ভূতুড়ে ঘটনা

ভূতুড়ে ঘটনা

আজ আমি যে ঘটনাটা শেয়ার করবো সেটা আমার নিজের লাইফেই ঘটেছিলো ঘটনাটা লিখতে গিয়ে আমি সেই দিনকার মতো শিউরে উঠছিলাম বারবার, যে দিন ঘটনাটা ঘটেছিল আমরা তখন কক্সবাজারের কলাতলীতে থাকতাম। তখন ছিল ২০০৭ এর এপ্রিল মাস।

তখন আমি আমার বন্ধু- বান্ধবীদের নিয়ে সৈকত পাড়ে ঘুরতে বের হতাম। আমার মনে আছে সেদিন বিকাল বেলা ৫ টার দিকে আমি, সুবর্ণা, সুমি, পলি, সাদমান ও সাফা সাগর পাড়ের ঝাউতলা পয়েন্টে ঘুড়ে-বেড়াতে ছিলাম। আমরা প্রচুর শয়তানি ফাজলামি করতাম।

সবাই সৈকতের বালিতে আমাদের নাম, ষ্ট্যটাস লিখতেছিলাম। কেউ কেউ ছবি তুলছিল, দৌড়াচ্ছিল, হুরোহুরি করছিল। এভাবে কখন যে সন্ধ্যা হয়ে গেছে টেরই পাইনি সুমি আমাকে তাড়া করছিল, আমি জোরে দৌড়াচ্ছিলাম । সুমি আমার পিছু পিছু দৌড়াচ্ছিল। আমি দৌড়ে দৌড়ে ঝাউ বাগানের মধ্যে ঢুকে পড়েছি। এভাবে কিছুক্ষণ যাওয়ার পর দেখলাম যে, সুমি আর আসছেনা। এই সময় আমার কেমন যেন ভয় ভয় করতে লাগল।

সন্ধ্যা হয়ে প্রায় ঘন অন্ধকার হয়ে এসেছে, তারপর আবার ঝাউ বাগান তাই আমি থেমে পড়লাম। খুব হাপাচ্ছিলাম আমি, তাই বসে একটু বসে রেষ্ট নিচ্ছিলাম। হঠাৎ দেখলাম যে, সুমি আর সুবর্ণা আসতেছে আমার দিকে। তাদের দেখে আমার ভয় টা একটু কাটল, আমি মনে মনে একটু স্বস্তি পেলাম। ভাবলাম দৌড়া দৌড়ি বাদ দিয়ে এবার বাসায় ফিরে যাব। সুমি আর সুবর্ণা আমার কাছে এসে বললো যে, রিমু চল বাসায় চলে যাই আমি বললাম যে চল যাই বলে উঠে এগুতে থাকলাম। আমি বললাম যে, পলি, সাদমান, সাফা ওরা কোথায় ? সুবর্ণা বললো, ওরা চলে গেছে ।

আমি তখন বললাম ওকে আমরাও তাহলে বাসায় চলে যাই অন্ধকার এ কিছুই ভালো দেখা যাচ্ছিলো না । হালকা আলোয় আবছা আবছা ভাবে সব দেখতে পাচ্ছিলাম । সুবর্ণা আর সুমি আগে আগে যাচ্ছে আর আমি তাদের পিছু পিছু । অনেকক্ষণ ধরে হেঁটে যাচ্ছি কিন্তু রাস্তা দেখতে পাচ্ছিলাম না। অদ্ভুত একটা ব্যাপার লক্ষ্য করলাম যে, আমরা কেউ কারো সাথে কথা বলছিলাম না।

আর সুমি আর সুবর্ণা কে কেমন যেন অস্বাভাবিক মনে হলো., কেমন যেন লম্বা লম্বা লাগছে। আমি ভাবলাম যে, এগুলো কিছু না। তাই তাদের পিছু পিছু যেতে থাকলাম এভাবে কতক্ষণ হেঁটেছি জানি না হঠাৎ পেছন থেকে সুবর্ণা এর ডাকে পেছনে ফিরে তাকালাম। তাকিয়ে দেখি যে, সুবর্ণা, পলি, সাদমান আর একজন সাগর পারের লাইফ গার্ড এর লোক টর্চ লাইট নিয়ে এদিকেই আসছে।

আমি তখন হতভম্ব হয়ে গেলাম ভাবলাম যে তাহলে আমি কাদের সাথে কথা বলছি, হেঁটে যাচ্ছি ? এই ভেবে পেছনে ফিরে তাকালাম এবং দেখলাম যে, কেউ নেই সেখানে!! আমি প্রচন্ড ভয় পেলাম আর ভাবতে লাগলামতাহলে ওরা দু জন কে ছিল ??আর তাড়াতাড়ি আবার পেছনে ফিরে ওদের সবার কাছে চলে আসলাম। ওরা আমাকে জিজ্ঞেস করলো যে, কই যাইতেছিলি তুই একা একা ? আমি তখন তাদের কে সব ঘটনা খুলে বললাম। তখন লাইফ গার্ড এর লোকটা লাইট দিয়ে বালির উপর পায়ের ছাপ খূজঁতে লাগলো এবং দেখলো যে, আমার পায়ের ছাপ সাগর পারের বালিতে স্পষ্ট। এছাড়া কিছু দূর পর পর (আনুমানিক ২/৩ ফিট) পর পর, মানুষের পায়ের চেয়ে অনেক বড় এবং পুরা উল্টা পায়ের ছাপ অস্পষ্ট ভাবে দেখা যাচ্ছে… তখন লাইফগার্ড আঙ্কেল বললো, চলুন আপনাদেরকে পৌছে দিয়ে আসি তখন আমরা বাসার দিকে এগুতে থাকলাম। ঘড়িতে তখন সময় রাত ৯.৩০ মিনিট।

সাদমান বললো যে, আমরা তোকে প্রায় তিন ঘন্টা থেকে খুজঁতেছি, তোকে খুজঁতে সুমি, সাফা আর অন্য একজন লাইফগার্ড এর লোক সৈকত পারের কলাতলী পয়েন্টের দিকে গেছে।

আমি হাফ ছেড়ে বাচঁলাম কারণ লাইফগার্ড এর লোকটা বললো যে আমি যেদিকে যাচ্ছিলাম সে দিকে নাকি একটা চোরাবালি/ খাদ আছে । ঔখানে পড়লে নাকি সহজে খুঁজে পাওয়া যায়না এরপর আমরা সবাই বাসায় চলে আসি এবং কিছুদিন আর সাগর পাড়ে যাইনি।

কাহিনী টা আমার জীবনের স্বরণীয় ঘটনার মধ্যে একটা। বিশ্বাস করুন আর নাই করুন ঘটনা টা মনে পড়লে আজও আমি শিহরিত হয়ে উঠি। আর ঘটনা টার কিছু অংশের ব্যাখ্যা আমি আজও পায়নি আমাকে ঝাউবাগান থেকে সাগরের চোরাবালির দিকে কারা নিয়ে যেতে চাই ছিলো ?

সুবর্ণা আর সুমি ‘র রুপধারী ওরা দু জন কে ছিল ? হঠাৎ করে ওরা উধাও হয়ে গেল কেন ? সাগর পারের বালিতে ঔসব অস্পষ্ট, বড়, উল্টা পায়ের ছাপ কাদের ছিলো

গল্পের বিষয়:
ভৌতিক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত