জঙ্গলের মধ্যে একটা ছোট্ট পুকুরের পাড়ে একটা একতলা বাড়ি। চারপাশের পরিবেশটা বেশ নিরিবিলি। কোকিলের কুহু কুহু সুরে একটা বাজনা বাজছে যেন। সঠিক সময়। সঠিক পরিবেশ। সঠিক পরিকল্পনা।
জুনায়েদ কফির মগ নিয়ে বাড়ির বারান্দায় এসে দাঁড়ালো। তার কফির মগ থেকে ধোঁয়া উঠছে। তার চারপাশটা বেশ দারুন লাগছে। এই যে সে আজকে সকালে তার স্ত্রী রাফাকে জানালো যে সে অফিস থেকে এক সপ্তাহের ছুটি নিয়েছে। তাই সে রাফাকে নিয়ে বেশ দূরে কোথাও ঘুরতে বেরিয়েছে। কয়েকদিনের জন্য থাকতে এসেছে শহর থেকে বেশ খানিকটা দূরে জঙ্গলের মাঝে এই বাড়িতে। জুনায়েদ তার পরিকল্পনাকে আরামের সাথে সম্পন্ন করতে পারবে। কেউ তাকে বাধা দিবে না। কেউ কিচ্ছু জানবে না।
জুনায়েদের আজকে এখানে আসার পাঁচ দিন হলো। রাফাকে নিয়ে গত পাঁচ দিন সে বেশ রোমান্টিক সময় কাটিয়েছে। এই পাঁচ দিন সে রাফাকে জীবনের শেষ আনন্দের মূহুর্ত গুলো উপহার দিয়েছে। প্রথমদিন রাফা এই বাড়িতে পা রাখা মাত্র আনন্দের সাথে চিৎকার করে উঠেছিল। বলেছিল,
,,, এই গুলো আমার জন্মদিন পালন করার জন্য করতেছো তাই না ?
জুনায়েদ রাফার দু গালে হাত রেখে বলেছিল,
,,, আজকে পাঁচ দিন পর আমার জানের জন্মদিন। বিয়ের পর এটাই প্রথম জন্মদিন তোমার। স্পেসাল কিছু তো করতেই হতো, তাই না ?
রাফা বলেছিল,
,,, এতো ভালোবাসো আমাকে ? কখনো ছেড়ে যাবে না তো সবার মতো ?
রাফার দুহাত ধরে হাতে চুমু খেয়ে উত্তর দিয়েছিল,
,,, কখনো না।
জুনায়েদ এই পাঁচ দিন রাফার সাথে বেশ ভালো ভাবেই কাটিয়েছে। তবে গতকাল রাতেই সে তার আসল রূপ দেখানো শুরু করেছে। গতকাল রাত ১২ টার সময় সে রাফাকে দিয়ে কেক কাটে। রাফা প্রথম পিসটা জুনায়েদের মুখে তুলে দেয়। কেক কাটার পর্ব শেষে জুনায়েদ রাফাকে ড্রিংকস অফার করে। রাফা তাকে প্রত্যাখ্যান করে বলে,
,,, আমার এগুলো একদম ভালো লাগে না জানোই তো।
জুনায়েদ তাকে বলে,
,,, আরে আজকে আমাদের বিয়ের পর এটাই তোমার প্রথম জন্মদিন। একটু এনজয় করবে না।
এই বলে সে রাফাকে জোর করে ড্রিংকস করিয়ে দেয়। রাফার মাথা ঘুরতে লাগলো। সে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ল। ওই ড্রিংকস এ ঘুমের ওষুধ মেশানো ছিল।
জুনায়েদ এবার তার কাজ শুরু করলো। সে রাফার হাত দুটো পিছমোড়া করে শক্ত করে বাঁধল। পায়ের গোড়ালিও শক্ত করে বাঁধল। নাইলনের শক্ত দড়ি রাফার হাতে আর পায়ে একেবারে গেঁথে দাগ করে দিচ্ছে। জুনায়েদ রাফার মুখে কয়েকটা মেডিকেল টেপ মেরে দিল।
তারপর রাফার গলার সাথে ফাঁস লাগিয়ে ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় দাড় করালো। রাফার পা প্রায় মেঝে ছুঁই ছুঁই। এবার জুনায়েদ বাড়ি থেকে আনা তার ব্যাগ থেকে প্রয়োজনীয় জিনিস বের করল। ইতোমধ্যে রাফার জ্ঞান ফিরে আসে গলায় টান টান অনুভব হওয়ায়।
রাফা চোখ খুলতেই আঁতকে উঠল। জুনায়েদের হাতে একটা ড্রিল মেশিন।
জুনায়েদের চোখ লাল বর্ণ ধারণ করেছে। সে ড্রিল মেশিন অন করে রাফার দিকে এগিয়ে গেল। রাফার পায়ের দিকে ঝুঁকে ড্রিল মেশিনটা সোজা ডান পায়ের আঙ্গুলে চালিয়ে দিল।
ঝর ঝর করে রক্ত বের হতে হতে পায়ের আঙ্গুল গুলো ছিঁড়ে আলাদা হয়ে গেল। এবার বা পায়ের আঙ্গুলে চালিয়ে দিল। বা পায়ের আঙ্গুল গুলো ছিঁড়ে আলাদা হয়ে গেল। রাফার চোখ দিয়ে পানি ঝরছে। তার ভালোবাসার মানুষটিকে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করতেছে এটা সে কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছে না।
সে চিৎকার করতে চাচ্ছে কিন্তু পারছে না। জুনায়েদ এবার হাত গুলোর দিকে এগিয়ে গেল। আবার একে একে ডান হাতের তারপর বা হাতের আঙ্গুল গুলো ড্রিল করল। অঝরে রক্ত ঝরছে। রাফা ব্যাথায় ছটফট করছে।
এবার জুনায়েদ একটা শক্ত লোহার রড বের করল। সজোরে আঘাত করতে লাগলো রাফার পায়ে। রাফা পা ছুড়াছুড়ি করতে লাগলো। জুনায়েদ এবার রেগে গিয়ে তার ২২ ক্যালিবারের পিস্তল বের করে ডান পায়ের হাঁটুতে তিনটি আর বা পায়ের হাঁটুতে তিনটি গুলি চালালো।
পা দুটোও নিস্তেজ হয়ে গেল। জুনায়েদ রাফার কাঁটা স্থানে মরিচ ঘসতে লাগলো। রাফার আর ছটফট করার শক্তিটুকুও অবশিষ্ট নেই। সে শুধু চোখের পানি ফেলছে। এবার জুনায়েদ রাফার নিচের অংশে ড্রিল মেশিন চালিয়ে দিল যে অংশটা বিয়ের রাত থেকে আজ পর্যন্ত জুনায়েদের একান্ত সম্পদ ছিল।
রাফা এবার ভয়াবহ চিৎকার দিল। কিন্তু সেই চিৎকার সোনা গেল না। জুনায়েদের চোখে পৌশাচিক আনন্দ দেখা যাচ্ছে। সে এবার রাফার মাথার উপর ড্রিল মেশিন চালিয়ে দিল। সাথে সাথে মাথার উপরের অংশ ফুটো হয়ে গেল।
সেখান থেকে গড় গড় করে রক্ত বের হতে থাকল। রাফার শরীরটা আজীবনের জন্য নড়াচড়া করা বন্ধ করে দিল। কিন্তু জুনায়েদের এখনো মন ভরে নি। সে কোথা থেকে একটা চেইন শ নিয়ে এলো যেটা দিয়ে গাছের গুঁড়ি কাটা হয়। এবার জুনায়েদ শান্তি অনুভব করছে।
কালকের রাতের কথা ভাবতে ভাবতে জুনায়েদের কফি শেষ হয়ে এলো। জুনায়েদের এই নিয়ে ছয়টা খুন করলো।
তার বড় ভাই আশিককে একটা মেয়ে অপমান করেছিল সবার সামনে। ধর্ষণের চেষ্টা করার অপবাদ দিয়ে ফাঁসিয়ে জেলে পাঠিয়ে ছিল। ছেলের জন্য তার বাবাকে অনেক অপমান সহ্য করতে হয়। শেষ পর্যন্ত না পেরে তার বাবা হার্ট অ্যাটাক করে। মা অনেক আগেই মারা গিয়েছিলেন।
তার বড় ভাই অপমান আর কষ্টে জেলের মধ্যে হাতের শিরা কেটে আত্মহত্যা করে। জুনায়েদ একে বারে একা হয়ে যায়। নারী জাতির প্রতি তার এক বিরূপ ধারণা জন্মে। সে প্রতিজ্ঞা করে সে মেয়েদের কষ্ট দিয়ে যন্ত্রণা দিয়ে খুন করবে। এতে তার ভাইয়ের বদলা কিছুটা হলেও পূরণ হবে।
জুনায়েদ গাড়িতে করে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিল। তাকে আবার নতুন শিকার ধরতে হবে। গাড়িটা কিছু দূর যেতেই খারাপ হয়ে যায়। কি হয়েছে দেখতে জুনায়েদ গাড়ি থেকে নামে। অপর প্রান্ত থেকে একটা ছুটন্ত ট্রাক গাড়িসহ জুনায়েদকে ধাক্কা মারে। নিস্তেজ হয়ে পড়ে জুনায়েদের দেহটা। হয়তো একটা ভুল প্রতিশোধের নেশা তার পাপের ঘড়া পূর্ণ হয়ে গিয়েছিল। যতই হোক। পাপ তো তার বাপকেও ছাড়ে না।
(সম্পূর্ণ গল্প কাল্পনিক। বাস্তবিক ভাবার কিছু নেই।)