আমাদের বাড়ির মোড় থেকে একটু আগে, রাস্তার বাম পাশে একটা বড় আমগাছ ছিলো। ইয়া বড় বড় আম ধরতো সেই গাছে। আষাঢ় মাসের ঝরে যখন আম কুড়াতে যেতাম সেই আমতলায়, তখন মাঝে মাঝে বড় বড় আম মাথায় পড়ে অনেকে অজ্ঞান হয়ে যেত।
একদিন স্কুল ছুটি দিয়েছে আমার।
আমি তখন ক্লাস টু- তে পড়ি। হাতে একটা কঞ্চি নিয়ে খেলতে খেলতে বাড়িতে ফিরছি।
এমন সময় পরিচিত কোনো তরুণীর চিৎকার শুনে ছুটে গেলাম সেই আমগাছটার দিকে। গিয়ে দেখি বড় আপু, চোখ বড় বড় করে এদিক সেদিক তাকাচ্ছে। যেহেতু তিনি চিৎকার দেয়ার পর আমিই প্রথম ওখানে গিয়েছি, তাই তিনি আমাকে লক্ষ্য করে হাতের ইশারায় গাছের ডালার দিকে তাকাতে বললেন। আমি গাছের দিকে তাকালাম।
এবং তাকিয়ে যা দেখলাম , তা আমার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মনে থাকবে। দেখলাম, গাছে একটা মেয়ে ফাঁসির দড়িতে ঝুলে আছে।
মাথাটা একটু বেঁকে আছে। মুখ দিয়ে লালা পড়ছে।
এতক্ষণে আরও মানুষ এসে গেছে।
আমি ততক্ষণে প্রায় অজ্ঞান হয়ে গেছি। আসলে ওই বয়সে আমার জন্য ঘটনাটা খুবই ভয়ঙ্কর ছিলো। ঐদিন সারাদিন লাশটা গাছে ঝুলেছিলো। কেও নামায়নি। দূর- দূরান্ত থেকে মানুষ ঝুলে থাকা লাশ দেখার জন্য এসেছিলো সেদিন।
আমি প্রচন্ড ভয় পেয়েছিলাম।
আসল ঘটনা হচ্ছে, সেই মেয়ের মৃত্যুর পর শুরু হয় মানুষের নানা রকম ভয়ভীতির।
এলাকার অনেকেই দেখতে থাকে, অনেক রাতে সেই মরে যাওয়া মেয়েটি সেই গাছের আশেপাশে ঘুরাঘুরি করছে।
রাস্তা দিয়ে কেও হেটে গেলে, হাত ইশারায় ডাকে। তার কয়েকদিন পর, এলাকার মুরুব্বীদের উদ্যোগে গাছটা কেটে ফেলা হয়।