ঘোষ্ট হান্টার

ঘোষ্ট হান্টার

-সময় রাত দুটো বেজে পঁয়ত্রিশমাইক্রোফোন টেস্টিংওয়ান…টু… থ্রি …আমি এখন আছি সেই ভুতুড়ে বাড়িতে। খাওয়ার পর্বমাত্র শেষ হয়েছে। হাতে আছে ওয়াকিটকি। সুতরাংআমাদের মাঝে যোগাযোগ হচ্ছে। আমরা যথাসম্ভবনিরবে অবস্থান করছি। আমাদের বলতে আমি রাফিসজল আর আনিকা। আনিকা অন্য মেয়েদের মত না।সে আমাদের তিনজনের মতই কোন ভয় পায়না। আমিওকে বলেছি ভয় পেলেই যেন আমার ফ্লোরে চলেআসে। আমি অপেক্ষা করছি তিনতলার ফ্লোরে।পুরো বাড়িতে মাত্র আমরা চারজন প্রাণী। আর কেউনেই। আমাদের ঘোষ্ট হান্টার দলের বাকিরা ছড়িয়েছিটিয়ে আছে বিভিন্ন ফ্লোরে। রাফি গ্রাউন্ডফ্লোরে। সজল আছে টপ ফ্লোরে। আমি আর আনিনাএকেবারেই কাছাকাছি ঘরের ওপর ও নিচ তলায়।আমার সাথে এখনো কিছুই তেমন হয়নি।

এর মাঝেআনিকাকে খুব দেখতে ইচ্ছে করছে।সময় রাত তিনটাহ্যালো আমি আনিকা বলছি।-আরে তোর মাইক্রোফোন দিয়ে তো ভালোরেকর্ডিঙ হয়।- তা তো হবেই। সুইডিস জিনিস। একেবারেই আসল।- আমাদের আজকে এখানে আসা বৃথা।-কেন সেটা বললি?- কারন দেখছিস না সব বুজরুকি।- সেটা ঠিক তিনটা বেজে গেল। অথচ এখানে নাকিসন্ধ্যাতেই মানুষ ভয় পায়। দিনের বেলাও কেউআসেনা। আমার কাছে মনে হচ্ছে সব ভুয়া।- হুম। আনিকা- চল চা খাই- নাহ।- কেন?- আরে মাইক্রোফোনটা রাখ তো।শুধু শুধু রেকর্ডকরছিস।- ঠিক আছে বন্ধ করলাম।সময় রাত তিনটা দশহ্যালো আমি শিশির বলছি।আমার সামনে খানিক আগে আনিকা ভ্যানিশ হয়েগেছে। হ্যাঁ পুরোপুরি ভ্যানিশ। কথা বলতে বলতেহটাত উদাও। কিন্তু এটা কিভাবে সম্ভব? আনিকারওয়াকিটকি কাজ করছেনা। রাফি আর সজল ঘুমিয়েপড়েছে বলেই মনে হচ্ছে। ওরা ওয়াকিটকিতেমেসেজ রিসিভ করছেনা।

আমার খুব বাজে লাগছে।ভয় না। বাজে লাগছে। এখান থেকে যেতে ইচ্ছেকরছেনা। আবার থাকতে ও পারছিনা। কি করব আমি?সময় রাত তিনটা পঁচিশহ্যালো আমি শিশির।আমার পরিস্থিতি ভয়ানক। কিছুই ঘটেনি এজন্যভয়ানক। আমি কিছুই বুঝতে পারছিনা আসলেকাহিনী টা কি? আমি খানিক আগে পুরো বাড়িঘুরে এসেছি। আমি কাউকেই পাইনি। রাফি বা সজলনেই। একেবারেই নেই হয়ে গেছে সে। কিভাবেসম্ভব এটা? কত হান্টেড হাউজে আমরা রাতকাটিয়েছি। অথচ কেউ এভাবে হারায়নি। আমিকিছুই বুঝতে পারছিনা।সময় রাত চারটাখানিক পরেই আযান পড়বে। এর পর আর ভুতের দেখাপাওয়া যাবেনা। আমি ফিরে যাব ভাবছি। পুলিশকেজানাতে হবে। ঝক্কিতেই পড়লাম এবার। আমিশিশির আহমেদ। বিদায়।সময় রাত চারটাঅনেকক্ষন আগে চারটা বেজেছিল।

এখনো চারটাইবাজে। সমস্যা কি? আমি শিশির আহমেদ বলছি।এখনো আমি ভোরের কোন সিগন্যাল পাইনি। অথচআমার ঘড়ি চলছেনা। একযায়গায় থেমে আছে। তাইআমার রেকর্ডিং ও এক স্থানেই থেমে গেছে।সময় রাত চারটাহ্যালো আমি শিশির। আমি একটা শব্দ শুনেছি।কেমন যেন হালকা একটা হাঁটার শব্দ। কিছু একটাআমার ঘরের বাইরে হাঁটছে। আমি গিয়ে দেখেআসি।কেউ নেই। অথচ শব্দটা হচ্ছে।সময় রাত চারটাঅনন্ত কাল ধরে এই অন্ধকার ঘরে চারটা বাজেইআটকে আছি। খুব খিদে পেয়েছে। আমি এখন ওঁদেরহাতে বন্দী।

এখান থেকে মুক্তির উপায় একটাই।আরেকজনকে বন্দী বানাতে হবে। আমি এজন্যেতক্কে তক্কে আছি। কেউ যদি আমাদের দেখতেএখানে এসেই পড়ে তবে তাকে আমি প্রথম বন্দীকরব। ঠিক যেভাবে আমাকে বন্দী বানিয়ে আনিকামেয়েটা খুব কমসময়েই মুক্তি পেয়েছে এখান থেকে।যদিও সময়টা অনেক।কেউ একজন আসছে।আমি ঠিক শুনতে পাচ্ছি। ঔ তো। দেখা যাচ্ছে।লম্বা লম্বা পা ফেলে ঢূকছে একজন। আর ওর দিকেতাড়া করতে শুরু করেছে হাজারো আত্মা। আমি ওতাদের মধ্যে একজন।হ্যালো মাইক্রোফোন

টেস্টিংওয়ান..টু..থ্রি…ফোর…ঘ্ররররররর…. টেপ টা শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু শেষের দিকটা শুনেভয় পেল মুর্তোজা হাসান। কারন কন্ঠটির বর্ণনারসাথে উনার নিজের কাহিনী একেবারেই মিলেযায়। তাই যদি হয় তাহলে তাঁকে এখনি পালাতেহবে। যদিও আরেকজন ঘোষ্ট হান্টার কে বন্দী নাবানালে কখনোই উনার পালানো হবেনা উনার সাথে বসবাস করতে থাকা শতশত আত্মার মতো

গল্পের বিষয়:
ভৌতিক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত