চট্রগ্রামে গিয়েছিলাম। বাসায় ফিরছি। রাত ১২ টায় আমাদের স্টেশনে ট্রেন আসলে আমি প্রথমে নিজের শরীরে গরম কাপড় গুলো ঠিক ঠাক ভাবে
পরিপাটি করে নি। কারন শীতের রাত কনকনে শীত। স্ট্রেশন জন মানব শূণ্য প্রায়। ট্রেন টা মধ্য পথে আটকা পড়ার কারনে এতো রাত। স্ট্রেশন থেকে আমার বাসা প্রায় ১০ কি. লি. চিন্তিতো কারন কোন রিকশা বা অটো চোখের সীমানাতে নেই। স্টেশনে তেমন দোকান পাট খোলা নেই।
যদিও চায়ের নেশা টা আমাকে তাড়া করছে। তারপর শীতের রাতে চায়ের লোভ টা স্বাভাবিক ভাবে বেশি। আমি চোখ দিয়ে আপাদত টি স্টল খুজছি। ঘুরতে ঘুরতে স্ট্রেশনের চিপার গলির মধ্য
একটি ছোট দোকান পাওয়া গেছে।
দোকানদার বয়সে বৃদ্ধ। আমি দোকানে গিয়ে সোজা বসে পড়লাম তারপর চাচাকে বললাম চাচা চা হবে লাল গরম চা হবে। চাচা বলে বাবা
চায়ের জন্য বসে আছি কেন হবেনা সারারাত আমার দোকান খোলা থাকে। আমি শুুৃধু রাতের ব্যবসায়ী! বিষয়টা অদ্ভুতই মনে হতে চাচার দিকে এবার ভাল করে চেয়ে দেখি চাচার মাথায় চাদরের ঘোমটা বিশাল দাড়ি চোখ গুলো বড় বড়
পরণে লুঙ্গী আর অদ্ভুত ব্যাপার হলো চাচার পা দেখা যাচ্ছে না! আমি দেখতে পাচ্ছিনা! কিছুতেই না!
সে থেকে বুকের মধ্য হালকা ধুক ধুক শুরু হয়েছে
মানে গান যে রকম ধীর আস্তে শুনলে যে রকম মনে হয়।
বিষয়টা বেশ ভাবাচ্ছে আশ্চর্য পায়ের পাতা কোথায় চাচার! অবিশ্বাস নিজের চোখের সাথে হতে লাগলো।
চাচা বলে উঠলো বাবা কোথায় যাবে কোথায় বাসা?
আমি সব বলার পরে চাচা বলে বাবা তুমি তো এখন রিকশা ভ্যান কিছুই পাবেনা। তা ছাড়া এখন
রাত বারোটার উপরে!
তুমি বিপদে আছো!
শুনে আস্তে আস্তে বুকের ভয় বাড়ছে! তারপর চাচা বলে উঠে চিন্তা নেই চা দিচ্ছি খাও ঠিক হয়ে যাবে। চাচার কথা শুনে রহস্যর গন্ধ টের পেলাম।
মনে মনে ভাবছি কোথায় আছি আমি কোথায় এলাম।
চাচা চা বানাতে শুরু করলো আমি দেখছি হঠাৎ চাচা বলে ওঠে যা দেখি চায়ের চিনি তো শেষ!
আমি আবার চিনি ছাড়া চা খায়না। চাচা বলে চিন্তা নেই যদিও পাশের দোকানে চিনি আছে কিন্তু দোকান বন্ধ। চিনি চলে আসবে! কথাটি শুনে এবার যায় যায় অবস্হা এতো রাতে কোথা থেকে চিনি আনবে চাচা এমন ভাবে বলতে শুনে মনে হচ্ছে চিনি টা তার কাছেই আছে। সন্দেহ মনের ভিতর প্রবল আকার ধারন করেছে প্যানিক ডিসওয়ার্ড যাকে বলে।
চাচাকে তারপরে থেকে দেখতে ভয় লাগা শুরু করেছে! তারপর যা ঘটে চাচা পাশের দোকানের দিকে গেলে আমার চোখের আড়াল হলে আমি চোখে পেতে দেখি চাচা নিজের হাত বের করে দোকানের ভিতর থেকে চিনি বের করছে!”
চোখে বিশ্বাস হবার নয়!
এটা কি করে সম্ভব! প্রায় ১০ হাত দূর থেকে সামান্য মানুষের হাত দিয়ে এতো দূর থেকে কি ভাবে সম্ভব!”
এ তো মানুষের হাত নয়! আমি তারপর তা দেখার পরে সোজা বসে পড়লাম দোকানে!
নিজেকে বলতে লাগলাম এই লোমহর্ষক বিপদ আমার আজ ছিল ভাবা মুশকিল!!
চাচা বলে চিনি পেয়ে গেছি বাবা। আমি কথা বাড়াতে চায়নি বলে কোন প্রশ্ন করিনি।
চাচার চা বানানো শেষ দু কাপ বানিয়েছে চাচাও খাবে আর আমার সাথে গল্প করবে।
চাচা যখন চায়ের কাপ আমার হাতে তুলে দিতে
আসলো তখনই দেখে ফেললাম যা দেখার চাচার
হাতের নিচের দিকে ফাড়ার দাগ এবং সেটি সতেজ দাগ রক্ত লাল টগবগ করছে!এবারে আমি চিৎকার মারি চাচা বলে বাবা কোন প্রশ্ন আমাকে করবেনা। জানি ভয় করেছো!! এটা রাত গভীর রাত এখানে শুধু দেখবে উত্তর পাবেনা!
বিষাদের সুরে কথা আর এভাবে বলতে দেখে
মনে হচ্ছে আমি অন্য জগতে আছি।
মনে হচ্ছে জীবনের সবচেয়ে দৌড়টা দি।
কিন্তু আমার জানা আছে রাত এখন দুটোর কাছাকাছি। তা ছাড়া রাস্তাতে আরো বড় রকমের
অলৌকিক স্পট রয়েছে সে স্পট গুলো তে রাস্তায় জিনেরা অবাধে চলা ফেরা করে মানুষ রুপে মানুষ কে ধোকা দেয়।
ভোর হতে আযান পড়তে বাকি ৩ ঘন্টার কম।
আমি দোকানে স্ট্রেশনে কাটাবার প্লান করেছি! যে ভাবে হোক আমাকে ভয় রোধ করে কাটাতে হবে।
কিছুক্ষণ পর আমার বসার টুলে অবিকল কেউ এসে বসেছে স্পস্ট বোঝা যাচ্ছে।
মাথাটা হান্গ হবার তৈরী। অলৌকিক কেউ বসে আমার পাশে আর আমি দেখতে পাচ্ছিনা!
আমি টুল থেকে উঠে গেলে চাচা বলে বসো বাবা
ও কিছুনা রাতের বন্ধুরা এসেছে। আমি প্রশ্ন করলে চাচা বলে তোমাকে আগেই বলেছি আমাকে প্রশ্ন করবেনা!!
চাচা এবারে তিনটি চা বানিয়েছে আরেকটা কার তা তো জানি কিন্তু দেখি চা টা কিভাবে কি করে
দেখলাম তিন নম্বর চা টা টুলে এনে দিল কিন্তু চা
এমনিতে শেষ হতে লাগলো। মনে হচ্ছে আমি আহট দেখছি টিভি দেখছি।
বুকটার মধ্য ভয় করতে করতে শর্ট করেছে।
তারপর চাচা বলে উঠে কি করেছিস তুই আদম জাতে সাথে প্রণয় করে। চাচা এটা আমাকে বলেনি। যে অদৃশ্য তাকে বলেছে আন্দাজ ঠিক কারন তৃতীয় জন পরী। কারন পরীটা মেয়ে কন্ঠে বিভৎস আওয়াজে হাসছে।
এবারে আমার শংকা হলো পরীর কবল থেকে বাচতে হবে। কারন এ রাতে তারা আমাকে ভোলা করে দিবে। তাদের পছন্দ মতে তাদের জায়গায় নিয়ে যাবে। যা এটা ঘটে আসছে আমার সাথে আর পরী আমার কাছে নতুন কিছু নয়! পরী আমার লাইফে ছোট থেকেই। আমি বুঝে গেছি পরী এই সেই পরী যার হাত থেকে আমি বাচতে চাই। যে পরী কে আমি চাইনা এড়িয়ে যেতে চাই!
কিন্তু সে নাছোড় ছাড়বেনা আমাকে আজ টার্গেট করে সুযোগ কষেছে। এবার চাচাকে বলি চাচা আপনি সবই দেখছেন জানেন বুঝতে পেরেছেন
কিন্তু আমাকে ঐ পরীর হাত থেকে বাচান নয়তো আজ আমি এ দুনিয়া ছেড়ে তাদের দুনিয়াতে যেতে হবে থাকতে হবে। সে সুযোগ করে এসেছে
চাচা বলে সীমানা অতিক্রম।। এটা ঠিক নয়।
বাবা চিন্তা করোনা দেখছি!!
বলতেই দোকান থেকে দু জনে উধাও!! গায়েব ভয়টা কি রকমের সেটা বর্ণণা করতে পারছিনা।
ঘড়ির কাটায় আযান দিতে বাকি ২০ মিনিট তা দেখে সান্ত্বনা পেলাম। তারপরে প্লাট ফর্মে চলে এলাম রেল লাইনের দিকে দৃষ্টি যেতে যা দেখলাম
এক বিশাল সাদা পোশাক পরিহিত বাহীনি রেল বাইয়ে সামনে এগুচ্ছে আর সে চাচা পিছে তাদের ধাওয়া করছে!! অলৌকিক কি দেখছি আমি।
যেতে যেতে তারা চোখের সীমান এড়িয়ে গেল!
শরীরে জ্বর এসেছিল কখন বুঝতে পারিনি।
ভীষণ জ্বর গায়ে। কিছুক্ষণ পর স্ট্রেশনের মসজিদ থেকে মধুর কন্ঠে আওয়াজ ভেসে ওঠলো মনে শান্তি আসলো তারপর মসজিদে গিয়ে নামাজ শেষ করলাম। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানালাম।
আকাশ পরিস্কার হলে আমি চাচার কাছে দোকানে গেলাম কিন্তু সেখানে চাচা নেই! অন্য দোকান দার!
বোঝার বাকি নেই চাচা জিনের বাদশা ছিলেন।
রাত করে বাইরে থাকবেন না। সফর করবেন না!কাউকে বিশ্বাস করে কোথাও যাবেন না! কারন রাত তাদের দখলে। তাদের জীবন কর্ম তখন শুরু হয়।
আজ এ গল্প এখানে শেষ। এ গল্প গুলো সে পরীর গল্পই হবে বিষাদের লোমহর্ষক। আসবো নিয়ে…