অশরীরিণী

অশরীরিণী

মানুষের মুখ ঠিক যেন খবরের কাগজের হেডলাইন। দেখার মতাে চোখ থাকলে ঠিক পড়ে নেওয়া যায় সে সব খবর। এই যেমন অরুণের মুখ দেখে আমার মনে হল। হ্যারিকেনের নরম আলােয় ওর চোখ-মুখ দেখেই আন্দাজ করলাম ওর পেশেন্টের অবস্থা ভালাে নয়। পেশেন্টের বাড়ির লােকেরা ওকে পথ দেখিয়ে নিয়ে আসছে গাড়িতে তুলে দেওয়ার জন্য। গ্রামের পথ ঘাট সন্ধে হতেই শুনশান। তায় আবার ঘাের বর্ষা। এ গ্রামটার নাম চাপারুই। হাওড়া-বর্ধমান মেইন লাইনে খন্যান স্টেশনে নেমে যেতে হয়। অরুণ অবশ্য তার গাড়িতেই গেছিল। শহরের ব্যস্ত ডাক্তার হলে কী। হয়, সাধ্যে কুলােলে এমন সব গাঁ-গঞ্জে রােগী দেখতে যেতে সে কখনও দু’বার ভাবে না। ও মুখে বলে, তবু তাে রাতের পথে একটু গাড়ি চালানাের সুযােগ পাই। আসলে অরুণকে তাে আমি জানি।

রােগীর সেবা করতে পেলে ও বর্তে যায়। তা আজ অবশ্য সে সুযােগটা আমি পাচ্ছি। অরুণের মারুতি এস্টিমের স্টিয়ারিং-এ আমাকে জোর করে ওই বসিয়েছে। ওর ড্রাইভারকে ছুটি দেওয়ার পরপরই ‘ক’টা আসাতে ও আমাকে ফোন করে। তারপর জানায়, কাল হঠাৎই হাতে চোট পাওয়ায় সে আজ গাড়ি চালাতে অপারগ। তাই আমিই যদি আমি গাড়ি চালাতে ভালােই পারি। তবে আমার গাড়ি হল লঝঝড়ে মার্কা একটি অ্যাম্বাসাডার। যার হর্ন ছাড়া আর সবকিছুই বাজে। তবু সেটা হল আমার নিজের গাড়ি। আর এটা বন্ধুর। তাও আবার মহা মূল্যবান। যাই হােক, অরুণের সঙ্গের লােভে আমি আর না করিনি। কলকাতা থেকে। সােজা চলে এসেছি এই ষাট কিলােমিটার দূরে। চাপারুই গ্রামে অবশ্য বিদ্যুৎ আছে। তবে ঝড় উঠলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়।

আজও তেমনই হয়েছে। সন্ধে থেকেই ঠান্ডা ঝােড়াে হাওয়া আর বিদ্যুৎ-এর ঝলকানির মধ্যে বেশ একটা যুগলবন্দী চলছিল। এখানে পৌছবার আগেই জোরে ঝড় উঠেছিল। তারই নীটফল চাপারুই- এর ঘন অন্ধকার পথ এবং সামনে ঐ হ্যারিকেন হাতে রােগীর বাড়ির লােকজন। অরুণ গাড়িতে এসে বসতেই সবাই ওকে নমস্কার করল। রােগীর অবস্থার ইতর বিশেষ হলেই তারা যে ওকে জানাবে সে কথা হতেই অরুণ ইশারায় আমাকে গাড়ি ছাড়ার নির্দেশ দিল। গাড়ি ছাড়তে না ছাড়তেই চড়বড়িয়ে বৃষ্টি এল। গাড়ির ঝকঝকে সাদা আলাের সামনে শুরু হল বৃষ্টির উদ্দাম নাচ। একটু পরেই গ্রাম থেকে গাড়ি বড় রাস্তা মানে জি টি রােডে এসে পড়ল। অরুণের দিকে একবার আড়চোখে চাইলাম। দেখলাম ও নরম সিটে একেবারে গা এলিয়ে বসে আছে। অন্য সময় ও কত হাসি-তামাশা করে, অজস্র কথা বলে যায় কিন্তু আজ ওর মুড দেখছি সত্যিই খুব খারাপ। কেমন দেখলি পেশেন্টকে?

একটা সিগারেট ধরিয়ে অরুণ উত্তর দিল, ক্লিনিকালি ভালাে। একটা মাইল্ড অ্যাটাক হয়ে গেছে। ওষুধ দিয়ে দিয়েছি। এ ওষুধে কাজ অবশ্যই হয়, তবু আমি অবাক হয়ে বললাম, তবু মানে? পেশেন্টের অবস্থা ভালাে হওয়া সত্ত্বেও তাের মুখে ঐ আষাঢ়ে মেঘ? নাঃ, তােকে নিয়ে আর পারা গেল না। রােগী নিয়ে তুই বড্ড বেশি ভাবিস। চল ফেরার পথে আজ দিল্লি রােডের জোড়া হােটেলে রুটি আর চিকেন-তড়কা খাই। অরুণ মাথা নাড়ল। বলল, না রে—তুই বরং খা। আমার ইচ্ছে করছে না একদম। আসলে মাঝবয়সি একটা লােক তার সাজানাে সংসার ফেলে হুট বলতে চলে যাবে এ বড় দুঃখের। আমি ডাক্তার হলেও আমার এসব দুঃখ-টুঃখ বােধ এখনও রয়ে গেছে। কিন্তু অরুণ, তাের কথাটা আমি ঠিক বুঝলাম না। একবার বলছিস রােগী ভালাে আছে। অথচ বলছিস চলে যাবে। এটা কি একটা ধোঁয়াশা মার্কা ব্যাপার নয় ?

অরুণ কী একটা বলল, আমার কানে গেল না। কেননা চারদিক কাপিয়ে ভয়ংকর গতিতে তখন একটা মেল ট্রেন বেরিয়ে যাচ্ছে। আমরা ততক্ষণে মগরা লেভেল ক্রসিং-এর সামনে পৌছেছি। ট্রেনটা চলে যেতেই আবার বৃষ্টির নূপুর শােনা গেল গাড়ির ছাদের ওপর। গাড়ির গতি কমিয়ে দিয়েছি। অরুণ বলল, চালাতে অসুবিধে হলে কোথাও দাঁড়িয়ে যা। এমন দুর্যোগের রাত। পেশেন্টের বাড়ির লােকগুলােকে আবার দৌড়ঝাপ করতে হবে। আঃ কী যে করি! আমি গাড়িটা থামিয়েই দিলাম রাস্তার ধার করে। তারপর অরুণের কাধে হাত রেখে বললাম, ডাঃ দাস, প্লিজ এভাবে নিজেকে কষ্ট দেবেন না। আমি আপনার বন্ধু। আমি কি কোনও সাহায্যই আপনাকে করতে পারি না?

কথার মাঝে অরুণ এরকম হঠাৎ করে নাটকীয়তা খুব পছন্দ করে। তাই কথাটা এভাবে বললাম। ও আমার দিকে মাথাটা ঘুরিয়ে বলল, বলতেই তাে চাই রে কিন্তু এসব কথা উঠলে, তােরা আমাকে পাগল বলবি। হয়তাে বলবি, অরুণটার ডাক্তারি ছেড়ে দেওয়া উচিত। তবু বামা, আজ বােধহয় তােকে সব বলতেই হবে। বহু বছর ধরে একা বয়ে বেড়াচ্ছি এই আতঙ্ক। রােগী দেখতে গেলেই এ আতঙ্ক আমার নিত্য সঙ্গী। গাড়ির জানালাগুলাে খুলে দিলাম বােতাম টিপে। মুহুর্তে ঠান্ডা বাতাস লন্ডভন্ড করে দিয়ে গেল আমাদের। বাইরে বৃষ্টির শব্দের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তাইরে নাইরে না গাইছে ব্যাঙ আর ঝিঝির দল। থেকে থেকে আকাশ গম্ভীর স্বরে বলছে, উছ তাল মিলছে না যে।

