অনা….এই অনা কিরে উঠ।জানিস কয়টা বাজে।
ক্লাসের সময় হয়ে গেছে,আর ওনি এখনও পরে পরে ঘুমোচ্ছে।সারা রাত কি চুরি করিস নাকি বুঝি না।একজন মানুষ এতোটা অলস হতে পারে তা তোকে না দেখলে হয়তো কোনদিন বুঝতে পারতাম না।প্রতিদিন তুই লেইট করিস আর প্রতিদিন জাবেদ স্যারের ক্লাস মিছ হয়ে যায়…
ধুর,,উঠবি না তো?আর না আজ আমি একাই চলেই যাব।তোর জন্য আর ক্লাস ফাকি দিতে পারছি না।
:-তো যা না। কে আটকেছে তোকে।
:-হে,হে যাচ্ছি।
পাঁচ মিনিট পর…..
অনামিকা চোখ বন্ধ করে ওপাশ ফিরে শুয়ে আছে।
জারিন চুপি চুপি আবার রুমে চলে এলো।ভেবেছে অনামিকা বুঝতে পারবে না।
:-কিরে আবার চলে এলি কেন।
:-অই…… আমার মোবাইলটা রেখে গেছিলাম তাই।
:-আহা রে,বেচারি মোবাইল রেখে গেছিল।আমি তো না দেখেই বলতে পারি মোবাইলটা তোর হাতে।
জারিন মোবাইলটা তার পেছনে লুকানোর চেষ্টা করলো।কিন্তু সব বৃথা কারন এই ৪ বছরে এটা প্রায় প্রতিদিনই হয়।আসলে ওরা একজন অন্যজনকে ছাড়া থাকতে পারে না।
একটু পর…..
অনামিকা রেডি হয়ে আসে।জারিন মন খারাপ করে চুপ করে বসে আছে।
:-কিরে মন খারাপ করলি?
জারিন কোন উত্তর দিল না।
:-আরে পাগলি আমি জানি তো তোই আমায় ছেড়ে একা একা যেতেই পারিস না।অরে আমার প্রাণের দোস্তরে এবার তো হেসে দেখা।
:-হয়েছে প্রতিদিনের মতো তুই যে আমায় পাম দিচ্ছিস সেটা ভালোই জানি।এবার চল ক্লাসে যাই নইলে জাবেদ স্যারের ক্লাসটা আর পাবই না।
:-আরে দুস্ত,,স্যার তো প্রতিদিনই ক্লাস করায়।আসলে এদের কাজই এইটা।সারা দিন শুধু ক্লাস করানো আর লেক্চার দেয়া।ওফফ আচ্ছা বলতো ওরা কি আমাদের মতো ছিল না?কোন দিনও ক্লাস ফাকি দেয় নি।দিয়েছে দিয়েছে,ওরা দিয়েছে সিনেমা দেখার জন্য,গফ এর জন্য আর আমি দিব ঘুমের জন্য তাতেই দোষ?।হুহ…
:-(অনামিকার কান টেনে ধরে)অই শিক্ষকদের সম্মান করতে হয় ভুলেগেছিস?
:-উফফ লাগছে তো ছাড় দুস্ত ছাড় মরে যাব তো। জারিন তোই সেই আগের যুগেই পড়ে আছিস।আচ্ছা বাবা স্যরি।ক্ষমা করুন মহীয়সী নারী। এবার তো চলুন।….
জারিন আর অনামিকা ইউনিভার্সিটি তে চলে যায়।
জারিন আর অনামিকার প্রথম পরিচয় হয় কলেজ হোস্টেল এ।তখন ওরা নতুন কলেজে ভর্তি হয়েছিল।দুজনে একই রুমে থাকতো।অনামিকা যেমন জেদি জারিন ঠিক ততোটাই শান্ত।অনামিকা ছিল দূরন্ত তেমনি তার চালচলন পোষক ছিল আধুনিক অন্যদিকে জারিন খুব সাধারন ছিল খুব সাধারন। দুজন সম্পূর্ণ আলাদা প্রকৃতির হওয়া সর্তেও আস্তে আস্তে তাদের মধ্য গভীর বন্ধুত্ব গড়ে উঠে।তাদের বন্ধুত্বের কথা ইউনিভার্সিটি সবাই জানে।অনেকে তো হিংসায় বলে”এখন এতো ভাব দেখবো বিয়ের পর কে কার খোজ রাখে।তখন একজন আর একজনকে চিনবি না””।এই কথায় অনামিকা আর জারিন হাসতে হাসতে বলে””কে বলেছে,আমরা তো একজন কেই বিয়ে করবো।এখন যেমন আছি বিয়ের পরও তেমনি থাকব,দুই জন এক সাথে সংসার করব কি মজা হবে তাই না?হাহাহা।
এভাবেই কাটতে থাকে সময় খুনসুটি আর মজায়।হঠাৎ ইউনিভার্সিটি তে এক নতুন চরিত্রের আগমন ঘটলো।প্রত্যয়….অনয়মিকা আর জারিনের ব্যাচেই নতুন ভর্তি হয়।প্রথম দিন ক্যাম্পাস এর মাঠেই প্রত্যয়ের সাথে প্রথম দেখা হয় জারিন আর অনামিকার।অনামিকা নতুন কোন ছেলে মেয়ে দেখলেই তাদের রেগিং করতে শুরু করতো।তো সেদিন প্রত্যয় ক্যাম্পাসে হাঁটছিল।অনামিকা ইচ্ছে করেই গিয়ে প্রত্যয়ের সাথে ধাক্কা খেয়ে প্রত্যয়কে ফেলে দেয়।
:-এ বাবা,স্যরি আমি একদম দেখতে পাইনি।আপনার ব্যাথা লাগে নি তো?
:-ইটস ওকে।আমি ঠিক আছি।
:-বাছাধন তোমায় দেখাচ্ছি মজা…(আস্তে আস্তে)
:-জি,আমায় কি কিছু বললেন?
:-কই না তো।কিচ্ছু বলি নি।
:-অহ…..।
প্রত্যয় উঠে চলে যায়।কিন্তু এর ফাকে অনামিকা প্রত্যয়ের বাইক এর চাবি নিয়ে নেয়।ক্লাস শেষে প্রত্যয় বাইকের চাবি খুজে পাচ্ছেনা দেখে অনামিকা হাসতে থাকে। প্রত্যয়কে জিগ্গেস করলো চাবি খুজছো?প্রত্যয় তাদের কাছে গিয়ে জিগ্গেস করে আপনারা জানেন চাবি কোথায়?অনামিকা বলে…. যেখানে ধাক্কা লেগেছিল সেখানে পড়ে আছে।প্রত্যয় ক্যাম্পাসের মাঠে গিয়ে এমন ভাবে চাবি খুজতে থাকে যেন ঘাসে সুই খুজছে।এসব দেখে অনামিকা জোরে জোরে হাসতে থাকে।জারিনও হাসি চেপে রাখতে পালো না।
প্রত্যয় রেগে যায়।সে অনামিকা কে জিগ্গেস করে চাবি কোথায়।অনামিকা বলে দেব না।
তাদের কথা কাটাকাটি হতে থাকে।
অনামিকা আর প্রত্যয় ঝগড়া করতে থাকে।জারিন তাদের থামাতে গেলে প্রত্যয় জারিন কে বলতে থাকে আপনিও তো তখন হাসছিলেন।খুব মজা পাচ্ছিলেন তাই না।ভালো ছেলেদের সাথে মজা করতে খুব ভালো লাগে?
তখন জারিনের মন খারাপ হয়ে গেল সে অনামিকার কাছ থেকে চাবিটা নিয়ে প্রত্যয়কে দিয়ে দেয়।
:-কিছু মনে করবেন না।অনামিকা একটু এমন ই।আমাদের ক্ষমা করে দিন।
প্রত্যয় কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে চলে যায়।
:-তোই চাবিটা দিয়ে দিলি কেন?ও তোকে এমন ভাবে বলেছে তার পরও?
:-কারন আমি অযথা ঝামেলা চাই না।বাদ দে এসব চল তো।
পরদিন আবার ক্যাম্পাসে প্রত্যয়ের সাথে তাদের দেখা হয়।
প্রত্যয় জারিন কে বলে..
:-স্যরি আপনার উপর আমার রাগ দেখানো উচিৎ হয় নি।
:-আমি কিছু মনে করি নি।দোষ টা তো আমাদের ছিল।
:-তবোও পারলে ক্ষমা করবেন।
এর পর থেকে প্রতিদিন প্রত্যয়ের সাথে অনামিকা আর জারিনের দেখা হতো।তারা এক সাথে আড্ডা দিত।
একদিন রাতে অনামিকা আর জারিন হোস্টেলে বসে পড়ছিল।তখন অনামিকা বলল..
