোমার সাথে রিলেশন করতে চাইনি।তুমিই তো আমাকে নানান কথা বলে তোমার প্রতি মায়া সৃষ্টি করছ তাহলে এখন তুমিই আমার সাথে এত খারাপ ব্যবহার কেন কর? বলছিনা চুপ থাকো এত প্যাচাল ভাল্লাগেনা। বাহ!! আগে আমার সাথে একটু কথা বলার জন্য কত কিছু করতা।আর এখন আমার কথাই শুনতে ইচ্ছে করেনা। ধুর ফোন রাখলাম বাই। বলেই কলটা কেটে দিলাম।আর বন্ধ করে দিলাম। ধুর আর ভাল্লাগেনা ওরে ,সহ্য হয়না। কেন যে এত প্যারা দেয়..!! যাক শান্তিতে একটা ঘুম দেওয়া যাবে। সকালে ঘুম ভাঙার পর ফোনটা অন করলাম।অবশ্য সারারাত চার্জে বসিয়ে রাখছিলাম। ফোন অন করার সাথে সাথেই পাখির কিচিরমিচির মত শব্দ করে এত্তগুলো মেসেজ আসল।দেখলাম 51 টা মেসেজ..!! সবগুলাতেই সরি আছে। আর একেকটা মেসেজ যেন একেকটা রচনা।আমি সারমর্মের মত Its Ok বলে রিপ্লে করলাম।
দেখি সাথে সাথেই ফোন দিছে।ফোন দিয়েই মেয়েটা কান্নাকাটি শুরু করছে। আচ্ছা মাত্র ঘুম থেকে উঠলাম।এর মাঝেই কেউ ফোন দিয়ে কান্নাকাটি শুরু করলে কি ভাল লাগে?? মেজাজটা খুব খারাপ হয়ে গেল। তুমি এই নেকামি করার জন্য ফোন দিছ? তুমি জানো আমি আজ সারারাত ঘুমায়নি। তো আমি কি তোমাকে নিষেধ করছিলাম? না কিন্তু তুমি রাগ করে ফোন কেটে দিলা।আমি কিভাবে ঘুমাই বল? জানিনা সকালে না খেলে খেয়ে নিয় রাখছি খেয়ে নিয় মানে কি? বল যে খেয়ে আসো পরে কথা বলছি। আজব তো..!! তোমার কাছ থেকে আমার কথা শিখতে হবে?? ধুর তোমার সাথে আমার রিলেশন করাটাই ভুল হয়েছে,সবকিছুতেই তোমার ভুল ধরতেই হবে। আচ্ছা আচ্ছা সরি।আমি খেয়ে নিব।তুমিও খেয়ে নিয়। যা ইচ্ছে হয় কইর বাই।
এই মেয়েতো খুব আজব।শান্তিতে ঘুমাতে দিবেনা।আবার ঘুম থেকে উঠলেও বকবক শুরু করবে।কেন যে এইডার সাথে রিলেশন করছিলাম।অন্য কেউ হলে কবেই চলে যেত সারাদিন বন্ধু-বান্ধবের সাথে মজা করেই কাটিয়ে দিলাম।ও অনেকবার ফোন দিছিল কিন্তু রিসিভ করিনি।বন্ধুরা যখন বলছিল কি রে এত ফোন দিতেছে কে? তখন বলছিলাম আর বলিসনা একদম তেজপাতা করে দিছে জীবনটাকে,বলেই সবাই হো হো করে হেসে উঠলাম। রাত্রে বাসায় ফিরে নিজেই ফোন দিলাম। হ্যালো। এই কোথায় ছিলা সারাদিন? কোথায় ছিলাম মানে !! জানতে পারিনা কি? জানতে পারো ,কিন্তু যেভাবে বলছ মনেহয় আমাকে সন্দেহ কর। না না সন্দেহ না। তাহলে ফোন দিলাম..জিজ্ঞাস করবা,কেমন আছি কি করি..তা না উল্টা বলছ সারাদিন কই ছিলাম। আসলে কি জানো তুমি আমায় বিশ্বাস’ই করনা।রাত্রে খেয়ে নিয়..ভাবছি অনেক্ষণ কথা বলব তা না দিলা মনটাকে খারাপ করে..তারাতারি ঘুমাই পইড়।শুভরাত্রি।
