আমার নানাবাড়ি ঢাকা থেকে প্রায় ১৫৩ কিলোমিটার দূরে ফরিদপুর জেলার মধুখালী থানার জামালপুর গ্রামে। এককালে এটি জমিদার বাড়ি ছিল। বোস নামে এক হিন্দু জমিদার এ বাড়িতে বাস করতেন। একটি বিশাল এলাকা নিয়ে আমার নানাবাড়ি।
আমার নানা মুক্তিযুদ্ধেরও বহু আগে এই বাড়িটা কিনেছিলেন। লোকমুখে শোনা যায় এই বাড়িতে রাতের বেলা নাকি জীন-পরী চলাচল করে। আমার আম্মাও একজন প্রত্যক্ষদর্শী। আমার তেমনি এক অভিজ্ঞতার একটি গল্প প্রথমে বলি।
সেদিন বাড়িতে কেউ ছিল না। শুধু আমার আম্মা আর তার মেঝোবোন ছাড়া সবাই বেড়াতে গিয়েছিলেন। তখন তাদের বিয়ে হয়নি। আমার মেঝো খালা ছিল সাহসী আর আম্মা ভীতুর ডিম প্রকৃতির।
এত বড় বাড়ি, সন্ধ্যা হতেই আম্মা তো ভয়েই অস্থির। রাতে দুই বোন গলা জড়িয়ে ধরে শুয়ে রয়েছেন। গল্পে গল্পে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছেন তা মনে নেই। হঠাৎ কল চাপার শব্দ শুনে আম্মার ঘুম ভেঙ্গে যায়। আমার নানু বাড়িতে ছিল চাপকল। সেই চাপকল চাপার আওয়াজ হচ্ছে এত রাতে। আম্মা তাড়াতাড়ি মেঝো খালাকে ডেকে তোলেন।
এত রাতে কল চাপার শব্দ শুনে সেও কিছুটা অবাক হয়। ওদিকে, আম্মা তো খালাম্মাকে জড়িয়ে ধরে বসে আছেন। আম্মুকে সরিয়ে খালা মনে সাহস নিয়ে জানালার কাছে গেল। তবে খালারও সাহস হলো না সরাসরি জানালা দিয়ে কিছু দেখতে।
জানালার নিচের দিকে একটা ফুটো আছে। সেই ফুটো দিয়ে কল দেখা যায়। তখন তিনি সেই ফুটো দিয়ে দেখলেন কয়েকজন লোক অজু করছে কল পাড়ে। সবার গায়ে সাদা কাপড়। তাদের শরীর থেকে যেন আলো বের হচ্ছে। খালাম্মা এটা আম্মাকে ডেকে দেখাতেই আম্মা সাথে সাথে অজ্ঞান।
পরেরদিন নানা বাসায় এলে আম্মা-খালা নানাকে সব বলেন। নানা তাদের বললেন, এরা হচ্ছে জীন। তারা রাতের বেলা অজু করছিলো। তবে আম্মাকে মানা করে দেয় যেন আর কখনো এগুলো না দেখে।
[গল্পটি ইন্টারনেট হতে সংগ্রহিত]