বিদ্যুতের ঝলক অরুণের মুখে পড়তেই দেখলাম সে বিস্ফারিত চোখে তাকিয়ে আছে উইন্ডস্ক্রিনের দিকে। বুঝলাম ও খুব কষ্ট পাচ্ছে। হঠাৎই ও আমার হাতটা চেপে ধরে বলল, লােকটা মরবেই। পৃথিবীর কোনাে বদ্যি, কোনাে ধন্বন্তরি ওকে বাঁচাতে পারবে না। কেননা আজ পেশেন্টের ঘরে মিসেস চট্টরাজকে দেখলাম। এই বলে অরুণ চুপ করে গেল। এবার হতবাক হওয়ার পালা আমার। ঐ গ্রামে পেশেন্টের বাড়ি মিসেস চট্টরাজ নামে কে আসতে পারেন? আর যিনিই আসুন না কেন তিনি কেনই বা খামােকা সেই লােকটির মৃত্যুর কারণ হবেন? অরুণ বলল, মিসেস চট্টরাজের পুরাে নামটা ছিল মিসেস সুমিতা চট্টরাজ। ওঁর স্বামী ছিলেন সে আমলের দুদে আই. এ. এস. অফিসার, মিস্টার শােভন চট্টরাজ। সময়টা ছিল সেভেন্টি টু- এর ডিসেম্বর মাস। আমি তখন পিজি হাসপাতালে ইনটার্নি।

মিসেস চট্টরাজ ঐ হাসপাতালের উডবার্ন ওয়ার্ডে ছিলেন। ওঁর মাথায় একটা আন-আইডেন্টিফায়েড পেইন হত। সেটার ইনভেস্টিগেশনের জন্যই তিনি ভর্তি হয়েছিলেন ঐখানে। আর আমার ওপর ভার ছিল তার দেখাশােনা করার। তারপর? ভদ্রমহিলা বয়সে আমার দিদির মতােই ছিলেন। প্রথম দিন থেকেই ওঁর ব্যবহার আমাকে মুগ্ধ করত। তার কথাবার্তা এবং অপরূপ রূপরাশির কথা তখন চাউর হয়ে গেছিল হাসপাতালে। ভি. আই. পি.-র স্ত্রী বলে আমার ওপর নির্দেশ ছিল ডিউটির সময়টুকু যেন মুহূর্তের জন্যও ওঁর ঘরছাড়া না হই। দিনে আমি থাকতাম আর রাতে আর একজন। মিসেস চট্টরাজের মাথাব্যথা কি সব সময়েই হত? আমি জিগ্যেস করলাম অরুণকে।

হ্যা, ব্যথাটা ছিল চাদের বাড়া-কমার মতাে। তবে দিনের দিকে কম থাকত, রাতে বাড়ত। বেদনা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যন্ত্রণায় উনি পাগলের মতাে আচরণ করতেন। ওঁকে তখন ব্যথানাশক ও ঘুমপাড়ানি ইনজেকশন দিতে হত। একটা টেবিল ফ্যান রাখা থাকত ওঁর মাথার ঠিক পাশেই। সেটা অন করে দেওয়া হত এবং মাথায় হাত বুলিয়ে দেওয়া ছাড়া আমাদের আর করার কিছু ছিল না। তবে ব্যথাটা যখন কম থাকত উনি গল্প করতেন। ওঁর ছেলেবেলার কথা, বেড়াতে গেছেন যে সব জায়গায় সেইসব গল্প বলতে ভালােবাসতেন খুব। আর ভালােবাসতেন তাঁর পাঁচ বছরের মেয়ে মিনিকে। বিকেলে মেয়ে এলে ওঁর যন্ত্রণাকাতর মুখেও একটা অন্যরকম খুশির ছোঁওয়া থাকত। কথা বলার ফাকে অরুণ একটু থামতেই আমার হাতঘড়িটা শব্দ করে জানান দিল, ‘সময় চলিয়া যায়। আমি হাতঘড়ি দেখলাম রাত ন’টা। বৃষ্টি প্রায় ধরে এসেছে। বদলে যাচ্ছে আকাশের ছবি। মেঘেরা সব জল হয়ে ঝরে পড়তেই আকাশের দখল নিচ্ছে চাঁদ। এক ফ্যাকাশে সাদা আলােয় ধীরে ধীরে ঢেকে যাচ্ছিল চারপাশের চরাচর। অরুণ বলল, একটু আলাের দিকে গেলে হয় না? চারপাশের আঁধার যেন গলা টিপে ধরছে। আর একটু চা-ও খেতে হবে।

