একদেশে ছিল বিশাল, ভয়ংকর এবং বদখৎ এক ভুত। তার নাম ছিল দারুইয়াস। দারুইয়াসের মনে সুখ ছিল না। জীবনের ৩৩ টি বসন্ত পেরিয়ে দারুইয়াস তার মনের মত পেত্নী খুঁজে পায়নি। আশেপাশে যেসব পেত্নী দারুইয়াসের পেছনে ঘুর ঘুর করত তাদেরকে দারুইয়াস মোটেই লাইক করত না। দারুইয়াসের একটাই কথা, তার জীবন সঙ্গী হতে হবে দুনিয়ার সবথেকে ডেঞ্জারাস, সবথেকে কুশ্রী আর সবথেকে বদরাগী। তার এই রেকোয়ারমেন্ট দারুইয়াসের দেশের কোন পেত্নীর মাঝে ছিল না। দারুইয়াস একবার নজর দিয়েছিল কোন এক দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দিকে ( মোটেও বাংলাদেশ না ) কিন্তু তা আর হয়ে উঠেনি চৌকস রাজনীতির চালে। বিরোধী দলের প্রধানের দিকেও ঝোঁক ছিল, কিন্তু একটাই প্রবলেম তার নাকি চোখের উপরে ব্রু নাই, খালি একটা পেন্সিলের দাগ, তাছারা একটু ফর্সা যা ভূত মহাশয় মোটেই পছন্দ করতেন না।
ভূত দারুইয়াসের মনে আরেকটা কষ্ট ছিল। সে এখনো পর্যন্ত কোন মানুষকে হত্যা করতে পারেনি যা হচ্ছে ভূতজগতের নেক্কারজনক ঘটনা। যতবারই সে মানব সম্প্রদায়ের কাউকে খুন করতে গেছে ততবারই কোন না কোন ঝামেলায় ফেঁসে গেছে। এই যেমন, যখন জেট লি কে খুন করতে গেছে তখন তাকে সারাদিন কুংফু প্রাক্টিজ করিয়ে ছেরেছে। যখন স্টিফেন হকিং কে খুন করতে গেছে তখন হকিং সাহেব তাকে কোড ওয়ার্ডে কিছু গালি দিয়েছে যার অনুবাদ করতে স্বয়ং দারুইয়াস লজ্জা পায়। যখন এঞ্জেলিনা জোলি কে হত্যা করতে যায়……, সেই কথা না বলাই ভালো, শুধু বলা যায় ১৮+ ।
যাইহোক, এতসব সঙ্কীর্ণতা পেরিয়ে আর কাউকে হত্যা করা হয়নি। তাকে ভূতমহলের সবাই কুফা দারুইয়াস নামে চিনতো। এই বদনাম ঘুচাতে দারুইয়াস ডিসিশন নিলো যে বাংলাদেশ নামের উন্নয়নশীল, হতদরিদ্র আর মনতান্ত্রিক দেশে যাবে। লোকমুখে শোনা যায়, সেখানেই বটতলা, হিজলতলা, গুলিস্তান কিংবা প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের আশেপাশে তার স্বপ্নের সেই পেত্নীর দেখা মিলতে পারে। তাছারা বিশাল জনসংখ্যার সেই দেশে একজন মানুষ খুন করা কোন ব্যাপার না, সেখানে নাকি যাদের জনগনের রক্ষক বলে তারাই নাকি ঘুষ খেয়ে জনগনের জান নিয়ে খেলে। ব্যাপক মজার দেশ। দারুইয়াস ভাবলো একঢিলে দুই পাখি মারবে, পেত্নিও খুজবে আর খুনও করবে। দারুইয়াস নতুন একটা প্লান করলো, সে মানুষের বেশে যেয়ে খুন করবে। সুতরাং যেই কথা সেই কাজ। তল্পিতল্পা সহ রওনা দিলো বাংলাদেশের রাজধানীর উদ্দেশ্যে।
প্রথম বিপত্তি ঘটলো বর্ডার পেরিয়ে আসার সময়। বি এস এফ নামের কি এক বাহিনী শুরু করে গুলি বর্ষণ। কোনমতে হাফ ছেরে একটা ট্রাকের ভেতরে ঢুকে পরে। মানুষের বেশে আসায় বড্ড তেষ্টা পেয়েছে ততক্ষনে। ট্রাকের ভেতরে বোতল দেখে ঢক ঢক করে গিলে ফেলে কয়েক বোতল। কিন্তু বেচারা দারুইয়াস কি জানতো সেই ট্রাকে ছিল পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে আসা ফেনসিডিল! লাইফে ফার্স্ট ইঞ্চি খেয়ে দারুইয়াস পুরা পিনিকে দিলো ঘুম। ভোরের দিকে ঘুম ভেঙ্গে ট্রাক থেকে বেরিয়ে এসে দেখে সে গুলিস্তানের জিরো পয়েন্টে। খুশিতে ডগমগ হয়ে সে যখন রাস্তা পার হতে গেলো দেখে পুরা শরীরে গিটে গিটে, জোড়ায় জোড়ায় ব্যাথা। হতভাগা দারুইয়াস কি জানতো যে বাংলাদেশের সড়ক যোগাযোগ ব্যাবস্থ্যা এতখানি পঙ্গু!
পুরাই শকিং মুডে মাজারের পাশেই কোন এক হোটেলে যেয়ে কলিজাভুনা আর গরম পরোটার অর্ডার দিয়ে আয়েশ করে বসে সে। মাছির ভনভন শব্দে কিছুটা বিরক্ত দারুইয়াস। কিছুক্ষন পরে একটা ছেলে কলিজাভুনা আর পরোটা দিয়ে যায়। সাথে দুইগ্লাস ফিল্টার পানি, যারমধ্যে দুই আঙ্গুল ডুবিয়ে রেখেছে ছেলেটা। কি আর করার সব কিছু মানিয়ে নিতে হবে ভেবে শুরু করলো খাওয়া। কিন্তু এইদেশের কলিজাভুনার সাথে তেলাপোকা ভুনা ফ্রি মিক্স করে সেইটা দারুইয়াস ভাবতেই পারেনি। খাওয়া শেষে বিল দিতে যেয়ে বিপত্তি। কোন ব্যাটা পকেটমার যেন দারুইয়াসের এক্সচেঞ্জ করা সব টাকা ওয়ালেট সহ মেরে দিয়েছে। কি আর করার, এই অচেনা অজানা দেশে কি আর নিজের পরিচয় দেবে? চুপচাপ ছোটখাট একটা গনধোলাই হজম করে নিলো। শেষে তুলে দেয়া হলো দারোগার হাতে। দারোগা অফার করলো ২০০ টাকা দিলে ছেরে দেবে, কিন্তু টাকা নাই বিধায় দুই দিনের জন্যে লকাপে খুনি গালকাটা মজিদের সাথে রাখা হলো তাকে। ভূত দারুইয়াসের থেকে এই মজিদের রেকর্ড ভালো, নয়টা খুন করেছে অলরেডি। থানা হাজতের টয়লেটের গন্ধে পারলে পেটের নাড়ি ভুড়ি বেরিয়ে আসে। ঠিক দুইদিন পরে হাল্কা উত্তম মধ্যম দিয়ে তাকে ছেরে দেয়া হলো।
ঢাকা শহরের ট্রাফিক জ্যামে অনেক মূল্যবান সময় নষ্ট হয় দারুইয়াসের। যোগাযোগ মন্ত্রিকে অভিসম্পাত করে বেরিয়ে পরে মিশনে। দারুইয়াস শুনেছে যুদ্ধাপরাধ নিয়ে এই দেশে একটা তুরকুলাম কান্ড চলতেছে। তাই সিদ্ধান্ত নিলো একটা যুদ্ধাপরাধীকে হত্যা করে হাতেখড়ি দেবে সে, এতে এই দেশের কিছুটা উপকার হবে তারও কাজ হয়ে যাবে। একজন যুদ্ধাপরাধীকে টার্গেট করে ফেললো সে, নাম দেলোয়ার হোসেন চাকডি। যেই ভাবা সেই কাজ, গভীর রাতে পৌঁছে গেলো চাকডি সাহেবের বাসায়। বেডরুমে ঢুকে দারুইয়াসের চোখ কপালে! চাকডি সাহেব তার বিবি সাহেবানের সাথে সাম্বা ড্যান্সে মশগুল। সম্মোহনী শক্তি দিয়ে ভূত তাকে সেখান থেকে বের করে আনলো। তারপরে নিজের সেই রক্তমাখা ভয়ংকর রূপে ফিরলো। গা ছমছম অবস্থা। নিকষ কালো অন্ধকার। একটি আলপিন পরার শব্দও চমকে দেবে। ভয়ানক গলায় দারুইয়াস সুধাইলো, “ চাকডি! আমি তোর জম হয়ে এসেছি, এই আমাবস্যায় তোকে খুন করে আমি আমার দুর্নাম ঘুচাব, মু হা হা”; দারুইয়াসের এই হুমকিতে চাকডি সাহেবের কোন ভাবান্তর হলো না। বরং উনি তিনবার মাওলানা মিজামির নাম নিয়ে ওয়াজ শুরু করে দিলেন। ওয়াজের আলোচ্য বিষয় দুনিয়াতে মানুষ আর জ্বীন ব্যাতিত অন্যকোন জাতি নাই। ওয়াজ করতে করতে ফজরের ওয়াক্ত হয়ে গেলো। দারুইয়াসের যাওয়ার সময় হয়ে গেছে, কারন ফজরের ওয়াক্তের পরে তার মানুষ রূপে আসতে হবে। সুতরাং সেদিনের মিশন ফেইল।
পরদিন ভেবেচিন্তে দারুইয়াস ঠিক করলো রাষ্ট্রপতি হিল্লুর রহমানকে হত্যা করবে, বেচারা উইদাউট ওয়াইফ কষ্টে আছে। তাছারা ওনার বয়স হয়েছে, তাকে হত্যা করলে এই দেশে ইয়ং কোন নেতৃত্ব আসবে। সুতরাং রাতে দারুইয়াস চলে গেলো রাষ্ট্রপতি ভবনে হিল্লুর রহমানকে খুন করতে। কিন্তু সেখানে যেয়ে ভূতবাবাজী পুরাই বেকুব হয়ে গেলো। ভেবেছিল রাষ্ট্রপতিকে সামান্য ভয় দেখালে হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যাবে কিন্তু রাষ্ট্রপতি ১০০০ মিলিগ্রামের ঘুমের ট্যাবলেট খেয়ে অস্থির এক ঘুম দিয়েছে। বুঝতে বাকি রইলো না এদেশের রাষ্ট্রপতিরা নাক ডেকে ঘুমায় আর প্রধানমন্ত্রী তার চ্যালাপেলা মন্ত্রী মহোদয়দের নিয়ে দেশ চালায়। কি আর করার ঘুমন্ত মানুষকে হত্যা করা কাপুরুষের কাজ যা দারুইয়াসের দ্বারা সম্ভব না, সুতরাং মিশন ফেইল এগেইন।
তৃতীয়দিন দারুইয়াস ঠিক করলো বিরোধী দলের প্রধান মাজেদা মিয়ার বড় ছেলে বারেক মিয়াকে খুন করবে, পরে খোঁজ খবর নিয়ে দেখলো মেরুদন্ডহীন বারেক মিয়া উচ্চতর চিকিৎসা নেয়ার জন্য বাইরে ডিগ্রি নিতে গেছে। কি আর করা, ছোট ছেলে গোঁগোঁর দিকে নজর দিলো দারুইয়াস। এই রাতই হবে শেষ রাত গোঁগোঁর জীবনে। নিজের ভয়ানক রূপে গোঁগোঁর ঘরে ঢুকতেই হুইস্কির গন্ধ আর নিজের চেয়েও ভয়ানক গোঁগোঁর চেহারা দেখে পারলে ভীমরি খায় দারুইয়াস। বেচারা ভূত এতটাই ভরকে গেছে যে নিজের অস্তিত্ব ভুলে গোঁগোঁর সামনে যেয়ে বলে ফেললো, “ অভয় দিলে একটা কথা বলি বস, আমি আপনাকে খুন করতে এসেছে, অনুমতি দিলে…… তাছারা শুভ কাজে দেরী করতে নেই।“ গোঁগোঁ হুমায়ুন ফরিদী হাসি দিয়ে বললো,” সে পরে হবে, আগে দুই পেগ খেয়ে নাও।“ যাইহোক, হুইস্কির নেশায় পরে সেদিনের মিশনে ক্ষ্যান্ত দিলো দারুইয়াস।
দারুইয়াস দেখতে পেলো পত্রিকায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি নাকি রাকিব আল হাসান আর তানিন ইকবাল নামের দুইজন দেশবরেণ্য ক্রিকেটারকে পদচ্যুত করেছে। সোজা চলে গেলো সভাপতির অফিসে। সভাপতি সাহেব তখন ঘুষের টাকা গুনায় ব্যাস্ত। দারুইয়াস যতই বলে যে সে জান নিতে এসেছে সভাপতি যেন কানেই তুলে না কথা। শেষে সভাপতি বিরক্ত হয়ে একটা জার্সি ধরিয়ে দিয়ে বললো , “সবই আমার কথা মত হবে, আগামিকালের ম্যাচে তুমি মাঠে নামবা, যাও অনুশীলন করো।“
দারুইয়াস বুঝতে পারলো এই দেশের রাজনীতিবিদেরা এককাঠি সরেস। সুতরাং এবার তার চোখ পরলো মিডিয়া আর সংস্কৃতিক অঙ্গনের দিকে, প্রথমে প্রথমকালোর বরুন চৌধুরীর সামনে যেয়ে নিজেই লজ্জা পেয়ে গেলো। বেচারা এই বয়সে ফিটার খায়! কি অবস্থা! হতাশ না হয়ে সেদিনই চলে গেলো নায়িকা মুনসুনের বাড়িতে। বাড়িতে একাই ছিলো মুনসুন। এটাই মোক্ষম সুযোগ। বাথরুমের বাথটাবে পানিতে চুবিয়ে মারা হবে তাকে। নিজের গায়ে কারওয়ান বাজার থেকে গরুর রক্ত মেখে হাজির হলো মুনসুনের বেডরুমে। কারওয়ান রাজার থেকে রক্ত মাখতে যেয়ে কুত্তাদের সাথে যে যুদ্ধ করতে হয়েছে সেই কথা নাইবা বললাম। যাইহোক, বীভৎসত চেহারা নিয়ে মুনসুনের সামনে দাড়াতেই মুনসুন ফিট হয়ে বিছানায় পরে গেলো। দারুইয়াস ভাবলো এটাই সুযোগ, এবার ওকে বাথটাবে নিয়ে চুবিয়ে মারতে পারলেই কেল্লা ফতে। কিন্তু দারুইয়াসের কপাল বরাবরের মত তার বিরুদ্ধে। সারারাত চেষ্টা করেও বেচারা ভূত নায়িকা মুনসুনের ৩০০ টনের ভারী দেহ বাথটাব পর্যন্ত নিতে পারেনি।
এবার সে ঠিক করলো হিজড়া খ্যাত নায়ক ফাকিব খানের জান নিবে। রাতের বেলায় সকলের চোখে ফাঁকি দিয়ে ঢুকে পরলো হার্টথ্রব ফাকিব খানের বাংলোতে। বেডরুমে ঢুকেই দুই হাতে নিজের চোখ ঢেকে ফেললো দারুইয়াস। ফাকিব খান মেয়েদের গাউন পড়ে শুয়ে আছে। ঠোঁটের লিপস্টিক মুছতেও ভুলে গেছে। ভূত যখন পায়ে সুরসুরি দিয়ে ফাকিব খানকে জাগাতে চেষ্টা করলো তখন তিনি ঘুমের চোখে বলে উঠলেন সেই বিখ্যাত শব্দ, “আরাআআআমমম” ; যাইহোক অনেক কষ্টে জাগানো হলো তাকে। তারপরে কি হলো সেটাও কি আমাকে বলতে হবে? শুধু এতটুকই বলি, ফাকিব খান ভূত দারুইয়াসকে নিয়ে সাড়ে চার মিনিটের একটা ডুয়েট গান গেয়েছিল। সেখানে নায়িকা পুপু বিশ্বাসের সাথে যেসব অবিশ্বাসের দৃশ্য থাকে সেসব ছিল। ভূত কোনমতে নিজের জান নিয়ে বেঁচেছে সে যাত্রায়।
এরই মধ্যে দারুইয়াস জানতে পারে যে দেশে লাফালাফি করে রক গান গায় এক গায়িকা যার নাম শিলা, পুরা জাতি তার উপরে বিলা। দারুইয়াস রাতে চুপিচুপি যুয়াদ এর মিউজিক ল্যাবে যেয়ে হাজির। সেখানে যুয়াদ ফিট শিলার নতুন এ্যালবামের কাজ চলছিল। ঢোকার আগে বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন করে দিলো দারুইয়াস। ভেতর থেকে শিলার চিল্লাচিল্লি শোনা যাচ্ছিল। সুযোগ বুঝে শিলার পাশে যেয়ে দাঁড়ায় ভূত। তারপরে………… শিলা ভুতকে এমন টিজ করছে যে এঞ্জেলিনা জোলিও হার মানতে বাধ্য, এতখানি ডোজ এঞ্জেলিনাও দিবার পারে নাইক্কা।
পুরানা পল্টনের কোন এক ক্যাসেটের দোকানে ন্যাকা নির্দয় খান নামের এক গায়কের গান বাজতেছিল আর আশেপাশের পাবলিক ও মাছিরা তাকে অভিসম্পাত করছিল। মাছিদের অভিযোগ নির্দয় খান কপিরাইট আঈন ভেঙ্গে তাদের ভনভন গান নকল করেছে। দারুইয়াস এবার হাজির নির্দয় খানের বাসায়। কিন্তু সেখানে যেয়ে পুরাই টাশকিত দারুইয়াস। কোথায় নির্দয় খান? এখানে তো শুধু একটা বানর দেখা যাচ্ছে। বানর হত্যা করে লাভ নেই, তাই সেদিনও ফিরে গেলো দারুইয়াস।
এবার লাস্ট ট্রাই। এইবার কিছু একটা করবেই দারুইয়াস। এবারের টার্গেট দেশের সবথেকে বোরিং সিঙ্গার রিপা রহমান। বেডরুমে ঢুকে দারুইয়াস দেখলো রিপা ভাবি তার শাড়ি একটার পর একটা চেঞ্জ করতেছে আর আহফুজ আঙ্কেল নাক ডেকে ঘুমাইতেছে। এবার সব থেকে ভয়ানক বেশ ধারন করলো দারুইয়াস। শিশুপার্কের সামনে থেকে একটা ছুরি কিনেছে সে। সোজা যেয়ে ছুরি মারলো আহফুজ আঙ্কেলের ভুড়িতে। ভাগ্যের বিরম্বনা ছুরি গেলো ভেঙ্গে। হাতল উল্টিয়ে দেখে সেখানে লেখা মেড ইন চায়না। এবার ভাবলো রিপা রহমানকে সিলিং ফ্যানের সাথে শাড়িতে ঝুলিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে মারবে। কিন্তু দারুইয়াসের কপালে কি সেই সুখ আছে? রিপা ভাবি দারুইয়াসকে পেয়ে বলল, “আহফুজ আমার গান শুনেনা, খালি নাক ডেকে ঘুমায়, আজকে তোমাকে পেয়েছি চান্দু।“ আর পালায় কোথায়? রিপা ভাবির সবগুলা এ্যালবামের গান রিপিড শুনতে শুনতে আর শাড়ির বাহার দেখতে দেখতে এবার দারুইয়াস অজ্ঞান হয়ে পরে গেলো।
জ্ঞান ফিরতেই দেখলো তাকে জেল হাজতে এনে রাখা হয়েছে। সবথেকে ভয়ানক ব্যাপার হলো তাকে যে কয়েদীর সাথে রাখা হয়েছে তার নাম পরিমল!!! পরিমল সম্পর্কে ইতিমধ্যে জেনেছে ভয়ঙ্কর সব তথ্য। আজকাল পরিমলের নজর নাকি কয়েদীদের দিকে পরেছে! এর আগে যে কয়েদীকে পরিমলের সাথে রাখা হয়েছিল দুইদিন আগে আহত এবং আশঙ্খাজনক অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে। যাইহোক পুনরায় দুইদিন পরিমল আর হাবিলদারদের অত্যাচার ভোগ করে বাংলাদেশ ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিলো ভূত দারুইয়াস।
আসার সময়ের বর্ডারের বিরম্বনার কথা চিন্তা করে এমিরেটস এয়ারের টিকিট বুক করলো সে। বিমানবন্দর থেকে ইমিগ্রেশনে যখন ঘুষ দাবী করা হলো তখন দারুইয়াসের আর বুঝতে বাকি রইলো না যে এই দেশ গোঁড়া থেকে আগা পর্যন্ত এক অদ্ভুত সিস্টেমে চলে যা ভূতের জ্ঞানের বাইরে আর এই দেশের প্রতিটি মানুষ ভূত থেকেও বেশী অদ্ভুত। ভরাক্রান্ত মন নিয়ে সে ত্যাগ করলো তার সকল আশাভরসা আর বাংলাদেশ।