হ্যালো হ্যালো শোন কি বলবা বল? একটা কথা বলি তুমি রাগ করবা না তো? বল কি বলবা? আজ না একটা ছেলে আমাকে কল দিছিল..আমি নাম্বার চিনিনা তাই রিসিভ করছিলাম…ছেলেটা নাকি আমায় পছন্দ করে.পরে আমি ফোন কেটে দিছি..নাম্বারও ব্ল্যাকলিষ্টে রেখে দিছি হিহিহিহি এত হাসার কি হল..!! ও এক ছেলে পছন্দ করে,আবার ফোনও দিছে কারণে মন খুশিতে নেচে উঠছে তাইনা?? ছি: অন্য একটা ছেলের জন্য আমার কোন খোজ নিলানা আজ। তোমায় অনেকবার ফোন দিছিলাম তো ধুর ফোনটাই কেটে দিলাম। মেয়েটাকে কষ্ট দিলে মুখে একটা রহসম্যয় হাসি ফুটে উঠে সবসময় ঝগড়ার সময় ওকেই দোষ দেই। আর ও এতে নিজেকে অপরাধী মনে করে। আর কখনো আমার সাথে রাগ করলে ইমোশোনালি ব্ল্যাক মেইল করে বিভিন্ন কথা বলি। তখন উল্টা নিজেই আমায় সরি বলে।অর্থাৎ দোষ ওর থাকলেও ওকেই সরি বলতে হবে,আমার দোষ থাকলেও ওকেই সরি বলতে হবে।
তো এভাবেই চলছিল।সবসময় ওকে ঝাড়ির উপর রাখতাম। অন্য কোন রাগও ওর উপর প্রয়োগ করতাম।কিন্তু মেয়েটা মৃদু হাসিতেই সব মেনে নিত।ইদানিং সময় নামক জিনিসটাকে ওকে একদমই দেয়া হয়না। হঠাৎ একদিন ও বলল ওর নাকি বিয়ে ঠিক হইছে। এইটা শুনে আমার এত্ত খুশি লাগছিল।যা বলে বুঝানো সম্ভব না ।বন্ধুদের সাথে পার্টিও দিছি। মনে হচ্ছিল বাঁচলাম। কিন্তু শেষ দোষটাও ওকেই দিব। তাই আরো কিছু ইমোশোনালী কথা বলতে থাকলাম। কি !! তুমি বিয়ে করে নিবা। আমার কি হবে..!! আসলে মেয়েরা এমনই হয়, ভালভাসে একজনকে আর বিয়ে করে আরেকজনকে।তোমাকে এত ভালবাসার এই প্রতিদান দিলা আসলে সব মেয়েরাই এক। আমি কি করব বুঝতে পারছিনা..তুমি প্লিজ কিছু কর।তুমি প্লিজ তোমার মা-বাবাকে আমার বাসায় পাঠাও উনারা কিছু একটা করবেন। আমি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবনা।
আমি কিছু জানিনা আমি তোমাকে বিশ্বাস করছিলাম।তুমি শেষপর্যন্ত আমার থেকে চলে যাচ্ছ। প্লিজ এমন করে বলিওনা। তো কেমন করে বলব!! কেন যে তোমাকে এত ভালবাসছিলাম!! নিজের কাছেই লজ্জা লাগছে।কাকে ভালবাসছি আমি? একটা স্বার্থপর কে? (মেয়েটা কাদছে) আর আমি তো মনে মনে হাসছি। এভাবেই আরো কয়েকদিন চলে গেল। আজ মেয়েটার বিয়ে।ওর বিয়ে হওয়াতে আমিই মনেহয় সবচেয়ে খুশি হয়েছি। বিকাল 5টার দিকে একটা ফোন আসল রিসিভ করার পর। খুব ইচ্ছে ছিল।তোমাকে নিয়ে বাকীটা জীবন কাটিয়ে দিব।কিন্তু তা আর হলনা। আচ্ছা তুমি কি একটা সত্যি কথা বলবা? তুমি কি আমায় সত্যিই ভালবাসছিলা হ্যাঁ ( জানিনা এটা সত্য নাকি মিথ্যা) তুমি প্লিজ ঠিকমত খাওয়া-দাওয়া করিও।
আমি তো তোমার আর খোজ নিতে পারবনা। রাত করে বাসায় ফিরনা কেমন? খুব তো বলতা আমি তোমাকে প্যারা দেই। আজ থেকে আর দিবনা প্লিজ ভাল থেকো। নিজের যত্ন নিয় তোমাকে চিরতরে মুক্ত করে দিলাম বরপক্ষ চলে আসছে। আর কথা বলতে পারবনা।তুমি আমায় কিছু বলবানা? হ্যাঁ ভাল থেকো আর কিছু বলার আগেই দেখলাম মেয়েটা ফোন কেটে দিছে। এই প্রথম ওর জন্য বুকের মাঝে চিনচিন ব্যাথা অনুভব হচ্ছিল। তারপরও মনকে শান্তনা দিচ্ছিলাম।যাক ভালই হল হাফ ছেড়ে বাঁচলাম। আজ রাত্রে আর বাইরে গেলাম না। মনের অজান্তেই ফোনটা বন্ধ করে চার্জে দিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম। সকালে ঘুম ভাঙার পর যখন ফোন অন করলাম..আজ আর পাখির কিচিরমিচির শব্দের মত কোন মেসেজ আসলনা। তখন খুব রাগ হল।ভাবলাম ওকে ফোন দিয়ে কয়েকটা ঝাড়ি দেই।পরক্ষণেই মনে হল ও তো আর নেই।মেসেজ দিবে কে? আমিই বা কাকে ঝাড়ি দিব !! কেমন যেন অদ্ভুত এক শূন্যতা অনুভব করতে লাগলাম।মনটা ডুকরে কেদে উঠল।