অগত্যা আবার গাড়ি ছাড়লাম। বৃষ্টির রাতে দোকানপাট সব বন্ধ। চায়ের খোঁজ করতে করতে এসে পড়লাম ব্যান্ডেলে। গরম চা পাওয়া গেল স্টেশনের বাইরেই। চায়ে চুমুক দিতেই অরুণের মােবাইল বাজল। ফোন করছে ওর স্ত্রী জনা। অরুণের মুখচ্ছবি আবার খবরের কাগজের হেডলাইন হতে থাকল। দু’চারটে হুঁ, হ্যা, আচ্ছা বলে ফোন ছেড়েই সে বলল, মিসেস চট্টরাজ ওঁর ডিউটি করে গেছেন। চাপারুইয়ের পেশেন্ট মারা গেছে। আমার মােবাইল রেঞ্জের বাইরে ছিল বলে খবরটা এতক্ষণ পাইনি। ওঃ কী ভয়ঙ্কর! এতগুলাে বছর পরও গাড়ি নিয়ে দিল্লি রােডে এসে পড়তেই অরুণ শুরু করল তার না-বলা কথা। একদিন সুমিতাদি আমাকে বলেছিলেন, জাননা অরুণ আমি বেশ বুঝতে পারি আমি আর বাঁচব না। আমাকে চলে যেতে হবে। কোথায় যাব বা কীভাবে যাব তা জানি না। কিন্তু সেই সঙ্গে ভাই, কিছু মনে করাে না, তােমাদের ওপর আমার খুব রাগ হচ্ছে। কেন তােমরা আমার ব্যথা সারিয়ে দিচ্ছ না! দরকার। হলে মাথাটা কেটে দ্যাখাে না! কিন্তু প্লিজ আমাকে বাঁচিয়ে দাও।

পৃথিবীতে সবাই থাকবে, কেন আমাকে চলে যেতে হবে? আমার কী মরার বয়স হয়েছে? এরপর অরুণ দম নেওয়ার জন্য একটু mথামল তারপর ধীরে-সুস্থে একটা সিগারেট ধরিয়ে বলল, আবার শরীর ভালাে থাকলে আমাকে তুই- তােকারিও করতেন। বলতেন, তােদের কাছে কত ঋণ রয়ে গেল। ভালাে হলে তােকে ভাইফোঁটায় নেমন্তন্ন করব, আর বড় বড় গলদার মালাইকারি খাওয়াব। কিন্তু মানুষের কোন ইচ্ছেই বা সব সময় পূরণ হচ্ছে? দিনটার কথা আজও স্পষ্ট মনে পড়ে। নাইনটিনথ জানুয়ারি, নাইন্টিন সেভেনটি থ্রি।

আমি বেলা দশটা নাগাদ ডিউটিতে জয়েন করতে যাচ্ছি ওঁর ঘরে। লম্বা করিডোরটার মােড় ঘুরতেই দেখি সিস্টার মালবিকা, খুব জোরে দৌড়ে আসছেন। আমায় দেখেই আর্তনাদ করে বললেন, শিগগির মিসেস চট্টরাজের ঘরে যান। তারপর? দৌড়েই ঢুকলাম ওঁর ঘরে। দেখলাম, শুয়েই আছেন। তাকিয়ে দেখছেন আমাকে। ওঁর চানের সময় বলে মাথার চুল খােলা ছিল। ওঁর চুল ছিল মেয়েদের কাছে ঈর্ষণীয়। মাঝে মাঝে বলতেন, অরুণ বল তাে ভাই, এত চুলের জন্যই কি আমার এত ব্যথা? যাই হােক ঘরে ঢুকে আমার সাইড ব্যাগটা টেবিলে রাখতে রাখতে ওঁকে বললাম, গুড মর্নিং দিদি। ভালাে আছেন তাে? হুঁ। উনি সংক্ষেপে উত্তর দিলেন।

ব্যথা আছে? তাহলে ফ্যান বন্ধ কেন? দাঁড়ান ফ্যানটা চালিয়ে দিই। বলে পাখাটা চালিয়ে দিলাম। ওঁর চিকিৎসা। ব্যবস্থার চার্ট দেখতে দেখতে জিগ্যেস করলাম, রাতে খেয়েছেন? উত্তর নেই। দিদি, কাল খেতে ভালাে লেগেছিল ? উত্তর নেই। দিদি বলে ঘুরে দাঁড়াতেই, বামা তােকে বলব কি আমি আতঙ্কে নীল হয়ে গেলাম। দেখলাম উনি আমার দিকে বিস্ফারিত নেত্রে তাকিয়ে আছেন। কিন্তু শরীর নিস্পন্দ। শুধু মাথার চুলে ঘূর্ণি তুলেছে পাখার বাতাস। সেই প্রবল বেগে আলােড়িত চুল দেখে মুহূর্তের জন্য আমার মনে হয়েছিল, উনি উঠে এগিয়ে আসবেন আমার দিকে। আমি টেনে দৌড় লাগালাম। এমন ঘটনা শুনেছিস কখনও ? বাইরে বেলা দশটার ঝলমলে রোদ্দুর, সর্বত্র জীবনের প্রবল উপস্থিতি, আর মৃত দেহকে ভয় পেয়ে ছুটছে এক ডাক্তার! তাহলে ওঁর ঐ উত্তর গুলাে কি তুই ভুল শুনেছিলি?

অসম্ভব। আমার কানে আজও ঐ হুঁ বাজে। শুধু তাই নয়, পরে যখন সকলের সঙ্গে আবার ঐ ঘরে ঢুকি তখন কী দেখেছিলাম জানিস? ওঁর দু’চোখ বােজা। বড় পরিশ্রান্ত হয়ে যেন ঘুমিয়ে পড়েছেন তিনি। পরে জেনেছিলাম মৃত্যুর সময় ওঁর চোখ বন্ধই ছিল। তাহলে কি উনি আমাকে দেখতেই চোখ খুলেছিলেন ঐরকম ভয়ংকর ভাবে? ঐ প্রথম। ঐ শেষ। ডাক্তারি জীবনে আর কখনও অমন আতঙ্কের শিকার হইনি। তবে এখনও আতঙ্কের কারণ হয়েই আছেন সুমিতাদি।

রােগী দেখতে দেখতে চেষ্টা করি যেন ঘরের অন্য কোথাও আমার চোখ না পড়ে। কিন্তু তিনি এলে আমার চোখে পড়বে না, এ কি তার সহ্য হবে? যে রােগীর মরণ নিশ্চিত শুধু তারই শিয়রের পাশে তিনি এলােচুলে দাঁড়িয়ে থাকেন এবং বিস্ফারিত নেত্রে তাকিয়ে থাকেন রােগীর দিকে। আজ অবধি বহু লােকের নিদান হেঁকেছি শুধু ওকে দেখে। এর মধ্যে আমার নিজের আত্মীয়স্বজনও ছিলেন বৈকি। এখন তুই-ই বল, এসব ঘটনা কি কাউকে বলার? আমি কোনাে উত্তর দিলাম না। তবে মনে মনে ঠিক করলাম আমার কিছু হলে অন্তত ওকে ডাকব না। পরমায়ু থাকুক বা না থাকুক তা আগেভাগে জেনে, বাঁচার আনন্দ নষ্ট করতে চায় কোন আহাম্মক?

(সমাপ্ত)

গল্পের বিষয়:
ভৌতিক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত