— হরিদাস পাল..
— আজ্ঞে বাবু…
— আজ এতোদিন বাদে গ্রামে এলাম, গ্রামের খবরাখবর কিছু বল হে…
— আজ্ঞে, গ্রামের বেশিরভাগই তো চাষাভূষা , তবে এবার ফসল বেশ হয়েছে, সবই তিনার দয়া। বাদ বাকি সব ঠিকঠাকই আছে।
— হুম, তা ঠিক, তবে গ্রামে শুনেছি এক পুরোনো সাহেবি বাড়ি আছে?
— আজ্ঞে বাবু, ঐ ইংরেজদের আমলের বাড়ি ঐটা, শ্বেত পাথরের বলে এখনো টিকে আছে।
— হুম, সেই ছোট বেলায় গ্রাম ছেড়েছি আর আসা হয়নি তাইতো ও বাড়িখানা অদেখাই রয়ে গেছে। তা বাপু কতদূর হবে বলো দেখি।
— বাবু, ওযে গ্রামের শেষ সীমানায়। আপনার যেয়ে কাজ নেই।
— কেন হে…
— আজ্ঞে বাবু… বাবু, ও জায়গা বিশেষ ভালো নয়। দিনের বেলাতেও লোকে ও জায়গা এড়িয়ে চলে।
— আচ্ছা হরিদাস, এই যুগে কেউ বাবু বলে ডাকে? তোমার কথা শুনে মনে হয় আমি জমিদার পুত্র।
— আজ্ঞে বাবু, আপনি তো জমিদার বংশেরই শেষ প্রদিপ। আমার বাপ দাদারা তো আজীবন আপনাদেরই একনিষ্ঠ ছিল আর বংশ পরম্পরায় সে দায়ভার এখন আমার কাধে।
— একি বলছ তুমি “! কোন যুগে আছ হে ? আমাদের জমিদারি শেষ হয়েছে সেই কবে আর তুমি এখনো বংশপরম্পরায় পড়ে আছ? এটা তো দেখছি রীতি মতো ভয়ংকর!
— আজ্ঞে বাবু, এটা আর কি, আপনাদের এই বাড়িখানা দেখাশুনো করি আর মাস গেলে ভালো মাইনে পাই এই তো আমাদের ঢের আর কিছু চাইনে।
— আচ্ছা, সে তোমার মর্জি, তো আজ বিকালে রওনা দেই কি বলো?
— জ্বী, আচ্ছা, তবে আরেকবার ভেবে দেখেন বাবু, ঐ পুরনো খালি বাড়িতে না যাওয়াই ভালো।
— বুঝেছ হরিদাস, আমি একটা হরর শর্টফিল্ম বানাবো ভাবছি, আর তাইতো গ্রামের ঐ বাড়িটি দেখতেই এলাম। লোকেশন আজ দেখবো পছন্দ হলে আমার বন্ধুকে খবর পাঠাবো । যাও তো বাপু ঝটপট ব্যবস্থা করে ফেল, দুপুর হয়ে এলো।
কতটুকু বুঝলো কি বুঝলো না, জানিনা মাথা ঝুকিয়ে দ্রুত বেরিয়ে গেল হরিদাস পাল।
বিকালে হরিদাসের আনা ইঞ্জিন চালিত ভ্যানগাড়িতে চড়ে বসলাম, প্রায় ঘন্টাখানেক পর পৌঁছুলাম সেই সাহেবি বাড়িখানায়।
গেট বলতে দুপাশে ভাঙা কিছু লোহার জঞ্জাল চোখে পড়লো , তবে সামনের বাড়ি খানা যে এককালে ধবধবে সাদা ছিল তা দেখেই বোঝা যাচ্ছে। এখনো শ্বেতপাথর তার উজ্জ্বলতা সামন্য হলেও ধরে রেখেছে। দোতলা বিশিষ্ট বেশ বড়সড় ভবনটি। তবে একটা জানালার খিড়কিও অবশিষ্ট নেই। নিচতলাটা ঘুরেফিরে দোতলায় উঠলাম, বেশ ভৌতিক ভাব আছে বাড়ি খানায়। পুরনো আসবাবপত্রে ঠাসা প্রতিটি ঘর অথচ একটি ঘরেও তালা লাগানো নেই।
হরিদাসের কাছে জিজ্ঞাসা করতেই বললো, গ্রামের ছিচকে দু একটি চোর চুরি করতে এসে আর ফিরে যায়নি। বাহিরে পাহারারত ওদের সঙ্গীরাই গ্রামে গিয়ে জানায় এ কথা। এরপর আর কারো কখনো সাহস হয়নি এদিকে পা মাড়াতে।
হরিদাস দোতলায় আর উঠল না, আমি দোতলার সব গুলি ঘর ঘুরে ঘুরে দক্ষিণের ঘরটাতে ঢুকতেই দেখলাম ভাঙা কিছু চেয়ার টেবিল এদিকে ওদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে আর ঘরের দেয়াল আলমারিতে শোভা পাচ্ছে থরে থরে বই। কিছু পোকায় কাটা কিছু ভালো। দেখেই বোঝা যায় এটা লাইব্রেরী ছিল। হুম মালিকের তাহলে বই পড়ার নেশা ছিল, মৃদু স্বরে বলে উঠলাম। সাথে সাথেই পাশ থেকে কেউ বলে উঠল, আজ্ঞে হ্যাঁ…
হরিদাস তো আমার সাথে এ রুমে ঢোকেনি ভাবতেই পেছন ফিরলাম, দেখলাম হাতল ভাঙা একটি চেয়ারে বাবরী চুল ওলা একজন বসে আছে, তার হাতে কলম আর খাতা। কিছু যেন লিখছিলেন। আমি এগিয়ে গিয়ে তার পরিচয় জানতে চাইলে বললেন, আমি একজন সখের লেখক। টুকটাক লেখালিখি করেই সময় কাটাই, এবারে একটা ভৌতিক উপন্যাস লিখছি তাই ভাবলাম ভৌতিক পরিবেশে লিখলে হয়তো কিছুটা বাস্তবিক ভাব দিতে পারবো । তাই এখানে ছুটে আসা।
— ওহ আচ্ছা, সেতো বেশ ভালো খবর, আমিও একটি ভৌতিক শর্ট ফিল্ম বানাতে চাচ্ছিলাম। আপনার গল্পটা যদি বলতেন তো উপকার হতো।
— তা বেশ, বলবো কিন্তু চেয়ার যে আর নেই আর আপনি এতোক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন সেটাও ভালো দেখাবে না। এদিকে সন্ধ্যেও হয়ে এলো। আপনি এক কাজ করুন, বরং কাল সময় নিয়ে আসুন আমি চেয়ারের ব্যবস্থা করে রাখবো।
আমিও তার কথা যুক্তিযুক্ত ভেবে বেরিয়ে আসতেই শুনতে পেলাম নিচ থেকে হরিদাস চেচাচ্ছে, বাবু সন্ধ্যে যে হয়ে এলো তাড়াতাড়ি আসুন।
পরদিন বিকালে হাজির হয়ে গেলাম গল্প শোনার লোভে। গল্পটা ভালো লেগে গেলে না হয় এই গল্প দিয়েই ফিল্মটা বানানো যাবে। বেশ হবে তাহলে, লোকেশন আর গল্প একই জায়গায় পেয়ে যাব।
হরিদাস প্রথমে আসতে নারাজ থাকলেও আমার এখনে আসবার ইচ্ছেটা অটল দেখে রাজি না হয়ে আর পারলো না। তবে ও নিচে থাকবে আর যদি কোন দরকার পরে তো ডেকে নিতে বললো। আমি একাই দোতলার সেই দক্ষিণের রুমটায় উঠে এলাম। রুমে ঢুকেই দেখতে পেলাম ভদ্রলোক সেই হাতল ভাঙা চেয়ারটায় বসে কিছু লিখছেন আর তার সামনেই একটা ঝকঝকে চেয়ার, হয়তো ভদ্রলোক আমার জন্যেই জোগাড় করেছেন।
আমার উপস্থিতি টের পেয়ে ঝট করে মাথা তুলেই মৃদু হাসি দিয়ে বসতে ইঙ্গিত করলেন। আমিও হেসে বসে পড়লাম।
— তো শুরু করা যাক, কি বলেন?
— আমিও নড়েচড়ে বসলাম, জ্বী অবশ্যই।
লেখক তার গল্প শুরু করলেন, মাহবুব আলম ঢাকা শহরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী। উত্তরাধিকার সূত্রে সে গ্রামের জমিদারবাড়ির মালিক।
— আরে এটা তো আমি? আর আপনি আমার নাম কি করে জানলেন?
— এই গ্রামের জমিদারবংশের শেষ প্রদিপ আপনি, আপনার নাম জানা ও চেনা খুব কঠিন ব্যাপার না। আর ভাবলাম যেহেতু আপনার মত একজন আমার গল্প শুনতে চাচ্ছেন তো আপনাকেই নায়ক বানিয়ে দেই, কি বলেন?
— আমিও তার রসিকতায় না হেসে পারলাম না।
হুম, যা বলছিলাম, তো মাহবুব সাহেবের মাথায় হুট করেই ভৌতিক ফিল্ম বানানোর ভূত চেপে বসলো । গ্রামে এলেন সাহেবি বাড়িটি দেখবেন বলে। সাহেবি বাড়িটির নিচতলার প্রধান ফটকটি খুলতেই হঠাৎ একঝাক কবুতর মাথার উপর দিয়ে উড়ে যেতেই মাহবুব সাহেব কিছুটা ভয় পেয়ে গেলেন।
এ পর্যন্ত শুনে আমিও কিছুটা অবাক হলাম, আরে তাইতো কাল নিচতলার দরজাটি খুলতেই একঝাক কবুতর মাথার উপর দিয়ে উড়ে গিয়েছিল আর আমিও একটু চমকে উঠেছিলাম। কিন্তু মুখে কিছু না বলে তার গল্পে মন দিলাম।
– মাহবুব সাহেব কবুতর গুলির উড়ে যাওয়া দেখে মুচকি হেসে নিজেকে হালকা করে নিলেন। ঘুরে ঘুরে যখন নিচতলার একদম পশ্চিমের ঘরে গেলেন তখন হঠাৎ মনে হলো তার পাশ কেটে কেউ দ্রুত বেরিয়ে গেল আর একটা ঠান্ডা হাওয়া এসে তার শরীরে শিহরণ বইয়ে দিয়ে গেল।
..এটুকু বলতে না বলতেই আমি কেঁপে উঠলাম কারন সেই মুহূর্তে আসলেই মনে হলো কেউ দ্রুত আমার পাশ কেটে চলে গেল আর ঠান্ডা একটা বাতাস এসে লাগলো আমার গায়ে । তবুও মনের ভুল ভেবে গল্পে মন দিলাম।
মাহবুব সাহেব আবারো নিজের মনের ভুল ভেবে উত্তরের ঘরগুলির দিকে এগিয়ে গেলেন, এবার তিনি তার পেছনে স্পষ্ট নূপুরধ্বনি শুনতে পেলেন, যেন কেউ নূপুর পায়ে হেটে গেল। তিনি থমকে দাঁড়ালেন আর কান পেতে শুনার চেষ্টা করলেন শব্দটি আর হয় কিনা।
.. আর সঙ্গে সঙ্গেই আমার পিছনেই নূপুরধ্বনি শুনতে পেলাম। ঝট করে মাথা ঘুরাতেই কিছুই চোখে পড়লো না, মনে মনে দমে গেলাম। পরবর্তীতে ভাবলাম লেখকের গল্পে হয়তো ডুবে গেছি তাই এসব শুনতে পাচ্ছি, সবই আমার কল্পনা। আবারো মন দিলাম গল্পে —
– কিন্তু কোন শব্দ না পেয়ে এটাকেও মনের ভুল ভেবে পূবের ঘরের দিকে পা বাড়ালেন তিনি । এ ঘড়টি ছিল মিঃ কলিন্স এর স্ত্রীর শোবার ঘর। এ ঘরের দেয়ালে একটি অতি সুন্দর কারুকার্য করা আয়না দেখতে পেলেন, কিন্তু আয়নাটি দেয়ালে বাঁকা হয়ে ঝুলছিল। তাই মাহবুব সাহেব গিয়ে আয়নাটিকে সোজা করতেই আয়নায় নিজের প্রতিবিম্ব ভেসে উঠল, আর তিনি প্রচন্ড ভয়ে ছিটকে সরে এলেন কারন সেটা তার স্বাভাবিক প্রতিবিম্ব ছিলনা। তাতে মাহবুব সাহেবের প্রচন্ড ক্রোধান্বিত চেহারা ফুটে উঠেছিল। একটু ধাতস্থ হয়ে তিনি আবারো তাকালেন কিন্তু সব স্বাভাবিক দেখে মন চিরে একটি স্বস্তির নিশ্বাস বেরিয়ে এল।
লেখক থামতেই মনে হলো বাঁয়ের দেয়ালে ঝুলন্ত আয়নাটা নড়ছে, ওদিকে তাকাতেই দেখতে পেলাম আয়নাটা ধীরে ধীরে একা একাই সোজা হচ্ছে আর সোজা হতেই আমার ক্রোধান্বিত চেহারা তাতে ফুটে উঠলো । আমি এক লাফে চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়িয়েই চিৎকার দিয়ে উঠলাম। লেখক আমাকে ধরে চেয়ারটাতে বসিয়ে বললো, কি ব্যাপার বলুনতো? আপনি চিৎকার করছেন কেন? এটা তো নিছক গল্প, ভয়ের কিছু নেই আমি আছি তো। আমি লেখকের কথায় কিছুটা শান্ত হয়ে আয়নাটার দিকে ফের তাকাতেই দেখলাম সব আগের মতই আছে। মনে মনে কিছুটা লজ্জা পেলাম। এমন সময় হরিদাস ছুটে এসে জিজ্ঞাসা করলো, বাবু কি হয়েছে… আপনি ঠিক আছেন বাবু? আপনার চিৎকার শুনলাম যেন?!
— নাহে, হরিদাস, তুমি এক কাজ করো বাপু দু’কাপ কফি নিয়ে এসো।
— আজ্ঞে বাবু… দু’কাপ কফি?
— হ্যাঁ, কেন, গরম পানির ফ্লাক্স আর কফি আনোনি বুঝি?
— জ্বী বাবু, এনেছি কিন্তু দু’কাপ দিয়ে কি হবে আমি তো কফি খাইনা।
— উফফ, তোমার কথা বলছি না, আমার সামনে বসা ভদ্রলোক কে দেখতে পাচ্ছোনা, তার কথা বলছি, তিনি একজন বিশিষ্ট লেখক, তার গল্প অসাধারণ , মনে হচ্ছে বাস্তব! আচ্ছা যাও জলদি নিয়ে এসো।
হরিদাস একবার আমার দিকে আরেকবার লেখকের দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে জ্বী বাবু বলেই ছুট দিলো নিচের দিকে।
আর আমি লজ্জিত কন্ঠে বললাম, দুঃখিত এবার শুরু করুন।
লেখক হেসে বললেন, একটু কফি খেয়ে নিন তারপর না হয় আবার শুরু করা যাবে।
এমন সময় দু’হাতে দুটো মগ ভর্তি কফি নিয়ে হাজির হলো হরিদাস। পাশের একটি আধভাঙা চেয়ারে কাঁপা কাঁপা হাতে মগ দু’টি রেখে ভয়ার্ত দৃষ্টিতে একবার লেখকের দিকে চেয়ে তারপর ঘুরে আমার দিকে চেয়ে বললো বাবু, সন্ধ্যে হয়ে এলো যে, চালক আর থাকতে চাইছে না চলুন এবার ফেরা যাক। আমি হরিদাসকে আরেকটু গল্প বাকি আছে বলে নিচে পাঠিয়ে দিলাম। যদিও যেতে যেতে আরো বার দুই অনুরোধ করলো কিন্তু আমি তা কর্ণপাত করলাম না। হরিদাস চলে যেতেই লেখক বলা শুরু করলেন —
এরপর মাহবুব আলম উঠে এলেন দোতলায়, দোতলায় উঠতে উঠতে ভাবলেন, বেশ ভূতুড়ে লোকেশন , ঠিক যেমনটা তিনি চান। আজই প্রবল কে ফোনে জানাতে হবে লোকেশনের কথাটি। ভাবতে ভাবতেই তিনি একদম দক্ষিণের ঘরের সামনে এসে গেলেন। দরজাটা খুলতেই ধুলার বেশ ঝাঁজালো গন্ধ এসে নাকে লাগলো । তিনি নাক চেপে সামনে এগুতেই দেখতে পেলেন সামনে যত্রতত্র কিছু টেবিল চেয়ার ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে আর দেয়াল জুড়ে বিশাল এক বুক শেল্ফ। বুঝলেন এটি একটি লাইব্রেরি । হঠাৎ মনে হলো পেছনে কেউ একজন বসে আছে। দ্রুত পেছনে ঘুরলেন, দেখলেন একটি হাতল ভাঙা চেয়ারে বাবরি চুল ওলা একজন বসে তারদিকে মিটি মিটি হাসছেন। আর সঙ্গে সঙ্গে কামরাটি ঠান্ডা হাওয়ায় ভরে গেল, চারিদিকে বেজে উঠল নূপুরধ্বনি , ধূলার গন্ধে দম বন্ধ হওয়ার জোগাড় , আর চেয়ারে বসা লোকটি ধীরে ধীরে চেয়ার ছেড়ে উঠে এলেন তার কাছে… অনেক কাছে…. এবার তার চেহারায় ফুটে উঠল ভয়ংকর ক্রুর হাসি, তার বিভৎস্য চেহারা দেখে মাহবুব সাহেব আর সহ্য করতে পারলেন না, তার গলা চিড়ে বেরিয়ে এলো প্রচন্ড চিৎকার। বলেই লেখক মিটিমিটি হাসি দিয়ে থেমে গেলেন। আর সঙ্গে সঙ্গে ঘরে শুরু হলো ধূলিঝড় সাথে হাড় কাপানো ঠান্ডা। ঘরের চারিদিকে বেজে উঠল অসহ্য নূপুরধ্বনি। আমি নাক কান বন্ধ করে উঠে দাঁড়ালাম। এটা কি হচ্ছে ভেবে উঠার আগেই দেখলাম লেখক বিভৎস্য চেহারায় ভয়ংকর হাসি ফুটিয়ে ধীরে ধীরে আমার দিকে এগিয়ে আসছে। আমি আর সহ্য করতে না পেরে দেহের সমস্ত শক্তি এক করে চিৎকার দিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লাম।
জ্ঞান ফিরতেই দেখলাম আমি আমার রুমে শুয়ে আর হরিদাস উদ্বিগ্ন চোখে আমার দিকে চেয়ে আছে। আমি এখানে কি করে জিজ্ঞাসা করতেই হরিদাস বললো, বাবু আপনি বললেন দু’জনের কফি আনতে কিন্তু ওখানে আপনি ছাড়া আর কেউ ছিলনা। তাই আমি আপনাকে নিয়ে যেতে আবার উপরে গেলাম কিন্তু আপনি পরে আসবেন বলে আমাকে পাঠিয়ে দিলেন। আমি নিচে এসে চালককে সব খুলে বলতেই চালক আমাকে সঙ্গে নিয়ে উপরে ছুটলো। আমরা দরজায় পৌঁছাতেই আপনার চিৎকার শুনতে পেলাম, গিয়ে দেখি আপনি মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন। তারপর আপনাকে তুলে দ্রুত ওই স্থান ত্যাগ করি।
– বাবু কি হয়েছিল ওখানে ?
– আমি মৃদু হেসে বললাম, যা হয়েছে ঢেড় হয়েছে। তোমাদের এ উপকার কখনওই ভুলবো না। আর আমার ভূতুড়ে ফিল্মের আশাও ভেস্তে গেল আর নয় এ পথে..