যখন দাত ব্রাশ করে মুখ ধুইতে গেলাম।দেখলাম চোখ গুলো কেমন ভিজে যাচ্ছে ফ্রেশ হয়ে বাইরে বের হলাম। সারাটাদিন কোনভাবে কাটাইলাম।আজ সারাদিন একবারও ওর ফোন কেটে দিতে হয়নি।কারণ ফোনই তো আসেনি।কাটব কিভাবে!! বাসায় ফিরে কেন জানি ওকে আরো বেশি মিস করতে লাগলাম। না আজ কোন মেসেজ/ফোন আসেনি। অনেক কষ্টে ঘুমাইলাম। পরদিন সকালেও সেইম ঘটনা ঘটল। আজ ওকে আরো বেশি মিস করতে লাগলাম। সময় যতই যাচ্ছে ততই ওর কথা তত বেশি মনে হতে লাগল। একটা সময় ঘরের দড়জা বন্ধ করে পাগলের মত কাদতে লাগলাম। আমার মন শুধু বলছিল ” এর জন্য তুই’ই দায়ি যখন ভালবাসা পেয়েছিলি।তখন তো সেটা অবহেলা করেছিলি আজ তবে কেন কান্না করতেছিস!!”
ঠিকই তো প্রথমে আমিই ওর পিছে পিছে কত ঘুরতাম। ও আমাকে পাত্তাই দিতনা।কত কি বলে ওরে রাজি করাইছি কখনো কষ্ট দিবনা তোমায়/সারাজীবন ভালবেসে যাব/আমি সব ছেলেদের মত না/ কখনোই তোমার চোখে পানি আসতে দিবনা/ খুব ভালবাসব তোমায় এরকম কত কি বলতাম আর ভালবাসা পাওয়ার পর কতই না অবহেলা করেছি। ও আগে আমাকে প্রায়ই বলত। ” ভালবাসা হারিয়ে গেলেই বুঝা যায় তা কি ছিল” কিন্তু তখন কথাটার মানে বুঝতাম না।এখন বলি যদি একটাবারও বুঝতে পারতাম ভালবাসা হারানোর পর আমার এত কষ্ট হবে তাহলে কখনোই তা হারিয়ে যেতে দিতাম না।
এখন মাঝে মাঝে খুব কান্না করে বলতে ইচ্ছে করে একবার ফিরে আয় প্লিজ কখনোই কষ্ট দিবনা তোকে তুই রাগলে যেভাবেই পারি রাগ ভাঙাব। কোন মিথ্যে বলবনা। খুব ভালবাসব তোকে কখনোই আর অবহেলা করবনা। প্লিজ ফিরে আয় তোর সাথে যে খুব মন খুলে কথা বলতে ইচ্ছে করে। এরকম অনেক না বলা কথাই রয়েছে ওর জন্য।কিন্তু ও আর ফিরে আসবেনা। আমার এত কিছুর জন্য তো আমিই দায়ি।
ভালবাসার জন্য একসময় সবাই পাগল থাকি কিন্তু যখন আমরা সত্যিকারের ভালবাসা পেয়ে যাই,তখন সেটাকে আর মূল্য দেইনা অবহেলায়ই তা হারিয়ে ফেলি।হারানোর পরই বুঝা যা তা কি ছিল কতটা কষ্টের ভেবে দেখুন তো আপনি চাইলেই বাড়ি,গাড়ি সব করতে পারবেন।টাকার জন্য,রুপের জন্য অনেকেই আপনাকে ভালবাসবে।কিন্তু সত্যিকারের ভালবাসা পাবেন কি? না পাবেন না..তাই কেউ যদি সত্যিকারের ভালবাসা পেয়ে থাকুন প্লিজ তা হারিয়ে যেতে দিয়েন না। এখন হয়তো তা আপনার কাছে বিরক্ত লাগতে পারে কিন্তু যখন সেটা হারিয়ে যাবে বুঝতে পারবেন কি হারিয়েছেন জীবন থেকে। একসময় খুব কাদবেন।কিন্তু আর ফিরে পাবেন না তাই ভালবাসাকে হারিয়ে যেতে না দিয়ে ভালবেসে ভালবাসাকে ধরে।