সেই ভূতূড়ে বাস

সেই ভূতূড়ে বাস

সেই ভূতূড়ে বাস

অর্নাসে ৩য় থেকে ৪র্থ বর্ষে উঠার পরীক্ষা হয়ে গেলো। লম্বা ছুটি পেলাম। সবাই বাড়িতে যাবে।
অামিও বা বাদ থাকি কি জন্য।
পরীক্ষা শেষের দিনই রাত ৮টার বাসে রওনা হবো বলে ঠিক করলাম।
অামার সাথে ছিল অামার দুই বন্ধু রাজু ও রবিন। অার অামার নাম হাসান।
অামাদের বাড়ি পাশাপাশি।
অামরা বাসস্ট্যান্ডে গেলাম। গিয়ে দেখলাম পুরো বাসস্ট্যান্ড ফাকা।
রাজু তখন বলল, অাজ তো শনিবার।
সব বন্ধ। অামাদের বোধহয় কালকের টিকেট দিয়েছে।
কথা শেষ হতে না হতেই একটা বাস অাসল।
অার বাসের ড্রাইভার বললো, সিরাজগঞ্জের উদ্দেশ্য যাবেন অাপনারা???
অামি বললাম, হ্যা, কিন্তু অাজ বোধহয় কোন বাস নেই।
ড্রাইভার বললো, না, এটাই তো সেই বাস, যে বাসের তোমরা টিকেট কেটেছো।
তারপর অামরা খুশিতে অাত্তহারা হয়ে গেলাম।
অামরা তিন বন্ধু বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্য বাসে উঠলাম।
কিন্তু বাসে অামরা তিনজন ছাড়া অন্যকোন যাত্রীকে দেখতে পেলাম না।
অামরা ভাবলাম হয়তো পরের বাসস্ট্যন্ডে উঠবে।
অামরা কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম টেরই পাইনি।
হঠাৎ অামাদের ঘুম ভাঙল।
তারপর দেখলাম বাসের প্রতিটা সিটে যাত্রীরা ঘুমিয়ে অাসে। অামাদের ভয় একটু কমলো।
কিন্তু হঠাৎ যাত্রীরা জেগে উঠলো। অার সবাই দাড়িয়ে পড়ল।
অামরা ওদের চেহারা দেখে ভয় পেয়ে গেলাম।
সাদা ফ্যাকাসে চেহারা,
মানুষ মরে গেলে যেমন দেখা যায় অার রক্তাক্ত চোখ অার ভয়ংকর দৃষ্টিতে অামাদের দিকে তাকিয়ে হাসছে।
তখন অামাদের কেমন লাগছে বুঝতেই পারছেন। তারপর যা হলো তা অামাদের ভাবনার বাইরে।
বাসের ড্রাইভার তার দুই হাত অনেক লম্বা করে ফেলছে।
কি ভয়ংকর হাত। দেখে মনে হলো হাতে চামড়া না থাকলে যেমন মাংস, হাড্ডি দেখা যায় ঠিক সেরকম।
এদিকে বাস চলছেই, কোনরকম থামার নাম নেই।
হাত ধীরে ধীরে অামাদের দিকে এগিয়ে অাসছে।
অামরা তিনজন তখন কি করব বুঝতে পারছিলাম না।
ঠিক তখন মনে হলো মেসের বড় ভাই অামাকে জমজম পানি দিয়েছিল, সেটা ব্যাগেই অাছে।
যদি কাজ হয়,
কারন জমজম পানি তো পবিত্র।
তারপর ব্যাগ থেকে জমজম পানির বোতল বের করে পানি ছুড়ে মারলাম ভূতগুলোর দিকে।
তারপর একধাপে সবাই উধাও হয়ে গেল
অার বাসও থেমে গেল।
অামরা তারাতারি করে বাস থেকে নেমে পড়লাম।
তারপর বাস থেকে নেমে দেখলাম,
নামার পরেই দেখলাম, বাসটা অার নেই,
উধাও হয়ে গেছে।
দুরে একটা ঘরে অালো জলছে।
তারপর অামরা সেখানে গেলাম। দেখলাম এটা একটা হোটেল।
হোটেলের নাম দেখলাম, নামের সাথে এ্যালেঙা লেখা।
তার মানে অামরা বুঝলাম,
ঢাকার মধ্যেই অাছি অামরা।
কিন্তু সবাইতো ঘুমিয়ে।
তারপর অনেক বার ডাকলাম।
ডাক শুনে একজন বৃদ্ধ বেরিয়ে এলো। তারপর এক রাতের জন্য একটা রুম চাইলাম।
বৃদ্ধটা জিজ্ঞেস করল, এত রাতে কোথা থেকে অাসলে???
তারপর রবিন বললো, কাকা, অামরা বিপদে পড়েছি।
তারপর রাজু বললো, অাগে ভেতরে ঢুকতে দিন।
তারপর ভেতরে গেলাম অামরা।
বৃদ্ধকে সব খুলে বললাম।
তারপর বৃদ্ধটা বললো, তোমরা অায়াতুল কূরসী জানো???
অামি বললাম, হ্যা কাকা, কিন্তু কিভাবে এর ব্যবহার তা জানি না।
তারপর বৃদ্ধ কাকা অায়াতূল কূরসী পড়ে অামাদের তিনজনের শরীর বন্ধ করে দিল।
তারপর অামাদের একটা রুম দিল।
অামরা তারাতারি শুয়ে পড়লাম। রবিন বললো, হয়তো, জমজম পানি অার আল্লাহর রহমতে অাজ ঐ ভূতূরে বাস থেকে বেচে গেছি।
রাজু বললো, অাসলেই তাই।
অামরা ঘুমিয়ে পড়লাম।
সকাল হলো,
অামরা নাস্তা করলাম। তারপর বৃদ্ধ কাকাকে ধন্যবাদ দিয়ে অামরা অারেকটা বাসে বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা হলাম।
তবে এ বাস ভূতূরে নয়।
অনেক যাত্রী উঠেছে বাসে অামাদের সাথেই।
প্রায় চারঘন্টা পর অামরা বাড়ি পৌছালাম।
অামরা জীবনে ভূলব না,
সেই ভূতূড়ে বাসের ভয়ানক মূহুর্ত।

গল্পের বিষয়:
ভৌতিক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত