গলা কাটা লাশ রহস্য

গলা কাটা লাশ রহস্য

অফিস থেকে বাসায় ফিরতে ফিরতে আজ একটু বেশিই দেরী হয়ে গেছে৷ রাস্তা টাও বেশ ফাঁকা। কিছুটা ভয় ও লাগছিলো। হঠাৎ লক্ষ করলাম রাস্তার পাশে একটা জঙ্গলে বেশ কিছু লোক ভীড় করে দাঁড়িয়ে আছে। কিছুটা কৌতূহল নিয়েই চুপিচুপি দেখতে লাগলাম লোক গুলো কী করছিলো।
দেখলাম লোকগুলো একটা বড় আকারের ব্যাগ মাটিতে গর্ত করে পুঁতে রাখছে। আমি বেশ অবাক হয়ে কৌতুহল বসতই আড়াল থেকে তাদের ব্যাগটা মাটিতে পুতে রাখার দৃশ্য দেখলাম। তারা ব্যাগটি মাটিতে পুতার পর আশেপাশে কেউ তাদের দেখছে কিনা তা পরীক্ষা করে একটি গাড়িতে উঠে চলে গেলো। আমার মনে লোভ জেগে উঠেছিলো। আমার মনে হচ্ছিলো এটি একটি ডাকাতের দল আর এরা মনে হয় কোন গুপ্তধন বা অনেক টাকা এই বাক্সে লুকিয়ে রেখেছে। আমি কিছুটা ভয় আর অনেকটা কৌতুহল নিয়েই যেখানে ব্যাগটা পুতে রাখা হয়েছে সেখানে গেলাম। সেখানে গিয়ে দেখলাম লোকগুলো কোদাল ঐখানেই ফেলে চলে গেছে। তো আমি সাহস করে কোদাল দিয়েই সেই গর্ত খুরে বাক্সটা বের করলাম। বুঝতে পারলাম এর ওজন অনেক। তাই বাক্সটা জঙ্গলের আরো ভেতরে নিয়ে গেলাম। তারপর ভয়ে ভয়ে বাক্সটা খুলতে লাগলাম। আমার মনে যতই ভয় থাকুক আমি কিছুক্ষনের জন্যও ব্যাগটাতে টাকা ছারা অন্য কিছু থাকতে পারে এটা চিন্তা করতে পারছিলাম না। তো অবশেষে ব্যাগটা খুললামই। ব্যাগটা খুলে যা দেখলাম তা দেখার জন্য আমি প্রায় অপ্রস্তুতই ছিলাম। ব্যাগটার ভেতর একটা গলাকাটা লাশ। আমি এটা দেখে ছিটকে দুরে পরে যাই। লাশটার মাথা তার গলা থেকে পুরো আলাদা করা হয়েছিলো। বাক্সে শুধু গলাকাটা লাশটাই ছিলো কোন মাথা ছিলো না। ভয়ে আমার পুরো শরীর কাঁপতে শুরু করে। কপাল বেয়ে ঘাম পরতে থাকে। আমি ভাবলাম এই লাশটার সাথে যদি কেউ আমাকে দেখে তাহলেতো আমাকেই খুনি ভাববে। তাই বাক্সটা ঐখানে ঐভাবেই ফেলে রেখে আমি ছুটে বাড়ির পথে রওনা দিলাম। বাসায় যাওয়ার পরেও সেই গলাকাটা লাশের চেহারা কিছুতেই মাথা থেকে যাচ্ছিলো না। পুরো ফ্লাট বাড়িতে আমি একাই ছিলাম। আমার স্ত্রী তার বাবার বাড়িতে আর মা নানা বাসায়। ঘরে প্রবেশের পর ফ্রেস হতে ওয়াশরুমে ডুকলাম। গোসল করার মাঝখানেই হঠাত করে ঘরের সব লাইট একটু জ্বলে নিভে বন্ধ হয়ে গেলো। ভাবলাম হয়তো বিদ্যুত চলে গেছে। তবে আমি স্পষ্ট ফ্যানঘুরার শব্দ পাচ্ছিলাম। তারাতারী গোসল শেষ করে আমি ওয়াসরুম থেকে বের হয়ে মোমবাতি খুজতে গেলাম। হঠাত ঘরের সব লাইট আবার জ্বলে উঠলো । এর কারন কিছুই বুঝতে পারলাম না। হঠাত আমার চোখ গেলো আমার ঘরের খাটে। যা দেখলাম, সেই বাক্স যেটা আমি জঙ্গলের মধ্যে ফেলে এসেছিলাম ঠিক সেই ব্যাগটাই আমার বিছানার উপর পড়ে আছে। ভয়ে আমার গলা শুকিয়ে গেলো। ভাবতে লাগলাম এই ব্যাগটা এখানে আসলো কিভাবে এটাতো আমি জঙ্গলে ফেলে এসেছিলাম। কাছে গিয়ে ব্যাগের ভেতর সেই গলাকাটা লাশটাই আবার দেখে আরো বেশি ভয় পেয়ে গেলাম। কিছুতেই বুঝতে পারছিলাম না এসব কি হচ্ছে কেনো হচ্ছে, এর থেকে মুক্তী পাবো কিভাবে! একা একটা ঘর শুধূ আমি আর একটা গলাকাটা লাশ। একবার ভাবলাম মা বা স্ত্রীকে কল দিয়ে এটা জানাবো পরে ভাবলাম শুধু শুধু ভয় পাবে টেনশন করবে। কিন্তু এমন একটা লাশ নিয়ে আমিই বা কি করবো! সারারাত লাশটার পাশেই নির্ঘুম ভাবে কেটে চায়। মনের ভেতর এক অজানা আতংক যদি হঠাত কেউ ঘরে চলে আসে আর এই লাশটা দেখতে পায় তাহলে আমি কি বলবো। আর আমি যদি বলি এটা অদ্ভুত ভাবে আমার ঘরে চলে এসেছে কেই বা আমার কথা বিশ্বাস করবে। শেষ রাতে কিছুক্ষনের জন্য চোখটা লেগে গিয়েছিলো। রাত শেষে সকালের দেখা মিললো। তবে পাশে হঠাত তাকিয়ে দেখি সেই বাক্স বা লাশ কোনটাই নেই। তাহলে কি সারারাত আমি যা দেখলাম সেটা আমার মনের ভয় ছিলো। ভাবলাম হয়তো লাশটা নিয়ে এতোটা চিন্তা করছিলাম বলে আমার কল্পনায় চলে এসেছিলো রাতে। এখন সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যাবে। সেইদিন আবার অফিসের কাজ শেষে রাতে বাড়ি ফিরছিলাম। পথে আবার সেই গর্ত আর জঙ্গলের দিকে চোখ গেলো। সেই গর্তটা দেখে আবার গাঁ শিহরে উঠলো। তারাতারি বাড়িতে ফিরে আসলাম। রোজকারমত বাড়িতে ফিরে ওয়াশরুমে ডুকলাম। ঠিক গতদিনের মত একই কান্ড ঘটলো হঠাত লাইট নিভে গেলো। এবার আরো বেশি ভয় নিয়ে ওয়াশরুম থেকে বের হই। বের হয়ে যা দেখলাম। সেই বাক্সটা আবার আমার বিছানার উপর। সেই একই লাশ। এইবার বাক্স আর লাশটাকে অনেক ভালোভাবে দেখলাম। নাহ! এতো কিছুতেই আমার চোখের ভুল হতে পারে না। কিন্তু এইসব অলৌকিকতার মানে কি! আমিতো এই লাশের ব্যাক্তিটাকে চিনিও না। আমার কি অপরাদ ছিলো! বাক্সটা খোলা! ভাবতে ভাবতে মাথা পুরো খারাপ হয়ে গেলো। আমার সাথে এমন ঘটনা ঘটছিলো যাহ আমি কারো সাথে শেয়ারও করতে পারছিলাম না। হয়তো সবাই আমাকে পাগল ভাববে। তবে এই লাশের রহস্য আমাকে বের করতেই হবে। জানতাম ভোরের সূর্য দেখা দেওয়ার সাথে সাথে লাশটা আবার উদাও হয়ে যাবে। এই রহস্য সমাধানের জন্য আমার কাছে একটাই রাস্তা ছিলো। সেটা হলো যারা এই গলাকাটা লাশ ওয়ালা বাক্সটা গর্ত করে পুতে রেখেছিলো তাদেরকে খুজে বের করা। কারন একমাত্র তারাই জানে এই গলাকাটা লাশটা কার আর কেনোই বা এটি আমার পিছু নিয়ে আমার বাড়ি পর্যন্ত পৌছেছে। সকল রহস্যের সমাধান তাদের কাছেই . . 

সকল রহস্যের সমাধান একমাত্র তাদের কাছেই আছে। কিন্তু তাদের আমি কিভাবে খুজে পাবো তা জানা নেই। ভাবলাম আজ সারাদিন অফিসে যাবো না সেই লোকগুলোকেই খুজবো। টানা ৩ দিন অফিস না গিয়ে জঙ্গলে এর আশেপাশের এলকা সবখানেই খুজেছি তাদের কোথাও পাই নি। রোজ রাতে আমার সাথে সেই একই ঘটনা ঘটে। একটু রাত নামলেই সেই ব্যাগ আর গলাকাটা লাশটাকে দেখতে পাই বিছানায়। ভোরের রোদ পড়ার সাথে সাথে আবার বিছানা থেকে উদাও হয়ে যায়। এই রহস্যের সমাধান আমি কিছুতেই করতে পারছিলাম না। এদিকে আমার স্ত্রী আর মায়েরো বাসায় আসার সময় হয়ে গেছে। তারা যদি এই ঘটনা দেখে তাহলে হয়তো আরো বেশি ভয় পেয়ে যাবে। একবার ভাবলাম ফ্লাটটাই পাল্টে ফেলবো। তবে এর আগেই হঠাত আমার স্ত্রীর কল মোবাইলে। ফোন ধরে আতকে উঠলাম যা ভয় করছিলাম তাই হলো। আমার স্ত্রী স্টেশনে চলে এসেছে তাকে সেখান থেকে বাসায় আনার জন্য কল দিয়েছে সে। কিন্তু রাতে যে আমাদের ঘরে গলাকাটা লাশ দেখা যায় তা যদি ও দেখে তা ভেবে আরো ভয় পেতে লাগলাম। কিন্তু আমার কাছে আর অন্য কোন রাস্তাও ছিলো না। স্ত্রীকে আনতে ষ্টেশনের উদ্দ্যেশে বের হয়ে গেলাম। স্টেশনে পৌছে দেখলাম আমার স্ত্রী এরই মধ্যে স্টেশনে আমার জন্য অপেক্ষা করছে। তার সাথে কথা বলে তার সাথে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। রিক্সাতেই ছিলাম। কিছুটা যাওয়ার পর চায়ের দোকানে একটা লোককে দেখে বেশ পরিচিত মনে হচ্ছিলো। হঠাত মনে পরলো আরে এই লোকটাকে তো আমি সেইদিন জঙ্গলে গর্ত করতে দেখেছিলাম। তার মানে এরাইতো সেই গলাকাটা লাশটাকে ব্যাগে করে গর্ত করে রেখেছিলো। এর কাছেইতো সকল রহস্যের সমাধান রয়েছে। স্ত্রীকে বাড়িতে পাঠিয়ে। দৌড়ে সেই লোকটার কাছে গেলাম লোকটাতো আমাকে চিনতো না। লোকটাকে অনেক অনূরোধ করলাম আমার সাথে একটু কথা বলতে কিন্তু লোকটা আমার কথা শুনতে নারাজ। অবশেষে কোন উপায় না দেখে বাধ্য হয়েই বলে বসলাম “সেইদিন আপনাদেরকে জঙ্গলে ব্যাগটা মাটিতে পুতে রাখতে আমি দেখেছিলাম।” লোকটা আমার কথা শুনে আতকে উঠলো। লোকটার চোখে মুখে শুধু ভয়। লোকটা আমাকে অন্যদিকে নিয়ে প্রশ্ন করলো “তাহলে কি আপনিই কি সেই ব্যাগটা পরে খুলেছিলেন।” আমিও অবাক ভাবে উত্তর দিলাম হ্যা। লোকটা আমার দিকে রাগান্বীত দৃষ্টিতে বলল ” মুর্খ বোকা তূই, তুই সেদিন কোন ব্যাগ খুলিশ নি খুলেছিস তোর কবর। এই অভিশপ্ত আত্মা থেকে এখন তোকে কেউ বাঁচাতে পারবে না।” তার কথা শুনে আমি আরো বেশি ভয় পেয়ে গেলাম। অনুনয় করে তাকে বললাম যে কোন একটা রাস্তা আমাকে দেখান এটা আমার স্বাভাবিক জীবনকে নষ্ট করে দিয়েছে। লোকটা আমার কথা শুনে বলল ” চল আমাদের গুরুর কাছে। ” আমি আর কিছু না ভেবে লোকটাকে অনুসরন করতে লাগলাম। লোকটা আমাকে একটা আশ্রমে নিয়ে গেলো। আশ্রমে কিছুক্ষন অপেক্ষা করার পর সেই সব লোকগুলোকে দেখতে পেলাম যারা সেইদিন জঙ্গলে ঐ গলাকাটা লাশওয়ালা ব্যাগটাকে পুতে রেখেছিলো। কিছুক্ষন পরে একজন বয়স্ক লোক আসলো। আমাকে দেখে বলে উঠলো:
-তাহলে তুই ই সেই নির্বোধ। কিন্তু তুই এই ব্যাগটা খুললি কেন?
আমি তাকে আমার লোভ আর সমস্ত ঘটনা বললাম। তিনি বললো:
-ঐ আত্মা তোকে আর শান্তিতে থাকতে দিবে না। এটি একটি অভিশপ্ত আত্মা।
অনেক বছর আগে একটা ছেলে ছিলো। জন্মের পর তার মা মারা যায়। সতমায়ের সাথেই থাকতো সে। তার মা তাকে অনেক অত্যাচার করতো। তার সত ভাইও তাকে অত্যাচার করতো। তার নিজের বাবাও তাকে বিশ্বাস করতো না। সে নিজের জীবনকে অনেক ঘৃণা করতো। একদিন রেগে গিয়ে তার বাবা সত মা সত ভাই সবাইকে একসাথে হত্যা করে ফেলে ছুরি দিয়ে। তারপর তাদের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। তবে কিছুদিন পর সে তার ভুল বুঝতে পারে। কিন্তু তার ভুল শুধরানোর কোন উপায়ই ছিলো না কারন সে তার পরিবারের সবাইকেই হত্যা করে ফেলেছিলো। তাই পাশের একটা রেল স্টেশনের রেল লাইনের নিচে মাথা দিয়ে আত্মহত্যা করে। তার মাথা গলা থেকে আলাদা হয়ে যায়। তবে তার পরিবারের লোকগুলোর আত্মারা তাকে অভিশাপ দেয় অভিশপ্ত আত্মা হওয়ার জন্য। তারপর তারা সেই লাশটাকে একটা ব্যাগে রেখে লোকচলাচলের জায়গায় ফেলে রাখে। তারপর থেকে তার হত্যাকান্ড শুরু হয়। এই পর্যন্ত প্রায় ৬ টা পরিবারকে ধ্বংস করেছে। তোমার পরিবারকেও ধ্বংশ করে দিবে।
আমি তার কথা শুনে আরো ভয় পেয়ে গেলাম। তার কাছে জানতে চাইলাম এর তো কোন একটা সমাধান হবেই। আর আপনারাই বা এই ব্যাগ পেলেন কোথায়। লোকটা যা বলল:-
-আমাদের আশ্রম এই আত্মাদের নিয়েই কাজ করে। আমরা এই আত্মার কথা জেনে এর বিনাসের জন্য অনেক চেষ্টা করেছি তবে আমরা এতে ব্যার্থ। এই আত্মার মুক্তির জন্য এর মাথাটাকে খুজে বের করতে হবে। তবে এটা এতোটা সহজ না। এটা আত্মাদের দুনিয়ায় রাখা আছে। সেখানে অনেকগুলো শরীর ছাড়া মাথা রাখা আছে। তাদের মধ্যে মাত্র একটা এই আত্মার। তবে এটা চেনার কোন উপায় নি কারন আমরা কেউ ই জানি না এই গলাকাটা লাশটার আসল চেহারা কেমন। আমি আমার কিছু শিষ্যকে আত্মাদের দুনিয়ায় পাঠিয়েছিলাম এই মাথাটা ফিরিয়ে আনার জন্য। কিন্তু তারা কেউ আর ফিরে আসেনি। কারন সেখানে কোন ভুল মাথাকেই ছূলে সে হয়ে যায় আত্মাদের দুনিয়ার গোলাম। তারপর ব্যার্থ হয়ে আমরা এই ব্যাগটাকে মন্ত্র বলে ডেকে জঙ্গলে পুতে রাখার সিদ্ধান্ত নেই। কিন্তু তুমিই সব নষ্ট করে দিলে। আবার আত্মাটা জেগে উঠবে আর তোমার পরিবারকে ধ্বংশ করে দিবে।
আমি বললাম
– না এটা হতে পারে না। আমি এই আত্মাদের দুনিয়ায় যাবো। আমি মাথা নিয়ে আসবো। আমি মুক্ত করবো আত্মাটাকে।
-এতে তোমার না ফিরে আসার সম্ভাবনাই বেশি।

আমার মাথায় আর কিছু আসছিলো না। আমাকে যেতেই হবে আত্মাদের দুনিয়ায় বাঁচতেই হবে এই গলাকাটা লাশ আর ব্যাগ থেকে। তাদেরকে অনেক অনুরোধ করে রাজি করালাম। অবশেষে সব মন্ত্র পড়া শেষে সেই বৃদ্ধ লোকটি আমাকে একটা গর্ত দেখিয়ে সেটাতে লাফ দিতে বলল এবং অনেক দিক দিয়ে সাবধান থাকতে বললো। আমারো অনেক ভয় করছিলো তবে কিছূই করার ছিলো না। আমার কাছে একটাই রাস্তা খোলা ছিলো। অবশেষে আত্মাদের দুনিয়ায় প্রবেশ করলাম। এতোটা ভয়ংকরো দুনিয়া থাকতে পারে আমার জানা ছিলো না। চারিদিকে অনেক রকম আত্মা ছিলো। কারো বা চোখ নেই কারো বা হাত নেই, কারো মাথা নেই। চারিদিকে রক্তের সাগর। অবশেষে সেই জায়গায় পৌছালাম যেখানে অনেকগুলো মাথা রাখা আছে শরীরছারা । ভয়ে আমার শরীর ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছিলো। সবগুলো মাথা থেকেই টপটপ রক্ত ঝরছিলো। সবগুলো মাথা দেখলাম সব গুলো অনেকটা একই রকম আলাদা কোন চিহ্ন নেই। আমি চিন্তায় পরে যাই। কোন মাথাটা ধরবো। যদি ভুল মাথা হয় তবে মৃত্যু অবধারিত। আর বেশি কিছু না ভেবে একটা মাথা ধরতে যাবো এমন সময় একটা জিনিস স্মরনে এলো। আমি যে গলাকাটা লাশটা দেখেছিলাম তার গলায় একটা অসমাপ্ত দাগ ছিলো। হয়তো জন্মগত দাগ। ভাবলাম তাহলেতো এই দাগের শেষ মাথাটা এই মাথাগুলোর মধ্যে একটায় থাকবে। সাহস করে সবগুলো মাথায় খুজতে লাগলাম দাগটা। অবশেষে হতাশা কাটিয়ে একটা মাথা পেলাম যেটাতে এই দাগটা ছিলো। সাহস করে মাথাটা ধরলাম। তারপর হঠাতই সেই জায়গা থেকে উদাও হয়ে গেলাম এসে পরলাম গুরুজীর আশ্রমে তারপর সবাই আমাকে দেখে অনেক খুশী হয়েছিলো। পরমুহুর্তেই তারা মন্ত্র উচ্চারনের মাধ্যমে সেই ব্যাগটাকে সেখানে আনলো। তবে এইবার এই গলাকাটা লাশওয়ালা ব্যাগটা দেখে এতোটাও ভয় করছে না। তারা আমাকে বললো মাথাটা ব্যাগে রাখতে। এবার কিছুটা ভয়ে ভয়ে মাথাটা নিয়ে ব্যাগে রাখলাম। ব্যাগে রাখার পরেই গুরুজী একটু পড়া পানি ছিটিয়ে দিলেন। পরেই হঠাত বিকট আকারের একটা চিতকার শুনতে পেলাম। হঠাত ব্যাগটাতে আগুন ধরে ব্যাগটা অদৃশ্য হয়ে গেলো। আশ্রমের সবাই আমাকে কৃতজ্ঞতা জানালো এবং বললো আজকের পর আর এই ব্যাগ কারো সামনে যাবে না কোন পরিবারকে ধ্বংস করতে পারবে না। তাদের বিদায় দিয়ে বাড়িতে পৌছালাম। পৌছতে পৌছতে রাত হয়ে গেলো। ঘরে ডুকে দেখি মা আর স্ত্রী রান্নাঘরে রান্না করছে। বেডরুমে ডুকে বিছানায় আর কোন ব্যাগ দেখতে পেলাম না। আজ হয়তো নিশ্চিন্তে শান্তিতে একটা ঘুম দিতে পারবো। তবে হয়তো এর পরে জঙ্গলে কোন ব্যাগ পরে থাকলে আমি আর খুলবো না।

*সমাপ্ত*
[গল্পটা এখানেই সমাপ্ত। গল্পটা কাল্পনিক।

গল্পের বিষয়:
ভৌতিক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত