শ্যামপুর স্টেশনে ট্রেন যখন পৌছুলো ঘন্টার কাটা টা তখন দশের ঘরে। আর মিনিটের কাটা বারোর ওপরে। রাত দশটা বাজে এখন। ট্রেন থেকে নেমে পড়লো সাকিব। অল্প কয়েকজন যাত্রীও নামলো স্টেশনে। ট্রেন ছেড়ে গেলো আবার। স্টেশনে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলো সাকিব। ওকে নেওয়ার জন্য স্টেশনে লোক আসার কথা ছিলো, কিন্তু তেমন কাউকে দেখলো না ও। তাহলে কী কেউ আসবে না ওকে নিতে?
চাপা একটা আতংক বিরাজ করলো ওর মনে।
অনেকবেশি নিরিবিলি স্টেশনটা । একটা কাকপক্ষীও নেই আশেপাশে। স্টেশনে যারা নেমেছিলো তারাও আস্তে আস্তে সব উধাও হয়ে গেলো । ভূতুরে নিরাবতা নেমে এলো স্টেশনে। একা পড়ে গেলো সাকিব । যাত্রী ছাউনিতে যেয়ে বসলো সে । ছোট একটা ইলেকট্রনিক বাতি জ্বলছে সেখানে। ইট আর সিমেন্ট দিয়ে তৈরি করা হয়েছে বসার যায়গাগুলো। যায়গায় যায়গায় চল্টা ধরে উঠে গেছে প্লাস্টার। বেশ ক’বছর যে ওগুলোর যত্ন নেওয়া হয়না স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে।
নাহ দিনের বেলা আসায় উচিৎ ছিলো। “ভাবলো সে। এসেই যখন পড়েছে কী আর করা। তবুও অসুবিধা হতোনা লোকটা যদি ঠিক সময় ওকে নিতে আসতো। ঠিক সময় তো দূরের কথা আধঘণ্টা হয়ে গেলো এখনও আসলো না। আদৌ আসবে কিনা তারও কোনো নিশ্চয়তা নেই।
একটা রহস্য উদঘাটন করতে পাঠানো হয়েছে ওকে। কলিজাখেকোর রহস্য। কয়েক সপ্তাহ ধরে রহস্যজনক ভাবে মানুষ খুন হচ্ছে শ্যামপুরে। খুনগুলো করা হয় খুব নৃশংস ভাবে। স্থানীয় মানুষের মুখে শোনা যাচ্ছে ওটা নাকি কোনো কলিজাখেকোর কাজ। কলিজা খাওয়ার জন্যই কোনো রাক্ষস এই কাজ করছে। অবশ্য এর পেছনে যুক্তিও আছে। কারণ প্রটিটা খুন হওয়া মানুষের বুক কেটে কলিজা বের করে নেওয়া হয়েছে। এর আগে অবশ্য আরেকজন সাংবাদিককে পাঠানো হয়েছিলো ঘটনাটা তদন্ত করার জন্য। তার নাম ছিলো রাফসান। সাকিবের খুব কাছের বন্ধু। কিন্তু তার ভাগ্যে জুটেছিলো নির্মম মৃত্যু। তারও বুক কেটে কলিজা বের করে নেওয়া হয়েছিলো । বস্তুত বন্ধুর খুনের প্রতিশোধ নিতেই এখানে এসেছে সাকিব।
যাত্রী ছাউনিতে একা একা বসে থাকতে আর ভালো লাগলো না সাকিবের। স্টেশন মাস্টারের কামড়ার দিকে এগুলো সে। তিরিশ ওয়াটের একটা বাতি জ্বলছে কামড়ার বাইরে। কামড়াটার যে বেশ বয়স হয়েছে সেটা তার দেয়াল দেখেই বোঝা যাচ্ছে । প্লাস্টার খসে পড়েছে যায়গায় যায়গায়। ভেতরের ইটগুলোকে দেখে মনে হচ্ছে ওগুলো যেনো মস্ত বড় কোনো দানবের দাত। দাতগুলো বের করে ভয় দেখাতে চাচ্ছে যেনো।
দরজা খোলায় আছে। ভেতরে জ্বলছে আরেকটা বাতি। বাইরেরটা থেকে এটা বেশি আলো দিচ্ছে। একটা চেয়ারের ওপরে বসে ঝিমুচ্ছে বড় বড় গোফওয়ালা এক ভদ্রলোক। বয়সের ভারে পাক ধরেছে চাদিতে থাকা কয়েকটা চুলে। ইনিই বোধহয় স্টেশন মাস্টার। “অনুমান করলো সাকিব। দরজার ওপরে কয়েকবার টোকা দিলো সে। দরজার দিকে ফিরে তাকালো ভদ্রলোকক। একনজরে কিছুক্ষণ চেয়ে থাকলো সাকিবের দিকে । পা থেকে মাথা পর্যন্ত কয়েকবার চোখ বুলালো। যেনো পরখ করে নিচ্ছে। ভদ্রলোকের এমন চাহনিতে অস্বস্তিতে পড়ে গেলো সাকিব। ভেতরে আসতে পারি? “আমতা আমতা করে বলল সে। আসুন। “গম্ভীর গলায় বলল স্টেশন মাস্টার। ভেতরে ঢুকলো সাকিব।
বসুন। “টেবিলের সামনে একটা কাঠের চেয়ার দেখিয়ে বলল স্টেশন মাস্টার। ধন্যবাদ। চেয়ারের ওপরে বসে পড়লো সাকিব।
তা আমি আপনাকে কীভাবে সাহায্য করতে পারি? “স্টেশন মাস্টার বলল। কন্ঠস্বর সেই একইরকম গম্ভীর।
না আমার কোনো সাহায্য লাগবেনা। আসোলে আমি শ্যামপুর যাবো। আমাকে নেওয়ার জন্য লোক আসার কথা ছিলো। কিন্তু আসেনি কেউ। হয়তো একটু পরে আসবে। একা একা ভালো লাগছিলো না। তাই আপনার কামড়ায় আসলাম একটু কথা বলতে।
স্টেশন মাস্টার সাকিবের শেষ কথাগুলো যেনো কানেই তুললো না। অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো, “আপনি শ্যামপুর যাবেন?
হ্যা। “হেসে বলল সাকিব। একটা রহস্যের সমাধান করতে এসেছি। কলিজাখেকোর রহস্য।
আপনি তাহলে এসবকিছু জেনেই এসেছেন এখানে?
হ্যা। সবকিছু জেনেই এসেছি আমি।
নিশ্চিত মৃত্যুর সাথে সাক্ষাৎ করতে যাচ্ছেন আপনি। এর আগেও আপনার মতো এক সাংবাদিক এসেছিলো এখানে। কলিজাখেকোর রহস্য তদন্ত করতে। তার যে কি অবস্থা হয়েছিলো!! উহু, ভাবতেই আমার শরীরে কাটা দিচ্ছে।
জানি আমি। ও আমার বন্ধু ছিলো।
সাকিবের কথা শুনে ঢোক গিললো স্টেশন মাস্টার। আপনি সবকিছু জানেন, তাহলে এই ভয়ংকর মৃত্যুর সাথে সাক্ষাৎ করতে আসলেন কেনো?
দেখুন আমার কাজই এটা। তাছাড়া এটা এভাবে চলতে থাকলে তো অনেক মানুষ মারা যাবে। এর একটা বিহিত তো করতেই হবে।
আপনার আগে যে এসেছিলো। মানে আপনার বন্ধু আরকি। সেও এমন কথায় বলেছিলো। কিন্তু কাজের কাজ কি হলো,, অকালে মরতে হলো তাকে। আপনার ভাগ্যেও হয়তো তেমনি কিছু হবে।
যা হবার হবে। মৃত্যুকে ভয় পায়না আমি। আচ্ছা যাইহোক, আপনার নাম টা কী?
আমি খলিলুল্লাহ। এই স্টেশনের মাস্টার। আপনি?
আমি সাকিব। একটা প্রাইভেট নিউজ এজেন্সির রিপোর্টার।
ওহ। আচ্ছা আমি তো এখন বের হবো। আপনাকে নিতে বোধহয় কেউ আর আসবেনা। আসলে এতক্ষণে চলে আসতো। এখানে একা একা থাকতে পারবেন না আপনি । সাংঘাতিক বিপদজনক জায়গা এটা। আপনি চাইলে আমার সাথে যেতে পারেন। সকালে নাহয় আমিই আপনাকে আপনার গন্তব্যস্থলে পৌছে দিবো। স্টেশন মাস্টারের প্রস্তাবে রাজি হয়ে গেলো সাকিব। এই নীরব একটা স্টেশনে একা একা রাত কাটানো সত্যিই বিপদজনক। যতোটা না বিপদজনক তারচেয়ে বেশি বিরক্তিকর। বিশেষ করে এই রক্তচোষা মশাগুলো তো
মারাত্মক। এক রাতেই শেষ করে ফেলবে ওকে। তাছাড়া ওকে যে লোকটার নিতে আসার কথা ছিলো সেও বোধহয় আর আসবে না। আসলে এতক্ষণে চলে আসতো।
শক্তিশালী একটা টর্চ আর বড় একটা রাম দা নিয়ে বের হলো স্টেশন মাস্টার। সেটা দেখে আতকে উঠলো সাকিব। চোখ বড়বড় হয়ে গেলো তার। স্টেশন মাস্টার বিষয়টা লক্ষ্য করলো। ওর দিকে তাকিয়ে হাসলো সে। তারপর বলল, “ভয় পাবেন না। এটা রেখেছি নিজের নিরাপত্তার জন্য। প্রতিদিন রাত করে বাড়ি ফিরতে হয় আমাকে। কলিজাখেকোর হাত থেকে বাঁচার জন্যই এটা রেখেছি আমি।
ওহ! “ফোস করে নিঃশ্বাস ছাড়লো সাকিব।
একটা কাচা রাস্তা ধরে এগোলো লোকটা। সাকিব তার পিছু পিছু হাটতে লাগলো। রাস্তাটার দুপাশে ঘন জঙ্গল। অনেক বেশি নিস্তব্ধ জঙ্গলটা। ঝিঝি পোকার ডাক ছাড়া আর কিছুই শোনা যায়না। এমন সময় কাছে কোথাও কয়েকটা শেয়াল আর্তনাদ করে উঠলো। অজানা আতংকে কেপে উঠলো সাকিব। আচ্ছা আপনি কী
কলিজাখেকোটাকে দেখেছেন? “জিজ্ঞেস করলো সে।
দেখেছি বই কি। একদিন তো ওটা আমাকে আক্রমণ করে বসেছিলো।
বলেন কী? “বড় বড় হয়ে গেলো সাকিবের চোখদুটো।
হ্যা আমাকে আক্রমণ করেছিলো ওই কলিজাখেকোটা। কোনোরকমে প্রাণ নিয়ে পালিয়ে বাচি আমি।
আচ্ছা ওই কলিজাখেকোটা দেখতে কেমন?
ভয়ংকর বড়বড় দুটো চোখ। দেখতে আগুনের মতো লাল। সিংহের মতো বড়বড় দাত। ইয়া বড় শরীর। উহ বাবা! কি ভয়ানক দেখতে!!
স্টেশন মাস্টার এমনভাবে বর্ণনা করলো যেনো কলিজাখেকোটা তার সামনে দাড়িয়ে আছে। এদিকে কথা বলতে বলতে জঙ্গলের আরো গহীনে চলে এসেছে ওরা। কথাই মগ্ন থাকাই সেটা খেয়ালই করেনি সাকিব।
হঠাৎ দাঁড়িয়ে পরলো স্টেশন মাস্টার।
স্টেশন মাস্টার এমন হঠাৎ দাঁড়িয়ে পড়াতে অবাক হলো সাকিব। কী হয়েছে? “জিজ্ঞেস করলো সে।
জবাবে হো হো করে হাসলো লোকটা। শয়তানি হাসি। আমিই সেই কলিজাখেকো। “হাসতে হাসতে বলল সে।
লোকটার এমন কথায় হতভম্ব হয়ে গেলো সাকিব। আপনি কী বলছেন এইসব? “কোনোরকমে কথাটা বলল।
বিশ্বাস হচ্ছেনা আমার কথা? একটু পরেই বিশ্বাস হবে। যখন তোর কলিজাটা বের করে খাবো আমি।
বলেই রাম দা টা দিয়ে কোপ দিলো সাকিবকে। দ্রুত সরে গেলো সাকিব। তবে কোপ এড়াতে পারলো না। তার হাটুর নিচে লাগলো কোপটা। মাটিতে লুটিয়ে পরলো সে। এদিকে সমানে হেসে চলছে লোকটা।
তুই তোর বন্ধুর মতোই নির্বোধ। “হাসতে হাসতে বলল সে। তোর বন্ধুকেও ঠিক এমনিভাবে মেরেছিলাম আমি। এখানে এই যায়গায়। হাহ হা হা এখন তোকেও মারবো।
তুই তাহলে সেই মানুষ রুপি জানোয়ার টা। “রাগে ফুসছে সাকিব। কিন্তু করার কিছুই নেই তার। অসহায় সে। আরেকটু পরে তার অবস্থাও তার বন্ধুর মতোই হবে।
কলিজা খেতে আমার ভালো লাগে। “হাসতে হাসতে বলল শয়তানটা। মানুষের কলিজা খেতে আরো বেশি ভালো লাগে। প্রথম যেদিন মানুষের কলিজা খায় আমি তারপর থেকেই এটার উপর নেষা লেগে গেছে আমার। মানুষের তাজা কলিজা কচকচ করে চিবিয়ে না খেতে পারলে সেদিন আমার ঘুমই আসেনা। হাহ হা হা
পুর্ণিমার চাঁদটা আলো ছড়াচ্ছে তার নিজের মতো করে। কিন্তু ঘন গাছপালার ফাঁক দিয়ে মাটিতে এসে পৌছাতে রীতিমতো যুদ্ধ করতে হচ্ছে তাকে। টর্চের আলো নিভিয়ে দিয়েছে স্টেশন মাস্টার। গাছের ফাঁকফোকর দিয়ে আসা চাঁদের আলোয় ঝিলিক দিচ্ছে রাম দা টা।
আস্তে আস্তে মাটিতে পড়ে থাকা সাকিবের দিকে এগুলো সে। নাগালের ভেতরে যখন চলে আসলো তখন সাকিবের গলা লক্ষ্য করে রাম দা টা উঁচিয়ে ধরলো সে। চোখ বন্ধ করে ফেললো সাকিব। জানে মৃত্যু অবধারিত। ঠিক এমন সময় কড়মড় করে একটা শব্দ হতে লাগলো। শুকনো পাতার ওপর দিয়ে পা টেনে টেনে হাটলে যেমনটা হয়। এদিকেই আসছে সেটা। চোখ খুললো সাকিব। দেখলো রাম দা টা সরিয়ে নিয়েছে লোকটা। টর্চটা জ্বাললো সে । টর্চের আলোয় যে জিনিসটা দেখলো সাকিব সেটা দেখে বিমূঢ় হয়ে গেলো সে। লোকটা হয়ে গেলো হতবাক। ভয়ংকর একটা লোক আসছে এদিকে। পা টেনে টেনে। সমস্ত শরীর রক্তে ভেজা। মুখের মাংস পচে গেছে। খসে পরেছে অনেক জায়গার মাংস। চোখদুটো বেরিয়ে এসেছে কোটর থেকে । বুকের বা পাশে গভীর একটা ক্ষত। টর্চের আলোয় স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে কলিজাটা নেই সেখানে। বা হাতের কব্জির দিকে তাকিয়ে হতবাক হয়ে গেলো সাকিব। একটা বেসলেট রয়েছে। সেই বেসলেট, যেটা ওরা দুজনে একসাথে কিনেছিলো গতবছর ফ্রেন্ডশিপ-ডে তে। ওই বেসলেটটাই যথেষ্ট রাফসানকে চেনার জন্য।
এদিকে স্টেশন মাস্টার টর্চটা মাটিতে ফেলে দিয়ে দু’হাত দিয়ে রাম দা নিয়ে ঝেড়ে কোপ বসালো রাফসানকে লক্ষ্য করে। কিন্তু একি, রাম দা টা রাফসানের শরীর ভেদ করে চলে গেলো। একপর্যায়ে পাগল হয়ে গেলো স্টেশন মাস্টার খলিলুল্লাহ। এলোপাথাড়ি কোপ চালাতে লাগলো। কিন্তু রাফসানের গায়ে একটাও লাগলো না। শেষ মুহুর্তে পেছন ফিরেই দৌড় দিলো খলিলুল্লাহ। কিন্তু পা হড়কে পড়ে গেলো।
আস্তে আস্তে তার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে রাফসান। আর সে মাটিতে হামাগুড়ি দিয়ে এগোনোর চেষ্টা করছে। কিন্তু একপর্যায়ে তাকে ধরে ফেললো রাফসান। এদিকে নিজের ক্যামেরা অন করে দিয়েছে সাকিব। সবকিছু ভিডিও হচ্ছে তাতে।
একটানে খলিলুল্লার গায়ের শার্ট ছিড়ে ফেললো রাফসান। খামছে ধরলো বুকের বা পাশ টা। যেখানটাই কলিজা থাকে। হাতটা ঢুকিয়ে দিলো বুকের ভেতরে। খলিলুল্লার গগনবিদায়ী চিৎকার প্রতিধ্বনিত হতে লাগলো পুরো জঙ্গল জুড়ে। খলিলুল্লার বুকের ভেতর থেকে যখন হাত তুললো রাফসান তার হাতের ওপরে তখনও লাফাচ্ছে কলিজাটা। ক্যামেরার ফ্লাশে সেটা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে সাকিব।
কলিজাটা নিয়ে পা টেনে টেনে আবার জঙ্গলের ভেতরে চলে গেলো রাফসান।
এক সপ্তাহ পর,
হাসপাতাল থেকে আজই রিলিজ পেয়েছে সাকিব। সেই রাতের কথা মনে উঠতেই এখনও আতকে ওঠে সে। বাড়িতে ফিরেই নিজের ক্যামেরাটা খুঁজতে শুরু করলো সে। পেয়ে গেলো ড্রয়ারের ভেতরে। সেই রাতে করা ভিডিওটি একবারও দেখা হয়নি তার। আজ দেখবে। চালু করে দিলো ভিডিওটি। কিন্তু একি! ভিডিওর অন্যসবকিছু ঠিক থাকলেও কোথাও দেখা গেলো না রাফসান কে,
সমাপ্ত