…আমার খুব কাছের বন্ধু নয়ন। আমি barisal এ গেলেই ওর সাথে প্রচুর আড্ডা দিতাম।
ও একটা মেয়েকে প্রচুর ভালোবাসতো কিন্তু মেয়েটা ওকে পাত্তা দিতো না। এটা নিয়ে নয়নের দুঃখের শেষ নাই।ও প্রায় মনমরা হয়ে থাকতো।
অনেক সান্ত্বনা দিয়েছি কোনো কাজ হল না। ২০১০ সালের মাঝামাঝি আমি barisal থেকে ফিরছিলাম, নয়ন আমার কাছ থেকে ৩০০০টাকা ধার নিল।
আমি ঢাকাতে আসলাম। নয়ন প্রায় ফোন দিয়ে কাদঁতো। আমি ওকে কি বলে সান্ত্বনা দিবো ভেবে পেতাম না।
কয়েক মাস পরে শুনলাম নয়ন যাকে ভালোবাসতো মেয়েটার বিয়ে হয়ে গেছে।নয়ন সেদিন ফোন দিয়ে অনেক কেদেঁছিলো।
আমি কিছুদিন পর barisal রওয়ানা দিলাম। আমার barisal পৌছাতে প্রায় রাত ১ টা বেজে গেলো।
আমি বাস থেকে নামতেই দেখি নয়ন দাড়িয়ে আছে। আমি অবাক হয়ে বললাম তুই এখানে।
ও হাসলো আর বলল তোর সাথে দেখা করতে এসেছি, আমি বললাম আমি আসবো এই কথা আমিতো কারো সামনে বলিনি তুই জানলি কিভাবে?
ও বলল তোর সাথে আমার মনের টান আছেতো তাই আমি জেনে গেছি। আমি বললাম শালা আসছো বোতল কিনতে আর বলো মনের টান।
….
নয়ন অনেক হাসলো অনেকদিন পর ওর মুখে হাসি দেখে আমিও খুশি হলাম। নয়ন বললো তুই আজ আমার বাসায় থাকবি।
আমি রাজি হয়ে গেলাম। খালাকে ফোন দিয়ে বলে দিলাম রাতে আসবো না। একটা রিক্সা নিলাম নয়নরা ছোট বনগ্রাম এলাকায় থাকে।
রাস্তায় নয়ন অনেক ফাজলামী করলো আমার সাথে আজ ও অনেক খুশি আর কোনোদিন ওই মেয়েকে মনে করে কষ্ট পাবে না নয়ন বলল।
আমিও ওকে বাহাবা দিলাম।ওর বাসার গলির মাথায় এসে রিক্সা ছেড়ে দিলাম।
২ মিনিটের হাটা পথ।নয়ন রিক্সা থেকে নেমে আমার হাতে ১২০০০ হাজার টাকা দিয়ে বললো
–এইনে তোর কাছ থেকে আজ পর্যন্ত যতটাকা ধার নিয়েছি সব দিয়ে দিলাম আর আমাকে ছ্যাঁচড়া বলবি না।
–আমি অবাক হয়ে বললাম কি হইসে তোর? গাজা খাইসোস নাকি?
–ও হেসে বললো নারে দোস্ত, বলে হাসলো তারপর আমাকে জড়িয়ে ধরে কাদতে লাগলো আর বললো আমাকে মাফ করে দিস।
–আমি বললাম হইসে।
….
ও হঠাৎ বললো তুই বাসায় যা আমি সিগারেট নিয়ে আসতাসি।আমি ওর বাসার দিকে এগুতে থাকলাম।
বাসার গেটের সামনে যেতেই দেখলাম ওর বাসার ভিতর মানুষের ভীড়।ভীড় ঠেলে সামনে যেতেই আমি পাথর হয়ে গেলাম।
আমার সামনে কাফনে জড়ানো নয়নের লাশ।নয়ন আজ রাতে গলায় ফাসি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
আমি ওদের বাসা থেকে দৌড়ে বের হয়ে গেলাম সোজা চলে গেলাম মনু মামার দোকানে।কারন এতোরাতে উনার দোকান খোলা থাকে।
–আমি মনু মামাকে বললাম নয়ন আসছিলো।
–উনি বললেন এইমাত্র নয়ন এসেছিলো কিছু বাকি ছিল সেটা শোধ করেছে আর এক প্যাকেট সিগারেট নিয়ে গেসে আর এই প্রথম নগদ টাকা দিলো।
–আমি মনু মামাকে বললাম নয়ন মারা গেছে।মামা blieve করতে চাইলো না। আমি বললাম গেলেই দেখতে পাবেন।
উনি তারাতারি আমার সাথে নয়নের বাসায় গেলেন যেয়ে উনি নয়নের লাশ দেখে উনি মাথা ঘুরে পড়ে গেলেন।
এই ঘটনার পর মনু মামা ২মাস পাগল হয়ে গেছিলো।
আর আমি নয়নকে মাটি দেবার পর বাসায় এসে আমার ট্রাভেল ব্যাগ খুলে দেখি এক প্যাকেট সিগারেট।
আর ওর দেয়া টাকা গুলো আমি মসজিদে দিয়ে দেই।