ট্রেনে তো কত জনাই চড়েন। চড়তে ভালোবাসেন। ঝিক ঝিক করে চলতে থাকা ট্রেনগুলোর দিকে দূর থেকে তাকিয়ে থাকতেও অদ্ভুত সুন্দর লাগে। কিন্তু সেই ট্রেনটা যদি হয় ভূতুড়ে ট্রেন? সত্যিই এমন কিছু ট্রেন রয়েছে যাদের নামের সাথে ভূতুড়ে তকমাটি বেশ ভালো করেই সেঁটে গিয়েছে। ভাবছেন, কী এমন কারণ আছে এই ট্রেনগুলোর এমন হবার পেছনে? কারণ নিশ্চয়ই আছে। আর এরকমই কিছু ভূতের কারণে ভূতুড়ে হয়ে ইতিহাসের রেললাইনে বছরের পর বছর ধরে চলতে থাকা কিছু ট্রেনের কথাই বলা হল আজ, যাদের রহস্য আজো রয়েছে অমীমাংসিত!
১. সেইন্ট লুইসের ভূতুড়ে ট্রেন
কানাডার সাসকাচেওয়ানের সেইন্ট লুইস গ্রামের পাশের পরিত্যাক্ত এক রেললাইন সেটা। ত্রিশ বছরের বেশি সময় ধরে বন্ধ আছে সেখানে রেল চলাচল। শুধু তাই নয়। উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে রেললাইনের পাতও। তবুও প্রতিরাতেই ওখানে হঠাৎ করে একটা বড় আলোকে আসতে দেখা যায়। যার পাশে আসতে থাকে আরেকটা ছোট্ট লাল আলো। গ্রামের মানুষদের মুখে প্রচলিত আছে একবার এক মানুষ ট্রেনটির নীচে চাপা পড়ে মারা যায়। আর তারপর থেকেই এরকমটা চলে আসছে। বড় আলোটাকে তারা মনে করে ট্রেনের আলো। আর লালটা সেই মানুষটার হাতের প্রদীপের। মাঝে কিছু সাহসী ছাত্র এই রহস্যের সমাধান করতে চাইলেও এখনো অব্দি আসল ঘটনা জানা যায়নি ভূতুড়ে ট্রেনের। একনো প্রতি রাতে রেললাইন ছাড়াই ট্রেন এসে দেখা দিয়ে যায় সেইন্ট লুইস গ্রামে।
২. সিলভারপাইলেন
সুইডেনের এই ভূতুড়ে ট্রেনটির জন্ম হয় ১৯৯৬ সালে। তবে তখন এখনকার মতন ভূতের দুর্নাম ছিলনা তার। কেবল পরীক্ষামূলকভাবে চালানোর জন্যে চালু করা হয় এটাকে। তবে সেটুকুই যথেষ্ট ছিল। এরপর থেকে ভূতের ট্রেন নামে পরিচিত হয় এটি। হুটহাট যে কোন স্টেশনে এসে উঁকি মারে মাঝে মাঝেই ট্রেনটি। সবাইকে সাবধান করা হয় সুইডেনের রেলস্টেশনে কখনো সিলভারপাইলেন বা সিলভার অ্যারোউ নামের কোন ট্রেন সামনে এলে সেটাতে যেন কেউ না চড়ে। অন্যথায় সেই ট্রেনের শেষ স্টেশন কিমিলিঙ্গে পর্যন্ত যেতে যেতে যাত্রীর মৃত্যু অবধারিত।
৩. আমেরিকার ভূতুড়ে ট্রেন
আমেরিকার এই ট্রেনটিকে প্রায় স্প্রিংফিল্ড আর ওয়াশিংটনের মাঝটাতে যাতায়াত করতে দেখা যায়। লিংকনের মৃত্যুবার্ষিকীতে তো এটার আসা চাইই চাই। ট্রেনটি আসলেই চারপাশের আবহাওয়া শীতল আর ভারী হয়ে যায়। ওয়াশিংটন থেকে লিংকনের পতাকা মোড়া লাশ নিয়ে ভূতুড়ে সৈন্যেদেরকে উঠতে দেখা যায় ট্রেনে। তবে সেই ট্রেন কখনোই স্প্রিংফিল্ডের রেলস্টেশনে গিয়ে পৌঁছায়না।
৪. আয়ারল্যান্ডের ভূতুড়ে ট্রেন
১৯২৪ সালের কথা সেটা। দুজন মানুষ আরমাঘের উত্তর থেকে দক্ষিনে যাওয়ার রেললাইনের ওপরে বসে অপেক্ষা করছিল ট্রেনের জন্যে। হঠাত্ তারা ট্রেন আসতে শোনে। একটা ঘর থেকে মানুষের আর্তনাদও শুনতে পায়। গিয়ে দেখে তারা। কিন্তু কোন মানুষ ছিল না সেখানে। কেবল তাই নয়, একটু পর যখন একটা ট্রেন শব্দ করতে করতে তাদের পাশ দিয়ে চলে যায় তখনো কোন ট্রেনকে দেখতে পায়নি তারা। পরবর্তীতে তারা জানতে পারে যে ওখানে অনেকদিন আগে এক মানুষ ট্রেনের আঘাতে মারা পড়েছিল। তাও আবার আর্তনাদ ভেসে আসতে থাকা ঐ ঘরেই মৃত্যু হয়েছিল তার।