এতরাতে একটা মেয়েকে পুরুষ হোস্টেলে ছাঁদে দেখে চমকে যায় আনান,চমকালোরই কথা এতরাতে ছাঁদের এক কোনায় কেন একটা মেয়ে দাড়িয়ে থাকবে?এই পশ্নটা খটকা দিচ্ছে শুধু আনান এর মনে, কিছুক্ষণ একদৃষ্টিতে মেয়েটির দিকে তাকিয়ে রইল আনান,সে তো প্রতিদিনিই রাতে ঘুমোনোর আগে ছাঁদে আসে কিন্তু আজ এমন কেন হলো, কেনো একটা মেয়ে কে সে পুরুষ হোস্টেলের ছাদে দেখছে, আনান সাহস করে সামনে গিয়ে জিজ্ঞেস করে
– কে ওখানে, কে আপনি? এত রাতে এখানে কি করছেন?
প্রথমে তার প্রশ্নে কোনো জবাব এলো না প্লেস ব্যাগ : আনান এক কলেজের হোস্টেলের থাকে,তার বাবা মা ও তার ছোট বোন একই এলাকায় বাসা ভাড়ায় থাকে, আনান এবার এইচ এস সি দেওয়ার কথা কিন্তু এক বিশেষ ঘটনার কারনে সে স্মৃতি শক্তি হারায়, সে স্মৃতি শক্তি হারানোর কারণ আজও জানতে পারেনি তার পরিবার ও আনান নিজেই, স্মৃতি শক্তি হারানোর ফলে সে তার বাবা মা পরিবার কে চিনতে পারলেও চিনতে পারে নি তার মোবাইলে থাকা কালো মেয়ে টি কে। একটা কালো মেয়ের সাথে তোলা তার এত ছবি তার মোবাইলে, কিন্তু এই মেয়েটার সর্ম্পকে আনান তার পরিবার কে জিজ্ঞেস করলে তারা এ সর্ম্পকে কিছুই জানে না বলত,তারা ভাবত হয়তো মেয়ে টির জন্যই আনানের এমন দশা,তাই তারা আনানের স্মৃতি শক্তি হারানোর পর তাকে নতুন করে জীবন শুরু করার জন্য এই হোস্টেলে ডুকিয়ে দেয়,সে হোস্টেলে আছে আজ পর্যন্ত ৪ মাস হলো সে প্রতিদিন রাতে ঘুমোনোর আগে হোস্টেলের ছাঁদে যায় আর আজ সে ছাঁদে এসে দেখে এক মেয়ে কে, প্রথমে তার প্রশ্নের কেনো উত্তর এলো না,
-হ্যালো,,কে আপনি??(আনান) তখনি সেই মেয়েটি কন্ঠে তোলে জবাবের
– আমি মিথিলা, চিনতে পেরেছো আমায়?
-কোন মিথিলা? আর আপনাকে চিনবো কি ভাবে আপনি তো আমার উল্টো দিকে তাকিয়ে আছে? এত রাতে আপনি এখানে কেন? মেয়েটি তখনই কাঁদো কাঁদো গলায় বলল
-কি আমাকে ভুলে গেলে, ও যে মানুষ চলে যায় তাকে কি কেউ মনে রাখে?
-আপনি কি বলছেন আমি কিছুই বুঝতে পারছি না,আর আমি কেন আপনাকে ভুল যাব?
-দেখতে চাও আমাকে? ভয় পাবেনাতো?
– কেন ভয় পাবো,এদিকে তাকান
মেয়টি তখনি তার মুখটি আনানের দিকে গোরালো,কালো চমড়ার মানুষটির মুখের মাংস পেশি গুলো যেন পঁচে গলে ঝলছে, আনানের তখনই ঠান্ডা হতে লাগাল হাত পা,স্তব্দের মতো তাকিয়ে রইল মেয়টির দিকে,
-এবার চিনতে পেরেছো আমায়?(মেয়েটি)
আনান এতক্ষণে মনে পরল, তার মেবাইলে থাকা কালো মেয়টির ছবি, হ্যা এইতো সেই মেয়েটি কিন্তু মেয়েটা কে? কেন তার মোবাইলে মেয়েটির ছবি?আর কেনই বা মেয়েটি ভয়ংকর আকৃতির চেহারা নিয়ে তার সামনে দাড়িয়ে আছে?
-মনে করার চেষ্টা কর আনান,আমিই তোমার মিথিলা, মনে পরছে না তোমার?তোমার স্মৃতি শক্তি হারিয়ে যাওয়ার রহস্য তোমার মধ্যে লুকিয়ে আছে।আনো তোমার স্মৃতি গুলো। (মেয়েটি) তখনই হঠাৎ আনান এক পাগলের মতো ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদতে শুরু করল,
-হ্যা, মিথিলা, তুমিই, কি হয়ে ছিল আমার? কোথায় চলে গিয়েছিলে তুমি?
