২০১১ সালের কথা। সারাদিন অফিস শেষ করে রাতে ঘরে ফিরে আর রান্না করার মত এনার্জি থাকতোনা, এজন্য রিক্সায় ওঠার আগেই কাজিপাড়াস্থ দোকানে থেকে পিৎজা নিয়ে ফিরতাম ঘরে।
সেদিনও যথারীতি পিৎজা নিয়ে ফিরলাম। একটা জরুরী এসাইনমেন্ট রেডি করে শুতে যাবার আগে খাওয়ার কথা মনে পড়লো।
টেবিলে গিয়ে পিৎজার প্যাকেটটা খুলতেই বেকুব হয়ে গেলাম, প্যাকেটে পিৎজা নেই। কী আর করা! ভাবলাম নিশ্চয় দোকানি পিৎজা না দিয়েই প্যাকেট আটকে দিয়েছে।
রাত প্রায় দুইটা বাজে, ঘুমাতে গেলাম চরম ক্লান্তি নিয়ে।
শোয়া মাত্রই মধ্যেই ঘুমিয়ে গেছি। তার কিছুক্ষন পর আমার ঘুম হাল্কা হয়ে গেল প্লেট আর চামচের শব্দে, ঘুম ভেঙ্গে প্রথমে আঁচ করতে পারছিলামনা শব্দটা কোনদিক থেকে আসছে।
আমি শোয়া থেকে উঠে বসতে উদ্যাত হতেই ডাইনিং থেকে চাপা হাসির শব্দ ভেসে আসলো।
আমি তখন কিছুটা ভয় পেয়ে গেলাম।
আমি আরো মনযোগ দিয়ে শোনার চেষ্টা করলাম, আমি স্পষ্টই শুনতে পেলাম আমার ফিল্টার থেকে পানি গ্লাসে ঢালছে, ঢকঢক করে তা খাচ্ছে, চাপা হাসিও হাসছে।
আমি গা ঝেড়ে উঠে দাড়ালাম সাহস করে, বেডরুমের টিউব লাইট জ্বালিয়ে ডাইনিং এর লাইট জ্বালালাম। দেখলাম আধা খাওয়া পিৎজা এলোমেলো পড়ে আছে টেবিলে, গ্লাসে অর্ধেক পানি,
ফিল্টার থেকে একগ্লাস সমান পানি নামালে যেমন দাগ হয়ে থাকে পানির ঠিক তেমনই আছে,
ফিল্টারের বাকি পানিটুকু দুলছে।
আমি দৌড়ে বেডরুমে ফিরে সারারাত বসে বই পড়ে পার করেছিলাম।
আজও সে রাত আমার কাছে জীবনের রহস্যময় রাত হয়ে আছে।