:জারিন ছেলেটা কিন্তু খারাপ না।
:কার কথা বলছিস তোই,প্রত্যয়?
:বাব্বাহ,ঠিক বুঝে নিলি।তা তোর কেমন লাগে।
:হে,খুব ভালো।
:তাহলে প্রস্তাব দিয়ে দিই।কি বলিস?
:কিসের প্রস্তাব।
:বাহ,এতো তারাতারি ভুলে গেলি?আমরা তো একজন কেই বিয়ে করবো।আমার মনেহয় প্রত্যয়ই পার্ফেক্ট।তাহলে বলব?
:ধুর তোই না….হাহাহাহাহা
এভাবে দিন যেতে লাগলো।অনামিকা আর জারিন দুজনেই প্রত্যয়কে ভালোবেসে ফেলল।
কিন্তু তারা জানে না অনেক বড় ঝড় আসতে চলেছে।যার কারনে পাল্টে যাবে এই তিনটি জীবন।এই রঙ্গিন দিন গুলো ঢাকা পড়ে যাবে অন্ধকারে আড়ালে।এই হাসি পরিনত হবে প্রতিশোধ আর হিংসায়।যা উলটপালট করে দেবে সবকিছু।
একদিন সন্ধায় অনামিকা আর জারিন হোস্টেলে ফিরছিল।ঠিক তখনি…….
অনামিকা জারিনের সরিলে প্রবেশ করে।এবার সেই পশুদের শাস্তি দেয়ার পালা।
সবাই ঘুমিয়ে পড়ার পর জারিন ঘর থেকে বেরিয়ে সেই আস্তানায় যায় যেখানে অনামিকা কে নৃশংস ভাবে হত্যা করা হয়েছিল।যাওয়ার আগে সে একটা ছুড়ি সাথে নিয়ে নেয়।
জারিন গিয়ে দেখে যেভাবে অনামিকা কে খুন করা হয়েছিল ঠিক সেভাবে ওই পশু গুলো আজও একটা মেয়ের জীবন নিয়েছে।
মেয়েটির নিথর দেহ এক পাশে পড়ে আছে।আর অন্য দিকে সেই পশু গুলো নিশ্চিন্তে ঘুমোচ্ছে।জারিনের দেহে থাকা অনামিকা ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে।সে ছুড়িটা হাতে নিয়ে এজনের সরিলে বার বার ঢুকাতে থাকে।
ছিন্নবিচ্ছিন্ন করতে থাকে সেই পশুর সরিল।তার আত্বচিৎকারে বাকিরা উঠে পড়ে।জারিন উরফে অনামিকা সবাইকে শেষ করে দেয়।তার পর সেই লাশগুলো ফেলে আসে ঠিক সেই জায়গায় যেখানে অনামিকার নিথর দেহটা ফেলে দেয়া হয়েছিল।
এর পর জারিন বাড়িতে চলে আসে।অনামিকা জারিনের দেহ থেকে বেরিয়ে যায়।
পরদিন সকালে জারিন কে থানায় আসতে বলা হয়।জারিন থানায় যায়।সেখানে তাকে জানানো হয়।”কাল রাতে ৫ জন লোক খুন হয়েছে।এবং তাদের ঠিক সেখানে পাওয়া যায় যেখানে অনামিকা কে পাওয়া গেছিল।
নৃশংস ভাবে তাদের খুন হয় এবং দেহে অসংখ্য ছুড়ির আঘাত পাওয়া যায় কিন্তু মুখ গুলো চেনা যাচ্ছে না।”
জারিনের বক্তব্য অনুযায়ী অনামিকা কে ৫ জন লোক খুন করে।তাই লাশগুলো কে আইডেন্টিফাই করার জন্য জারিনকে দেখানো হয়।কিন্তু তাদের মুখ এতটাই ছিন্নভিন্ন যে জারিন তা চিনতে পারলো না।তাই পুলিশ জারিন কে কিছু প্রশ্ন করে ছেড়ে দেয়া হয়।
জারিন বাড়িতে চলে আসে।সব কিছু স্বাভাবিক ভাবে চলতে লাগলো।একদিন হঠাৎ জারিন তার পরিবার কে জানালো সে আবার হোস্টেলে ফিরে যেতে চায়।সবাই ভাবলো হয়তো অনামিকা কে জারিন ভুলতে পেরেছে তাই আবার সব কিছু নতুন করে শুরু করতে চাইছে।জারিনের বাড়ির সবাই এতে খুশি হলো।কিন্তু কেও এটা জানতো না জারিন অনামিকা কে ভুলেনি বরং অনামিকা আবার জারিনের মধ্যে ফিরে এসেছে।…..
