ভয়ঙ্কর সত্য ঘটনা আমার নাম নয়ন আমার বাড়ি যাত্রাবাড়ি মাতুয়াইল এ ঘটনার সময় ১৯ এ জুলাই ২০০৯. আমরা তিন বন্ধু মিলে মাছ চাষ করার জন্য
একটি পুকুর কিনেছিলাম । পুকুরের পানি ছিল হাটুর উপর থেকে কোমর পর্যন্ত ।পুকুরের এক পাশে ছিল একটি পুরাতন হিন্দু বাড়ি এবং অপর পাশে ছিল
পরিতেক্ত বাড়ি যেখানে কেউ বাস করতনা এবং আরেক পাশে ছিল কচুর খেত । পুকুরের মধ্যে অনেক কচুরিপানা এবং রাক্ষুসে মাছ ছিল । তাই আমরা ঠিক
করলাম পুকুরটা পরিষ্কার করার কিন্তু আমরা পুকুরটি পরিষ্কার করতে ব্যর্থ হই। পরিষ্কার করার সময় পানি খাওয়ার উদ্দেশে হিন্দু বাড়িতে যাওয়ার পথে
মাথায় কি জানি একটা জিনিস উপর থেকে পরে সাথে সাথে আমি অজ্ঞান হয়ে যাই । জ্ঞান ফিরার পর আমি বুজতে পারলাম যে আমি রাস্তার উপরে পরে
রয়েছি । জ্ঞান ফিরার পর আমি আমার বন্ধুদের কাছে ফিরে যাই । এ বেপারে আমি কারো সাথে কোনো আলাপ করিনি । পুকুর পরিষ্কারে ব্যর্থ হবার কারণে
পরের দিন আমরা পানি সেচার মেশিন ও দু জন লোক ঠিক করি । কিন্তু মেশিন দিয়ে সারাদিন পানি সেচার পরও মাত্র আধা ইঞ্চি পানি কমে,সবার কাছে
বেপার টা অস্বাভাবিক মনে হয় । এর জন্য আমরা মাছ চাষ করার পরিকল্পনা বাদ দেই । তার কয়দিন পর জানতে পারি এখানে আমাদের আগে আমদের
কিছু এলাকার বড় ভাই মাছ চাষ করত,কিন্তু তারা হটাত করে মাছ চাষ করা বন্ধ করে দেয়.বন্ধ করার কারণ আমাদের জানা ছিল না । তাই কারণ জানার
জন্য বড় ভাইদের একজনকে জিজ্ঞাস করি কিন্তু প্রথমে সে কিছু বলতে রাজি হলনা । তার পর আমার সাথে ঘটে যাওয়া সব ঘটনা খুলে বলি । তার পর সে
মাছ চাষ বন্ধ করার কারণ বলতে রাজি হলো । তারা তিন বছর আগে ওই পুকুরের মাছ চাষ করত.পাহারা দেওয়ার জন্য প্রতি রাতে দুইজন করে থাকত.রাতে
থাকার জন্য তারা পুকুরের মাঝে একটি বাসের ডেরা তৈরী করে। একরাতের ঘটনা , সে রাতে রনি ভাই এবং অন্য আরেক জনের থাকার পালা ছিল । কিন্তু
একজনের সমস্যা থাকার কারণে রনি ভাইকে একা থাকতে হয়। রনি ভাই ছিল অনেক সাহসী এবং তার হাতে ছিল একটি মাছ মারার টেটা মধ্য রাতে তিনি
ডেরায় বসে সিগারেট টানছিলেন,এমন সময় তিনি পুকুরের মাজখানে পানির ঝোপ ঝোপ আওয়াজ শুনতে পেলেন । সে মনে করে চোর মাছ চুরি করতে
এসেছে ,তাই সে ডেরার নিচে নৌকা নিয়ে দেকতে যায় । যাওয়ার পরে শব্দ বন্ধ হয়ে যায় এবং কিছুই দেখতে পায় না । তার একটু ভয় লাগা শুরু করে তখন
সে ডেরার মাঝে ফিরে আসে। আসার পর আবার সেই শব্দ আবার শুরু হয়। তার ভয় আরো বেড়ে যায়। সে এবার আর পানিতে নামে না উপর থেকেই
দেখার চেষ্টা করে ওখানে কিসের শব্দ হচ্ছে। কিছুক্ষণ পর সে দেকতে পেল কচু খেত থেকে একটি তিন অথবা চার বছরের একটি বাচ্চা পানিতে লাফিয়ে
লাফিয়ে গোসল করছে । সে ভাবে আসে পাশে কোনো জনবসতি নেই আর এত রাতে এই বাচ্চা কোথা থেকে এলো? একটু পর সে দেখতে পেল বাচ্চার
সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়ছে । একজনের পর তিন জন দেখতে পেল । তিন জন বাচ্চা পুকুরের পানিতে ঝাপাঝাপি করছে । তাদের পরনে কোনো কাপড় ছিল
না । তখন রনি ভাই বুজতে পারলেন যে, এগুলো মানুষের সন্তান না । এক পর্যায়ে বড় ভাই তার হাতে থাকা টেটা দিয়ে বাচ্চা গুলোকে আঘাত করার সিধান্ত
নিলেন। কিন্তু অজানা ভয় ও শংকার কারণে বাচ্চাদের আঘাত করা থেকে বিরত থাকলেন। কিছুক্ষণ পর দেখতে পেলেন বাচ্চা তিনটি কোথায় যেন উধাও
হয়ে গেছে । রনি ভাই বুকে অনেক সাহস নিয়ে ডেরার উপরে ফিরে গেলেন । এক সময়ে তিনি ঘুমিয়ে পড়লেন । খুব ভোরে তার ঘুম ভেঙ্গে যায় । তিনি
দেকতে পেলেন অনেক বৃষ্টি হচ্ছে । তিনি বৃষ্টির মধ্যে বাসার উদ্দশ্যে রওনা হলেন । বাসায় যাওয়ার পথে তার মনে হলো কে যেন তার পিছু নিয়েছে ,কিন্তু
পিছনে তাকিয়ে কাউকে দেখতে পায় না । পিছনে কে হাটছে এটা দেখার জন্য একটা দেয়ালের পিছনে লুকায় । লুকানো অবস্থায় সে অনুভব করে তার
পিছনে কে যেন দাড়িয়ে আছে । মাথা ঘুরিয়ে তাকাতেই কে যেন তাকে প্রচন্ড জোরে চর মারে । চর মারার পর রনি ভাই অজ্ঞান হয়ে যায় । জ্ঞান ফিরার পর
সে নিজেকে মসজিদে আবিষ্কার করে । মসজিদের ইমাম সাহেবের কাছে শুনতে পায় একটা লোক তাকে অজ্ঞান অবস্থায় পাওয়ার পর মসজিদে নিয়ে
আসে । পরে আমার সে বড় ভাই ইমাম সাহেবের কাছে গত রাতের সব ঘটনা খুলে বলে । ঘটনা শুনার পর ইমাম সাহেব বলে তোমার উপরে খারাপ জিনিস
আসর করেছে এবং সে ইমাম সাহেবের কাছ থেকে আরো জানতে পারে যে পুকুরের পাশের সেই হিন্দু বাড়িতে একটা বুড়ি মহিলা তার মেয়ে ও তিন নাতি
বসবাস করত ।এক পর্যায়ে বুড়ি মহিলার মেয়ে এবং নাতি তিনটি কলেরা রোগ হয়ে মারা যায় । মারা যাওয়ার পর বুড়ি মহিলা কাউকে না জানিয়ে মৃত দেহ
গুলো বাড়ির পাশের সেই কচু খেতে পুতে রাখে । ঘটনা শুনার পর রনি ভাই বুঝতে পারে যে,গত কাল রাতের বাচ্চাগুলো ছিল বুড়ির সেই মারা যাওয়া নাতি
তিনজনের আত্মা । এরপর উনি সবাইকে ব্যাপারটা জানান। তাই সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নেয় এখানে আর ওনারা মাছ চাষ করবে না ….