-মনে করার চেষ্টা করো আনান, মনে আছে তুমি আর আমি একসাথে কলেজে পরতাম, মনে আছ? আমি কালো মেয়ে বলে সবাই আমাকে কতো অবহেলা করত,আর আমি আমি ছাঁদের এক কোনায় বসে কাঁদতাম, ছিল না কোনো বন্ধু ছিল না কেনো প্রিয়জন, তখনই তোমার সাথে দেখা হয়, তুমি আমাকে ছাঁদে কাঁদতে দেখে আমার কাছে ছুটে আসো, আমার কষ্ট গুলো কে নিজের মাঝে ভাগ করে নাও,
-হ্যা.. হ্যা.. মনে পরছে, তারপর… তারপর কি হলো বলো…থামালে কেন?
-কলেজে আস্তে আস্তে তুমি আমার প্রিয় জন হয়ে উঠলে,তোমার শত বন্ধু র মাঝে তুমি আমাকে দেখলে আমার কাছে ছুটে আসতে একটা ছবি তোলার জন্য,আমাকে একটু হাসানোর জন্য,প্রতিদিন ছাঁদে আমি আর তুমি আড্ডা দিতাম,কিন্তু একদিন…
– কি হয়ে ছিলএকদিন? বলো…
– শম্মী নামে একটা মেয়ে যে তোমাকে অনেক পছন্দ করতো,কিন্তু তার খারাপ আচরনের জন্য তুমি তাকে পছন্দ করতে না,সে মেয়েটি তোমার কাছ থেকে আমাকে সরানোর জন্য আমাকে বোকা বানিয়ে নেশাগ্রস্ত দব্য খাইয়ে দেয়, তার পর আমাকে কলেজের ছাঁদে তুলে বলে,আমি যদি তোমাকে সত্যি কারের ভালোবাসি তাহলে ছাঁদ থেকে লাফ দিতে, কিছু না বুঝেই নেসার কবলে পড়ে আত্নহত্যা করে পেলি, এবার মনে পরছে তোমার স্মৃতি শক্তি হারিয়ে যাওয়ার কারন? আনান কথা গুলো শুনে জোরে জোরে কন্না করতে থাকে.আর ফুপিয়ে ফুপিয়ে বলে.
-কলেজে এসে ভিড়ের মাঝে তোমার রক্ত মাখানো দেহ সহ্য করতে পারি নি, নিজের মানসিক ভারসাম্য হারাই তোমার কাছে ফিরে যেতে আত্মহত্য পথ খুজে বের করে ও পারি নি, বাবা মা আমাকে আমাকে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচাতে ম্যানটেল হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে,আমার স্মৃতি শক্তি কেড়ে নেয়, কিন্তু তুমি আমার সপ্ন আমার স্মৃতি ফিরিয়ে দিয়ে ছো আমি আসছি তোমার কাছে,
তা বলে আনান ছাঁদ থেকে লাপ দিতে চায়,আর তখনি তারহাত ধরে তাকে টেনে আনে তার কয়েকজন হোস্টেলের সহপাঠি,তৎক্ষনাৎ আনান অবচেতন তা বলে আনান ছাঁদ থেকে লাপ দিতে চায়,আর তখনি তারহাত ধরে তাকে টেনে আনে তার কয়েকজন হোস্টেলের সহপাঠি,তৎক্ষনাৎ আনান অবচেতন হয়ে যায়, আনানকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর পর তার সহপাঠীরা ডাক্তার কে বলে,ছাঁদে তারা কারো কান্নার শব্দ শুনে ছাঁদে এসে দেখে আনান একা একা কথা বলে ছাঁদে দাড়িয়ে কান্না করছে, তার তারা আনান কে ছাঁদে লাফ দিতে দেখে তাকে ধরে ফেলে,
হাসপাতালের সেই ডাক্তার আনানের পিতা মাতাকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস আনানের পিতা মাতা বুঝতে পারে,আনানের পূর্বের স্মৃতি মনে পরে গেছে, তাই সে ডাক্তার আগের সব কথা কথা বলে, এর পর হাসপাতালের ডাক্তার আগের ম্যানটেন হাসপাতালের ডাক্তারের সাথে, তিনি বলেন, আনান কে বাঁচিয়ে রাখতে হলে আগের মতো অপারেশন করে তার স্মৃতি শক্তি গুলো ভুলিয়ে দিতে হবে,তাই তিনি আগের মতো আবার আনানের স্মৃতি শক্তি কেড়ে নেয়,আস্তে আস্তে আনান সব কিছু ভুলে নতুন ভাবে জীবন শুরু করতে লাগল, হয়তো আবারো কোনো একরাতে মিথিলা অশরীরী হয়ে ফিরে আসবে আনানের কাছে,ফিরিয়ে দিবে তার পূর্বের স্মৃতি গুলো।