জারিন হোস্টেলে ফিরে যায়।এর মধ্যে হোস্টেল মালিক অন্য একটা মেয়েকে অনামিকার বেড দিয়েছে দেখে জারিন প্রচন্ড রেগে যায়।কোন মতেই সে মেয়েটিকে থাকতে দেয় না।হোস্টেল মালিক জারিন কে খুব ভালোবাসতো তাই আর জোর করে না।ভাবে কিছুদিন পর হয়তো ঠিক হয়ে যাবে।এত দিনের বন্ধুকে সহজে ভুলতে পারেনি হয়তো।
একদিন ইউনিভার্সিটি তে এক নতুন মেয়ে আসে।মেয়েটি জারিন কে জিগ্গেস করে অধ্যাপকের কক্ষ কোন দিকে।জারিন মেয়েটিকে ছেলেদের ওয়াশ রুম দেখিয়ে দেয়।মেয়েটি সেখানে গিয়ে লজ্জিত হয়।মেয়েটিকে দেখে জারিন জোরে জোরে হাসতে থাকে ঠিক অনামিকার মতো। তখনই প্রত্যয় চলে আসে।
:-কেমন আছো জারিন।
:-ভালো আছি।
:-জারিন আজ অনেকদিন পর তোমায় হাসতে দেখলাম।অনামিকা যাওয়ার পর থেকে এই প্রথম মনে হলো তোমি মন খুলে হাসলে।
:-কে বলেছে অনামিকা নেই,।অনামিকা আবার ফিরে এসেছে।বলেই আবার হাসতে লাগলো।
সেই হাসিটা প্রত্যয়কে এক মায়া জালে জরিয়ে ফেলল।প্রত্যয় জারিনের থেকে চোখ ফেরাতে পারছে না।কি এক অপূর্বতা যেন জারিনের হাসিতে।মোহিত করে ফেলেছে প্রত্যয়কে।
:-এইযে,কি দেখছেন এমন হা করে?
:-কই নাতো কিছু না।তবে জারিন তোমায় হাসলে অনেক সুন্দর লাগে।তুমি সবসময় হাসবে কেমন?
:-কিন্তু কেও তো আমার মুখে হাসি ফোটানোর দায়িত্ব নেয় না।
:-যদি আমি নিই?
:-তুমি?
:-হুম জারিন।আজ থেকে তোমার মুখে হাসি ফোটানোর দায়িত্ব আমার।একটা কথা বলবো?
:-বলো।
:-জারিন,জানিনা কবে,কিভাবে হয়ে গেল।আমি নিজেরই বুঝতে পারছি না কিভাবে হলো।
:-কি হলো?
:-আসলে,মানে,মানে…
:-আরে কি বলতে চাও বলে ফেল।
:-তুমি রাগ করবে না তো?
:-না বলো।
:-1 4 3 জারিন।
:-মানে?
:-মানে………..
আই লাভ ইউ জারিন।তোমি কি সারা জীবনের জন্য।আমার হবে?
জারিন বিশ্বাস করতে পারছিল না।
:-জারিন কিছু ত বলো।তোমি কি আমায় ভালো বাসো না?
(কিছুক্ষন চুপ থেকে)
:-না বাসি না,এভাবে কেও প্রপোজ করে।
হাদারাম,ঠিক করে প্রপোজ করো।
:-তার মানে তোমিও?
:-জানি না।(লজ্জা পেয়ে)
ইয়াহু…….. জারিন আমায় ভালোবাসে……
প্রত্যয় খুব খুশি হয় কিন্তু সে তো জানে না এটা জারিন নয়।জারিনের দেহে থাকা অনামিকার আত্বা।
এভাবে কেটে যায় এক মাস।জারিন আর প্রত্যয় খুব সুন্দর একটা সময় কাটাচ্ছিল।তারা প্রতিদিন ঘুরতে যেত।একজন অন্য জনকে খুব ভালোবাসতো।
অন্যদিকে আস্তে আস্তে সবাই লক্ষ করলো জারিন আর আগের মতো নেই।তাকে দেখলে মনেই হয়না এই সেই শান্ত জারিন।
মনে হয় তার ব্যাবহার কথাবার্তা সব কিছুতে অনামিকার ছায়া।
জারিন লেইট করে ঘুম থেকে উঠত।অন্য ছাত্রদের রেগিং করতো।এছারা অনেকেই জারিন কে একা একা কথা বলতে শুনেছে।জারিনের কথা সকলের মুখে মুখে ছড়িয়ে পরলো।অনেকে বলে জারিন পাগল হয়ে গেছে।অনেকে জারিন কে দেখে ভয় পেত,ভাবতো অনামিকার আত্বা তার উপর ভর করেছে।হোস্টেলের কয়েকজন এই বিষয়ে হোস্টেলের মালিকের সাথে কথা বললে তিনি জারিনের পরিবার কে এই বিষয়ে জানায়।
জারিনের মা বাবা এসে হোস্টেল থেকে তাকে বাড়িতে নিয়ে যায়।এর পর জারিনের মাও বিষয় টি লক্ষ করলো।জারিন অন্যরকম হয়ে গেছে।সব সময় একা একা কথা বলে।
জারিনের পরিবার আধুনিক চিন্তাসম্পন্ন হওয়ায় তাদের মাথায় আত্বা জাতীয় কিছু আসলো না।তারা ভাবলো অনামিকার কথা ভাবতে ভাবতে হয়তো নিজের ভেতর অনামিকাকে বসিয়ে ফেলেছে।তাই এমন হচ্ছে।তারা এর জন্য জারিন কে একজন সাইকলজিস্ট এর কাছে নিয়ে যায়।তিনি জারিন কে চেকআপ করে বলেন “জারিন তার বন্ধু কে খুব ভালোবাসতো অনামিকা কে সে ভুলতে পারছে না তাই এমনটা হচ্ছে।এখন জারিনের এমন কাওকে দরকার যে তার অনেক খেয়াল রাখবে।যাকে পেয়ে জারিন অনামিকা কে ভুলতে পারবে।
জারিনের পরিবার চিন্তায় পড়ে যায়।এমন কে আছে।অনেক চিন্তা করার পর তারা ঠিক করে জারিন কে বিয়ে দেবে।
এদিকে জারিন তা প্রত্যয়কে জানায়।প্রত্যয় তার পরিবারকে নিয়ে জারিনের বাসায় বিয়ের প্রস্তাব দেয়।জারিন প্রত্যয় কে ভালোবাসে এই কথা জানার পর জারিনের পরিবার কোন আপত্তি করে না কারন তারা চায় তাদের মেয়ে সুস্থ হয়ে উঠোক।
জারিন আর প্রত্যয়ের বিয়ে ঠিক হয়।
আজ তাদের বিয়ে সবাই খুব খুশি।চারদিকে হৈচৈ পড়ে যায়।জারিন কে অনেক সুন্দর করে সাজানো হলো।সবাই জারিনকে ঘিরে রয়েছে।একটু পর প্রত্যয়ের গাড়ী আসলো।সবাই দৌড়ে বর দেখতে গেল।এদিকে জারিন একা রুমে।হঠাৎ কোথা থেকে অনামিকা এল।
:-জারিন আজ তোর আর প্রত্যয়ের বিয়ে তাই না?
:-হে অনা।জানিস আমি প্রত্যয়কে অনেক ভালোবাসতাম।কিন্তু তাকে যে কখনও নিজের করে পাব ভাবিনি।সব তোর জন্যেই সম্ভব হয়েছে।
ধন্যবাদ অনা।
:-শুধু ধন্যবাদ দিলে হবে না।তুই কি ভুলে গেছিস আমাদের একজনকে বিয়ে করার কথা?
তাহলে আজ কি করে ভাবলি তুর একা বিয়ে হবে?
:-মানে?
:-মানে তুর সাথে প্রত্যয়কে আমিও বিয়ে করব।
:-কি বলছিস তুই এটা কিভাবে সম্ভব।
:হাহাহাহাহা এত ভয় পেলে চলে?আমি তো মজা করছিলাম।
কিন্তু তা মোটেই মজা ছিল না।কেও জানে না বিয়ের আসরে এমন কিছু ঘটতে চলেছে যা সবাইকে অবাক করে দেবে।আর বিয়ের পর এমন কিছু ঘটতে চলেছে যা কেও দুঃস্বপ্নেও ভাবেনি।